তুমি সমস্ত চিত্তে সদাপ্রভুতে বিশ্বাস কর; তোমার নিজ বিবেচনায় নির্ভর করিও না;তোমার সমস্ত পথে তাঁহাকে স্বীকার কর; তাহাতে তিনি তোমার পথ সকল সরল করিবেন।
যদি তোমাদের কাহারও জ্ঞানের অভাব হয়, তবে সে ঈশ্বরের কাছে যাচ্ঞা করুক; তিনি সকলকে অকাতরে দিয়া থাকেন, তিরস্কার করেন না; তাহাকে দত্ত হইবে।
ধন্য সেই ব্যক্তি যে প্রজ্ঞা পায়, সেই ব্যক্তি যে বুদ্ধি লাভ করে;কেননা রৌপ্যের বাণিজ্য অপেক্ষাও তাহার বাণিজ্য উত্তম, সুবর্ণ অপেক্ষাও প্রজ্ঞা-লাভ উত্তম।
প্রজ্ঞা দ্বারা গৃহ নির্মিত হয়, আর বুদ্ধি দ্বারা তাহা স্থিরীকৃত হয়;আমি অলসের ক্ষেত্রের পার্শ্ব দিয়া গেলাম, হীনবুদ্ধির দ্রাক্ষার উদ্যানের নিকট দিয়া গেলাম;আর দেখ, তৎসমুদয় কাঁটাবন হইয়া উঠিয়াছে, বিছুটি তাহার পৃষ্ঠ আচ্ছন্ন করিয়াছে, তাহার প্রস্তরময় প্রাচীর ভগ্ন হইয়াছে।আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, মনোনিবেশ করিলাম, তাহা দর্শন করিয়া উপদেশ পাইলাম;‘আর একটু নিদ্রা, আর একটু তন্দ্রা, আর একটু শুইয়া হস্ত জড়সড় করিব;’তাই তোমার দরিদ্রতা দস্যুর ন্যায় আসিবে, তোমার দৈন্যদশা ঢালীর ন্যায় আসিবে।জ্ঞান দ্বারা কুঠরি সকল পরিপূর্ণ হয়, বহুমূল্য ও মনোরম্য সমস্ত দ্রব্যে।
কেননা প্রজ্ঞা আশ্রয়, ধনও আশ্রয় বটে, কিন্তু জ্ঞানের উৎকৃষ্টতা এই যে, প্রজ্ঞা আপন অধিকারীর জীবন রক্ষা করে।
বৎস, তুমি আমার ব্যবস্থা ভুলিও না; তোমার চিত্ত আমার আজ্ঞা সকল পালন করুক।তাহাতে তোমার গোলাঘর সকল বহু শস্যে পূর্ণ হইবে, তোমার কুণ্ডে নূতন দ্রাক্ষারস উথলিয়া পড়িবে।বৎস, সদাপ্রভুর শাসন তুচ্ছ করিও না, তাঁহার অনুযোগে ক্লান্ত হইও না;কেননা সদাপ্রভু যাহাকে প্রেম করেন, তাহাকেই শাস্তি প্রদান করেন, যেমন পিতা প্রিয় পুত্রের প্রতি করেন।ধন্য সেই ব্যক্তি যে প্রজ্ঞা পায়, সেই ব্যক্তি যে বুদ্ধি লাভ করে;কেননা রৌপ্যের বাণিজ্য অপেক্ষাও তাহার বাণিজ্য উত্তম, সুবর্ণ অপেক্ষাও প্রজ্ঞা-লাভ উত্তম।তাহা মুক্তা হইতেও বহুমূল্য; তোমার অভীষ্ট কোন বস্তু তাহার সমান নয়।তাহার দক্ষিণ হস্তে দীর্ঘ পরমায়ু, তাহার বাম হস্তে ধন ও সম্মান থাকে।তাহার পথ সকল মনোরঞ্জনের পথ, তাহার সমস্ত মার্গ শান্তিময়।যাহারা তাহাকে ধরিয়া রাখে, তাহাদের কাছে তাহা জীবনবৃক্ষ; যে কেহ তাহা গ্রহণ করে, সে ধন্য।সদাপ্রভু প্রজ্ঞা দ্বারা পৃথিবীর মূল স্থাপন করিয়াছেন, বুদ্ধি দ্বারা আকাশমণ্ডল অটল করিয়াছেন;কারণ তদ্দ্বারা তুমি আয়ুর দীর্ঘতা, জীবনের বৎসর-বাহুল্য, এবং শান্তি প্রাপ্ত হইবে।
জ্ঞানবানকে [শিক্ষা] দেও, সে আরও জ্ঞানবান হইবে; ধার্মিককে জ্ঞান দেও, তাহার পাণ্ডিত্য বৃদ্ধি পাইবে।
হীনবুদ্ধির ওষ্ঠ বিবাদ সঙ্গে করিয়া আইসে, তাহার মুখ মার মার বলিয়া ডাকে।হীনবুদ্ধির মুখ তাহার সর্বনাশজনক, তাহার ওষ্ঠ তাহার প্রাণের ফাঁদ।
তুমি কি নিজের দৃষ্টিতে জ্ঞানবান লোক দেখিতেছ? তাহা অপেক্ষা, বরং হীনবুদ্ধির বিষয়ে অধিক প্রত্যাশা আছে।
প্রজ্ঞা উপার্জন কর, সুবিবেচনা উপার্জন কর, ভুলিও না; আমার মুখের কথা হইতে বিমুখ হইও না।প্রজ্ঞাকে ছাড়িও না, সে তোমাকে রক্ষা করিবে; তাহাকে প্রেম কর, সে তোমাকে সংরক্ষণ করিবে।
বৎস, এই সকল তোমার দৃষ্টি-বহির্ভূত না হউক, তুমি সূক্ষ্ম বুদ্ধি ও পরিণামদর্শিতা রক্ষা কর।তাহাতে সেই সকল তোমার প্রাণের জীবনস্বরূপ হইবে, তোমার কণ্ঠের শোভাস্বরূপ হইবে।
যে অধর্ম আচ্ছাদন করে, সে প্রেমের অন্বেষণ করে; কিন্তু যে পুনঃ পুনঃ এক কথা বলে, সে মিত্রভেদ জন্মায়।
বস্তুতঃ যে ব্যক্তি [ঈশ্বরের] প্রীতিজনক, তাহাকে তিনি প্রজ্ঞা, বিদ্যা ও আনন্দ দেন; কিন্তু পাপীকে কষ্ট দেন, যেন সে ঈশ্বরের প্রীতিজনক ব্যক্তিকে দিবার জন্য ধন সংগ্রহ ও সঞ্চয় করে। ইহাও অসার ও বায়ুভক্ষণ মাত্র।
যাহার অনেক বন্ধু, তাহার সর্বনাশ হয়; কিন্তু ভ্রাতা অপেক্ষাও অধিক প্রেমাসক্ত এক বন্ধু আছেন।
কোপন স্বভাব লোকের সহিত বন্ধুত্ব করিও না, ক্রোধীর সঙ্গে যাতায়াত করিও না;পাছে তুমি তাহার আচরণ শিক্ষা কর, আপন প্রাণের জন্য ফাঁদ প্রস্তুত কর।
বৎস, তোমার চিত্ত যদি জ্ঞানশালী হয়, তবে আমারও চিত্ত আনন্দিত হইবে;বাস্তবিক আমার চিত্ত উল্লসিত হইবে। যখন তোমার ওষ্ঠ ন্যায়বাদী হয়,
যে খাদ খনন করে, সে তাহার মধ্যে পতিত হইবে; যে প্রস্তর গড়াইয়া দেয়, তাহারই উপরে তাহা ফিরিয়া আসিবে।
লৌহ ভোঁতা হইলে ও তাহাতে ধার না দিলে তাহা চালাইতে অধিক বল লাগে, কিন্তু প্রজ্ঞাই কৃতকার্য হইবার উপযুক্ত উপায়।
যে আপন অধর্ম সকল ঢাকে, সে কৃতকার্য হইবে না; কিন্তু যে তাহা স্বীকার করিয়া ত্যাগ করে, সে করুণা পাইবে।
সদাপ্রভুর ভয় জীবনে লইয়া যায়, যাহার তাহা আছে, সে তৃপ্ত হইয়া বসতি করে, অমঙ্গল তাহার নিকটে যায় না।
এই ছয়টি বস্তু সদাপ্রভুর ঘৃণিত, এমন কি, সাতটি বস্তু তাঁহার প্রাণের ঘৃণাস্পদ;উদ্ধত দৃষ্টি, মিথ্যাবাদী জিহ্বা, নির্দোষের রক্তপাতকারী হস্ত,দুষ্ট সঙ্কল্পকারী হৃদয়, দুষ্কর্ম করিতে দ্রুতগামী চরণ,যে মিথ্যাসাক্ষী অসত্য কথা বলে, ও যে ভ্রাতৃগণের মধ্যে বিবাদের সূত্রপাত করে।
যে পুত্রকে দণ্ড না দেয়, সে তাহাকে দ্বেষ করে; কিন্তু যে তাহাকে প্রেম করে, সে সযত্নে শাস্তি দেয়।
বিশ্বস্ত লোক অনেক আশীর্বাদ পাইবে; কিন্তু যে ধনবান হইবার জন্য তাড়াতাড়ি করে, সে অদণ্ডিত থাকিবে না।
যে আপন জমি চাষ করে, সে যথেষ্ট আহার পায়; কিন্তু যে অসারদের পিছনে পিছনে দৌড়ায়, সে বুদ্ধিবিহীন।
তুমি কি কোন ব্যক্তিকে তাহার ব্যাপারে তৎপর দেখিতেছ? সে রাজগণের সাক্ষাতে দাঁড়াইবে, সে নীচ লোকদের সাক্ষাতে দাঁড়াইবে না।
যাহাদের মঙ্গল করা উচিত, তাহাদের মঙ্গল করিতে অস্বীকার করিও না, যখন তাহা করিবার ক্ষমতা তোমার হাতে থাকে।তোমার প্রতিবাসীকে বলিও না, ‘যাও, আবার আসিও, আমি কল্য দিব’, যখন দ্রব্য তোমার হস্তে থাকে।
কিন্তু ধার্মিকদের পথ প্রভাতীয় জ্যোতির ন্যায়, যাহা মধ্যাহ্ন পর্যন্ত উত্তরোত্তর দেদীপ্যমান হয়।দুষ্টদের পথ অন্ধকারের ন্যায়; তাহারা কিসে উছোট খাইবে, জানে না।
তোমার মন পাপীদের প্রতি ঈর্ষা না করুক, কিন্তু তুমি সমস্ত দিন সদাপ্রভুর ভয়ে থাক।কেননা শেষ ফল অবশ্য আছে, তোমার আশা ছিন্ন হইবে না।
সদাপ্রভু প্রজ্ঞা দ্বারা পৃথিবীর মূল স্থাপন করিয়াছেন, বুদ্ধি দ্বারা আকাশমণ্ডল অটল করিয়াছেন;কারণ তদ্দ্বারা তুমি আয়ুর দীর্ঘতা, জীবনের বৎসর-বাহুল্য, এবং শান্তি প্রাপ্ত হইবে।তাঁহার জ্ঞান দ্বারা গভীর জলধি সকল খুলিয়া গেল, আর আকাশ বিন্দু বিন্দু শিশির বর্ষণ করিল।
দয়া ও সত্য তোমাকে ত্যাগ না করুক; তুমি ইহাদের তোমার কণ্ঠদেশে বাঁধিয়া রাখ, তোমার হৃদয়-ফলকে লিখিয়া রাখ।অকারণে কোন ব্যক্তির সহিত বিরোধ করিও না, যদি সে তোমার অপকার না করিয়া থাকে।উপদ্রবকারীর প্রতি ঈর্ষা করিও না, আর তাহার কোন পথ মনোনীত করিও না;কেননা যে ব্যক্তি খল সে সদাপ্রভুর ঘৃণার পাত্র; কিন্তু সরলগণের সহিত তাঁহার ঘনিষ্টতা আছে।দুষ্টের গৃহে সদাপ্রভুর অভিশাপ থাকে, কিন্তু তিনি ধার্মিকদের নিবাসকে আশীর্বাদ করেন।নিশ্চয়ই তিনি নিন্দুকদের নিন্দা করেন, কিন্তু নম্রদিগকে অনুগ্রহ প্রদান করেন,জ্ঞানবানেরা সম্মানের অধিকারী হইবে, কিন্তু অবজ্ঞাই হীনবুদ্ধিদের উন্নতি।তাহা করিলে অনুগ্রহ ও সুবুদ্ধি পাইবে, ঈশ্বরের ও মনুষ্যের দৃষ্টিতে পাইবে;