তোমার জীবনের প্রতিটি ধাপে তুমি কতটা সফল হবে, তা অনেকটাই তোমার চিন্তাভাবনার উপর নির্ভর করে। বাইবেলে যেমন বলা হয়েছে, "মনের ভাব যেমন, মানুষও তেমন।" তোমার চিন্তাভাবনাগুলোর যত্ন নেওয়া তোমারই দায়িত্ব। কোন চিন্তাগুলোকে তোমার মনে প্রবেশ করতে দেবে, কোনটা তোমাকে প্রভাবিত করবে, আর কোনটা তোমাকে শক্তি দেবে, তা ঠিক করার ক্ষমতা তোমারই আছে। কোনটা তোমাকে কলুষিত করছে আর কোনটা তোমাকে অনুপ্রাণিত করছে, শুধু তুমিই তা বুঝতে পারবে এবং তুমিই কেবল খারাপ চিন্তাগুলোকে দূরে সরিয়ে রাখতে পারবে।
অনেক মানুষ এমন সব চিন্তাভাবনায় ভরে থাকে যা তাদের কোনো উপকারে আসে না, বরং তাদের হতাশায় ডুবিয়ে দেয়। প্রায়ই তারা তাদের চিন্তাভাবনা সম্পর্কে সচেতন থাকে না, যতক্ষণ না তারা নিজেদের কাঁদতে দেখে। তারা বুঝতেই পারে না যে তাদের কল্পনাশক্তি তাদের শরীরে রোগ ডেকে আনে এবং তাদের সম্পর্কগুলোকে নষ্ট করে দেয়। শত্রু এই মানসিক দুর্বলতার সুযোগ নেয়। যে চিন্তাগুলো কষ্ট দেয়, অতীতের কষ্টকর স্মৃতি ফিরিয়ে আনে এবং জীবনে এগিয়ে যেতে বাধা দেয়, সেই চিন্তাগুলো মনে বপন করে।
কিন্তু ঈশ্বরের বাক্য যখন তোমার মনে থাকবে এবং তুমি শত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য ঢাল হিসেবে তা ব্যবহার করবে, তখন এই সব কিছু তোমাকে আর পঙ্গু করে রাখতে পারবে না। ধর্মগ্রন্থ ধ্যান করলে তোমার দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত হবে, তুমি তোমার অস্তিত্বের উদ্দেশ্য আবার ফিরে পাবে এবং পিতা তোমার সম্পর্কে যা বলেন, তাতে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতে শুরু করবে।
তোমার চিন্তাভাবনার যত্ন নেওয়া সম্পূর্ণরূপে তোমার উপর নির্ভর করে; যদি তুমি বিশ্বাস করো যে তুমি তোমার লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে, তাহলে তুমি অবশ্যই পারবে। আর যদি তুমি মনে করো এটা অসম্ভব, তাহলে তোমার স্বপ্নগুলো কখনো সত্যি হবে না।
আজ, ঈশ্বর তোমার সম্পর্কে কী বলেন সেটা ভেবে দেখো। বিশ্বাস করো যে তুমি তাঁর সন্তান এবং তিনি তোমাকে বড় স্বপ্ন দেখার এবং তুমি যে উদ্দেশ্যে জন্মেছো তা অর্জন করার ক্ষমতা দিয়েছেন। যদি তোমার মনে এমন কোনো চিন্তা আসে যেখানে তুমি নিজেকে ছোট মনে করো এবং যীশু ক্রুশে তোমাকে যে মূল্য দিয়েছেন তা বুঝতে পারো না, তাহলে তাঁকে প্রার্থনা করো যেন তিনি তোমাকে তাঁর অনুগ্রহে পরিষ্কার করেন এবং তোমাকে তাঁর দৃষ্টিতে নিজেকে দেখতে সাহায্য করেন। তুমি তাঁর বিশেষ ধন, তাঁর সবচেয়ে সুন্দর সৃষ্টি, এবং তিনি তোমার জন্য ভালো চিন্তাই করেন, কখনো মন্দ চিন্তা করেন না। মনে রাখবে, তুমি যেমন চিন্তা করবে, তেমনই ঘটবে। সফল হওয়া না হতাশায় জীবন যাপন করা, তার দায়িত্ব তোমারই।
অবশেষে, হে ভ্রাতৃগণ, যাহা যাহা সত্য, যাহা যাহা আদরণীয়, যাহা যাহা ন্যায্য, যাহা যাহা বিশুদ্ধ, যাহা যাহা প্রীতিজনক, যাহা যাহা সুখ্যাতিযুক্ত, যে কোন সদ্গুণ ও যে কোন কীর্তি হউক, সেই সকল আলোচনা কর।
যাহার মন তোমাতে সুস্থির, তুমি তাহাকে শান্তিতে, শান্তিতেই রাখিবে, কেননা তোমাতেই তাহার নির্ভরতা।
তাহাতে সমস্ত চিন্তার অতীত যে ঈশ্বরের শান্তি, তাহা তোমাদের হৃদয় ও মন খ্রীষ্ট যীশুতে রক্ষা করিবে।
কারণ সদাপ্রভু কহেন, আমার সঙ্কল্প সকল ও তোমাদের সঙ্কল্প সকল এক নয়, এবং তোমাদের পথ সকল ও আমার পথ সকল এক নয়।
আর এই যুগের অনুরূপ হইও না, কিন্তু মনের নূতনীকরণ দ্বারা স্বরূপান্তরিত হও; যেন তোমরা পরীক্ষা করিয়া জানিতে পার, ঈশ্বরের ইচ্ছা কি; যাহা উত্তম ও প্রীতিজনক ও সিদ্ধ।
হে ঈশ্বর, আমাকে অনুসন্ধান কর, আমার অন্তঃকরণ জ্ঞাত হও; আমার পরীক্ষা কর, আমার চিন্তা সকল জ্ঞাত হও;আর দেখ, আমাতে দুষ্টতার পথ পাওয়া যায় কি না, এবং সনাতন পথে আমাকে গমন করাও।
দুষ্ট আপন পথ, অধার্মিক আপন সঙ্কল্প ত্যাগ করুক; এবং সে সদাপ্রভুর প্রতি ফিরিয়া আইসুক, তাহাতে তিনি তাহার প্রতি করুণা করিবেন; আমাদের ঈশ্বরের প্রতি ফিরিয়া আইসুক, কেননা তিনি প্রচুররূপে ক্ষমা করিবেন।
কেননা অন্তঃকরণ হইতে কুচিন্তা, নরহত্যা, ব্যভিচার, বেশ্যাগমন, চৌর্য, মিথ্যাসাক্ষ্য, নিন্দা আইসে।
হে সদাপ্রভু, তুমি আমাকে অনুসন্ধান করিয়াছ, আমাকে জ্ঞাত হইয়াছ।সেখানেও তোমার হস্ত আমাকে চালাইবে, তোমার দক্ষিণ হস্ত আমাকে ধরিবে।যদি বলি, ‘আঁধার আমাকে ঢাকিয়া ফেলিবে, আমার চারিদিকে আলোক রাত্রি হইবে’, বাস্তবিক অন্ধকারও তোমা হইতে গুপ্ত রাখে না, বরং রাত্রি দিনের ন্যায় আলো দেয়; অন্ধকার ও আলোক উভয়ই সমান।বস্তুতঃ তুমিই আমার মর্ম রচনা করিয়াছ; তুমি মাতৃগর্ভে আমাকে বুনিয়াছিলে।আমি তোমার স্তব করিব, কেননা আমি ভয়াবহরূপে ও আশ্চর্যরূপে নির্মিত; তোমার কর্ম সকল আশ্চর্য, তাহা আমার প্রাণ বিলক্ষণ জানে।আমার দেহ তোমা হইতে লুক্কায়িত ছিল না, যখন আমি গোপনে নির্মিত হইতেছিলাম, পৃথিবীর অধঃস্থানে শিল্পিত হইতেছিলাম।তোমার চক্ষু আমাকে পিণ্ডাকার দেখিয়াছে, তোমার পুস্তকে সমস্তই লিখিত ছিল, যাহা দিন দিন গঠিত হইতেছিল, যখন সেই সকলের একটিও ছিল না।হে ঈশ্বর, আমার পক্ষে তোমার সঙ্কল্প সকল কেমন মূল্যবান। তাহার সমষ্টি কেমন অধিক!গণনা করিলে তাহা বালুকা অপেক্ষা বহুসংখ্যক হয়; আমি যখন জাগিয়া উঠি, তখনও তোমার নিকটে থাকি।হে ঈশ্বর, তুমি নিশ্চয়ই দুষ্টকে বধ করিবে; হে রক্তপাতীরা, আমার নিকট হইতে দূর হও।তুমিই আমার উপবেশন ও আমার উত্থান জানিতেছ, তুমি দূর হইতে আমার সঙ্কল্প বুঝিতেছ।
আমরা বিতর্ক সকল এবং ঈশ্বর-জ্ঞানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সমস্ত উচ্চ বস্তু ভাঙ্গিয়া ফেলিতেছি, এবং সমুদয় চিন্তাকে বন্দি করিয়া খ্রীষ্টের আজ্ঞাবহ করিতেছি;
কারণ মনুষ্যের বিষয়গুলি মনুষ্যদের মধ্যে কে জানে? কেবল মনুষ্যের অন্তরস্থ আত্মা জানে; তেমনি ঈশ্বরের বিষয়গুলি কেহ জানে না, কেবল ঈশ্বরের আত্মা জানেন।
কেননা ঈশ্বর আমাদিগকে ভীরুতার আত্মা দেন নাই, কিন্তু শক্তির, প্রেমের ও সুবুদ্ধির আত্মা দিয়াছেন।
কেননা ঈশ্বরের বাক্য জীবন্ত ও কার্যসাধক, এবং সমস্ত দ্বিধার খড়্গ অপেক্ষা তীক্ষ্ণ, এবং প্রাণ ও আত্মা, গ্রন্থি ও মজ্জা, এই সকলের বিভেদ পর্যন্ত মর্মভেদী, এবং হৃদয়ের চিন্তা ও বিবেচনার সূক্ষ্ম বিচারক;
কিন্তু হে ভ্রাতৃগণ, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে আমি তোমাদিগকে বিনয় করিয়া বলি, তোমরা সকলে একই কথা বল, তোমাদের মধ্যে দলাদলি না হউক, কিন্তু এক মনে ও এক বিচারে পরিপক্ব হও।
কেননা সে অন্তরে যেমন ভাবে, নিজেও তেমনি; সে তোমাকে বলে, তুমি ভোজন পান কর, কিন্তু তাহার চিত্ত তোমার সহবর্তী নয়।
আমার মুখের বাক্য ও আমার চিত্তের ধ্যান তোমার দৃষ্টিতে গ্রাহ্য হউক, হে সদাপ্রভু, আমার শৈল, আমার মুক্তিদাতা।
তিনি তাহাকে কহিলেন, “তোমার সমস্ত অন্তঃকরণ, তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত মন দিয়া তোমার ঈশ্বর প্রভুকে প্রেম করিবে, ”
অতএব তোমরা আপন আপন মনের কটি বাঁধিয়া মিতাচারী হও, এবং যীশু খ্রীষ্টের প্রকাশকালে যে অনুগ্রহ তোমাদের নিকটে আনীত হইবে, তাহার অপেক্ষাতে সম্পূর্ণ প্রত্যাশা রাখ।
তোমরা ভ্রান্ত হইও না, ঈশ্বরকে পরিহাস করা যায় না; কেননা মনুষ্য যাহা কিছু বুনে তাহাই কাটিবে।
কেননা ফল দ্বারাই গাছ চেনা যায়। হে সর্পের বংশেরা, তোমরা মন্দ হইয়া কেমন করিয়া ভাল কথা কহিতে পার? কেননা হৃদয় হইতে যাহা ছাপিয়া উঠে, মুখ তাহাই বলে।
কেননা প্রজ্ঞা তোমার হৃদয়ে প্রবেশ করিবে, জ্ঞান তোমার প্রাণের তুষ্টি জন্মাইবে,পরিণামদর্শিতা তোমার প্রহরী হইবে, বুদ্ধি তোমাকে রক্ষা করিবে;
কেননা “কে প্রভুর মন জানিয়াছে যে, তাঁহাকে উপদেশ দিতে পারে?” কিন্তু খ্রীষ্টের মন আমাদের আছে।
কিন্তু যাহার সন্দেহ আছে, সে যদি ভোজন করে, তবে সে দোষী সাব্যস্ত হইল, কারণ তাহার ভোজন বিশ্বাসমূলক নয়; আর যাহা কিছু বিশ্বাসমূলক নয়, তাহাই পাপ।
কারণ সদাপ্রভু কহেন, আমার সঙ্কল্প সকল ও তোমাদের সঙ্কল্প সকল এক নয়, এবং তোমাদের পথ সকল ও আমার পথ সকল এক নয়।কারণ ভূতল হইতে আকাশমণ্ডল যত উচ্চ, তোমাদের পথ হইতে আমার পথ, ও তোমাদের সঙ্কল্প হইতে আমার সঙ্কল্প তত উচ্চ।
দেখিও, দর্শন বিদ্যা ও অনর্থক প্রতারণা দ্বারা কেহ যেন তোমাদিগকে বন্দি করিয়া লইয়া না যায়; তাহা মনুষ্যদের পরমপরাগত শিক্ষার অনুরূপ, জগতের অক্ষরমালার অনুরূপ, খ্রীষ্টের অনুরূপ নয়;
কেননা রক্তমাংসের সহিত নয়, কিন্তু আধিপত্য সকলের সহিত, কর্তৃত্ব সকলের সহিত, এই অন্ধকারের জগৎপতিদের সহিত, স্বর্গীয় স্থানে দুষ্টতার আত্মাগণের সহিত আমাদের মল্লযুদ্ধ হইতেছে।
কিন্তু আত্মার ফল প্রেম, আনন্দ, শান্তি, দীর্ঘসহিষ্ণুতা, মাধুর্য, মঙ্গলভাব, বিশ্বস্ততা,মৃদুতা, ইন্দ্রিয়দমন; এই প্রকার গুণের বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নাই।
বস্তুতঃ আমাকে যে অনুগ্রহ দত্ত হইয়াছে, তাহার গুণে আমি তোমাদের মধ্যবর্তী প্রত্যেক জনকে বলিতেছি, আপনার বিষয়ে যেমন বোধ করা উপযুক্ত, কেহ তদপেক্ষা বড় বোধ না করুক; কিন্তু ঈশ্বর যাহাকে যে পরিমাণে বিশ্বাস বিতরণ করিয়াছেন, তদনুসারে সে সুবোধ হইবার চেষ্টায় আপনার বিষয়ে বোধ করুক।
অতএব এমন বৃহৎ সাক্ষীমেঘে বেষ্টিত হওয়াতে আইস, আমরাও সমস্ত বোঝা ও সহজ বাধাজনক পাপ ফেলিয়া দিয়া ধৈর্যপূর্বক আমাদের সম্মুখস্থ ধাবনক্ষেত্রে দৌড়াই;উঁহারা ত অল্পদিনের নিমিত্ত, উঁহাদের যেমন বিহিত বোধ হইত, তেমনই শাসন করিতেন, কিন্তু ইনি হিতের নিমিত্তই করিতেছেন, যেন আমরা তাঁহার পবিত্রতার ভাগী হই।কোন শাসনই আপাততঃ আনন্দের বিষয় বোধ হয় না; কিন্তু দুঃখের বিষয় বোধ হয়, তথাপি তদ্দ্বারা যাহাদের অভ্যাস জন্মিয়াছে, তাহা পরে তাহাদিগকে ধার্মিকতার শান্তিযুক্ত ফল প্রদান করে।অতএব তোমরা শিথিল হস্ত ও অবশ হাঁটু সবল কর;এবং আপন আপন চরণের জন্য সরল পথ প্রস্তুত কর, যেন যাহা খঞ্জ, তাহা স্থানচ্যুত না হয়, বরং সুস্থ হয়। সকলের সহিত শান্তির অনুধাবন কর, এবং যাহা ব্যতিরেকে কেহই প্রভুর দর্শন পাইবে না, সেই পবিত্রতার অনুধাবন কর; সাবধান হইয়া দেখ, পাছে কেহ ঈশ্বরের অনুগ্রহ হইতে বঞ্চিত হয়;পাছে তিক্ততার কোন মূল অঙ্কুরিত হইয়া তোমাদিগকে উৎপীড়িত করে, এবং ইহাতে অধিকাংশ লোক দূষিত হয়;পাছে কেহ ব্যভিচারী বা ধর্মবিরোধী হয়, যেমন এষৌ, সে ত এক বারের খাদ্যের নিমিত্ত আপন জ্যেষ্ঠাধিকার বিক্রয় করিয়াছিল।তোমরা ত জান, তৎপরে যখন সে আশীর্বাদের অধিকারী হইতে বাঞ্ছা করিল, তখন সজল নয়নে সযত্নে তাহার চেষ্টা করিলেও অগ্রাহ্য হইল, কারণ সে মনপরিবর্তনের স্থান পাইল না। কারণ তোমরা সেই স্পৃশ্য ও অগ্নিতে প্রজ্বলিত পর্বত, কৃষ্ণবর্ণ মেঘ, অন্ধকার, ঝড়, তূরীর ধ্বনি ও বাক্যের শব্দ এই সকলের নিকট উপস্থিত হও নাই।সেই শব্দ যাহারা শুনিয়াছিল, তাহারা প্রার্থনা করিয়াছিল, যেন তাহাদের কাছে আর কথা বলা না হয়;বিশ্বাসের আদিকর্তা ও সিদ্ধিকর্তা যীশুর প্রতি দৃষ্টি রাখি; তিনিই আপনার সম্মুখস্থ আনন্দের নিমিত্ত ক্রুশ সহ্য করিলেন, অপমান তুচ্ছ করিলেন, এবং ঈশ্বরের সিংহাসনের দক্ষিণে উপবিষ্ট হইয়াছেন।
সদাপ্রভু, আমার ঈশ্বর, তুমিই বাহুল্যরূপে সাধন করিয়াছ আমাদের পক্ষে তোমার আশ্চর্য কার্য সকল ও তোমার সঙ্কল্প সকল; তোমার তুল্য কেহ নাই; আমি সেই সকল বলিতাম ও বর্ণনা করিতাম, কিন্তু সেই সকল গণনা করা যায় না।
তোমরা প্রবুদ্ধ হও, জাগিয়া থাক; তোমাদের বিপক্ষ দিয়াবল, গর্জনকারী সিংহের ন্যায়, কাহাকে গ্রাস করিবে, তাহার অন্বেষণ করিয়া বেড়াইতেছে।
আমি পূর্বকালের দিন সকল স্মরণ করিতেছি, তোমার সমস্ত কর্ম ধ্যান করিতেছি, তোমার হস্তের কার্য আলোচনা করিতেছি।
এই জন্য আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, ‘কি ভোজন করিব, কি পান করিব’ বলিয়া প্রাণের বিষয়ে, কিম্বা ‘কি পরিব’ বলিয়া শরীরের বিষয়ে ভাবিত হইও না; ভক্ষ্য হইতে প্রাণ ও বস্ত্র হইতে শরীর কি বড় বিষয় নয়?আকাশের পক্ষীদের প্রতি দৃষ্টিপাত কর; তাহারা বুনেও না, কাটেও না, গোলাঘরে সঞ্চয়ও করে না, তথাপি তোমাদের স্বর্গীয় পিতা তাহাদিগকে আহার দিয়া থাকেন; তোমরা কি তাহাদের হইতে অধিক শ্রেষ্ঠ নও?
কারণ ঈশ্বরকে জ্ঞাত হইয়াও তাহারা তাঁহাকে ঈশ্বর বলিয়া তাঁহার গৌরব করে নাই; ধন্যবাদও করে নাই; কিন্তু আপনাদের তর্কবিতর্কে অসার হইয়া পড়িয়াছে, এবং তাহাদের অবোধ হৃদয় অন্ধকার হইয়া গিয়াছে।
আর পূর্বে চিত্তে দুষ্ক্রিয়াতে বহিঃস্থ ও শত্রু ছিলে যে তোমরা,তোমাদিগকে তিনি এখন খ্রীষ্টের মাংসময় দেহে মৃত্যু দ্বারা সম্মিলিত করিলেন, যেন পবিত্র, নিষ্কলঙ্ক ও নির্দোষ করিয়া আপনার সাক্ষাতে উপস্থিত করেন,
হে তীমথিয়, তোমার কাছে যাহা গচ্ছিত হইয়াছে, তাহা সাবধানে রাখ; যাহা অযথারূপে বিদ্যা নামে আখ্যাত, তাহার ধর্মবিরোধী নিঃসার শব্দাড়ম্বর ও বিরোধবাণী হইতে বিমুখ হও;সেই বিদ্যা অঙ্গীকার করিয়া কেহ কেহ বিশ্বাস সম্বন্ধে লক্ষ্যভ্রষ্ট হইয়াছে। অনুগ্রহ তোমাদের সহবর্তী হউক।
তুমি কি জ্ঞাত হও নাই? তুমি কি শুন নাই? অনাদি অনন্ত ঈশ্বর, সদাপ্রভু, পৃথিবীর প্রান্ত সকলের সৃষ্টিকর্তা ক্লান্ত হন না, শ্রান্ত হন না; তাঁহার বুদ্ধির অনুসন্ধান করা যায় না।
আবার মাংসের কার্য সকল প্রকাশ আছে; সেইগুলি এই- বেশ্যাগমন, অশুচিতা, স্বৈরিতা,দেখ, আমি পৌল তোমাদিগকে কহিতেছি, যদি তোমরা ত্বক্ছেদ পপ্রাপ্ত হও, তবে খ্রীষ্ট হইতে তোমাদের কিছুই লাভ হইবে না।প্রতিমাপূজা, কুহক, নানা প্রকার শত্রুতা, বিবাদ, ঈর্ষা, রাগ, প্রতিযোগিতা, বিচ্ছিন্নতা, দলভেদ,মাৎসর্য, মত্ততা, রঙ্গরস ও তৎসদৃশ অন্য অন্য দোষ। এই সকলের বিষয়ে আমি তোমাদিগকে অগ্রে বলিতেছি, যেমন পূর্বে বলিয়াছিলাম, যাহারা এই প্রকার আচরণ করে, তাহারা ঈশ্বরের রাজ্যে অধিকার পাইবে না।
আর ক্ষণকাল, পরে দুষ্ট লোক আর নাই, তুমি তাহার স্থান তত্ত্ব করিবে, কিন্তু সে আর নাই।কিন্তু মৃদুশীলেরা দেশের অধিকারী হইবে, এবং শান্তির বাহুল্যে আমোদ করিবে।
অতএব তোমরা ভাল করিয়া দেখ, কিরূপে চলিতেছ; অজ্ঞানের ন্যায় না চলিয়া জ্ঞানবানের ন্যায় চল।সুযোগ কিনিয়া লও, কেননা এই কাল মন্দ।এই কারণ নির্বোধ হইও না, কিন্তু প্রভুর ইচ্ছা কি, তাহা বুঝ।
আকাশমণ্ডল ঈশ্বরের গৌরব বর্ণনা করে, বিতান তাঁহার হস্তকৃত কর্ম জ্ঞাপন করে।তাহা স্বর্ণ ও প্রচুর কাঞ্চন অপেক্ষা বাঞ্ছনীয়, মধু ও মৌচাকের রস হইতেও সুস্বাদু।তোমার দাসও তদ্দ্বারা সুশিক্ষা পায়; তাহা পালন করিলে মহা ফল হয়।ভ্রান্তির কার্য সকল কে বুঝিতে পারে? তুমি গুপ্ত দোষ হইতে আমাকে পরিষ্কার কর।দুঃসাহসজনিত [পাপ] হইতেও নিজ দাসকে পৃথক রাখ, সেই সকল আমার উপরে কর্তৃত্ব না করুক; তখন আমি সিদ্ধ এবং মহাপাতক হইতে শুচি হইব।আমার মুখের বাক্য ও আমার চিত্তের ধ্যান তোমার দৃষ্টিতে গ্রাহ্য হউক, হে সদাপ্রভু, আমার শৈল, আমার মুক্তিদাতা।দিবস দিবসের কাছে বাক্য উচ্চারণ করে, রাত্রি রাত্রির কাছে জ্ঞান প্রচার করে।বাক্য নাই, ভাষাও নাই, তাহাদের রব শুনা যায় না।তাহাদের মানরজ্জু সমস্ত পৃথিবীতে ব্যাপ্ত, তাহাদের বাক্য জগতের সীমা পর্যন্ত ব্যাপ্ত; তাহাদের মধ্যে তিনি সূর্যের নিমিত্ত এক তাম্বু স্থাপন করিয়াছেন।
ঈশ্বর সঙ্গীহীনদিগকে পরিবার মধ্যে বাস করান, তিনি বন্দিগণকে মুক্ত করিয়া কুশলে রাখেন; কিন্তু বিদ্রোহীরা দগ্ধ ভূমিতে বাস করে।
এবং আইস, আমরা পরস্পর মনোযোগ করি, যেন প্রেম ও সৎক্রিয়ার সম্বন্ধে পরস্পরকে উদ্দীপিত করিয়া তুলিতে পারি;এবং আপনারা সমাজে সভাস্থ হওয়া পরিত্যাগ না করি যেমন কাহারও কাহারও অভ্যাস বরং পরসপরকে চেতনা দিই; আর তোমরা সেই দিন যত অধিক সন্নিকট হইতে দেখিতেছ, ততই যেন অধিক এই বিষয়ে তৎপর হই।
কিন্তু আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, যে কেহ কোন স্ত্রীলোকের প্রতি কামভাবে দৃষ্টিপাত করে, সে তখনই মনে মনে তাহার সহিত ব্যভিচার করিল।
অতএব, হে ভ্রাতৃগণ, ঈশ্বরের নানা করুণার অনুরোধে আমি তোমাদিগকে বিনতি করিতেছি, তোমরা আপন আপন দেহকে জীবিত, পবিত্র, ঈশ্বরের প্রীতিজনক বলিরূপে উৎসর্গ কর, ইহাই তোমাদের চিত্ত-সঙ্গত আরাধনা।
তাহারা অপরাধের সন্ধান করিয়া লয়, [বলে,] আমরা সন্ধানের চূড়ান্ত করিয়াছি, প্রত্যেকের অন্তর্ভাব ও হৃদয় গভীর।
হে সদাপ্রভু, তুমি আমাদের নিমিত্ত শান্তি নিরূপণ করিবে, কেননা আমাদের সমস্ত কার্যই তুমি আমাদের নিমিত্ত সাধন করিয়া আসিতেছ।
আমি যখন শিশু ছিলাম, তখন শিশুর ন্যায় কথা কহিতাম, শিশুর ন্যায় চিন্তা করিতাম, শিশুর ন্যায় বিচার করিতাম; এখন মানুষ হইয়াছি বলিয়া শিশুভাবগুলি ত্যাগ করিয়াছি।
আর সদাপ্রভু দেখিলেন, পৃথিবীতে মনুষ্যদের দুষ্টতা অত্যধিক, এবং তাহাদের অন্তঃকরণের চিন্তার সমস্ত কল্পনা নিরন্তর কেবল মন্দ।
শেষ কথা এই, তোমরা প্রভুতে ও তাঁহার শক্তির পরাক্রমে বলবান হও।ঈশ্বরের সমগ্র যুদ্ধসজ্জা পরিধান কর, যেন দিয়াবলের নানাবিধ চাতুরীর সম্মুখে দাঁড়াইতে পার।
এই জন্য আমরা নিরুৎসাহ হই না, কিন্তু আমাদের বাহ্যিক মনুষ্য যদ্যপি ক্ষীণ হইতেছে, তথাপি আন্তরিক মনুষ্য দিন দিন নূতনীকৃত হইতেছে।
তোমরা নির্ভর করিও না রাজন্যগণে, বা মনুষ্য-সন্তানে, যাহার নিকটে ত্রাণ নাই।তাহার শ্বাস নির্গত হয়, সে নিজ মৃত্তিকায় প্রতিগমন করে; সেই দিনেই তাহার সঙ্কল্প সকল নষ্ট হয়।
কেননা যাহারা মাংসের বশে আছে, তাহারা মাংসিক বিষয় ভাবে; কিন্তু যাহারা আত্মার বশে আছে, তাহারা আত্মিক বিষয় ভাবে।কারণ মাংসের ভাব মৃত্যু, কিন্তু আত্মার ভাব জীবন ও শান্তি।
অতএব তোমরা যখন খ্রীষ্টের সহিত উত্থাপিত হইয়াছ, তখন সেই ঊর্ধ্বস্থানের বিষয় চেষ্টা কর, যেখানে খ্রীষ্ট আছেন, ঈশ্বরের দক্ষিণে বসিয়া আছেন।
তোমরা বিচার করিও না, যেন বিচারিত না হও।কিম্বা মাছ চাহিলে তাহাকে সাপ দিবে?অতএব তোমরা মন্দ হইয়াও যদি তোমাদের সন্তানদিগকে উত্তম উত্তম দ্রব্য দান করিতে জান, তবে ইহা কত অধিক নিশ্চয় যে, তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা, যাহারা তাঁহার কাছে যাচ্ঞা করে, তাহাদিগকে উত্তম উত্তম দ্রব্য দান করিবেন।অতএব সর্ববিষয়ে তোমরা যাহা যাহা ইচ্ছা কর যে, লোকে তোমাদের প্রতি করে, তোমরাও তাহাদের প্রতি সেইরূপ করিও; কেননা ইহাই ব্যবস্থার ও ভাববাদি-গ্রন্থের সার।সঙ্কীর্ণ দ্বার দিয়া প্রবেশ কর; কেননা সর্বনাশে যাইবার দ্বার প্রশস্ত ও পথ পরিসর, এবং অনেকেই তাহা দিয়া প্রবেশ করে;কেননা জীবনে যাইবার দ্বার সঙ্কীর্ণ ও পথ দুর্গম, এবং অল্প লোকেই তাহা পায়।ভাক্ত ভাববাদিগণ হইতে সাবধান; তাহারা মেষের বেশে তোমাদের নিকটে আইসে, কিন্তু অন্তরে গ্রাসকারী কেন্দুয়া।তোমরা তাহাদের ফল দ্বারাই তাহাদিগকে চিনিতে পারিবে। লোকে কি কাঁটা গাছ হইতে দ্রাক্ষাফল, কিম্বা শিয়ালকাঁটা হইতে ডুমুর ফল সংগ্রহ করে?সেই প্রকারে প্রত্যেক ভাল গাছে ভাল ফল ধরে, কিন্তু মন্দ গাছে মন্দ ফল ধরে।ভাল গাছে মন্দ ফল ধরিতে পারে না, এবং মন্দ গাছে ভাল ফল ধরিতে পারে না।যে কোন গাছে ভাল ফল ধরে না, তাহা কাটিয়া আগুনে ফেলিয়া দেওয়া যায়।কেননা যেরূপ বিচারে তোমরা বিচার কর, সেইরূপ বিচারে তোমরাও বিচারিত হইবে; এবং তোমরা যে পরিমাণে পরিমাণ কর, সেই পরিমাণে তোমাদের নিমিত্ত পরিমাণ করা যাইবে।
তুমি সদাপ্রভুতে আপনার ভার অর্পণ কর; তিনিই তোমাকে ধরিয়া রাখিবেন, কখনও ধার্মিককে বিচলিত হইতে দিবেন না।
অতএব, হে পবিত্র ভ্রাতৃগণ, স্বর্গীয় আহ্বানের অংশিগণ, তোমরা আমাদের ধর্ম-প্রতিজ্ঞার প্রেরিত ও মহাযাজকের প্রতি, যীশুর প্রতি, দৃষ্টি রাখ;
তোমরা পৃথিবীতে আপনাদের জন্য ধন সঞ্চয় করিও না; এখানে ত কীটে ও মরিচায় ক্ষয় করে, এবং এখানে চোরে সিঁধ কাটিয়া চুরি করে।অতএব তুমি যখন দান কর, তখন তোমার সম্মুখে তূরী বাজাইও না, যেমন কপটীরা লোকের কাছে গৌরব পাইবার জন্য সমাজ-গৃহে ও পথে করিয়া থাকে; আমি তোমাদিগকে সত্য বলিতেছি, তাহারা আপনাদের পুরস্কার পাইয়াছে।কিন্তু স্বর্গে আপনাদের জন্য ধন সঞ্চয় কর; সেখানে কীটে ও মরিচায় ক্ষয় করে না, সেখানে চোরেও সিঁধ কাটিয়া চুরি করে না।কারণ যেখানে তোমার ধন, সেখানে তোমার মনও থাকিবে।
যে কেহ তোমাদের অন্তরস্থ প্রত্যাশার হেতু জিজ্ঞাসা করে, তাহাকে উত্তর দিতে সর্বদা প্রস্তুত থাক। কিন্তু মৃদুতা ও ভয় সহকারে উত্তর দিও, সৎবিবেক রক্ষা কর,
প্রত্যাশার ঈশ্বর তোমাদিগকে বিশ্বাস দ্বারা সমস্ত আনন্দে ও শান্তিতে পরিপূর্ণ করুন, যেন তোমরা পবিত্র আত্মার পরাক্রমে প্রত্যাশায় উপচিয়া পড়।
সদাপ্রভু আমার পক্ষে সকলই সিদ্ধ করিবেন; হে সদাপ্রভু, তোমার দয়া অনন্তকালস্থায়ী; তোমার স্বহস্তের কর্ম পরিত্যাগ করিও না।
সদাপ্রভু, আমার চিত্ত গর্বিত নয়, আমার দৃষ্টি উচ্চ নয়, আমি ব্যাপৃত হই নাই মহৎ বিষয়ে, আমার বোধের অতীত আশ্চর্য আশ্চর্য বিষয়ে।আমি আপন প্রাণকে শান্ত দান্ত করিয়াছি, সেই শিশুর ন্যায়, যে স্তন্য ছাড়িয়া মাতার সঙ্গে আছে, আমার প্রাণ ত্যক্তস্তন্য শিশুর ন্যায় আমার সঙ্গে আছে।
কেহ আপনাকে বঞ্চনা না করুক। তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি যদি আপনাকে এই যুগে জ্ঞানবান বলিয়া মনে করে, তবে সে জ্ঞানবান হইবার জন্য মূর্খ হউক।
কেবল, খ্রীষ্টের সুসমাচারের যোগ্যরূপে তাঁহার প্রজাদের মত আচরণ কর; আমি আসিয়া তোমাদিগকে দেখি, কি অনুপস্থিত থাকি, আমি যেন তোমাদের বিষয়ে শুনিতে পাই যে, তোমরা এক আত্মাতে স্থির আছ, এক প্রাণে সুসমাচারের বিশ্বাসের পক্ষে মল্লযুদ্ধ করিতেছ;