কখনও কখনও আমরা ভুল করে বেশি বেশি জিনিসপত্রের পেছনে ছুটে চলি, আল্লাহর সাথে সম্পর্ক মজবুত করার চেয়ে। মনে রাখবেন, পবিত্র বাইবেলে বলা আছে, "প্রথমে তোমরা ঈশ্বরের রাজ্য ও তাঁর ধার্মিকতার সন্ধান করো, আর তোমাদের এই সবকিছু দেওয়া হবে" (মথি ৬:৩৩)। আল্লাহ আমাদেরকে জিনিসপত্র দেন যেন আমরা তাঁর ইচ্ছামতো সেগুলো বুদ্ধিমত্তার সাথে ব্যবহার করি।
আমাদের যা কিছু আছে, আসলে সেগুলোর কোনোটাই আমাদের নিজের নয়, এই কথাটা মনে রাখা খুব জরুরি। কম বা বেশি, যা কিছু আমাদের আছে, সবই আল্লাহর রহমত। আমাদের যা আছে তা নিয়ে আমাদের গর্ব করা উচিত নয়, যেন এটা আমাদের নিজের শক্তি বা বুদ্ধির পুরস্কার।
আল্লাহ নম্র হৃদয়কে বেশি মান্য করেন, যে হৃদয় তাকে খোঁজে এবং তাঁর আদেশ অনুযায়ী চলতে চায়। তাই আমাদের উচিত আল্লাহকে আরও বেশি বেশি পাওয়ার জন্য আকুল হওয়া, তাঁর সান্নিধ্য এবং তার পথনির্দেশনা আমাদের জীবনে চাওয়া।
কেননা ধনাসক্তি সকল মন্দের একটা মূল; তাহাতে রত হওয়াতে কতক লোক বিশ্বাস হইতে বিপথগামী হইয়াছে, এবং অনেক যাতনারূপ কণ্টকে আপনারা আপনাদিগকে বিদ্ধ করিয়াছে।
পরে তিনি তাহাদিগকে বলিলেন, সাবধান, সর্বপ্রকার লোভ হইতে আপনাদিগকে রক্ষা করিও, কেননা উপচিয়া পড়িলেও মনুষ্যের সমপত্তিতে তাহার জীবন হয় না।
কিন্তু যাহারা ধনী হইতে বাসনা করে, তাহারা পরীক্ষাতে ও ফাঁদে এবং নানাবিধ মূঢ় ও হানিকর অভিলাষে পতিত হয়, সেই সকল মনুষ্যদিগকে সংহারে ও বিনাশে মগ্ন করে।
যে ব্যক্তি রৌপ্য ভালবাসে, সে রৌপ্যে তৃপ্ত হয় না; আর যে ব্যক্তি ধনরাশি ভালবাসে, সে ধনাগমে তৃপ্ত হয় না; ইহাও অসার।
তোমাদের আচার-ব্যবহার ধনাসক্তিবিহীন হউক; তোমাদের যাহা আছে, তাহাতে সন্তুষ্ট থাক; কারণ তিনিই বলিয়াছেন, “আমি কোন ক্রমে তোমাকে ছাড়িব না, ও কোন ক্রমে তোমাকে ত্যাগ করিব না।”
তোমার প্রতিবাসীর গৃহে লোভ করিও না; প্রতিবাসীর স্ত্রীতে, কিম্বা তাহার দাসে কি দাসীতে, কিম্বা তাহার গরুতে কি গর্দভে, প্রতিবাসীর কোন বস্তুতেই লোভ করিও না।
কেহই দুই কর্তার দাসত্ব করিতে পারে না; কেননা সে হয় ত একজনকে দ্বেষ করিবে, আর একজনকে প্রেম করিবে, নয় ত একজনের প্রতি অনুরক্ত হইবে, আর একজনকে তুচ্ছ করিবে; তোমরা ঈশ্বর এবং ধন উভয়ের দাসত্ব করিতে পার না।
তোমরা জগৎকে প্রেম করিও না, জগতীস্থ বিষয় সকলও প্রেম করিও না। কেহ যদি জগৎকে প্রেম করে, তবে পিতার প্রেম তাহার অন্তরে নাই।
কেননা মনুষ্যেরা আত্মপ্রিয়, অর্থপ্রিয়, আত্মশ্লাঘী, অভিমানী, ধর্মনিন্দুক, পিতামাতার অবাধ্য, অকৃতজ্ঞ, অসাধু,
তোমার প্রতিবাসীর স্ত্রীতে লোভ করিও না; প্রতিবাসীর গৃহে কি ক্ষেত্রে, কিম্বা তাহার দাসে কি দাসীতে, কিম্বা তাহার গরুতে কি গর্দভে, প্রতিবাসীর কোন বস্তুতেই লোভ করিও না।
আর মনে মনে বলিও না যে, আমারই পরাক্রমে ও বাহুবলে আমি এই সকল ঐশ্বর্য পাইয়াছি,কিন্তু তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে স্মরণে রাখিবে, কেননা তিনি তোমার পিতৃপুরুষদের কাছে আপনার যে নিয়ম বিষয়ক দিব্য করিয়াছেন, তাহা অদ্যকার মত স্থির করণার্থে তিনিই তোমাকে ঐশ্বর্য লাভের সামর্থ দিলেন।
হে আমার প্রিয় ভ্রাতৃগণ, শুন, সংসারে যাহারা দরিদ্র, ঈশ্বর কি তাহাদিগকে মনোনীত করেন নাই, যেন তাহারা বিশ্বাসে ধনবান হয়, এবং যাহারা তাঁহাকে প্রেম করে, তাহাদের কাছে অঙ্গীকৃত রাজ্যের অধিকারী হয়?
তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দিতেছেন, তথাকার কোন নগর-দ্বারের ভিতরে যদি তোমার নিকটস্থ কোন ভ্রাতা দরিদ্র হয়, তবে তুমি আপন হৃদয় কঠিন করিও না, বা দরিদ্র ভ্রাতার প্রতি আপন হস্ত রুদ্ধ করিও না;কিন্তু তাহার প্রতি মুক্তহস্ত হইয়া তাহার অভাব হেতু প্রয়োজনানুসারে তাহাকে অবশ্য ঋণ দিও।
তুমি অন্যায় বিচার করিবে না, কাহারও মুখাপেক্ষা করিবে না, ও উৎকোচ লইবে না; কেননা উৎকোচ জ্ঞানীদের চক্ষু অন্ধ করে ও ধার্মিকদের বাক্য বিপরীত করে।
তুমি সুদের জন্য, রৌপ্যের সুদ, খাদ্য সামগ্রীর সুদ, কোন দ্রব্যের সুদ পাইবার জন্য, আপন ভ্রাতাকে ঋণ দিবে না।জারজ ব্যক্তি সদাপ্রভুর সমাজে প্রবেশ করিবে না; তাহার দশম পুরুষ পর্যন্ত ও সদাপ্রভুর সমাজে প্রবেশ করিতে পাইবে না।সুদের জন্য বিদেশীকে ঋণ দিতে পার, কিন্তু সুদের জন্য আপন ভ্রাতাকে ঋণ দিবে না; যেন তুমি যে দেশ অধিকার করিতে যাইতেছ, সেই দেশে তোমার হস্তকৃত সমস্ত কর্মে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে আশীর্বাদ করেন।
আমি লুটিত দ্রব্যের মধ্যে উত্তম একখানি বাবিলীয় শাল, দুই শত শেকল রৌপ্য ও পঞ্চাশ শেকল পরিমিত এক থান স্বর্ণ দেখিয়া লোভে পড়িয়া হরণ করিয়াছি; আর দেখুন, সেই সকল আমার তাম্বুর মধ্যে ভূমিতে লুকান রহিয়াছে, আর নিচে রৌপ্য আছে।
আমি যদি স্বর্ণকে আশাভূমি করিয়া থাকি, সুবর্ণকে বলিয়া থাকি, তুমি মম আশ্রয়,যদি আনন্দ করিয়া থাকি, সম্পদ বাড়িয়াছে বলিয়া, হস্তে সমৃদ্ধি লাভ হইয়াছে বলিয়া;যখন তেজোময় প্রভাকরকে দেখিয়াছি, স্বজ্যোৎস্না-বিহারী চন্দ্রকে দেখিয়াছি,তখন যদি আমার মন গোপনে মুগ্ধ হইয়া থাকে, আমার মুখ যদি হস্তকে চুম্বন করিয়া থাকে,তবে তাহাও বিচারকর্তাদের শাসনীয় অপরাধ হইত, কেননা তাহা হইলে ঊর্ধ্ববাসী ঈশ্বরকে অস্বীকার করিতাম।
ধার্মিকের অল্প সম্পত্তি ভাল, বহুদুষ্টের ধনরাশি অপেক্ষা ভাল।কারণ দুষ্টদের বাহু ভগ্ন হইবে; কিন্তু সদাপ্রভু ধার্মিকদিগকে ধরিয়া রাখেন।
যাহারা আপনাদের ধনে নির্ভর করে, আপনাদের সম্পত্তিবাহুল্যের শ্লাঘা করে,তাহাদের মধ্যে কেহই কোন মতে ভ্রাতাকে মুক্ত করিতে পারে না, কিম্বা তাহার প্রায়শ্চিত্তের জন্য ঈশ্বরকে কিছু দিতে পারে না,
‘দেখ, ঐ ব্যক্তি ঈশ্বরকে আপন বল করিত না, সে আপনার ধনবাহুল্যে নির্ভর করিত; সে দুষ্টতায় আপনাকে বলবান করিত।’
তোমরা উপদ্রবে নির্ভর করিও না, অপহরণের শ্লাঘা করিও না; ঐশ্বর্যের বাহুল্য হইলে তাহাতে মন দিও না।
কেহ আপনাকে ধনবান দেখায় কিন্তু তাহার কিছুই নাই; কেহ বা নিজেকে দরিদ্র দেখায় কিন্তু তাহার মহাধন আছে।
ধন সঞ্চয় করিতে অত্যন্ত যত্ন করিও না, তোমার নিজ বুদ্ধি হইতে ক্ষান্ত হও।তুমি যখন ধনের দিকে চাহিতেছ? তাহা আর নাই; কারণ ঈগল যেমন আকাশে উড়িয়া যায়, তেমনি ধন আপনার জন্য নিশ্চয়ই পক্ষ প্রস্তুত করে।
বিশ্বস্ত লোক অনেক আশীর্বাদ পাইবে; কিন্তু যে ধনবান হইবার জন্য তাড়াতাড়ি করে, সে অদণ্ডিত থাকিবে না।
সূর্যের নিচে আমি এই বিষম অনিষ্ট দেখিয়াছি যে, ধনস্বামীর অনিষ্টের জন্যই ধন রক্ষিত হয়;আর দুর্ঘটনায় সেই ধনের ক্ষয় হয়, এবং পুত্রের জন্ম দিলে তাহার হস্তে কিছুই নাই।সে মাতৃগর্ভ হইতে উলঙ্গ আইসে; যেমন আইসে তেমনি উলঙ্গই পুনরায় চলিয়া যায়; পরিশ্রম করিলেও সে যাহা সঙ্গে করিয়া লইয়া যাইতে পারে, এমন কিছুই নাই।
ধিক্ তাহাদিগকে, যাহারা গৃহের সঙ্গে গৃহ যোগ করে, ক্ষেত্রের সঙ্গে ক্ষেত্র সংযোগ করে, অবশেষে আর স্থান থাকে না, তোমাদিগকে দেশমধ্যে একাকী বাস করান হয়!
কেন অখাদ্যের নিমিত্ত রৌপ্য তৌল করিতেছ, যাহাতে তৃপ্তি নাই, তাহার জন্য স্ব স্ব শ্রমফল দিতেছ? শুন, আমার কথা শুন, উত্তম ভক্ষ্য ভোজন কর, পুষ্টিকর দ্রব্যে তোমাদের প্রাণ আপ্যায়িত হউক।
প্রসব না করিলেও যেমন তিত্তির পক্ষী শাবকদিগকে সংগ্রহ করে, তেমনি সেই ব্যক্তি যে অন্যায়ে ধন সঞ্চয় করে, সেই ধন অর্ধ বয়সে তাহাকে ছাড়িয়া যাইবে, এবং শেষকালে সে মূঢ় হইয়া পড়িবে।
তাহারা আপন আপন রৌপ্য চকে ফেলিয়া দিবে, তাহাদের সুবর্ণ অশুচি বস্তু হইবে; সদাপ্রভুর ক্রোধের দিনে তাহাদের স্বর্ণ কি রৌপ্য তাহাদিগকে রক্ষা করিতে পারিবে না; তাহা তাহাদের প্রাণ তৃপ্ত, কিম্বা তাহাদের উদর পূর্ণ করিবে না, কেননা তাহাই তাহাদের অপরাধজনক বিঘ্ন হইয়াছে।
দুষ্টের গৃহে কি এখনও দুষ্টতার ভাণ্ডার ও ঘৃণিত হীন ঐফা আছে?দুষ্টতার নিক্তিতে ও ছলনার বাটখারায় আমি কি বিশুদ্ধ হইব?তথাকার ধনবান লোকেরা দৌরাত্ম্যে পরিপূর্ণ, ও তন্নিবাসিগণ মিথ্যা কথা বলিয়াছে, তাহাদের মুখমধ্যে জিহ্বা প্রবঞ্চক।
ধিক্ তাহাকে যে আপন কুলের নিমিত্ত কুলাভ সংগ্রহ করে, যেন উচ্চে বাসা করিতে পারে, যেন অমঙ্গলের হস্ত হইতে উদ্ধার পাইতে পারে।
সদাপ্রভুর ক্রোধের দিনে তাহাদের রৌপ্য কি তাহাদের সুবর্ণ তাহাদিগকে উদ্ধার করিতে পারিবে না; কিন্তু তাঁহার অন্তর্জ্বালার তাপে সমস্ত দেশ অগ্নিভক্ষিত হইবে, কেননা তিনি দেশনিবাসী সকলের বিনাশ, হাঁ, ভয়ানক সংহার করিবেন।
তোমরা পৃথিবীতে আপনাদের জন্য ধন সঞ্চয় করিও না; এখানে ত কীটে ও মরিচায় ক্ষয় করে, এবং এখানে চোরে সিঁধ কাটিয়া চুরি করে।অতএব তুমি যখন দান কর, তখন তোমার সম্মুখে তূরী বাজাইও না, যেমন কপটীরা লোকের কাছে গৌরব পাইবার জন্য সমাজ-গৃহে ও পথে করিয়া থাকে; আমি তোমাদিগকে সত্য বলিতেছি, তাহারা আপনাদের পুরস্কার পাইয়াছে।কিন্তু স্বর্গে আপনাদের জন্য ধন সঞ্চয় কর; সেখানে কীটে ও মরিচায় ক্ষয় করে না, সেখানে চোরেও সিঁধ কাটিয়া চুরি করে না।কারণ যেখানে তোমার ধন, সেখানে তোমার মনও থাকিবে।
আর যে কাঁটাবনের মধ্যে উপ্ত, এ সেই যে সেই বাক্য শুনে, আর সংসারের চিন্তা ও ধনের মায়া সেই বাক্য চাপিয়া রাখে, তাহাতে সে ফলহীন হয়।
বস্তুতঃ মনুষ্য যদি সমুদয় জগৎ লাভ করিয়া আপন প্রাণ হারায়, তবে তাহার কি লাভ হইবে? কিম্বা মনুষ্য আপন প্রাণের পরিবর্তে কি দিবে?
যীশু তাহাকে কহিলেন, যদি সিদ্ধ হইতে ইচ্ছা কর, তবে চলিয়া যাও, তোমার যাহা যাহা আছে, বিক্রয় কর, এবং দরিদ্রদিগকে দান কর, তাহাতে স্বর্গে ধন পাইবে; আর আইস, আমার পশ্চাদ্গামী হও।কিন্তু এই কথা শুনিয়া সেই যুবক দুঃখিত হইয়া চলিয়া গেল, কারণ তাহার বিস্তর সমপত্তি ছিল।তখন যীশু আপন শিষ্যদিগকে কহিলেন, আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, ধনবানের পক্ষে স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করা দুষ্কর।আবার তোমাদিগকে কহিতেছি, ঈশ্বরের রাজ্যে ধনবানের প্রবেশ করা অপেক্ষা বরং সূচের ছিদ্র দিয়া উটের যাওয়া সহজ।
হা অধ্যাপক ও ফরীশীগণ, কপটীরা, ধিক্ তোমাদিগকে! কারণ তোমরা পানপাত্র ও ভোজনপাত্র বাহিরে পরিষ্কার করিয়া থাক, কিন্তু সেইগুলির ভিতরে দৌরাত্ম্য ও অন্যায়ে ভরা।
যাহারা বাক্যটি শুনিয়াছে, কিন্তু সংসারের চিন্তা, ধনের মায়া ও অন্যান্য বিষয়ের অভিলাষ ভিতরে গিয়া ঐ বাক্য চাপিয়া রাখে,
যীশু তাহার প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া তাহাকে ভাল বাসিলেন, এবং কহিলেন, এক বিষয়ে তোমার ত্রুটি আছে, যাও, তোমার যাহা কিছু আছে, বিক্রয় কর, আর দরিদ্রদিগকে দান কর, তাহাতে স্বর্গে ধন পাইবে; আর আইস, আমার পশ্চাদ্গামী হও।এই কথায় সে বিষণ্ন হইল, দুঃখিত হইয়া চলিয়া গেল, কারণ তাহার বিস্তর সমপত্তি ছিল।তখন যীশু চারিদিকে দৃষ্টিপাত করিয়া আপন শিষ্যদিগকে কহিলেন, যাহাদের ধন আছে, তাহাদের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা কেমন দুষ্কর!তাঁহার কথায় শিষ্যেরা চমৎকৃত হইলেন; কিন্তু যীশু পুনর্বার তাঁহাদিগকে কহিলেন, বৎসগণ, যাহারা ধনে নির্ভর করে, ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা তাহাদের পক্ষে কেমন দুষ্কর!ঈশ্বরের রাজ্যে ধনবানের প্রবেশ করা অপেক্ষা বরং সূচের ছিদ্র দিয়া উটের যাওয়া সহজ।
আর যাহা কাঁটাবনের মধ্যে পড়িল, তাহারা এমন লোক, যাহারা শুনিয়াছে, কিন্তু চলিতে চলিতে জীবনের চিন্তা ও ধন ও সুখভোগের দ্বারা চাপা পড়ে, এবং পক্ব ফল উৎপন্ন করে না।
তোমাদের যাহা আছে, বিক্রয় করিয়া দান কর। আপনাদের জন্য এমন থলি প্রস্তুত কর, যাহা জীর্ণ হয় না; স্বর্গে অক্ষয় ধন সঞ্চয় কর, যেখানে চোর নিকটে আইসে না, কীটেও ক্ষয় করে না;কেননা যেখানে তোমাদের ধন, সেখানে তোমাদের মনও থাকিবে।
কোন ভৃত্য দুই কর্তার দাসত্ব করিতে পারে না, কেননা সে হয় একজনকে ঘৃণা করিবে, অন্যকে প্রেম করিবে, নয় ত একজনে অনুরক্ত হইবে, অন্যকে তুচ্ছ করিবে। তোমরা ঈশ্বর এবং ধন উভয়ের দাসত্ব করিতে পার না।
তখন ফরীশীরা, যাহারা টাকা ভালবাসিত, এই সকল কথা শুনিতেছিল, আর তাহারা তাঁহাকে উপহাস করিতে লাগিল।
একজন ধনবান লোক ছিল, সে বেগুনে কাপড় ও সূক্ষ্ম বস্ত্র পরিধান করিত, এবং প্রতিদিন জাঁকজমকের সহিত আমোদ প্রমোদ করিত।পরে সে তাহাকে ডাকিয়া কহিল, তোমার বিষয়ে এ কি কথা শুনিতেছি? তোমার দেওয়ানী-পদের হিসাব দেও, কেননা তুমি আর দেওয়ান থাকিতে পারিবে না।তাহার ফটক-দ্বারে লাসার নামে একজন কাঙ্গালকে রাখা হইয়াছিল,তাহার শরীর ঘায়ে ভরা ছিল, এবং সেই ধনবানের মেজ হইতে পতিত গুঁড়াগাঁড়া খাইতে বাঞ্ছা করিত; আবার কুকুরেরাও আসিয়া তাহার ঘা চাটিত।কালক্রমে ঐ কাঙ্গাল মরিয়া গেল, আর স্বর্গদূতগণ তাহাকে লইয়া অব্রাহামের কোলে বসাইলেন।পরে সেই ধনবানও মরিল, এবং কবরপ্রাপ্ত হইল। আর পাতালে, যাতনার মধ্যে, সে চক্ষু তুলিয়া দূর হইতে অব্রাহামকে এবং তাঁহার কোলে লাসারকে দেখিতে পাইল।তাহাতে সে উচ্চৈঃস্বরে কহিল, পিতঃ অব্রাহাম, আমার প্রতি দয়া করুন, লাসারকে পাঠাইয়া দিউন, যেন সে অঙ্গুলির অগ্রভাগ জলে ডুবাইয়া আমার জিহ্বা শীতল করে, কেননা এই অগ্নিশিখায় আমি যন্ত্রণা পাইতেছি।কিন্তু অব্রাহাম কহিলেন, বৎস, স্মরণ কর; তোমার সুখ তুমি জীবনকালে পাইয়াছ, আর লাসার তদ্রূপ দুঃখ পাইয়াছে; এখন সে এই স্থানে সান্ত্বনা পাইতেছে, আর তুমি যন্ত্রণা পাইতেছ।আর এই সকল ছাড়া আমাদের ও তোমাদের মধ্যে বৃহৎ এক শূন্যস্থলী স্থির রহিয়াছে, যেন এই স্থান হইতে যাহারা তোমাদের কাছে যাইতে চাহে, তাহারা না পারে, আবার ঐ স্থান হইতে আমাদের কাছে কেহ পার হইয়া আসিতে না পারে।তখন সে কহিল, তবে আমি আপনাকে বিনয় করি, পিতঃ, আমার পিতার বাটীতে উহাকে পাঠাইয়া দিউন;কেননা আমার পাঁচটি ভাই আছে; সে গিয়া তাহাদের নিকটে সাক্ষ্য দিউক, যেন তাহারাও এই যাতনা-স্থানে না আইসে।কিন্তু অব্রাহাম কহিলেন, তাহাদের নিকটে মোশি ও ভাববাদিগণ আছেন; তাঁহাদেরই কথা তাহারা শুনুক।তখন সেই দেওয়ান মনে মনে কহিল, কি করিব? আমার প্রভু ত আমার নিকট হইতে দেওয়ানী-পদ লইতেছেন; মাটি কাটিবার বল আমার নাই, ভিক্ষা করিতে আমার লজ্জা হয়।তখন সে বলিল, তাহা নয়, পিতঃ অব্রাহাম, বরং মৃতদের মধ্য হইতে যদি কেহ তাহাদের নিকটে যায়, তাহা হইলে তাহারা মন ফিরাইবে।কিন্তু তিনি কহিলেন, তাহারা যদি মোশির ও ভাববাদিগণের কথা না শুনে, তবে মৃতগণের মধ্য হইতে কেহ উঠিলেও তাহারা মানিবে না।
এই কথা শুনিয়া যীশু তাহাকে কহিলেন, এখনও এক বিষয়ে তোমার ত্রুটি আছে; তোমার যাহা কিছু আছে, সমস্ত বিক্রয় কর, আর দরিদ্রদিগকে বিতরণ কর, তাহাতে স্বর্গে ধন পাইবে; আর আইস, আমার পশ্চাদ্গামী হও।কিন্তু এই কথা শুনিয়া সে অতিশয় দুঃখিত হইল, কারণ সে অতিশয় ধনবান ছিল।তখন তাহার প্রতি দৃষ্টি করিয়া যীশু কহিলেন, যাহাদের ধন আছে, তাহাদের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা কেমন দুষ্কর!বাস্তবিক ঈশ্বরের রাজ্যে ধনবানের প্রবেশ করা অপেক্ষা বরং সূচের ছিদ্র দিয়া উষ্ট্রের প্রবেশ করা সহজ।
কিন্তু অননিয় নামে এক ব্যক্তি, এবং তাহার সহিত তাহার স্ত্রী সাফীরা, একটি সমপত্তি বিক্রয় করিল,সে তৎক্ষণাৎ তাহার চরণে পড়িয়া প্রাণত্যাগ করিল; আর ঐ যুবকেরা ভিতরে আসিয়া তাহাকে মৃত দেখিল, এবং বাহিরে লইয়া গিয়া তাহার স্বামীর পার্শ্বে কবর দিল।তখন সমস্ত মণ্ডলী, এবং যত লোক এই কথা শুনিল, সকলেই অতিশয় ভয়গ্রস্ত হইল।আর প্রেরিতদের হস্ত দ্বারা লোকদের মধ্যে অনেক চিহ্ন-কার্য ও অদ্ভুত লক্ষণ সাধিত হইত; এবং তাঁহারা সকলে একচিত্তে শলোমনের বারান্দাতে উপস্থিত হইতেন।কিন্তু অন্য লোকদের মধ্যে তাঁহাদের সঙ্গে যোগ দিতে কাহারও সাহস হইত না, তথাপি লোকেরা তাহাদিগকে সমাদর করিত।আর উত্তর উত্তর অনেক পুরুষ ও স্ত্রীলোক বিশ্বাসী হইয়া প্রভুতে সংযুক্ত হইতে লাগিল।এমন কি, লোকেরা রোগীদিগকে বাহিরে পথে পথে আনিয়া শয্যায় ও খাটিয়াতে করিয়া রাখিত, যেন পিতর আসিবার সময়ে অন্ততঃ তাঁহার ছায়া কাহারও কাহারও উপরে পড়ে।আর যিরূশালেমের চারিদিকের নগরসমূহ হইতেও অনেক লোক রোগীদিগকে এবং অশুচি আত্মা দ্বারা ক্লিষ্ট ব্যক্তিদিগকে লইয়া সমাগত হইত, আর তাহারা সকলেই সুস্থ হইত।পরে মহাযাজক এবং তাঁহার সঙ্গীরা সকলে অর্থাৎ সদ্দূকী-সমপ্রদায় উঠিলেন,তাহারা ঈর্ষাতে পরিপূর্ণ হইলেন, এবং প্রেরিতদিগকে ধরিয়া সাধারণ কারাগারে বদ্ধ করিলেন।কিন্তু রাত্রিকালে প্রভুর এক দূত কারাগারের দ্বার সকল খুলিয়া দিলেন, ও তাঁহাদিগকে বাহিরে আনিয়া কহিলেন,এবং স্ত্রীর জ্ঞাতসারে তাহার মূল্যের কিছু রাখিয়া দিল, আর কতক আনিয়া প্রেরিতদের চরণে রাখিল।তোমরা যাও, ধর্মধামে দাঁড়াইয়া লোকদিগকে এই জীবনের সমস্ত কথা বল।ইহা শুনিয়া তাঁহারা প্রভাত কালে ধর্মধামে প্রবেশ করিয়া উপদেশ দিতে লাগিলেন। ইতিমধ্যে মহাযাজক ও তাঁহার সঙ্গীরা আসিয়া মহাসভাকে এবং ইস্রায়েল-সন্তানগণের সমস্ত প্রাচীনদলকে ডাকিয়া একত্র করিলেন, এবং উহাঁদিগকে আনাইবার নিমিত্তে কারাগারে লোক পাঠাইলেন।কিন্তু যে পদাতিকেরা গেল, তাহারা কারাগারে তাঁহাদিগকে পাইল না;তখন ফিরিয়া আসিয়া এই সংবাদ দিল, আমরা দেখিলাম, কারাগার সুদৃঢ়রূপে বদ্ধ, দ্বারে দ্বারে রক্ষকেরা দাঁড়াইয়া আছে, কিন্তু দ্বার খুলিলে ভিতরে কাহাকেও পাইলাম না।এই কথা শুনিয়া ধর্মধামের সেনাপতি এবং প্রধান যাজকেরা ভাবিয়া আকুল হইলেন যে, ইহার পরিণাম কি হইবে।ইতিমধ্যে কোন ব্যক্তি আসিয়া তাঁহাদিগকে এই সংবাদ দিল, দেখুন, আপনারা যে লোকদিগকে কারাগারে রাখিয়াছিলেন, তাঁহারা ধর্মধামে দাঁড়াইয়া আছে, ও লোকদিগকে উপদেশ দিতেছে।তখন সেনাপতি পদাতিকদিগকে সঙ্গে করিয়া তথায় গিয়া তাঁহাদিগকে আনিলেন, কিন্তু বলের সহিত নয়, কেননা তাঁহারা লোকদিগকে ভয় করিলেন, পাছে লোকে তাঁহাদিগকে পাথর মারে।পরে তাঁহারা তাঁহাদিগকে আনিয়া মহাসভার মধ্যে দাঁড় করাইলেন, আর মহাযাজক তাঁহাদিগকে জিজ্ঞাসা করিলেন, বলিলেন,আমরা তোমাদিগকে এই নামে উপদেশ দিতে দৃঢ়রূপে নিষেধ করিয়াছিলাম; তথাপি দেখ, তোমরা আপনাদের উপদেশে যিরূশালেম পরিপূর্ণ করিয়াছ, এবং সেই ব্যক্তির রক্ত আমাদের উপরে বর্তাইতে মনস্থ করিতেছ।কিন্তু পিতর ও অন্য প্রেরিতগণ উত্তর করিলেন, মনুষ্যদের অপেক্ষা বরং ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করিতে হইবে।তখন পিতর কহিলেন, অননিয়, শয়তান কেন তোমার হৃদয় এমন পূর্ণ করিয়াছে যে, তুমি পবিত্র আত্মার কাছে মিথ্যা বলিলে, এবং ভূমির মূল্য হইতে কতকটা রাখিয়া দিলে?
কিন্তু পিতর তাহাকে বলিলেন, তোমার রৌপ্য তোমার সঙ্গে বিনষ্ট হউক, কেননা ঈশ্বরের দান তুমি টাকা দিয়া ক্রয় করিতে মনস্থ করিয়াছ।
তাহারা সর্বপ্রকার অধার্মিকতা, দুষ্টতা, লোভ ও হিংসাতে পরিপূরিত, মাৎসর্য, বধ, বিবাদ, ছল ও দুর্বৃত্তিতে পূর্ণ;
তবে কি বলিব? ব্যবস্থা কি পাপ? তাহা দূরে থাকুক; বরং পাপ কি, তাহা আমি জানিতাম না, কেবল ব্যবস্থা দ্বারা জানিয়াছি; কেননা “লোভ করিও না,” এই কথা যদি ব্যবস্থা না বলিত, তবে লোভ কি, তাহা জানিতাম না;
তোমরা কাহারও কিছু ধারিও না, কেবল পরসপর প্রেম ধারিও; কেননা পরকে যে প্রেম করে, সে ব্যবস্থা পূর্ণরূপে পালন করিয়াছে।কারণ “ব্যভিচার করিও না, নরহত্যা করিও না, চুরি করিও না, লোভ করিও না,” এবং আর যে কোন আজ্ঞা থাকুক, সেই সকল এই বচনে সঙ্কলিত হইয়াছে, “প্রতিবাসীকে আপনার মত প্রেম করিও।”
এই জগতের ব্যভিচারী কি লোভী কি পরধনগ্রাহী কি প্রতিমাপূজকদের সংসর্গ একেবারে ছাড়িতে হইবে, তাহা নয়, কেননা তাহা হইলে জগতের বাহিরে যাওয়া তোমাদের আবশ্যক হইয়া পড়ে।কিন্তু এখন তোমাদিগকে লিখিতেছি যে, ভ্রাতা নামে আখ্যাত কোন ব্যক্তি যদি ব্যভিচারী কি লোভী কি প্রতিমাপূজক কি কটূভাষী কি মাতাল কি পরধনগ্রাহী হয়, তবে তাহার সংসর্গে থাকিতে নাই, এমন ব্যক্তির সহিত আহার করিতেও নাই।
কি চোর কি লোভী কি মাতাল কি কটূভাষী কি পরধনগ্রাহী, তাহারা ঈশ্বরের রাজ্যে অধিকার পাইবে না।
সপ্তাহের প্রথম দিনে তোমরা প্রত্যেকে আপনাদের নিকটে কিছু কিছু রাখিয়া আপন আপন সঙ্গতি অনুসারে অর্থ সঞ্চয় কর; যেন আমি যখন আসিব, তখনই চাঁদা না হয়।
কেননা তোমরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ জ্ঞাত আছ; তিনি ধনবান হইলেও তোমাদের নিমিত্ত দরিদ্র হইলেন, যেন তোমরা তাঁহার দরিদ্রতায় ধনবান হও।
প্রত্যেক ব্যক্তি আপন আপন হৃদয়ে যেরূপ সঙ্কল্প করিয়াছে, তদনুসারে দান করুক, মনোদুঃখপূর্বক কিম্বা আবশ্যক বলিয়া না দিউক; কেননা ঈশ্বর হৃষ্টচিত্ত দাতাকে ভালবাসেন।
তোমরা ভ্রান্ত হইও না, ঈশ্বরকে পরিহাস করা যায় না; কেননা মনুষ্য যাহা কিছু বুনে তাহাই কাটিবে।ফলতঃ আপন মাংসের উদ্দেশে যে বুনে, সে মাংস হইতে ক্ষয়রূপ শস্য পাইবে; কিন্তু আত্মার উদ্দেশে যে বুনে, সে আত্মা হইতে অনন্ত-জীবনরূপ শস্য পাইবে।
কেননা তোমরা নিশ্চয় জানিতেছ, বেশ্যাগামী কি অশুদ্ধাচারী কি লোভী- সে ত প্রতিমাপূজক- কেহই খ্রীষ্টের ও ঈশ্বরের রাজ্যে অধিকার পায় না।
কিন্তু যাহা যাহা আমার লাভ ছিল, সেই সমস্ত খ্রীষ্টের নিমিত্ত ক্ষতি বলিয়া গণ্য করিলাম।আর বাস্তবিক আমার প্রভু খ্রীষ্ট যীশুর জ্ঞানের শ্রেষ্ঠতা প্রযুক্ত আমি সকলই ক্ষতি বলিয়া গণ্য করিতেছি; তাঁহার নিমিত্ত সমস্তেরই ক্ষতি সহ্য করিয়াছি, এবং তাহা মলবৎ গণ্য করিতেছি, যেন খ্রীষ্টকে লাভ করি,
এই কথা আমি অনটন সম্বন্ধে বলিতেছি না, কেননা আমি যে অবস্থায় থাকি, তাহাতে সন্তুষ্ট থাকিতে শিখিয়াছি।আমি অবনত হইতে জানি, উপচয় ভোগ করিতেও জানি; প্রত্যেক বিষয়ে ও সর্ববিষয়ে আমি তৃপ্ত কি ক্ষুধিত হইতে, এবং উপচয় কি অনটন ভোগ করিতে দীক্ষিত হইয়াছি।
আর আমার ঈশ্বর গৌরবে খ্রীষ্ট যীশুতে স্থিত আপন ধন অনুসারে তোমাদের সমস্ত প্রয়োজনীয় উপকার পূর্ণরূপে সাধন করিবেন।
অতএব তোমরা পৃথিবীস্থ আপন আপন অঙ্গ সকল মৃত্যুসাৎ কর- যথা বেশ্যাগমন, অশুচিতা, মোহ, কুঅভিলাষ, এবং লোভ, ইহা ত প্রতিমাপূজা।
কারণ, তোমরা জান, আমরা কখনও চাটুবাদে কিম্বা লোভের জন্য ছলে লিপ্ত হই নাই, ঈশ্বর ইহার সাক্ষী;
যাহারা এই যুগে ধনবান, তাহাদিগকে এই আজ্ঞা দেও, যেন তাহারা গর্বিতমনা না হয়, এবং ধনের অস্থিরতার উপরে নয়, কিন্তু যিনি ধনবানের ন্যায় সকলই আমাদের ভোগার্থে যোগাইয়া দেন, সেই ঈশ্বরেরই উপরে প্রত্যাশা রাখে;যেন পরের উপকার করে, সৎ ক্রিয়ারূপ ধনে ধনবান হয়, দানশীল হয়, সহভাগীকরণে তৎপর হয়;এইরূপে তাহারা আপনাদের নিমিত্ত, ভাবীকালের জন্য উত্তম ভিত্তিমূলস্বরূপ নিধি প্রস্তুত করুক, যেন, যাহা প্রকৃতরূপে জীবন, তাহাই ধরিয়া রাখিতে পারে।
কেননা তোমরা বন্দিগণের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করিয়াছিলে, এবং আনন্দপূর্বক আপন আপন সমপত্তির লুট স্বীকার করিয়াছিলে, কারণ তোমরা জানিতে, তোমাদের আরও উত্তম নিজ সমপত্তি আছে, আর তাহা নিত্যস্থায়ী।
হে আমার প্রিয় ভ্রাতৃগণ, শুন, সংসারে যাহারা দরিদ্র, ঈশ্বর কি তাহাদিগকে মনোনীত করেন নাই, যেন তাহারা বিশ্বাসে ধনবান হয়, এবং যাহারা তাঁহাকে প্রেম করে, তাহাদের কাছে অঙ্গীকৃত রাজ্যের অধিকারী হয়?কিন্তু তোমরা সেই দরিদ্রকে অনাদর করিয়াছ। ধনবানেরাই কি তোমাদের প্রতি উপদ্রব করে না? তাহারাই কি তোমাদিগকে টানিয়া বিচার-স্থানে লইয়া যায় না?
এখন দেখ, তোমাদের কেহ কেহ বলে, অদ্য কিম্বা কল্য, আমরা অমুক নগরে যাইব, এবং সেখানে এক বৎসর যাপন করিব, বাণিজ্য করিব ও লাভ করিব।তোমরা ত কল্যকার তত্ত্ব জান না; তোমাদের জীবন কি প্রকার? তোমরা ত বাষপস্বরূপ, যাহা ক্ষণেক দৃশ্য থাকে, পরে অন্তর্হিত হয়।উহার পরিবর্তে বরং ইহা বল, ‘প্রভুর ইচ্ছা হইলেই আমরা বাঁচিয়া থাকিব, এবং এ কাজটি বা ও কাজটি করিব’।
এখন দেখ, হে ধনবানেরা, তোমাদের উপরে যে সকল দুর্দশা আসিতেছে, সেই সকলের জন্য রোদন ও হাহাকার কর।হে ভ্রাতৃগণ, যে ভাববাদীরা প্রভুর নামে কথা বলিয়াছিলেন, তাহাদিগকে দুঃখভোগের ও দীর্ঘসহিষ্ণুতার দৃষ্টান্ত বলিয়া মান।দেখ, যাহারা স্থির রহিয়াছে, তাহাদিগকে আমরা ধন্য বলি। তোমরা ইয়োবের ধৈর্যের কথা শুনিয়াছ; প্রভুর পরিণামও দেখিয়াছ, ফলতঃ প্রভু স্নেহপূর্ণ ও দয়াময়।আবার, হে আমার ভ্রাতৃগণ, আমার সর্বপ্রধান কথা এই, তোমরা দিব্য করিও না; স্বর্গের কি পৃথিবীর কি অন্য কিছুরই দিব্য করিও না। বরং তোমাদের হাঁ হাঁ এবং না না হউক, পাছে বিচারে পতিত হও। তোমাদের মধ্যে কেহ কি দুঃখভোগ করিতেছে? সে প্রার্থনা করুক। কেহ কি প্রফুল্ল আছে? সে গান করুক।তোমাদের মধ্যে কেহ কি রোগগ্রস্ত? সে মণ্ডলীর প্রাচীনবর্গকে আহ্বান করুক; এবং তাঁহারা প্রভুর নামে তাহাকে তৈলাভিষিক্ত করিয়া তাহার উপরে প্রার্থনা করুন।তাহাতে বিশ্বাসের প্রার্থনা সেই পীড়িত ব্যক্তিকে সুস্থ করিবে, এবং প্রভু তাহাকে উঠাইবেন; আর সে যদি পাপ করিয়া থাকে, তবে তাহার মোচন হইবে।অতএব তোমরা একজন অন্য জনের কাছে আপন আপন পাপ স্বীকার কর, ও একজন অন্য জনের নিমিত্ত প্রার্থনা কর, যেন সুস্থ হইতে পার। ধার্মিকের বিনতি কার্যসাধনে মহাশক্তিযুক্ত।এলিয় আমাদের ন্যায় সুখদুঃখভোগী মনুষ্য ছিলেন; আর তিনি দৃঢ়তার সহিত প্রার্থনা করিলেন, যেন বৃষ্টি না হয়, এবং তিন বৎসর ছয় মাস ভূমিতে বৃষ্টি হইল না।পরে তিনি আবার প্রার্থনা করিলেন; আর আকাশ জল প্রদান করিল, এবং ভূমি নিজ ফল উৎপন্ন করিল। হে আমার ভ্রাতৃগণ, তোমাদের মধ্যে যদি কেহ সত্য হইতে ভ্রান্ত হয়, এবং কেহ তাহাকে ফিরাইয়া আনে,তোমাদের ধন পচিয়া গিয়াছে, ও তোমাদের বস্ত্র সকল কীট-ভক্ষিত হইয়াছে; তোমাদের স্বর্ণ ও রৌপ্য কলঙ্কিত হইয়াছে;তবে জানিও, যে ব্যক্তি কোন পাপীকে তাহার পথ-ভ্রান্তি হইতে ফিরাইয়া আনে, সে তাহার প্রাণকে মৃত্যু হইতে রক্ষা করিবে, এবং পাপরাশি আচ্ছাদন করিবে।আর তাহার কলঙ্ক তোমাদের বিপক্ষে সাক্ষ্য দিবে, এবং অগ্নির ন্যায় তোমাদের মাংস খাইবে। তোমরা শেষকালে ধন-সঞ্চয় করিয়াছ।
তোমাদের মধ্যে ঈশ্বরের যে পাল আছে, তাহা পালন কর; অধ্যক্ষের কার্য কর, আবশ্যকতা প্রযুক্ত নয়, কিন্তু ইচ্ছাপূর্বক, ঈশ্বরের অভিমতে, কুৎসিত লাভার্থে নয়, কিন্তু উৎসুক ভাবে কর;
কিন্তু প্রজাবৃন্দের মধ্যে ভাক্ত ভাববাদিগণও উৎপন্ন হইয়াছিল; সেই প্রকারে তোমাদের মধ্যেও ভাক্ত গুরুরা উপস্থিত হইবে, তাহারা গোপনে বিনাশজনক দলভেদ উপস্থিত করিবে, যিনি তাহাদিগকে ক্রয় করিয়াছেন, সেই অধিপতিকেও অস্বীকার করিবে, এইরূপে শীঘ্র আপনাদের বিনাশ ঘটাইবে।বিশেষতঃ যাহারা মাংসের অনুবর্তী হইয়া অশুচি ভোগের অভিলাষে চলে, ও প্রভুত্ব অবজ্ঞা করে, তাহাদিগকে দণ্ড দিবেন। তাহারা দুঃসাহসী, স্বেচ্ছাচারী; যাহারা গৌরবের পাত্র, তাহাদের নিন্দা করিতে ভয় করে না।স্বর্গদূতগণ যদিও বলে ও পরাক্রমে মহত্তর, তথাপি প্রভুর কাছে তাঁহারাও উঁহাদের বিরুদ্ধে নিন্দাপূর্ণ বিচার উপস্থিত করেন না।কিন্তু ইহারা, ধৃত হইবার ও ক্ষয় পাইবার নিমিত্ত জাত বুদ্ধিবিহীন প্রাণীমাত্র পশুদের ন্যায়, যাহা না বুঝে, তাহার নিন্দা করিতে করিতে আপনাদের ক্ষয়ে ক্ষয় পাইবে,অন্যায়ের বেতনস্বরূপে অন্যায় ভোগ করিবে। তাহারা দিনমানে উদরতৃপ্তিকে সুখ জ্ঞান করে; তাহারা কলঙ্ক ও মলস্বরূপ, তাহারা তোমাদের সহিত ভোজন পান করিয়া আপন আপন প্রেম ভোজে বিলাস করে।তাহাদের চক্ষু ব্যভিচারে পরিপূর্ণ এবং পাপ হইতে নিরস্ত হইতে পারে না; তাহারা চঞ্চলমতিদিগকে প্রলোভিত করে; তাহাদের হৃদয় অর্থলালসায় অভ্যস্ত; তাহারা শাপের সন্তান।তাহারা সোজা পথ ত্যাগ করিয়া বিপথগামী হইয়াছে, বিয়োরের পুত্র বিলিয়মের পথানুগামী হইয়াছে; সেই ব্যক্তি ত অধার্মিকতার বেতন ভালবাসিত;কিন্তু সে নিজ অপরাধের জন্য তিরষ্কৃত হইল; এক বাক্শক্তিহীন গর্দভ মনুষ্যের রবে কথা বলিয়া সেই ভাববাদীর ক্ষিপ্ততা নিবারণ করিল।এই লোকেরা নির্জল উনুই, ঝড়ে চালিত কুজ্ঝটিকা, তাহাদের জন্য ঘোরতর অন্ধকার সঞ্চিত রহিয়াছে।কারণ তাহারা অসার গর্বের কথা বলিয়া মাংসিক সুখাভিলাষে, লমপটতায়, সেই লোকদিগকে প্রলোভিত করে, যাহারা বিপথগামীদের নিকট হইতে সমপ্রতি পলায়ন করিতেছে।তাহারা তাহাদের কাছে স্বাধীনতার প্রতিজ্ঞা করে, কিন্তু আপনারা ক্ষয়ের দাস; কেননা যে যাহার দ্বারা পরাভূত, সে তাহার দাসত্বে আনীত।আর অনেকে তাহাদের স্বৈরাচারের অনুগামী হইবে; তাহাদের কারণে সত্যের পথ নিন্দিত হইবে।কারণ আমাদের প্রভু ও ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের তত্ত্বজ্ঞানে সংসারের অশুচি বিষয় সমূহ এড়াইবার পর যদি তাহারা পুনরায় তাহাতে পাশবদ্ধ হইয়া পরাভূত হয়, তবে তাহাদের প্রথম দশা অপেক্ষা শেষ দশা আরও মন্দ হইয়া পড়ে।কেননা ধার্মিকতার পথ জানিয়া তাহাদের কাছে সমর্পিত পবিত্র আজ্ঞা হইতে সরিয়া যাওয়া অপেক্ষা বরং সেই পথ অজ্ঞাত থাকা তাহাদের পক্ষে আরও ভাল ছিল।তাহাদের প্রতি এই সত্য প্রবাদ ফলিয়াছে, “কুকুর ফিরে আপন বমির দিকে,” আর ধৌত শূকর ফিরে কাদায় গড়াগড়ি দিতে।লোভের বশে তাহারা কল্পিত বাক্য দ্বারা তোমাদের হইতে অর্থলাভ করিবে; তাহাদের বিচারাজ্ঞা দীর্ঘকাল বিলম্ব করে নাই, এবং তাহাদের বিনাশ ঢুলিয়া পড়ে নাই।
তাহাদের চক্ষু ব্যভিচারে পরিপূর্ণ এবং পাপ হইতে নিরস্ত হইতে পারে না; তাহারা চঞ্চলমতিদিগকে প্রলোভিত করে; তাহাদের হৃদয় অর্থলালসায় অভ্যস্ত; তাহারা শাপের সন্তান।তাহারা সোজা পথ ত্যাগ করিয়া বিপথগামী হইয়াছে, বিয়োরের পুত্র বিলিয়মের পথানুগামী হইয়াছে; সেই ব্যক্তি ত অধার্মিকতার বেতন ভালবাসিত;
তোমরা জগৎকে প্রেম করিও না, জগতীস্থ বিষয় সকলও প্রেম করিও না। কেহ যদি জগৎকে প্রেম করে, তবে পিতার প্রেম তাহার অন্তরে নাই।কেননা জগতে যাহা কিছু আছে, মাংসের অভিলাষ, চক্ষুর অভিলাষ, ও জীবিকার দর্প, এই সকল পিতা হইতে নয়, কিন্তু জগৎ হইতে হইয়াছে।আর জগৎ ও তাহার অভিলাষ বহিয়া যাইতেছে; কিন্তু যে ব্যক্তি ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে, সে অনন্তকালস্থায়ী।
তুমি কহিতেছ, আমি ধনবান, ধন সঞ্চয় করিয়াছি, আমার কিছুরই অভাব নাই; কিন্তু জান না যে, তুমিই দুর্ভাগ্য, কৃপাপাত্র, দরিদ্র, অন্ধ ও উলঙ্গ।আমি তোমাকে এক পরামর্শ দিই; তুমি আমার কাছে এই সকল দ্রব্য ক্রয় কর- অগ্নি দ্বারা পরিষ্কৃত স্বর্ণ, যেন ধনবান হও; শুক্ল বস্ত্র, যেন বস্ত্রপরিহিত হও, আর তোমার উলঙ্গতার লজ্জা প্রকাশিত না হয়; চক্ষুতে লেপনীয় অঞ্জন, যেন দেখিতে পাও।