আপনার জীবনে যা কিছু আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবুন তো। পরিবারের জন্য, নিজের জন্য যা কিছু আছে, সেগুলো কিভাবে ব্যবহার করছেন? বাইবেল আমাদের শেখায় যে আমাদের সম্পদ বুদ্ধিমত্তার সাথে ব্যবহার করা উচিত, পরিবারের দেখাশোনা করার জন্য, জুয়া খেলে আরও বেশি পাওয়ার আশায় ঝুঁকি নেওয়ার জন্য নয়।
হ্যাঁ, বাইবেলে জুয়ার কথা সরাসরি বলা হয়নি। কিন্তু ঈশ্বর কি চান, তা বোঝার জন্য বাইবেলে অনেক উপদেশ আছে। লূক ১২:১৫ পদে১ বলা হয়েছে, "সাবধান! লোভ থেকে নিজেদের রক্ষা কর। কারণ মানুষের জীবন তার সম্পদের উপর নির্ভর করে না।"
আমাদের যা কিছু দেওয়া হয়েছে, তার ভালো ব্যবস্থাপক হতে বাইবেল আমাদের উৎসাহিত করে। লূক ১২:৪২২ পদে প্রশ্ন করা হয়েছে, "সেই বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান কার্যনির্বাহক কে, যাকে প্রভু তার চাকরদের উপর নিয়োগ করবেন, যাতে সে তাদের সময়মত খাবার দিতে পারে?" আমাদের ক্ষমতা অনুযায়ী আমাদের সম্পদ বুদ্ধিমত্তার সাথে ব্যবহার করা উচিত। ঈশ্বর আমাদের যা কিছু দিয়েছেন, তার মূল্য বুঝতে হবে। তা না হলে ভুল সিদ্ধান্তের কারণে সব হারিয়ে ফেলতে পারি।
কেননা ধনাসক্তি সকল মন্দের একটা মূল; তাহাতে রত হওয়াতে কতক লোক বিশ্বাস হইতে বিপথগামী হইয়াছে, এবং অনেক যাতনারূপ কণ্টকে আপনারা আপনাদিগকে বিদ্ধ করিয়াছে।
যে ব্যক্তি রৌপ্য ভালবাসে, সে রৌপ্যে তৃপ্ত হয় না; আর যে ব্যক্তি ধনরাশি ভালবাসে, সে ধনাগমে তৃপ্ত হয় না; ইহাও অসার।
কেহই দুই কর্তার দাসত্ব করিতে পারে না; কেননা সে হয় ত একজনকে দ্বেষ করিবে, আর একজনকে প্রেম করিবে, নয় ত একজনের প্রতি অনুরক্ত হইবে, আর একজনকে তুচ্ছ করিবে; তোমরা ঈশ্বর এবং ধন উভয়ের দাসত্ব করিতে পার না।
কিন্তু তোমাদিগকে বিনয় করিয়া বলিতেছি, ভ্রাতৃগণ, আরও অধিক উপচিয়া পড়, আর শান্ত ভাবে থাকিতে ও আপন আপন কার্য করিতে এবং স্বহস্তে পরিশ্রম করিতে সযত্ন হও-
সকলই আমার পক্ষে বিধেয়, কিন্তু সকলই যে হিতজনক, তাহা নয়; সকলই আমার পক্ষে বিধেয়, কিন্তু আমি কিছুরই কর্তৃত্বাধীন হইব না।
তোমার প্রতিবাসীর গৃহে লোভ করিও না; প্রতিবাসীর স্ত্রীতে, কিম্বা তাহার দাসে কি দাসীতে, কিম্বা তাহার গরুতে কি গর্দভে, প্রতিবাসীর কোন বস্তুতেই লোভ করিও না।
তুমি আপন প্রতিবাসীর উপর অত্যাচার করিও না, এবং তাহার দ্রব্য অপহরণ করিও না। বেতনজীবীর বেতন প্রাতঃকাল পর্যন্ত সমস্ত রাত্রি রাখিও না।
তোমার প্রতিবাসীর স্ত্রীতে লোভ করিও না; প্রতিবাসীর গৃহে কি ক্ষেত্রে, কিম্বা তাহার দাসে কি দাসীতে, কিম্বা তাহার গরুতে কি গর্দভে, প্রতিবাসীর কোন বস্তুতেই লোভ করিও না।
অবশেষে, হে ভ্রাতৃগণ, যাহা যাহা সত্য, যাহা যাহা আদরণীয়, যাহা যাহা ন্যায্য, যাহা যাহা বিশুদ্ধ, যাহা যাহা প্রীতিজনক, যাহা যাহা সুখ্যাতিযুক্ত, যে কোন সদ্গুণ ও যে কোন কীর্তি হউক, সেই সকল আলোচনা কর।
অতএব সর্ববিষয়ে তোমরা যাহা যাহা ইচ্ছা কর যে, লোকে তোমাদের প্রতি করে, তোমরাও তাহাদের প্রতি সেইরূপ করিও; কেননা ইহাই ব্যবস্থার ও ভাববাদি-গ্রন্থের সার।
নিজের ধনবৃদ্ধির জন্য যে দরিদ্রদের প্রতি উপদ্রব করে, আর যে ধনবানকে দান করে, উভয়েরই অভাব ঘটে।
ধন সঞ্চয় করিতে অত্যন্ত যত্ন করিও না, তোমার নিজ বুদ্ধি হইতে ক্ষান্ত হও।তুমি যখন ধনের দিকে চাহিতেছ? তাহা আর নাই; কারণ ঈগল যেমন আকাশে উড়িয়া যায়, তেমনি ধন আপনার জন্য নিশ্চয়ই পক্ষ প্রস্তুত করে।
যে আপন জমি চাষ করে, সে যথেষ্ট আহার পায়; কিন্তু যে অসার লোকদের পিছনে পিছনে দৌড়ায়, তাহার ঢের অকুলান হয়।দেশের অধর্মে তাহার অনেক কর্তা হয়; কিন্তু বুদ্ধিমান ও জ্ঞানবান লোক দ্বারা [কর্তৃত্ব] স্থায়ী হয়।বিশ্বস্ত লোক অনেক আশীর্বাদ পাইবে; কিন্তু যে ধনবান হইবার জন্য তাড়াতাড়ি করে, সে অদণ্ডিত থাকিবে না।
সূর্যের নিচে আমি এই বিষম অনিষ্ট দেখিয়াছি যে, ধনস্বামীর অনিষ্টের জন্যই ধন রক্ষিত হয়;আর দুর্ঘটনায় সেই ধনের ক্ষয় হয়, এবং পুত্রের জন্ম দিলে তাহার হস্তে কিছুই নাই।সে মাতৃগর্ভ হইতে উলঙ্গ আইসে; যেমন আইসে তেমনি উলঙ্গই পুনরায় চলিয়া যায়; পরিশ্রম করিলেও সে যাহা সঙ্গে করিয়া লইয়া যাইতে পারে, এমন কিছুই নাই।
কেন অখাদ্যের নিমিত্ত রৌপ্য তৌল করিতেছ, যাহাতে তৃপ্তি নাই, তাহার জন্য স্ব স্ব শ্রমফল দিতেছ? শুন, আমার কথা শুন, উত্তম ভক্ষ্য ভোজন কর, পুষ্টিকর দ্রব্যে তোমাদের প্রাণ আপ্যায়িত হউক।
কিন্তু তোমরা যাহারা সদাপ্রভুকে ত্যাগ করিতেছ, আমার পবিত্র পর্বত ভুলিয়া যাইতেছ, ভাগ্য [দেবের] জন্য মেজ সাজাইয়া থাক, এবং নিরূপণী [দেবীর] উদ্দেশে মিশ্র সুরা পূর্ণ করিয়া থাক,তোমাদিগকে আমি খড়্গের জন্য নিরূপণ করিলাম, আর তোমরা সকলে বধ্যস্থানে অবনত হইবে; কারণ আমি ডাকিলে তোমরা উত্তর দিতে না, আমি কথা কহিলে শুনিতে না; কিন্তু আমার দৃষ্টিতে যাহা মন্দ তাহাই করিতে, এবং যাহাতে আমার প্রীতি নাই, তাহাই মনোনীত করিতে।
প্রসব না করিলেও যেমন তিত্তির পক্ষী শাবকদিগকে সংগ্রহ করে, তেমনি সেই ব্যক্তি যে অন্যায়ে ধন সঞ্চয় করে, সেই ধন অর্ধ বয়সে তাহাকে ছাড়িয়া যাইবে, এবং শেষকালে সে মূঢ় হইয়া পড়িবে।
তাহারা আপন আপন রৌপ্য চকে ফেলিয়া দিবে, তাহাদের সুবর্ণ অশুচি বস্তু হইবে; সদাপ্রভুর ক্রোধের দিনে তাহাদের স্বর্ণ কি রৌপ্য তাহাদিগকে রক্ষা করিতে পারিবে না; তাহা তাহাদের প্রাণ তৃপ্ত, কিম্বা তাহাদের উদর পূর্ণ করিবে না, কেননা তাহাই তাহাদের অপরাধজনক বিঘ্ন হইয়াছে।
ধিক্ তাহাদিগকে, যাহারা আপন আপন শয্যায় অধর্ম কল্পনা করে ও কুকর্ম স্থির করে! তাহারা রাত্রি প্রভাত হইবামাত্র তাহা সাধন করে, কেননা তাহা তাহাদের হস্তের ক্ষমতাধীন।উঠ, প্রস্থান কর, এটা ত বিশ্রামের স্থান নয়, কেননা অশুচিতা বিনাশ করিতেছে, আর সেই বিনাশ ভয়ানক।বায়ুর ও মিথ্যা কথার অনুগামী কোন লোক যদি মিথ্যা করিয়া বলে, আমি দ্রাক্ষারস ও সুরার বিষয়ে তোমার পক্ষে বাক্য বর্ষাইব, তবে সে এই লোকদের বাক্য-বর্ষক হইবে।হে যাকোব, আমি নিশ্চয়ই তোমার সমস্ত লোককে সমবেত করিব, আমি নিশ্চয়ই ইস্রায়েলের অবশিষ্টাংশকে সংগ্রহ করিব; তাহাদিগকে বস্রার মেষগণের ন্যায় একত্র করিব; যেমন বাথানের মধ্যস্থিত পাল, তেমনি তাহারা মনুষ্য-বাহুল্যে কোলাহল করিবে।ভঞ্জক উঠিয়া তাহাদের অগ্রগামী হইলেন; তাহারা বেড়া ভাঙ্গিয়াছে, দ্বারে পৌঁছিয়াছে, তাহা দিয়া বাহিরে গিয়াছে, এবং তাহাদের রাজা তাহাদের সম্মুখে চলিয়া গেলেন; আর সদাপ্রভু তাহাদের অগ্রগামী হইলেন।তাহারা ক্ষেত্রের প্রতি লোভ করিয়া সবলে তাহা গ্রহণ করে, এবং ঘরের প্রতিও লোভ করিয়া তাহা হরণ করে; এইরূপে তাহারা পুরুষের ও তাহার ঘরের প্রতি, মনুষ্যের ও তাহার পৈতৃক অধিকারের প্রতি দৌরাত্ম্য করে।
দুষ্টের গৃহে কি এখনও দুষ্টতার ভাণ্ডার ও ঘৃণিত হীন ঐফা আছে?দুষ্টতার নিক্তিতে ও ছলনার বাটখারায় আমি কি বিশুদ্ধ হইব?তথাকার ধনবান লোকেরা দৌরাত্ম্যে পরিপূর্ণ, ও তন্নিবাসিগণ মিথ্যা কথা বলিয়াছে, তাহাদের মুখমধ্যে জিহ্বা প্রবঞ্চক।
ধিক্ তাহাকে যে আপন কুলের নিমিত্ত কুলাভ সংগ্রহ করে, যেন উচ্চে বাসা করিতে পারে, যেন অমঙ্গলের হস্ত হইতে উদ্ধার পাইতে পারে।
তোমরা পৃথিবীতে আপনাদের জন্য ধন সঞ্চয় করিও না; এখানে ত কীটে ও মরিচায় ক্ষয় করে, এবং এখানে চোরে সিঁধ কাটিয়া চুরি করে।অতএব তুমি যখন দান কর, তখন তোমার সম্মুখে তূরী বাজাইও না, যেমন কপটীরা লোকের কাছে গৌরব পাইবার জন্য সমাজ-গৃহে ও পথে করিয়া থাকে; আমি তোমাদিগকে সত্য বলিতেছি, তাহারা আপনাদের পুরস্কার পাইয়াছে।কিন্তু স্বর্গে আপনাদের জন্য ধন সঞ্চয় কর; সেখানে কীটে ও মরিচায় ক্ষয় করে না, সেখানে চোরেও সিঁধ কাটিয়া চুরি করে না।কারণ যেখানে তোমার ধন, সেখানে তোমার মনও থাকিবে।
বস্তুতঃ মনুষ্য যদি সমুদয় জগৎ লাভ করিয়া আপন প্রাণ হারায়, তবে তাহার কি লাভ হইবে? কিম্বা মনুষ্য আপন প্রাণের পরিবর্তে কি দিবে?
যীশু তাহাকে কহিলেন, যদি সিদ্ধ হইতে ইচ্ছা কর, তবে চলিয়া যাও, তোমার যাহা যাহা আছে, বিক্রয় কর, এবং দরিদ্রদিগকে দান কর, তাহাতে স্বর্গে ধন পাইবে; আর আইস, আমার পশ্চাদ্গামী হও।কিন্তু এই কথা শুনিয়া সেই যুবক দুঃখিত হইয়া চলিয়া গেল, কারণ তাহার বিস্তর সমপত্তি ছিল।তখন যীশু আপন শিষ্যদিগকে কহিলেন, আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, ধনবানের পক্ষে স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করা দুষ্কর।আবার তোমাদিগকে কহিতেছি, ঈশ্বরের রাজ্যে ধনবানের প্রবেশ করা অপেক্ষা বরং সূচের ছিদ্র দিয়া উটের যাওয়া সহজ।
হা অধ্যাপক ও ফরীশীগণ, কপটীরা, ধিক্ তোমাদিগকে! কারণ তোমরা পানপাত্র ও ভোজনপাত্র বাহিরে পরিষ্কার করিয়া থাক, কিন্তু সেইগুলির ভিতরে দৌরাত্ম্য ও অন্যায়ে ভরা।
কারণ মনে কর, যেন কোন ব্যক্তি বিদেশে যাইতেছেন, তিনি আপন দাসদিগকে ডাকিয়া নিজ সমপত্তি তাহাদের হস্তে সমর্পণ করিলেন।তিনি একজনকে পাঁচ তালন্ত, অন্য জনকে দুই তালন্ত, এবং আর একজনকে এক তালন্ত, যাহার যেরূপ শক্তি, তাহাকে তদনুসারে দিলেন, পরে বিদেশে চলিয়া গেলেন।যে পাঁচ তালন্ত পাইয়াছিল, সে তখনই গেল, তাহা দিয়া ব্যবসা করিল, এবং আর পাঁচ তালন্ত লাভ করিল।যে দুই তালন্ত পাইয়াছিল, সেও তদ্রূপ করিয়া আর দুই তালন্ত লাভ করিল।কিন্তু যে এক তালন্ত পাইয়াছিল, সে গিয়া ভূমিতে গর্ত খুঁড়িয়া আপন প্রভুর টাকা লুকাইয়া রাখিল।দীর্ঘকালের পর সেই দাসদের প্রভু আসিয়া তাহাদের নিকট হইতে হিসাব লইলেন।তাহাদের মধ্যে পাঁচ জন নির্বুদ্ধি, আর পাঁচ জন সুবুদ্ধি ছিল।তখন যে পাঁচ তালন্ত পাইয়াছিল, সে আসিয়া আরও পাঁচ তালন্ত আনিয়া কহিল, প্রভু, আপনি আমার নিকটে পাঁচ তালন্ত সমর্পণ করিয়াছিলেন; দেখুন, আর পাঁচ তালন্ত লাভ করিয়াছি।তাহার প্রভু তাহাকে কহিলেন, বেশ! উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস; তুমি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত হইলে, আমি তোমাকে বহু বিষয়ের উপরে নিযুক্ত করিব; তুমি আপন প্রভুর আনন্দের সহভাগী হও।পরে যে দুই তালন্ত পাইয়াছিল, সেও আসিয়া বলিল, প্রভু, আপনি আমার নিকটে দুই তালন্ত সমর্পণ করিয়াছিলেন; দেখুন, আর দুই তালন্ত লাভ করিয়াছি।তাহার প্রভু তাহাকে কহিলেন, বেশ! উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস; তুমি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত হইলে, আমি তোমাকে বহু বিষয়ের উপরে নিযুক্ত করিব; তুমি আপন প্রভুর আনন্দের সহভাগী হও।পরে যে এক তালন্ত পাইয়াছিল, সেও আসিয়া কহিল, প্রভু, আমি জানিতাম, আপনি কঠিন লোক; যেখানে বুনেন নাই, সেখানে কাটিয়া থাকেন, ও যেখানে ছড়ান নাই, সেখানে কুড়াইয়া থাকেন।তাই আমি ভীত হইয়া গিয়া আপনার তালন্ত ভূমির মধ্যে লুকাইয়া রাখিয়াছিলাম; দেখুন, আপনার যাহা আপনি পাইলেন।কিন্তু তাহার প্রভু উত্তর করিয়া তাহাকে কহিলেন, দুষ্ট অলস দাস, তুমি নাকি জানিতে, আমি যেখানে বুনি নাই, সেখানে কাটি, এবং যেখানে ছড়াই নাই, সেখানে কুড়াই?তবে পোদ্দারদের হাতে আমার টাকা রাখিয়া দেওয়া তোমার উচিৎ ছিল; তাহা করিলে আমি আসিয়া আমার যাহা তাহা সুদের সহিত পাইতাম।অতএব তোমরা ইহার নিকট হইতে ঐ তালন্ত লও, এবং যাহার দশ তালন্ত আছে, তাহাকে দেও;কেননা যে কোন ব্যক্তির নিকটে আছে, তাহাকে দত্ত হইবে, তাহাতে তাহার বাহুল্য হইবে; কিন্তু যাহার নাই, তাহার যাহা আছে, তাহাও তাহার নিকট হইতে নীত হইবে।কারণ যাহারা নির্বুদ্ধি, তাহারা আপন আপন প্রদীপ লইল, সঙ্গে তৈল লইল না;আর তোমরা ঐ অনুপযোগী দাসকে বাহিরের অন্ধকারে ফেলিয়া দেও; সেই স্থানে রোদন ও দন্তঘর্ষণ হইবে।
আর যাহা কাঁটাবনের মধ্যে পড়িল, তাহারা এমন লোক, যাহারা শুনিয়াছে, কিন্তু চলিতে চলিতে জীবনের চিন্তা ও ধন ও সুখভোগের দ্বারা চাপা পড়ে, এবং পক্ব ফল উৎপন্ন করে না।
পরে তিনি তাহাদিগকে বলিলেন, সাবধান, সর্বপ্রকার লোভ হইতে আপনাদিগকে রক্ষা করিও, কেননা উপচিয়া পড়িলেও মনুষ্যের সমপত্তিতে তাহার জীবন হয় না।
তোমাদের যাহা আছে, বিক্রয় করিয়া দান কর। আপনাদের জন্য এমন থলি প্রস্তুত কর, যাহা জীর্ণ হয় না; স্বর্গে অক্ষয় ধন সঞ্চয় কর, যেখানে চোর নিকটে আইসে না, কীটেও ক্ষয় করে না;কেননা যেখানে তোমাদের ধন, সেখানে তোমাদের মনও থাকিবে।
কোন ভৃত্য দুই কর্তার দাসত্ব করিতে পারে না, কেননা সে হয় একজনকে ঘৃণা করিবে, অন্যকে প্রেম করিবে, নয় ত একজনে অনুরক্ত হইবে, অন্যকে তুচ্ছ করিবে। তোমরা ঈশ্বর এবং ধন উভয়ের দাসত্ব করিতে পার না।
তখন ফরীশীরা, যাহারা টাকা ভালবাসিত, এই সকল কথা শুনিতেছিল, আর তাহারা তাঁহাকে উপহাস করিতে লাগিল।
একজন ধনবান লোক ছিল, সে বেগুনে কাপড় ও সূক্ষ্ম বস্ত্র পরিধান করিত, এবং প্রতিদিন জাঁকজমকের সহিত আমোদ প্রমোদ করিত।পরে সে তাহাকে ডাকিয়া কহিল, তোমার বিষয়ে এ কি কথা শুনিতেছি? তোমার দেওয়ানী-পদের হিসাব দেও, কেননা তুমি আর দেওয়ান থাকিতে পারিবে না।তাহার ফটক-দ্বারে লাসার নামে একজন কাঙ্গালকে রাখা হইয়াছিল,তাহার শরীর ঘায়ে ভরা ছিল, এবং সেই ধনবানের মেজ হইতে পতিত গুঁড়াগাঁড়া খাইতে বাঞ্ছা করিত; আবার কুকুরেরাও আসিয়া তাহার ঘা চাটিত।কালক্রমে ঐ কাঙ্গাল মরিয়া গেল, আর স্বর্গদূতগণ তাহাকে লইয়া অব্রাহামের কোলে বসাইলেন।পরে সেই ধনবানও মরিল, এবং কবরপ্রাপ্ত হইল। আর পাতালে, যাতনার মধ্যে, সে চক্ষু তুলিয়া দূর হইতে অব্রাহামকে এবং তাঁহার কোলে লাসারকে দেখিতে পাইল।তাহাতে সে উচ্চৈঃস্বরে কহিল, পিতঃ অব্রাহাম, আমার প্রতি দয়া করুন, লাসারকে পাঠাইয়া দিউন, যেন সে অঙ্গুলির অগ্রভাগ জলে ডুবাইয়া আমার জিহ্বা শীতল করে, কেননা এই অগ্নিশিখায় আমি যন্ত্রণা পাইতেছি।কিন্তু অব্রাহাম কহিলেন, বৎস, স্মরণ কর; তোমার সুখ তুমি জীবনকালে পাইয়াছ, আর লাসার তদ্রূপ দুঃখ পাইয়াছে; এখন সে এই স্থানে সান্ত্বনা পাইতেছে, আর তুমি যন্ত্রণা পাইতেছ।আর এই সকল ছাড়া আমাদের ও তোমাদের মধ্যে বৃহৎ এক শূন্যস্থলী স্থির রহিয়াছে, যেন এই স্থান হইতে যাহারা তোমাদের কাছে যাইতে চাহে, তাহারা না পারে, আবার ঐ স্থান হইতে আমাদের কাছে কেহ পার হইয়া আসিতে না পারে।তখন সে কহিল, তবে আমি আপনাকে বিনয় করি, পিতঃ, আমার পিতার বাটীতে উহাকে পাঠাইয়া দিউন;কেননা আমার পাঁচটি ভাই আছে; সে গিয়া তাহাদের নিকটে সাক্ষ্য দিউক, যেন তাহারাও এই যাতনা-স্থানে না আইসে।কিন্তু অব্রাহাম কহিলেন, তাহাদের নিকটে মোশি ও ভাববাদিগণ আছেন; তাঁহাদেরই কথা তাহারা শুনুক।তখন সেই দেওয়ান মনে মনে কহিল, কি করিব? আমার প্রভু ত আমার নিকট হইতে দেওয়ানী-পদ লইতেছেন; মাটি কাটিবার বল আমার নাই, ভিক্ষা করিতে আমার লজ্জা হয়।তখন সে বলিল, তাহা নয়, পিতঃ অব্রাহাম, বরং মৃতদের মধ্য হইতে যদি কেহ তাহাদের নিকটে যায়, তাহা হইলে তাহারা মন ফিরাইবে।কিন্তু তিনি কহিলেন, তাহারা যদি মোশির ও ভাববাদিগণের কথা না শুনে, তবে মৃতগণের মধ্য হইতে কেহ উঠিলেও তাহারা মানিবে না।
এই কথা শুনিয়া যীশু তাহাকে কহিলেন, এখনও এক বিষয়ে তোমার ত্রুটি আছে; তোমার যাহা কিছু আছে, সমস্ত বিক্রয় কর, আর দরিদ্রদিগকে বিতরণ কর, তাহাতে স্বর্গে ধন পাইবে; আর আইস, আমার পশ্চাদ্গামী হও।কিন্তু এই কথা শুনিয়া সে অতিশয় দুঃখিত হইল, কারণ সে অতিশয় ধনবান ছিল।তখন তাহার প্রতি দৃষ্টি করিয়া যীশু কহিলেন, যাহাদের ধন আছে, তাহাদের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা কেমন দুষ্কর!বাস্তবিক ঈশ্বরের রাজ্যে ধনবানের প্রবেশ করা অপেক্ষা বরং সূচের ছিদ্র দিয়া উষ্ট্রের প্রবেশ করা সহজ।
তখন তৃণ দ্বারা এক গাছি কশা প্রস্তুত করিয়া গরু, মেষ সমস্তই ধর্মধাম হইতে বাহির করিয়া দিলেন, এবং পোদ্দারদের মুদ্রা ছড়াইয়া ও মেজ উল্টাইয়া ফেলিলেন;আর যাহারা কপোত বিক্রয় করিতেছিল, তাহাদিগকে কহিলেন, এই স্থান হইতে এই সকল লইয়া যাও; আমার পিতার গৃহকে বাণিজ্যের গৃহ করিও না।
কিন্তু অননিয় নামে এক ব্যক্তি, এবং তাহার সহিত তাহার স্ত্রী সাফীরা, একটি সমপত্তি বিক্রয় করিল,সে তৎক্ষণাৎ তাহার চরণে পড়িয়া প্রাণত্যাগ করিল; আর ঐ যুবকেরা ভিতরে আসিয়া তাহাকে মৃত দেখিল, এবং বাহিরে লইয়া গিয়া তাহার স্বামীর পার্শ্বে কবর দিল।তখন সমস্ত মণ্ডলী, এবং যত লোক এই কথা শুনিল, সকলেই অতিশয় ভয়গ্রস্ত হইল।আর প্রেরিতদের হস্ত দ্বারা লোকদের মধ্যে অনেক চিহ্ন-কার্য ও অদ্ভুত লক্ষণ সাধিত হইত; এবং তাঁহারা সকলে একচিত্তে শলোমনের বারান্দাতে উপস্থিত হইতেন।কিন্তু অন্য লোকদের মধ্যে তাঁহাদের সঙ্গে যোগ দিতে কাহারও সাহস হইত না, তথাপি লোকেরা তাহাদিগকে সমাদর করিত।আর উত্তর উত্তর অনেক পুরুষ ও স্ত্রীলোক বিশ্বাসী হইয়া প্রভুতে সংযুক্ত হইতে লাগিল।এমন কি, লোকেরা রোগীদিগকে বাহিরে পথে পথে আনিয়া শয্যায় ও খাটিয়াতে করিয়া রাখিত, যেন পিতর আসিবার সময়ে অন্ততঃ তাঁহার ছায়া কাহারও কাহারও উপরে পড়ে।আর যিরূশালেমের চারিদিকের নগরসমূহ হইতেও অনেক লোক রোগীদিগকে এবং অশুচি আত্মা দ্বারা ক্লিষ্ট ব্যক্তিদিগকে লইয়া সমাগত হইত, আর তাহারা সকলেই সুস্থ হইত।পরে মহাযাজক এবং তাঁহার সঙ্গীরা সকলে অর্থাৎ সদ্দূকী-সমপ্রদায় উঠিলেন,তাহারা ঈর্ষাতে পরিপূর্ণ হইলেন, এবং প্রেরিতদিগকে ধরিয়া সাধারণ কারাগারে বদ্ধ করিলেন।কিন্তু রাত্রিকালে প্রভুর এক দূত কারাগারের দ্বার সকল খুলিয়া দিলেন, ও তাঁহাদিগকে বাহিরে আনিয়া কহিলেন,এবং স্ত্রীর জ্ঞাতসারে তাহার মূল্যের কিছু রাখিয়া দিল, আর কতক আনিয়া প্রেরিতদের চরণে রাখিল।তোমরা যাও, ধর্মধামে দাঁড়াইয়া লোকদিগকে এই জীবনের সমস্ত কথা বল।ইহা শুনিয়া তাঁহারা প্রভাত কালে ধর্মধামে প্রবেশ করিয়া উপদেশ দিতে লাগিলেন। ইতিমধ্যে মহাযাজক ও তাঁহার সঙ্গীরা আসিয়া মহাসভাকে এবং ইস্রায়েল-সন্তানগণের সমস্ত প্রাচীনদলকে ডাকিয়া একত্র করিলেন, এবং উহাঁদিগকে আনাইবার নিমিত্তে কারাগারে লোক পাঠাইলেন।কিন্তু যে পদাতিকেরা গেল, তাহারা কারাগারে তাঁহাদিগকে পাইল না;তখন ফিরিয়া আসিয়া এই সংবাদ দিল, আমরা দেখিলাম, কারাগার সুদৃঢ়রূপে বদ্ধ, দ্বারে দ্বারে রক্ষকেরা দাঁড়াইয়া আছে, কিন্তু দ্বার খুলিলে ভিতরে কাহাকেও পাইলাম না।এই কথা শুনিয়া ধর্মধামের সেনাপতি এবং প্রধান যাজকেরা ভাবিয়া আকুল হইলেন যে, ইহার পরিণাম কি হইবে।ইতিমধ্যে কোন ব্যক্তি আসিয়া তাঁহাদিগকে এই সংবাদ দিল, দেখুন, আপনারা যে লোকদিগকে কারাগারে রাখিয়াছিলেন, তাঁহারা ধর্মধামে দাঁড়াইয়া আছে, ও লোকদিগকে উপদেশ দিতেছে।তখন সেনাপতি পদাতিকদিগকে সঙ্গে করিয়া তথায় গিয়া তাঁহাদিগকে আনিলেন, কিন্তু বলের সহিত নয়, কেননা তাঁহারা লোকদিগকে ভয় করিলেন, পাছে লোকে তাঁহাদিগকে পাথর মারে।পরে তাঁহারা তাঁহাদিগকে আনিয়া মহাসভার মধ্যে দাঁড় করাইলেন, আর মহাযাজক তাঁহাদিগকে জিজ্ঞাসা করিলেন, বলিলেন,আমরা তোমাদিগকে এই নামে উপদেশ দিতে দৃঢ়রূপে নিষেধ করিয়াছিলাম; তথাপি দেখ, তোমরা আপনাদের উপদেশে যিরূশালেম পরিপূর্ণ করিয়াছ, এবং সেই ব্যক্তির রক্ত আমাদের উপরে বর্তাইতে মনস্থ করিতেছ।কিন্তু পিতর ও অন্য প্রেরিতগণ উত্তর করিলেন, মনুষ্যদের অপেক্ষা বরং ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করিতে হইবে।তখন পিতর কহিলেন, অননিয়, শয়তান কেন তোমার হৃদয় এমন পূর্ণ করিয়াছে যে, তুমি পবিত্র আত্মার কাছে মিথ্যা বলিলে, এবং ভূমির মূল্য হইতে কতকটা রাখিয়া দিলে?
আর শিমোন যখন দেখিল, প্রেরিতদের হস্তার্পণ দ্বারা পবিত্র আত্মা দত্ত হইতেছেন, তখন সে তাঁহাদের নিকটে টাকা আনিয়া কহিল,আমাকেও এই ক্ষমতা দিউন, যেন আমি যাহার উপরে হস্তার্পণ করিব, সে পবিত্র আত্মা পায়।আর কয়েক জন ভক্ত লোক স্তিফানের কবর দিলেন, ও তাঁহার নিমিত্ত মহাবিলাপ করিলেন।কিন্তু পিতর তাহাকে বলিলেন, তোমার রৌপ্য তোমার সঙ্গে বিনষ্ট হউক, কেননা ঈশ্বরের দান তুমি টাকা দিয়া ক্রয় করিতে মনস্থ করিয়াছ।
কিন্তু এখন তোমাদিগকে লিখিতেছি যে, ভ্রাতা নামে আখ্যাত কোন ব্যক্তি যদি ব্যভিচারী কি লোভী কি প্রতিমাপূজক কি কটূভাষী কি মাতাল কি পরধনগ্রাহী হয়, তবে তাহার সংসর্গে থাকিতে নাই, এমন ব্যক্তির সহিত আহার করিতেও নাই।
সপ্তাহের প্রথম দিনে তোমরা প্রত্যেকে আপনাদের নিকটে কিছু কিছু রাখিয়া আপন আপন সঙ্গতি অনুসারে অর্থ সঞ্চয় কর; যেন আমি যখন আসিব, তখনই চাঁদা না হয়।
প্রত্যেক ব্যক্তি আপন আপন হৃদয়ে যেরূপ সঙ্কল্প করিয়াছে, তদনুসারে দান করুক, মনোদুঃখপূর্বক কিম্বা আবশ্যক বলিয়া না দিউক; কেননা ঈশ্বর হৃষ্টচিত্ত দাতাকে ভালবাসেন।
চোর আর চুরি না করুক, বরং স্বহস্তে সদ্ব্যাপারে পরিশ্রম করুক, যেন দীনহীনকে দিবার জন্য তাহার হাতে কিছু থাকে।
কিন্তু বেশ্যাগমনের ও সর্বপ্রকার অশুদ্ধতার বা লোভের নামও যেন তোমাদের মধ্যে না হয়, যেমন পবিত্রগণের উপযুক্ত।কেননা আমরা তাঁহার দেহের অঙ্গ।“এই জন্য মনুষ্য আপন পিতা মাতাকে ত্যাগ করিয়া আপন স্ত্রীতে আসক্ত হইবে, এবং সেই দুই জন একাঙ্গ হইবে।”এই নিগূঢ়তত্ত্ব মহৎ, কিন্তু আমি খ্রীষ্টের উদ্দেশে ও মণ্ডলীর উদ্দেশে ইহা কহিলাম।তথাপি তোমরাও প্রত্যেকে আপন আপন স্ত্রীকে তদ্রূপ আপনার মত প্রেম কর; কিন্তু স্ত্রীর উচিত যেন সে স্বামীকে ভয় করে।আর কুৎসিত ব্যবহার এবং প্রলাপ কিম্বা শ্লেষোক্তি, এই সকল অনুচিত ব্যবহার যেন না হয়, বরং যেন ধন্যবাদ দেওয়া হয়।কেননা তোমরা নিশ্চয় জানিতেছ, বেশ্যাগামী কি অশুদ্ধাচারী কি লোভী- সে ত প্রতিমাপূজক- কেহই খ্রীষ্টের ও ঈশ্বরের রাজ্যে অধিকার পায় না।
অতএব তোমরা পৃথিবীস্থ আপন আপন অঙ্গ সকল মৃত্যুসাৎ কর- যথা বেশ্যাগমন, অশুচিতা, মোহ, কুঅভিলাষ, এবং লোভ, ইহা ত প্রতিমাপূজা।
কিন্তু তোমাদিগকে বিনয় করিয়া বলিতেছি, ভ্রাতৃগণ, আরও অধিক উপচিয়া পড়, আর শান্ত ভাবে থাকিতে ও আপন আপন কার্য করিতে এবং স্বহস্তে পরিশ্রম করিতে সযত্ন হও-যেমন আমরা তোমাদিগকে আদেশ দিয়াছি- যেন বহিঃস্থ লোকদের প্রতি তোমরা শিষ্টাচারী হও, এবং তোমাদের কিছুরই অভাব না থাকে।
যাহারা এই যুগে ধনবান, তাহাদিগকে এই আজ্ঞা দেও, যেন তাহারা গর্বিতমনা না হয়, এবং ধনের অস্থিরতার উপরে নয়, কিন্তু যিনি ধনবানের ন্যায় সকলই আমাদের ভোগার্থে যোগাইয়া দেন, সেই ঈশ্বরেরই উপরে প্রত্যাশা রাখে;যেন পরের উপকার করে, সৎ ক্রিয়ারূপ ধনে ধনবান হয়, দানশীল হয়, সহভাগীকরণে তৎপর হয়;এইরূপে তাহারা আপনাদের নিমিত্ত, ভাবীকালের জন্য উত্তম ভিত্তিমূলস্বরূপ নিধি প্রস্তুত করুক, যেন, যাহা প্রকৃতরূপে জীবন, তাহাই ধরিয়া রাখিতে পারে।
কেননা ইহা আবশ্যক যে, অধ্যক্ষ ঈশ্বরের ধনাধ্যক্ষ বলিয়া অনিন্দনীয় হন; স্বেচ্ছাচারী কি আশুক্রোধী কি মদ্যপানে আসক্ত কি প্রহারক কি কুৎসিত লাভের লোভী না হন,
কেননা তোমরা বন্দিগণের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করিয়াছিলে, এবং আনন্দপূর্বক আপন আপন সমপত্তির লুট স্বীকার করিয়াছিলে, কারণ তোমরা জানিতে, তোমাদের আরও উত্তম নিজ সমপত্তি আছে, আর তাহা নিত্যস্থায়ী।
তোমাদের আচার-ব্যবহার ধনাসক্তিবিহীন হউক; তোমাদের যাহা আছে, তাহাতে সন্তুষ্ট থাক; কারণ তিনিই বলিয়াছেন, “আমি কোন ক্রমে তোমাকে ছাড়িব না, ও কোন ক্রমে তোমাকে ত্যাগ করিব না।”
হে আমার প্রিয় ভ্রাতৃগণ, শুন, সংসারে যাহারা দরিদ্র, ঈশ্বর কি তাহাদিগকে মনোনীত করেন নাই, যেন তাহারা বিশ্বাসে ধনবান হয়, এবং যাহারা তাঁহাকে প্রেম করে, তাহাদের কাছে অঙ্গীকৃত রাজ্যের অধিকারী হয়?কিন্তু তোমরা সেই দরিদ্রকে অনাদর করিয়াছ। ধনবানেরাই কি তোমাদের প্রতি উপদ্রব করে না? তাহারাই কি তোমাদিগকে টানিয়া বিচার-স্থানে লইয়া যায় না?
এখন দেখ, তোমাদের কেহ কেহ বলে, অদ্য কিম্বা কল্য, আমরা অমুক নগরে যাইব, এবং সেখানে এক বৎসর যাপন করিব, বাণিজ্য করিব ও লাভ করিব।তোমরা ত কল্যকার তত্ত্ব জান না; তোমাদের জীবন কি প্রকার? তোমরা ত বাষপস্বরূপ, যাহা ক্ষণেক দৃশ্য থাকে, পরে অন্তর্হিত হয়।উহার পরিবর্তে বরং ইহা বল, ‘প্রভুর ইচ্ছা হইলেই আমরা বাঁচিয়া থাকিব, এবং এ কাজটি বা ও কাজটি করিব’।
এখন দেখ, হে ধনবানেরা, তোমাদের উপরে যে সকল দুর্দশা আসিতেছে, সেই সকলের জন্য রোদন ও হাহাকার কর।হে ভ্রাতৃগণ, যে ভাববাদীরা প্রভুর নামে কথা বলিয়াছিলেন, তাহাদিগকে দুঃখভোগের ও দীর্ঘসহিষ্ণুতার দৃষ্টান্ত বলিয়া মান।দেখ, যাহারা স্থির রহিয়াছে, তাহাদিগকে আমরা ধন্য বলি। তোমরা ইয়োবের ধৈর্যের কথা শুনিয়াছ; প্রভুর পরিণামও দেখিয়াছ, ফলতঃ প্রভু স্নেহপূর্ণ ও দয়াময়।আবার, হে আমার ভ্রাতৃগণ, আমার সর্বপ্রধান কথা এই, তোমরা দিব্য করিও না; স্বর্গের কি পৃথিবীর কি অন্য কিছুরই দিব্য করিও না। বরং তোমাদের হাঁ হাঁ এবং না না হউক, পাছে বিচারে পতিত হও। তোমাদের মধ্যে কেহ কি দুঃখভোগ করিতেছে? সে প্রার্থনা করুক। কেহ কি প্রফুল্ল আছে? সে গান করুক।তোমাদের মধ্যে কেহ কি রোগগ্রস্ত? সে মণ্ডলীর প্রাচীনবর্গকে আহ্বান করুক; এবং তাঁহারা প্রভুর নামে তাহাকে তৈলাভিষিক্ত করিয়া তাহার উপরে প্রার্থনা করুন।তাহাতে বিশ্বাসের প্রার্থনা সেই পীড়িত ব্যক্তিকে সুস্থ করিবে, এবং প্রভু তাহাকে উঠাইবেন; আর সে যদি পাপ করিয়া থাকে, তবে তাহার মোচন হইবে।অতএব তোমরা একজন অন্য জনের কাছে আপন আপন পাপ স্বীকার কর, ও একজন অন্য জনের নিমিত্ত প্রার্থনা কর, যেন সুস্থ হইতে পার। ধার্মিকের বিনতি কার্যসাধনে মহাশক্তিযুক্ত।এলিয় আমাদের ন্যায় সুখদুঃখভোগী মনুষ্য ছিলেন; আর তিনি দৃঢ়তার সহিত প্রার্থনা করিলেন, যেন বৃষ্টি না হয়, এবং তিন বৎসর ছয় মাস ভূমিতে বৃষ্টি হইল না।পরে তিনি আবার প্রার্থনা করিলেন; আর আকাশ জল প্রদান করিল, এবং ভূমি নিজ ফল উৎপন্ন করিল। হে আমার ভ্রাতৃগণ, তোমাদের মধ্যে যদি কেহ সত্য হইতে ভ্রান্ত হয়, এবং কেহ তাহাকে ফিরাইয়া আনে,তোমাদের ধন পচিয়া গিয়াছে, ও তোমাদের বস্ত্র সকল কীট-ভক্ষিত হইয়াছে; তোমাদের স্বর্ণ ও রৌপ্য কলঙ্কিত হইয়াছে;তবে জানিও, যে ব্যক্তি কোন পাপীকে তাহার পথ-ভ্রান্তি হইতে ফিরাইয়া আনে, সে তাহার প্রাণকে মৃত্যু হইতে রক্ষা করিবে, এবং পাপরাশি আচ্ছাদন করিবে।আর তাহার কলঙ্ক তোমাদের বিপক্ষে সাক্ষ্য দিবে, এবং অগ্নির ন্যায় তোমাদের মাংস খাইবে। তোমরা শেষকালে ধন-সঞ্চয় করিয়াছ।
তোমাদের মধ্যে ঈশ্বরের যে পাল আছে, তাহা পালন কর; অধ্যক্ষের কার্য কর, আবশ্যকতা প্রযুক্ত নয়, কিন্তু ইচ্ছাপূর্বক, ঈশ্বরের অভিমতে, কুৎসিত লাভার্থে নয়, কিন্তু উৎসুক ভাবে কর;
লোভের বশে তাহারা কল্পিত বাক্য দ্বারা তোমাদের হইতে অর্থলাভ করিবে; তাহাদের বিচারাজ্ঞা দীর্ঘকাল বিলম্ব করে নাই, এবং তাহাদের বিনাশ ঢুলিয়া পড়ে নাই।
তোমরা জগৎকে প্রেম করিও না, জগতীস্থ বিষয় সকলও প্রেম করিও না। কেহ যদি জগৎকে প্রেম করে, তবে পিতার প্রেম তাহার অন্তরে নাই।কেননা জগতে যাহা কিছু আছে, মাংসের অভিলাষ, চক্ষুর অভিলাষ, ও জীবিকার দর্প, এই সকল পিতা হইতে নয়, কিন্তু জগৎ হইতে হইয়াছে।আর জগৎ ও তাহার অভিলাষ বহিয়া যাইতেছে; কিন্তু যে ব্যক্তি ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে, সে অনন্তকালস্থায়ী।
কিন্তু যাহার সাংসারিক জীবনোপায় আছে, সে আপন ভ্রাতাকে দীনহীন দেখিলে যদি তাহার প্রতি আপন করুণা রোধ করে, তবে ঈশ্বরের প্রেম কেমন করিয়া তাহার অন্তরে থাকে?
তুমি কহিতেছ, আমি ধনবান, ধন সঞ্চয় করিয়াছি, আমার কিছুরই অভাব নাই; কিন্তু জান না যে, তুমিই দুর্ভাগ্য, কৃপাপাত্র, দরিদ্র, অন্ধ ও উলঙ্গ।আমি তোমাকে এক পরামর্শ দিই; তুমি আমার কাছে এই সকল দ্রব্য ক্রয় কর- অগ্নি দ্বারা পরিষ্কৃত স্বর্ণ, যেন ধনবান হও; শুক্ল বস্ত্র, যেন বস্ত্রপরিহিত হও, আর তোমার উলঙ্গতার লজ্জা প্রকাশিত না হয়; চক্ষুতে লেপনীয় অঞ্জন, যেন দেখিতে পাও।
কেহ আপনাকে ধনবান দেখায় কিন্তু তাহার কিছুই নাই; কেহ বা নিজেকে দরিদ্র দেখায় কিন্তু তাহার মহাধন আছে।
অতএব তিনি কহিলেন, ভদ্রবংশীয় এক ব্যক্তি দূরদেশে গেলেন, অভিপ্রায় এই যে, আপনার জন্য রাজপদ লইয়া ফিরিয়া আসিবেন।আর তিনি আপনার দশ জন দাসকে ডাকিয়া দশটি মুদ্রা দিয়া কহিলেন, আমি যে পর্যন্ত না আসি, ব্যবসা কর।কিন্তু তাঁহার প্রজাগণ তাঁহাকে দ্বেষ করিত, তাহারা তাঁহার পশ্চাৎ দূত পাঠাইয়া দিল, কহিল, আমাদের ইচ্ছা নয় যে, এই ব্যক্তি আমাদের উপরে রাজত্ব করে।পরে তিনি রাজপদ প্রাপ্ত হইয়া যখন ফিরিয়া আসিলেন, তখন, যাহাদিগকে টাকা দিয়াছিলেন, সেই দাসদিগকে তাঁহার কাছে ডাকিয়া আনিতে বলিলেন, যেন তিনি জানিতে পারেন, তাহারা ব্যবসায়ে কে কত লাভ করিয়াছে।তখন প্রথম ব্যক্তি নিকটে আসিয়া কহিল, প্রভু, আপনার মুদ্রায় আর দশ মুদ্রা হইয়াছে।তিনি তাহাকে কহিলেন, ধন্য! উত্তম দাস, তুমি অতি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত হইলে; এই জন্য দশ নগরের উপরে কর্তৃত্ব কর।দ্বিতীয় ব্যক্তি আসিয়া কহিল, প্রভু, আপনার মুদ্রায় আর পাঁচ মুদ্রা হইয়াছে।তিনি তাহাকেও কহিলেন, তুমিও পাঁচ নগরের কর্তা হও।আর দেখ, সক্কেয় নামে এক ব্যক্তি; সে একজন প্রধান করগ্রাহী, এবং সে ধনবান ছিল।পরে আর একজন আসিয়া কহিল, প্রভু, দেখুন, এই আপনার মুদ্রা।আমি ইহা রুমালে বাঁধিয়া রাখিয়াছিলাম; কারণ আমি আপনা হইতে ভীত ছিলাম, কেননা আপনি কঠিন লোক, যাহা রাখেন নাই, তাহা তুলিয়া লন, এবং যাহা বুনেন নাই, তাহা কাটেন।তিনি তাহাকে কহিলেন, দুষ্ট দাস, আমি তোমার নিজ মুখের প্রমাণে তোমার বিচার করিব। তুমি না জানিতে, আমি কঠিন লোক, যাহা রাখি নাই তাহাই তুলিয়া লই, এবং যাহা বুনি নাই, তাহাই কাটি?তবে আমার টাকা পোদ্দারদের কাছে কেন রাখ নাই? তাহা করিলে আমি আসিয়া সুদের সহিত তাহা আদায় করিতাম।আর যাহারা নিকটে দাঁড়াইয়াছিল, তিনি তাহাদিগকে বলিলেন, ইহার নিকট হইতে ঐ মুদ্রা লও, এবং যাহার দশ মুদ্রা আছে, তাহাকে দেও।তাহারা তাঁহাকে কহিল, প্রভু, উহার যে দশ মুদ্রা আছে।আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, যে কাহারও আছে, তাহাকে দেওয়া যাইবে; কিন্তু যাহার নাই, তাহার যাহা আছে, তাহাও তাহার নিকট হইতে লওয়া যাইবে।
আর যে কাঁটাবনের মধ্যে উপ্ত, এ সেই যে সেই বাক্য শুনে, আর সংসারের চিন্তা ও ধনের মায়া সেই বাক্য চাপিয়া রাখে, তাহাতে সে ফলহীন হয়।
কেননা পরজাতীয়দের বাসনা সাধন করিয়া, লমপটতা, সুখাভিলাষ, মদ্যপান, রঙ্গরস পানার্থক সভা ও ঘৃণার্হ প্রতিমাপূজারূপ পথে চলিয়া যে কাল অতীত হইয়াছে, তাহাই যথেষ্ট।এই বিষয়ে তোমরা উহাদের সঙ্গে একই নষ্টামির পঙ্কের দিকে ধাবমান হইতেছ না দেখিয়া তাহারা আশ্চর্য জ্ঞান করিয়া নিন্দা করে।কিন্তু যিনি জীবিত ও মৃত সকলের বিচার করিতে উদ্যত তাঁহারই কাছে উহাদিগকে নিকাশ দিতে হইবে।
অতএব, আইস, আমরা পরস্পর কেহ কাহারও বিচার আর না করি, বরং তোমরা এই বিচার কর যে, ভ্রাতার ব্যাঘাতজনক কি বিঘ্নজনক কিছু রাখা অকর্তব্য।
আর এই যুগের অনুরূপ হইও না, কিন্তু মনের নূতনীকরণ দ্বারা স্বরূপান্তরিত হও; যেন তোমরা পরীক্ষা করিয়া জানিতে পার, ঈশ্বরের ইচ্ছা কি; যাহা উত্তম ও প্রীতিজনক ও সিদ্ধ।
মানুষের সমস্ত পরিশ্রম তাহার মুখের জন্য, তথাপি আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হয় না।বস্তুতঃ হীনবুদ্ধি অপেক্ষা জ্ঞানবানের কি উৎকর্ষ? আর জীবিতদের সাক্ষাতে চলিতে জানে এমন দুঃখী লোকেরই বা কি উৎকর্ষ?দৃষ্টিসুখ যত ভাল, প্রাণের লালসা তত ভাল নহে; ইহাও অসার ও বায়ুভক্ষণ মাত্র।
যে আপন প্রাণ ভালবাসে, সে তাহা হারায়; আর যে এই জগতে আপন প্রাণ অপ্রিয় জ্ঞান করে, সে অনন্ত জীবনের নিমিত্ত তাহা রক্ষা করিবে।কেহ যদি আমার পরিচর্যা করে, তবে সে আমার পশ্চাদ্গামী হউক; তাহাতে আমি যেখানে থাকি, আমার পরিচারকও সেখানে থাকিবে; কেহ যদি আমার পরিচর্যা করে, তবে পিতা তাহার সম্মান করিবেন।
তখন রাজা উত্তর করিয়া তাহাদিগকে বলিবেন, আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, আমার এই ভ্রাতৃগণের- এই ক্ষুদ্রতমদের- মধ্যে একজনের প্রতি যখন ইহা করিয়াছিলে, তখন আমারই প্রতি করিয়াছিলে।
তোমরা অবিশ্বাসীদের সহিত অসমভাবে জোঁয়ালিতে বদ্ধ হইও না; কেননা ধর্মে ও অধর্মে পরস্পর কি সহযোগিতা? অন্ধকারের সহিত দীপ্তিরই বা কি সহভাগিতা?
তিনি তাহাদিগকে কহিলেন, তোমরাই ত মনুষ্যদের সাক্ষাতে আপনাদিগকে ধার্মিক দেখাইয়া থাক, কিন্তু ঈশ্বর তোমাদের অন্তঃকরণ জানেন; কেননা মনুষ্যদের মধ্যে যাহা উচ্চ, তাহা ঈশ্বরের সাক্ষাতে ঘৃণিত।