তোমার যদি জ্ঞানের প্রয়োজন হয়, তাহলে ঈশ্বরের কাছে চাও। তিনি অকাতরে, কোনোরকম তিরস্কার ছাড়াই তোমাকে জ্ঞান দান করবেন। জীবনে নানা মতের মানুষের সাথে দেখা হবে, তর্ক-বিতর্ক তো হবেই।
কিন্তু মনে রেখো, ঈশ্বর চান না তুমি কারো সাথে ঝগড়া করো বা তর্কে জড়িয়ে পড়ো। তিনি চান তুমি নম্র হও এবং পবিত্র আত্মার কাছে তাঁর ইচ্ছা জানার জন্য প্রার্থনা করো।
কোনো ঝামেলায় জড়িও না, বিতর্কে যাবেনা। ঈশ্বরের বাক্য বুঝতে অসুবিধা হলে, পিতার কাছে জ্ঞান চাও। তিনি তোমার বোধশক্তিকে আলোকিত করবেন।
তিনি তোমাকে সত্যের পথ দেখাবেন এবং তাঁর শান্তি, যা সমস্ত বোধের উর্ধ্বে, তোমাকে ঘিরে রাখবে। এই মুহূর্তে, যীশুকে তোমার হৃদয়ের দরজা খুলে দাও। নিজের জ্ঞানের উপর ভরসা কোরো না।
মনে রেখো, অন্যকে ধর্মান্তরিত করা বা তোমার মত গ্রহণ করানো তোমার কাজ নয়। এটা ঈশ্বরের পবিত্র আত্মার কাজ।
পরে ঈশ্বর আপনার প্রতিমূর্তিতে মনুষ্যকে সৃষ্টি করিলেন; ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতেই তাহাকে সৃষ্টি করিলেন, পুরুষ ও স্ত্রী করিয়া তাহাদিগকে সৃষ্টি করিলেন।
আর সদাপ্রভু ঈশ্বর কহিলেন, মনুষ্যের একাকী থাকা ভাল নয়, আমি তাহার জন্য তাহার অনুরূপ সহকারিণী নির্মাণ করি।
অদ্য রাত্রিতে যে দুই ব্যক্তি তোমার বাটীতে আসিল তাহারা কোথায়? তাহাদিগকে বাহির করিয়া আমাদের নিকটে আন, আমরা তাহাদের পরিচয় লইব।
কিন্তু যদি কোন আপদ ঘটে, তবে তোমাকে এই পরিশোধ দিতে হইবে;প্রাণের পরিশোধে প্রাণ, চক্ষুর পরিশোধে চক্ষু, দন্তের পরিশোধে দন্ত, হস্তের পরিশোধে হস্ত, চরণের পরিশোধে চরণ,দাহের পরিশোধে দাহ, ক্ষতের পরিশোধে ক্ষত, কালশিরার পরিশোধে কালশিরা।
তাড়াতাড়ি বিবাদ করিতে যাইও না; বিবাদের শেষে তুমি কি করিবে, যখন তোমার প্রতিবাসী তোমাকে লজ্জায় ফেলিবে?প্রতিবাসীর সহিত তোমার বিবাদ মিটাইয়া ফেল, কিন্তু পরের গুপ্ত কথা প্রকাশ করিও না;
কিন্তু তিনি পাপী ও করগ্রাহীদের সঙ্গে ভোজন করিতেছেন দেখিয়া ফরীশীদের অধ্যাপকেরা তাঁহার শিষ্যদিগকে কহিল, উনি করগ্রাহী ও পাপীদের সঙ্গে ভোজন পান করেন।
আর যেমন স্ত্রীর সহিত, তেমনি পুরুষ যদি পুরুষের সহিত শয়ন করে, তবে তাহারা দুই জনে ঘৃণার্হ ক্রিয়া করে; তাহাদের প্রাণদণ্ড অবশ্য হইবে; তাহাদের রক্ত তাহাদের উপরে বর্তিবে।
ইহাতে ফরীশীরা তাঁহাকে কহিল, দেখ, যাহা বিধেয় নয়, উহারা তাহা বিশ্রামবারে কেন করিতেছে?তিনি তাহাদিগকে কহিলেন, দায়ূদ ও তাঁহার সঙ্গীরা খাদ্যের অভাবে ক্ষুধিত হইলে তিনি যাহা করিয়াছিলেন, তাহা কি তোমরা কখনও পাঠ কর নাই?
অতএব তোমরা এখন বালক-বালিকাদের মধ্যে সমস্ত বালককে বধ কর, এবং শয়নে পুরুষের পরিচয়প্রাপ্ত সমস্ত স্ত্রীলোককেও বধ কর;কিন্তু যে বালিকারা শয়নে পুরুষের পরিচয় পায় নাই, তাহাদিগকে আপনাদের জন্য জীবিত রাখ।
কিন্তু জীবনের দীপ্তি পাইবে। তাহাতে ফরীশীরা তাঁহাকে কহিল, তুমি আপনার বিষয়ে আপনি সাক্ষ্য দিতেছ; তোমার সাক্ষ্য সত্য নহে।
কিন্তু এই জাতিদের যে সকল নগর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু অধিকারার্থে তোমাকে দিবেন, সেই সকলের মধ্যে শ্বাসবিশিষ্ট কাহাকেও জীবিত রাখিবে না;তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর আজ্ঞা অনুসারে তাহাদিগকে- হিত্তীয়, ইমোরীয়, কনানীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দিগকে- নিঃশেষে বিনষ্ট করিবে;
আর তাহাদের সহিত পৌলের ও বার্ণবার অনেক বাগ্যুদ্ধ ও বাদানুবাদ হইলে পর ভ্রাতৃগণ স্থির করিলেন, সেই তর্কের মীমাংসার জন্য পৌল ও বার্ণবা, এবং তাঁহাদের আরও কয়েক জন, যিরূশালেমে প্রেরিতগণের ও প্রাচীনবর্গের নিকটে যাইবেন।
স্ত্রীলোক পুরুষের পরিধেয়, কিম্বা পুরুষ স্ত্রীলোকের বস্ত্র পরিধান করিবে না; কেননা যে কেহ তাহা করে, সে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘৃণার পাত্র।
কোন পুরুষ যদি বিবাহ করিয়া স্ত্রীর নিকটে গমন করে, পরে তাহাকে ঘৃণা করে,এবং তাহার নামে অপবাদ দেয় ও তাহার দুর্নাম করিয়া বলে, আমি এই স্ত্রীকে বিবাহ করিয়াছি বটে, কিন্তু সঙ্গকালে ইহার কৌমার্যের চিহ্ন পাইলাম না;তবে সেই কন্যার পিতামাতা তাহার কৌমার্যের চিহ্ন লইয়া নগরের প্রাচীনবর্গের নিকটে নগর-দ্বারে উপস্থিত করিবে।আর কন্যার পিতা প্রাচীনবর্গকে বলিবে, আমি এই ব্যক্তির সহিত আপন কন্যার বিবাহ দিয়াছিলাম, কিন্তু এ তাহাকে ঘৃণা করে;আর দেখ, এ অপবাদ দিয়া বলে, আমি তোমার কন্যার কৌমার্যের চিহ্ন পাই নাই; কিন্তু আমার কন্যার কৌমার্যের চিহ্ন এই দেখুন।আর তাহারা নগরের প্রাচীনবর্গের সাক্ষাতে সেই বস্ত্র বিস্তার করিবে। পরে নগরের প্রাচীনবর্গ সেই পুরুষকে ধরিয়া শাস্তি দিবে।আর তাহার একশত [শেকল] রৌপ্য দণ্ড করিয়া কন্যার পিতাকে দিবে, কেননা সেই ব্যক্তি ইস্রায়েলীয় এক কুমারীর উপরে দুর্নাম আনিয়াছে; আর সে তাহার স্ত্রী হইবে, ঐ পুরুষ যাবজ্জীবন তাহাকে ত্যাগ করিতে পারিবে না।যদি তোমার সেই ভ্রাতা তোমার নিকটস্থ কিম্বা পরিচিত না হয়, তবে তুমি সেই পশুকে আপন বাটীতে আনিয়া যাবৎ সেই ভ্রাতা তাহার অন্বেষণ না করে, তাবৎ আপনার নিকটে রাখিবে, পরে তাহা ফিরাইয়া দিবে।কিন্তু সেই কথা যদি সত্য হয়, কন্যার কৌমার্যের চিহ্ন যদি না পাওয়া যায়;তবে তাহারা সেই কন্যাকে বাহির করিয়া তাহার পিতৃগৃহের দ্বারসমীপে আনিবে, এবং সেই কন্যার নগরের পুরুষেরা প্রস্তরাঘাতে তাহাকে বধ করিবে; কেননা পিতৃগৃহে ব্যভিচার করাতে সে ইস্রায়েলের মধ্যে মূঢ়তার কর্ম করিয়াছে; এইরূপে তুমি আপনার মধ্য হইতে দুষ্টাচার লোপ করিবে।
পুরুষেরা পরস্পর বিরোধ করিলে তাহাদের একজনের স্ত্রী যদি প্রহারকের হস্ত হইতে আপন স্বামীকে মুক্ত করিতে আসিয়া হস্ত বিস্তারপূর্বক প্রহারকের পুরুষাঙ্গ ধরে,তবে তুমি তাহার হস্ত কাটিয়া ফেলিবে, চক্ষুলজ্জা করিবে না।
এখন তুমি গিয়া অমালেককে আঘাত কর, ও তাহার যাহা কিছু আছে, নিঃশেষে বিনষ্ট কর, তাহার প্রতি দয়া করিও না; স্ত্রী ও পুরুষ, বালক-বালিকা ও স্তন্যপায়ী শিশু, গরু ও মেষ, উষ্ট্র ও গর্দভ সকলকেই বধ কর।
সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দেখ, আমি তোমার কুল হইতেই তোমার বিরুদ্ধে অমঙ্গল উৎপন্ন করিব, এবং তোমার সাক্ষাতে তোমার স্ত্রীগণকে লইয়া তোমার আত্মীয়কে দিব; তাহাতে সে এই সূর্যের সাক্ষাতে তোমার স্ত্রীগণের সহিত শয়ন করিবে।বস্তুতঃ তুমি গোপনে এই কর্ম করিয়াছ, কিন্তু আমি সমস্ত ইস্রায়েলের সাক্ষাতে ও সূর্যের সাক্ষাতে এই কার্য করিব।তখন দায়ূদ নাথনকে কহিলেন, আমি সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করিয়াছি। নাথন দায়ূদকে কহিলেন, সদাপ্রভুও আপনার পাপ দূর করিলেন, আপনি মরিবেন না।কিন্তু এই কর্ম দ্বারা আপনি সদাপ্রভুর শত্রুগণকে নিন্দা করিবার বড় সুযোগ দিয়াছেন, এই জন্য আপনার নবজাত পুত্রটি অবশ্য মরিবে। পরে নাথন আপন গৃহে প্রস্থান করিলেন।
বালককে শাসন করিতে ত্রুটি করিও না; তুমি দণ্ড দ্বারা তাহাকে মারিলে সে মরিবে না।তুমি তাহাকে দণ্ড দ্বারা প্রহার করিবে, পাতাল হইতে তাহার প্রাণকে রক্ষা করিবে।
সকল বিষয়েরই সময় আছে, ও আকাশের নিচে সমস্ত ব্যাপারের কাল আছে। জন্মের কাল ও মরণের কাল;ঈশ্বর মনুষ্য-সন্তানদিগকে কষ্টযুক্ত করণার্থে যে কষ্ট দেন, তাহা আমি দেখিয়াছি।তিনি সকলই যথাকালে মনোহর করিয়াছেন, আবার তাহাদের হৃদয়মধ্যে চিরকাল রাখিয়াছেন; তথাপি ঈশ্বর আদি অবধি শেষ পর্যন্ত যে সকল কার্য করেন, মনুষ্য তাহার তত্ত্ব বাহির করিতে পারে না।আমি জানি, যাবজ্জীবন আনন্দ ও সৎকর্ম করণ ব্যতীত আর মঙ্গল তাহাদের হয় না।আর প্রত্যেক মনুষ্য যে ভোজন পান ও সমস্ত পরিশ্রমের মধ্যে সুখভোগ করে, ইহাও ঈশ্বরের দান।আমি জানি, ঈশ্বর যাহা কিছু করেন, তাহা চিরস্থায়ী; তাহা বাড়াইতেও পারা যায় না, কমাইতেও পারা যায় না; আর ঈশ্বর তাহা করিয়াছেন, যেন তাঁহার সম্মুখে মনুষ্যগণ ভীত হয়।যাহা আছে, তাহাই ছিল এবং যাহা হইবে, তাহাই ছিল; এবং যাহা চলিয়া গিয়াছে, ঈশ্বর তাহার অনুসন্ধান করেন।আরও আমি সূর্যের নিচে, বিচারের স্থানে দেখিলাম, সেখানে দুষ্টতা আছে; এবং ধার্মিকতার স্থানে দেখিলাম, সেখানে দুষ্টতা আছে।আমি মনে মনে বলিলাম, ঈশ্বরই ধার্মিকের ও দুষ্টের বিচার করিবেন, কেননা সেখানে সমস্ত ব্যাপারের নিমিত্ত এবং সমস্ত কর্মের নিমিত্ত বিশেষ কাল আছে।আমি মনে মনে কহিলাম, ইহা মনুষ্য-সন্তানদের নিমিত্ত হইতেছে, যেন ঈশ্বর তাহাদের পরীক্ষা করেন, আর যেন তাহারা দেখিতে পায় যে, তাহারা নিজেই পশুবৎ।কেননা মনুষ্য-সন্তানদের প্রতি যাহা ঘটে, তাহা পশুর প্রতিও ঘটে, সকলেরই প্রতি একরূপ ঘটনা ঘটে; এ যেমন মরে, সে তেমনি মরে; এবং তাহাদের সকলেরই নিশ্বাস এক; পশু হইতে মানুষের কিছু প্রাধান্য নাই, কেননা সকলই অসার।রোপণের কাল ও রোপিত বীজ উৎপাটনের কাল;সকলেই এক স্থানে গমন করে, সকলেই ধূলি হইতে উৎপন্ন, এবং সকলেই ধূলিতে প্রতিগমন করে।মনুষ্য-সন্তানদের আত্মা ঊর্ধ্বগামী হয় ও পশুর আত্মা ভূতলের দিকে অধোগামী হয়, ইহা কে জানে? অতএব আমি দেখিলাম, আপন কর্মে আনন্দ করণ ব্যতীত আর মঙ্গল মনুষ্যের নাই; কেননা ইহাই তাহার অধিকার। মনুষ্যের মৃত্যুর পরে যাহা ঘটিবে, কে তাহাকে আনিয়া তাহা দেখাইতে পারে?বধ করিবার কাল ও সুস্থ করিবার কাল;ভাঙ্গিবার কাল ও গাঁথিবার কাল; রোদন করিবার কাল ও হাস্য করিবার কাল; বিলাপ করিবার কাল ও নৃত্য করিবার কাল;প্রস্তর নিক্ষেপ করিবার কাল ও প্রস্তর সংগ্রহ করিবার কাল; আলিঙ্গনের কাল ও আলিঙ্গন না করিবার কাল; অন্বেষণ করিবার কাল ও হারাইবার কাল;রক্ষণের কাল ও ফেলিয়া দিবার কাল;ছিঁড়িবার কাল ও সিঙ্গাইবার কাল; নীরব থাকিবার কাল ও কথা কহিবার কাল;প্রেম করিবার কাল ও দ্বেষ করিবার কাল; যুদ্ধের কাল ও সন্ধির কাল।
আমি দীপ্তির রচনাকারী ও অন্ধকারের সৃষ্টিকর্তা, আমি শান্তির রচনাকারী ও অনিষ্টের সৃষ্টিকর্তা; আমি সদাপ্রভু এই সকলের সাধনকর্তা।
আর যখন তাহাদের শত্রুগণ ও প্রাণনাশার্থিগণ কর্তৃক তাহারা অবরুদ্ধ ও ক্লিষ্ট হইবে, তখন আমি তাহাদিগকে তাহাদের পুত্রদের মাংস ও তাহাদের কন্যাদের মাংস ভোজন করাইব, এবং তাহারা প্রত্যেকে আপন আপন বন্ধুর মাংস খাইবে।
অধিকন্তু যাহা মঙ্গলজনক নয়, এমন বিধিকলাপ, এবং যদ্দ্বারা কেহ বাঁচিতে পারে না, এমন শাসনকলাপ, তাহাদিগকে দিলাম।তাহারা গর্ভ উন্মোচক সমস্ত সন্তানকে [অগ্নির মধ্য দিয়া] গমন করাইত, তাই আমি তাহাদিগকে আপন আপন উপহারে অশুচি হইতে দিলাম, যেন আমি তাহাদিগকে ধ্বংস করি, যেন তাহারা জানিতে পারে যে, আমিই সদাপ্রভু।
তখন নবূখদ্নিৎসর ক্রোধে পরিপূর্ণ হইলেন, এবং শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগোর বিরুদ্ধে তাঁহার মুখ বিকটাকার হইল; তিনি বলিয়া দিলেন ও আজ্ঞা করিলেন, অগ্নিকুণ্ড যে পরিমাণে উত্তপ্ত আছে, তাহা অপেক্ষা যেন সাত গুণ অধিক উত্তপ্ত করা হয়;আর রাজা নবূখদ্নিৎসর সেই যে প্রতিমা স্থাপন করিয়াছিলেন, তাহার প্রতিষ্ঠা করিতে আসিবার জন্য ক্ষিতিপাল, প্রতিনিধি ও দেশাধ্যক্ষগণকে, মহাবিচারকর্তা, কোষাধ্যক্ষ, ব্যবস্থাপক ও অধিপতিগণকে এবং প্রদেশসমূহের সমস্ত শাসনকর্তাকে একত্র করিতে রাজা নবূখদ্নিৎসর লোক প্রেরণ করিলেন।আর তিনি আপন সৈন্যের মধ্যে কয়েক জন বীর্যবান পুরুষকে আজ্ঞা দিলেন, যেন তাহারা শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগোকে বাঁধিয়া প্রজ্বলিত অগ্নিকুণ্ডে নিক্ষেপ করে।তখন ঐ পুরুষেরা আপন আপন জামা, আঙরাখা, পরিচ্ছদ প্রভৃতি বস্ত্রসুদ্ধ বদ্ধ হইলেন, এবং প্রজ্বলিত অগ্নিকুণ্ড-মধ্যে নিক্ষিপ্ত হইলেন।আর রাজার আজ্ঞা প্রচণ্ড ও অগ্নিকুণ্ড অতি উত্তপ্ত ছিল, তৎপ্রযুক্ত যে পুরুষেরা শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগোকে নিক্ষেপ করিল, তাহারাই অগ্নিশিখায় হত হইল।আর শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগো, এই তিন ব্যক্তি বদ্ধ হইয়া প্রজ্বলিত অগ্নিকুণ্ডের মধ্যে পতিত হইলেন।তখন রাজা নবূখদ্নিৎসর চমৎকৃত হইলেন, ও সত্বর উঠিলেন; তিনি আপন মন্ত্রীদিগকে কহিলেন, আমরা কি তিন জন পুরুষকে বাঁধিয়া অগ্নিমধ্যে নিক্ষেপ করি নাই? তাঁহারা উত্তর করিয়া রাজাকে কহিলেন, হাঁ, মহারাজ।তখন রাজা কহিলেন, দেখ, আমি চারি ব্যক্তিকে দেখিতেছি; উহারা মুক্ত হইয়া অগ্নির মধ্যে গমনাগমন করিতেছে, উহাদের কোন হানি হয় নাই; আর চতুর্থ ব্যক্তির মূর্তি দেবপুত্রের সদৃশ।তখন নবূখদ্নিৎসর সেই প্রজ্বলিত অগ্নিকুণ্ডের দুয়ারের কাছে গিয়া কহিলেন, হে পরাৎপরের ঈশ্বরের দাস শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগো, বাহির হইয়া আইস। তখন শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগো অগ্নির মধ্য হইতে বাহির হইয়া আসিলেন।পরে ক্ষিতিপাল, প্রতিনিধি, দেশাধ্যক্ষ ও রাজমন্ত্রিগণ একত্র হইয়া ঐ তিন ব্যক্তিকে নিরীক্ষণ করিয়া দেখিলেন, অগ্নি তাঁহাদের শরীরের উপর কিছুই শক্তি প্রকাশ করে নাই, তাঁহাদের মস্তকের কেশও দগ্ধ হয় নাই, বস্ত্রও বিকৃত হয় নাই, এবং তাহাদের গায়ে অগ্নির গন্ধও নাই।তখন নবূখদ্নিৎসর এই কথা কহিলেন, ধন্য শদ্রকের, মৈশকের ও অবেদ্-নগোর ঈশ্বর, তিনি আপন দূত প্রেরণ করিয়া, তাঁহার সেই দাসদিগকে উদ্ধার করিলেন, যাহারা তাঁহাতে বিশ্বাস করিয়াছে, রাজার আজ্ঞা লঙ্ঘন করিয়াছে, এবং আপনাদের ঈশ্বর ব্যতিরেকে যেন অন্য কোন দেবের সেবা ও পূজা করিতে না হয়, সেই জন্য আপন আপন শরীর দিয়াছে।অতএব আমি এই নিয়ম স্থাপন করিতেছি, সকল দেশের লোক, জাতি ও ভাষাবিদগণের মধ্যে যে কেহ শদ্রকের, মৈশকের ও অবেদ্-নগোর ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কোন ভ্রান্তির কথা বলিবে, সে খণ্ডবিখণ্ড হইবে, এবং তাহার গৃহ সারের ঢিবী করা যাইবে; কেননা এই প্রকার উদ্ধার করিতে সমর্থ আর কোন দেবতা নাই।তখন ক্ষিতিপালগণ, প্রতিনিধিগণ, দেশাধ্যক্ষগণ, মহাবিচারকর্তৃগণ, কোষাধ্যক্ষগণ, ব্যবস্থাপকগণ ও অধিপতিগণ, এবং প্রদেশসমূহের সমস্ত শাসনকর্তা রাজা নবূখদ্নিৎসরের স্থাপিত সেই প্রতিমার প্রতিষ্ঠা করিবার জন্য একত্র হইলেন। পরে তাঁহারা নবূখদ্নিৎসরের স্থাপিত প্রতিমার সম্মুখে দাঁড়াইলেন।তখন রাজা বাবিল প্রদেশে শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগোকে উচ্চপদস্থ করিলেন।
কিন্তু এষৌকে অপ্রেম করিয়াছি, তাহার পর্বতগণকে ধ্বংসস্থান করিয়াছি, ও তাহার অধিকার প্রান্তরস্থ শৃগালদের বাসস্থান করিয়াছি।
মনে করিও না যে, আমি ব্যবস্থা কি ভাববাদী গ্রন্থ লোপ করিতে আসিয়াছি; আমি তাহা লোপ করিতে আসি নাই, কিন্তু পূর্ণ করিতে আসিয়াছি।কেননা আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, যে পর্যন্ত আকাশ ও পৃথিবী লুপ্ত না হইবে, সেই পর্যন্ত ব্যবস্থার এক মাত্রা কি এক বিন্দুও লুপ্ত হইবে না, সমস্তই সফল হইবে।অতএব যে কেহ এই সকল ক্ষুদ্রতম আজ্ঞার মধ্যে কোন একটি আজ্ঞা লঙ্ঘন করে, ও লোকদিগকে সেইরূপ শিক্ষা দেয়, তাহাকে স্বর্গরাজ্যে অতি ক্ষুদ্র বলা যাইবে; কিন্তু যে কেহ সেই সকল পালন করে ও শিক্ষা দেয়, তাহাকে স্বর্গ-রাজ্যে মহান বলা যাইবে।
তোমরা বিচার করিও না, যেন বিচারিত না হও।কিম্বা মাছ চাহিলে তাহাকে সাপ দিবে?অতএব তোমরা মন্দ হইয়াও যদি তোমাদের সন্তানদিগকে উত্তম উত্তম দ্রব্য দান করিতে জান, তবে ইহা কত অধিক নিশ্চয় যে, তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা, যাহারা তাঁহার কাছে যাচ্ঞা করে, তাহাদিগকে উত্তম উত্তম দ্রব্য দান করিবেন।অতএব সর্ববিষয়ে তোমরা যাহা যাহা ইচ্ছা কর যে, লোকে তোমাদের প্রতি করে, তোমরাও তাহাদের প্রতি সেইরূপ করিও; কেননা ইহাই ব্যবস্থার ও ভাববাদি-গ্রন্থের সার।সঙ্কীর্ণ দ্বার দিয়া প্রবেশ কর; কেননা সর্বনাশে যাইবার দ্বার প্রশস্ত ও পথ পরিসর, এবং অনেকেই তাহা দিয়া প্রবেশ করে;কেননা জীবনে যাইবার দ্বার সঙ্কীর্ণ ও পথ দুর্গম, এবং অল্প লোকেই তাহা পায়।ভাক্ত ভাববাদিগণ হইতে সাবধান; তাহারা মেষের বেশে তোমাদের নিকটে আইসে, কিন্তু অন্তরে গ্রাসকারী কেন্দুয়া।তোমরা তাহাদের ফল দ্বারাই তাহাদিগকে চিনিতে পারিবে। লোকে কি কাঁটা গাছ হইতে দ্রাক্ষাফল, কিম্বা শিয়ালকাঁটা হইতে ডুমুর ফল সংগ্রহ করে?সেই প্রকারে প্রত্যেক ভাল গাছে ভাল ফল ধরে, কিন্তু মন্দ গাছে মন্দ ফল ধরে।ভাল গাছে মন্দ ফল ধরিতে পারে না, এবং মন্দ গাছে ভাল ফল ধরিতে পারে না।যে কোন গাছে ভাল ফল ধরে না, তাহা কাটিয়া আগুনে ফেলিয়া দেওয়া যায়।কেননা যেরূপ বিচারে তোমরা বিচার কর, সেইরূপ বিচারে তোমরাও বিচারিত হইবে; এবং তোমরা যে পরিমাণে পরিমাণ কর, সেই পরিমাণে তোমাদের নিমিত্ত পরিমাণ করা যাইবে।অতএব তোমরা উহাদের ফল দ্বারাই উহাদিগকে চিনিতে পারিবে।যাহারা আমাকে হে প্রভু, হে প্রভু বলে, তাহারা সকলেই যে স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করিতে পারিবে, এমন নয়, কিন্তু যে ব্যক্তি আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করে, সেই পারিবে।সেই দিন অনেকে আমাকে বলিবে, হে প্রভু, হে প্রভু, আপনার নামেই আমরা কি ভাববাণী বলি নাই? আপনার নামেই কি ভূত ছাড়াই নাই? আপনার নামেই কি অনেক পরাক্রম-কার্য করি নাই?তখন আমি তাহাদিগকে স্পষ্টই বলিব, আমি কখনও তোমাদিগকে জানি নাই; হে অধর্মাচারীরা, আমার নিকট হইতে দূর হও।অতএব যে কেহ আমার এই সকল বাক্য শুনিয়া পালন করে, তাহাকে এমন একজন বুদ্ধিমান লোকের তুল্য বলিতে হইবে, যে পাষাণের উপরে তাহার গৃহ নির্মাণ করিল।পরে বৃষ্টি নামিল, বন্যা আসিল, বায়ু বহিল, এবং সেই গৃহে লাগিল, তথাপি তাহা পড়িল না, কারণ পাষাণের উপরে তাহার ভিত্তিমূল স্থাপিত হইয়াছিল।আর যে কেহ আমার এই সকল বাক্য শুনিয়া পালন না করে, তাহাকে এমন একজন নির্বোধ লোকের তুল্য বলিতে হইবে, যে বালুকার উপরে আপন গৃহ নির্মাণ করিল।পরে বৃষ্টি নামিল, বন্যা আসিল, বায়ু বহিল, এবং সেই গৃহে আঘাত করিল; তাহাতে তাহা পড়িয়া গেল, ও তাহার পতন ঘোরতর হইল।যীশু যখন এই সকল বাক্য শেষ করিলেন, লোকসমূহ তাঁহার উপদেশে চমৎকার জ্ঞান করিল;কারণ তিনি ক্ষমতাপন্ন ব্যক্তির ন্যায় তাহাদিগকে উপদেশ দিতেন, তাহাদের অধ্যাপকদের ন্যায় নয়।আর তোমার ভ্রাতার চক্ষে যে কুটা আছে, তাহাই কেন দেখিতেছ, কিন্তু তোমার নিজের চক্ষে যে কড়িকাট আছে, তাহা কেন ভাবিয়া দেখিতেছ না?অথবা তুমি কেমন করিয়া আপন ভ্রাতাকে বলিবে, আইস, আমি তোমার চক্ষু হইতে কুটাগাছটা বাহির করিয়া দিই? আর দেখ, তোমার নিজের চক্ষে কড়িকাট রহিয়াছে!হে কপটি, আগে আপনার চক্ষু হইতে কড়িকাট বাহির করিয়া ফেল, আর তখন তোমার ভ্রাতার চক্ষু হইতে কুটাগাছটা বাহির করিবার নিমিত্ত স্পষ্ট দেখিতে পাইবে।
আর আমি তোমাদিগকে কহিতেছি, ব্যভিচার দোষ ব্যতিরেকে যে কেহ আপন স্ত্রীকে পরিত্যাগ করিয়া অন্য স্ত্রীলোককে বিবাহ করে, সে ব্যভিচার করে; এবং যে ব্যক্তি সেই পরিত্যক্তা স্ত্রীকে বিবাহ করে, সেও ব্যভিচার করে।
আর পৃথিবীতে কাহাকেও ‘পিতা’ বলিয়া সম্বোধন করিও না, কারণ তোমাদের পিতা একজন, তিনি সেই স্বর্গীয়।
অতএব তোমরা গিয়া সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর; পিতার ও পুত্রের ও পবিত্র আত্মার নামে তাহাদিগকে বাপ্তাইজ কর;আর দেখ, মহা-ভূমিকম্প হইল; কেননা প্রভুর এক দূত স্বর্গ হইতে নামিয়া আসিয়া সেই পাথরখানি সরাইয়া দিলেন, এবং তাহার উপরে বসিলেন।আমি তোমাদিগকে যাহা যাহা আজ্ঞা করিয়াছি, সেই সমস্ত পালন করিতে তাহাদিগকে শিক্ষা দেও। আর দেখ, আমিই যুগান্ত পর্যন্ত প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি।
কিন্তু সৃষ্টির আদি হইতে ঈশ্বর পুরুষ ও স্ত্রী করিয়া তাহাদিগকে নির্মাণ করিয়াছেন;“এই কারণ মনুষ্য আপন পিতামাতাকে ত্যাগ করিয়া আপন স্ত্রীতে আসক্ত হইবে,আর সেই দুই জন একাঙ্গ হইবে;” সুতরাং তাহারা আর দুই নয়, কিন্তু একাঙ্গ।অতএব ঈশ্বর যাহার যোগ করিয়া দিয়াছেন, মনুষ্য তাহার বিয়োগ না করুক।
ব্যবস্থা ও ভাববাদিগণ যোহন পর্যন্ত; সেই অবধি ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচারিত হইতেছে, এবং প্রত্যেক জন সবলে সেই রাজ্যে প্রবেশ করিতেছে।কিন্তু ব্যবস্থার এক বিন্দু পড়িয়া যাওয়া অপেক্ষা বরং আকাশের ও পৃথিবীর লোপ হওয়া সহজ।
যে কেহ পুত্রে বিশ্বাস করে, সে অনন্ত জীবন পাইয়াছে; কিন্তু যে কেহ পুত্রকে অমান্য করে, সে জীবন দেখিতে পাইবে না, কিন্তু ঈশ্বরের ক্রোধ তাহার উপরে অবস্থিতি করিবে।
যীশু তাহাদিগকে কহিলেন, সত্য, সত্য, আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, তোমরা যদি মনুষ্যপুত্রের মাংস ভোজন ও তাঁহার রক্ত পান না কর, তোমাদের মধ্যে জীবন নাই।
পরে তাঁহারা উভয়ের জন্য গুলিবাঁট করিলেন, আর মত্তথিয়ের নামে গুলি উঠিল; তাহাতে তিনি এগার জন প্রেরিতের সহিত গণিত হইলেন।
তখন পিতর তাহাদিগকে কহিলেন, মন ফিরাও, এবং তোমরা প্রত্যেক জন তোমাদের পাপমোচনের নিমিত্ত যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তাইজিত হও; তাহা হইলে পবিত্র আত্মারূপ দান প্রাপ্ত হইবে।
আর তিনি এক ব্যক্তি হইতে মনুষ্যদের সকল জাতিকে উৎপন্ন করিয়াছেন, যেন তাহারা সমস্ত ভূতলে বাস করে; তিনি তাহাদের নির্দিষ্ট কাল ও নিবাসের সীমা স্থির করিয়া দিয়াছেন;যেন তাহারা ঈশ্বরের অন্বেষণ করে, যদি কোন মতে হাতড়াইয়া হাতড়াইয়া তাঁহার উদ্দেশ পায়; অথচ তিনি আমাদের কাহারও হইতে দূরে নহেন।
কারণ ঈশ্বরের ক্রোধ স্বর্গ হইতে সেই মনুষ্যদের সমস্ত ভক্তিহীনতা ও অধার্মিকতার উপরে প্রকাশিত হইতেছে, যাহারা অধার্মিকতায় সত্যের প্রতিরোধ করে।কেননা ঈশ্বরের বিষয়ে যাহা জানা যাইতে পারে, তাহা তাহাদের মধ্যে প্রকাশিত আছে, কারণ ঈশ্বর তাহা তাহাদের কাছে প্রকাশ করিয়াছেন।যে সুসমাচার ঈশ্বর পবিত্র শাস্ত্রে আপন ভাববাদিগণের দ্বারা পূর্বে প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলেন;ফলতঃ তাঁহার অদৃশ্য গুণ, অর্থাৎ তাঁহার অনন্ত পরাক্রম ও ঈশ্বরত্ব, জগতের সৃষ্টিকাল অবধি তাঁহার বিবিধ কার্যে বোধগম্য হইয়া দৃষ্ট হইতেছে, এই জন্য তাঁহাদের উত্তর দিবার পথ নাই;কারণ ঈশ্বরকে জ্ঞাত হইয়াও তাহারা তাঁহাকে ঈশ্বর বলিয়া তাঁহার গৌরব করে নাই; ধন্যবাদও করে নাই; কিন্তু আপনাদের তর্কবিতর্কে অসার হইয়া পড়িয়াছে, এবং তাহাদের অবোধ হৃদয় অন্ধকার হইয়া গিয়াছে।আপনাদিগকে বিজ্ঞ বলিয়া তাহারা মূর্খ হইয়াছে,এবং ক্ষয়ণীয় মনুষ্যের ও পক্ষীর ও চতুসপদের ও সরীসৃপের মূর্তিবিশিষ্ট প্রতিকৃতির সহিত অক্ষয় ঈশ্বরের গৌরব পরিবর্তন করিয়াছে।এই কারণে ঈশ্বর তাহাদিগকে আপন আপন হৃদয়ের নানা অভিলাষে এমন অশুচিতায় সমর্পণ করিলেন যে, তাহাদের দেহ তাহাদের মধ্যে অনাদৃত হইতেছে;কারণ তাহারা মিথ্যার সহিত ঈশ্বরের সত্য পরিবর্তন করিয়াছে, এবং সৃষ্ট বস্তুর পূজা ও আরাধনা করিয়াছে, কিন্তু সৃষ্টিকর্তাকে নয়, যিনি যুগে যুগে ধন্য। আমেন।এই জন্য ঈশ্বর তাহাদিগকে জঘন্য রিপুর বশে সমর্পণ করিয়াছেন; এমন কি তাহাদের স্ত্রীলোকেরা স্বাভাবিক ব্যবহারের পরিবর্তে স্বভাবের বিপরীত ব্যবহার করিয়াছে।আর পুরুষেরাও তদ্রূপ স্বাভাবিক স্ত্রীসঙ্গ ত্যাগ করিয়া পরসপর কামানলে প্রজ্বলিত হইয়াছে, পুরুষ পুরুষে কুৎসিত ক্রিয়া সমপন্ন করিয়াছে, এবং প্রত্যেকে নিজেদের উপরে বিপথগমনের সমুচিত প্রতিফল পাইয়াছে।আর যেমন তাহারা ঈশ্বরকে আপনাদের জ্ঞানে ধারণ করিতে সম্মত হয় নাই, তেমনি ঈশ্বর তাহাদিগকে অনুচিত ক্রিয়া করিতে ভ্রষ্ট মতিতে সমর্পণ করিলেন।তাহারা সর্বপ্রকার অধার্মিকতা, দুষ্টতা, লোভ ও হিংসাতে পরিপূরিত, মাৎসর্য, বধ, বিবাদ, ছল ও দুর্বৃত্তিতে পূর্ণ;তাহা তাঁহার পুত্র বিষয়ক, যিনি মাংসের সম্বন্ধে দায়ূদের বংশজাত,কর্ণেজপ, পরীবাদক, ঈশ্বর-ঘৃণাকারী, দুর্বিনীত, উদ্ধত, আত্মশ্লাঘী, মন্দ বিষয়ের উৎপাদক, পিতামাতার অনাজ্ঞাবহ,নির্বোধ, নিয়ম ভঙ্গকারী, স্নেহ-রহিত, নির্দয়।তাহারা ঈশ্বরের এই বিচার জ্ঞাত ছিল যে, যাহারা এইরূপ আচরণ করে, তাহারা মৃত্যুর যোগ্য, তথাপি তাহারা তদ্রূপ আচরণ করে, কেবল তাহা নয়, কিন্তু তদাচারী সকলের অনুমোদন করে।
তবে কি বলিব? ব্যবস্থা কি পাপ? তাহা দূরে থাকুক; বরং পাপ কি, তাহা আমি জানিতাম না, কেবল ব্যবস্থা দ্বারা জানিয়াছি; কেননা “লোভ করিও না,” এই কথা যদি ব্যবস্থা না বলিত, তবে লোভ কি, তাহা জানিতাম না;কিন্তু পাপ সুযোগ পাইয়া সেই আজ্ঞা দ্বারা আমার অন্তরে সর্বপ্রকার লোভ সমপন্ন করিল; কেননা ব্যবস্থা ব্যতিরেকে পাপ মৃত থাকে।
হে প্রিয়েরা, তোমরা নিজেরা প্রতিশোধ লইও না, বরং ক্রোধের জন্য স্থান ছাড়িয়া দেও, কারণ লেখা আছে, “প্রতিশোধ লওয়া আমারই কর্ম, আমিই প্রতিফল দিব, ইহা প্রভু বলেন।”
আমাদের প্রভু যীশুর পরাক্রম সহকারে তাদৃশ্য ব্যক্তিকে মাংসের বিনাশার্থে শয়তানের হস্তে সমর্পণ করিতে হইবে, যেন প্রভু যীশুর দিনে আত্মা পরিত্রাণ পায়।
কিন্তু যে কোন স্ত্রী অনাবৃত মস্তকে প্রার্থনা করে, কিম্বা ভাববাণী বলে, সে আপন মস্তকের অপমান করে; কারণ সে নির্বিশেষে মুণ্ডিতের সমান হইয়া পড়ে।ভাল, স্ত্রী যদি মস্তক আবৃত না রাখে, সে চুলও কাটিয়া ফেলুক; কিন্তু চুল কাটিয়া ফেলা কি মস্তক মুণ্ডন করা যদি স্ত্রীর লজ্জার বিষয় হয়, তবে মস্তক আবৃত রাখুক।
যেমন পবিত্রগণের সমস্ত মণ্ডলীতে হইয়া থাকে, স্ত্রীলোকেরা মণ্ডলীতে নীরব থাকুক, কেননা কথা কহিবার অনুমতি তাহাদিগকে দেওয়া যায় না, বরং যেমন ব্যবস্থাও বলে, তাহারা বশীভূতা হইয়া থাকুক।আর যদি তাহারা কিছু শিখিতে চায়, তবে নিজ নিজ স্বামীকে ঘরে জিজ্ঞাসা করুক, কারণ মণ্ডলীতে স্ত্রীলোকের কথা বলা লজ্জার বিষয়।
যিহূদী কি গ্রীক আর হইতে পারে না, দাস কি স্বাধীন আর হইতে পারে না, নর ও নারী আর হইতে পারে না, কেননা খ্রীষ্ট যীশুতে তোমরা সকলেই এক।
নারীগণ, তোমরা যেমন প্রভুর, তেমনি নিজ নিজ স্বামীর বশীভূত হও।কেননা স্বামী স্ত্রীর মস্তক, যেমন খ্রীষ্টও মণ্ডলীর মস্তক; তিনি আবার দেহের ত্রাণকর্তা;কিন্তু মণ্ডলী যেমন খ্রীষ্টের বশীভূত, তেমনি নারীগণ, সর্ববিষয়ে আপন আপন স্বামীর বশীভূত হউক।
অতএব, হে আমার প্রিয়তমেরা, তোমরা সর্বদা যেমন আজ্ঞাবহ হইয়া আসিতেছ, তেমনি আমার সাক্ষাতে যেরূপ কেবল সেইরূপ নয়, বরং এখন আরও অধিকতররূপে আমার অসাক্ষাতে, সভয়ে ও সকমেপ আপন আপন পরিত্রাণ সমপন্ন কর।
দাসেরা, যাহারা মাংসের সম্বন্ধে তোমাদের প্রভু, তোমরা তাহাদের আজ্ঞাবহ হও; চাক্ষুষ সেবা দ্বারা মনুষ্যের তুষ্টিকরের মত নয়, কিন্তু অন্তঃকরণের সরলতায় প্রভুকে ভয় করিয়া আজ্ঞাবহ হও।যাহা কিছু কর, প্রাণের সহিত কার্য কর, মনুষ্যের কর্ম নয়, কিন্তু প্রভুরই কর্ম বলিয়া কর;কেননা তোমরা জান, প্রভু হইতে তোমরা দায়াধিকাররূপ প্রতিদান পাইবে;
ফলতঃ ঈশ্বরের ইচ্ছা এই, তোমাদের পবিত্রতা- যেন তোমরা ব্যভিচার হইতে দূরে থাক,তোমাদের প্রত্যেক জন যেন, যাহারা ঈশ্বরকে জানে না,সেই পরজাতীয়দের ন্যায় কামাভিলাষে নয়, কিন্তু পবিত্রতায় ও সমাদরে নিজ নিজ পাত্র লাভ করিতে জানে।
এখন অবধি কেবল জল পান করিও না, কিন্তু তোমার উদরের জন্য ও তোমার বার বার অসুখ হয় বলিয়া কিঞ্চিৎ দ্রাক্ষারস ব্যবহার করিও।
কেননা এমন সময় আসিবে, যে সময় লোকেরা নিরাময় শিক্ষা সহ্য করিবে না, কিন্তু কানচুল্কানি-বিশিষ্ট হইয়া আপন আপন অভিলাষ অনুসারে আপনাদের জন্য রাশি রাশি গুরু ধরিবে,এবং সত্য হইতে কান ফিরাইয়া গল্পের দিকে বিপথে যাইবে।
কারণ অনেক অদম্য লোক, অসার বাক্যবাদী ও বুদ্ধিভ্রামক লোক আছে, বিশেষতঃ ত্বক্ছেদীদের মধ্যে আছে; তাহাদের মুখ বদ্ধ করা চাই।তাহারা কুৎসিত লাভের অনুরোধে অনুপযুক্ত শিক্ষা দিয়া কখনও কখনও একেবারে ঘর উল্টাইয়া ফেলে।তাহাদের একজন, তাহাদের এক স্বদেশীয় ভাববাদী বলিয়াছেন, ‘ক্রীতীয়েরা নিয়ত মিথ্যাবাদী, হিংস্র জন্তু, অলস পেটুক’।এই সাক্ষ্য সত্য; এই জন্য তুমি তাহাদিগকে তীক্ষ্ণভাবে অনুযোগ কর; যেন তাহারা বিশ্বাসে নিরাময় হয়,যিহূদীয় গল্পে, ও সত্য হইতে বিমুখ মনুষ্যদের আজ্ঞায়, মনোযোগ না করে।
কেননা যাহারা একবার দীপ্তিপ্রাপ্ত হইয়াছে, ও স্বর্গীয় দানের রসাস্বাদন করিয়াছে, ও পবিত্র আত্মার ভাগী হইয়াছে,এবং ঈশ্বরের মঙ্গলবাক্যের ও ভাবী যুগের নানা পরাক্রমের রসাস্বাদন করিয়াছে,পরে ধর্মভ্রষ্ট হইয়াছে, মনপরিবর্তনার্থে আবার তাহাদিগকে নূতন করিতে পারা যায় না; কেননা তাহারা আপনাদের বিষয়ে ঈশ্বরের পুত্রকে পুনরায় ক্রুশে দেয় ও প্রকাশে নিন্দাসপদ করে।
কারণ সত্যের তত্ত্বজ্ঞান পাইলে পর যদি আমরা স্বেচ্ছাপূর্বক পাপ করি, তবে পাপার্থক আর কোন যজ্ঞ অবশিষ্ট থাকে না,কেবল থাকে বিচারের ভয়ঙ্কর প্রতীক্ষা এবং বিপক্ষদিগকে গ্রাস করিতে উদ্যত অগ্নির চণ্ডতা।
হে আমার ভ্রাতৃগণ, যদি কেহ বলে, আমার বিশ্বাস আছে, আর তাহার কর্ম না থাকে, তবে তাহার কি ফল দর্শিবে? সেই বিশ্বাস কি তাহার পরিত্রাণ করিতে পারে?কোন ভ্রাতা কিম্বা ভগিনী বস্ত্রহীন ও দৈনিক খাদ্যবিহীন হইলে যদি তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি তাহাদিগকে বলে,কুশলে যাও, উষ্ণ ও তৃপ্ত হও, কিন্তু তোমরা তাহাদিগকে শরীরের প্রয়োজনীয় বস্তু না দেও, তবে তাহাতে কি ফল দর্শিবে?তদ্রূপ বিশ্বাসও কর্মবিহীন হইলে আপনি একা বলিয়া তাহা মৃত।কিন্তু কেহ বলিবে, তোমার বিশ্বাস আছে, আর আমার কর্ম আছে; তোমার কর্মবিহীন বিশ্বাস আমাকে দেখাও, আর আমি তোমাকে আমার কর্ম হইতে বিশ্বাস দেখাইব।তুমি বিশ্বাস করিতেছ যে, ঈশ্বর এক, ভালই করিতেছ; ভূতেরাও তাহা বিশ্বাস করে এবং ভয়ে কাঁপে।কেননা যদি তোমাদের সমাজগৃহে স্বর্ণময় অঙ্গুরীয়ে ও শুভ্র বস্ত্রে ভূষিত কোন ব্যক্তি আইসে, এবং মলিন বস্ত্র পরিহিত কোন দরিদ্রও আইসে,কিন্তু হে অসার মনুষ্য, তুমি কি জানিতে চাও যে, কর্মবিহীন বিশ্বাস কোন কাজের নয়।আমাদের পিতা অব্রাহাম কর্মহেতু, অর্থাৎ যজ্ঞবেদির উপরে আপন পুত্র ইস্হাককে উৎসর্গ করণ হেতু, কি ধার্মিক গণিত হইলেন না?তুমি দেখিতেছ, বিশ্বাস তাহার ক্রিয়ার সহকারী ছিল, এবং কর্ম হেতু বিশ্বাস সিদ্ধ হইল;তাহাতে এই শাস্ত্রীয় বচন পূর্ণ হইল, “অব্রাহাম ঈশ্বরে বিশ্বাস করিলেন, এবং তাহা তাঁহার পক্ষে ধার্মিকতা বলিয়া গণিত হইল”, আর তিনি “ঈশ্বরের বন্ধু” এই নাম পাইলেন।তোমরা দেখিতেছ, কর্মহেতু মনুষ্য ধার্মিক গণিত হয়, শুধু বিশ্বাস হেতু নয়।আবার রাহব বেশ্যাও কি সেই প্রকারে কর্মহেতু ধার্মিকা গণিত হইল না? সে ত দূতগণকে অতিথি করিয়াছিল, এবং অন্য পথ দিয়া বাহিরে পাঠাইয়া দিয়াছিল।বাস্তবিক যেমন আত্মাবিহীন দেহ মৃত, তেমন কর্মবিহীন বিশ্বাসও মৃত।
তদ্রূপ, হে ভার্যা সকল, তোমরা আপন আপন স্বামীর বশীভূতা হও;কারণ, “যে ব্যক্তি জীবন ভালবাসিতে চায়, ও মঙ্গলের দিন দেখিতে চায়, সে মন্দ হইতে আপন জিহ্বাকে, ছলনাবাক্য হইতে আপন ওষ্ঠকে নিবৃত্ত করুক।সে মন্দ হইতে ফিরুক ও সদাচরণ করুক, শান্তির চেষ্টা করুক, ও তাহার অনুধাবন করুক।কেননা ধার্মিকগণের প্রতি প্রভুর চক্ষু আছে; তাহাদের বিনতির প্রতি তাঁহার কর্ণ আছে; কিন্তু প্রভুর মুখ দুরাচারদের প্রতিকূল।” আর যদি তোমরা সদাচরণের পক্ষে উদ্যোগী হও, তবে কে তোমাদের হিংসা করিবে?কিন্তু যদিও ধার্মিকতার নিমিত্ত দুঃখভোগ কর, তবু তোমরা ধন্য। আর তোমরা উহাদের ভয়ে ভীত হইও না, এবং উদ্বিগ্ন হইও না, বরং হৃদয়মধ্যে খ্রীষ্টকে প্রভু বলিয়া পবিত্র করিয়া মান।যে কেহ তোমাদের অন্তরস্থ প্রত্যাশার হেতু জিজ্ঞাসা করে, তাহাকে উত্তর দিতে সর্বদা প্রস্তুত থাক। কিন্তু মৃদুতা ও ভয় সহকারে উত্তর দিও, সৎবিবেক রক্ষা কর,যেন যাহারা তোমাদের খ্রীষ্টগত সদাচরণের দুর্নাম করে, তাহারা তোমাদের পরিবাদ করণ বিষয়ে লজ্জা পায়।কারণ দুরাচরণের জন্য দুঃখভোগ করণ অপেক্ষা বরং- ঈশ্বরের যদি এমন ইচ্ছা হয়- সদাচরণের জন্য দুঃখভোগ করা আরও ভাল।কারণ খ্রীষ্টও একবার পাপসমূহের জন্য দুঃখভোগ করিয়াছিলেন- সেই ধার্মিক ব্যক্তি অধার্মিকদের নিমিত্ত- যেন আমাদিগকে ঈশ্বরের নিকট লইয়া যান। তিনি মাংসে হত, কিন্তু আত্মায় জীবিত হইলেন।আবার আত্মাতে গমন করিয়া কারাবদ্ধ সেই আত্মাদের কাছে ঘোষণা করিলেন,যেন কেহ কেহ যদিও বাক্যের অবাধ্য হয়, তথাপি যখন তাহারা তোমাদের সভয় বিশুদ্ধ আচার-ব্যবহার স্বচক্ষে দেখিতে পায়, তখন কোন বাক্য বিহীনে আপন আপন ভার্যার আচার-ব্যবহার দ্বারা তাহাদিগকে লাভ করা হয়।
কেননা ঈশ্বরের গৃহে বিচার আরম্ভ হইবার সময় হইল; আর যদি তাহা প্রথমে আমাদের মধ্য হইতেই আরম্ভ হয়, তবে যাহারা ঈশ্বরের সুসমাচারের অবাধ্য, তাহাদের পরিণাম কি হইবে?
তোমরা জগৎকে প্রেম করিও না, জগতীস্থ বিষয় সকলও প্রেম করিও না। কেহ যদি জগৎকে প্রেম করে, তবে পিতার প্রেম তাহার অন্তরে নাই।কেননা জগতে যাহা কিছু আছে, মাংসের অভিলাষ, চক্ষুর অভিলাষ, ও জীবিকার দর্প, এই সকল পিতা হইতে নয়, কিন্তু জগৎ হইতে হইয়াছে।আর জগৎ ও তাহার অভিলাষ বহিয়া যাইতেছে; কিন্তু যে ব্যক্তি ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে, সে অনন্তকালস্থায়ী।
যে কেহ ঈশ্বর হইতে জাত, সে পাপাচরণ করে না, কারণ তাঁহার বীর্য তাহার অন্তরে থাকে; এবং সে পাপ করিতে পারে না, কারণ সে ঈশ্বর হইতে জাত।
যদি কেহ আপন ভ্রাতাকে এমন পাপ করিতে দেখে, যাহা মৃত্যুজনক নয়, তবে সে যাচ্ঞা করিবে, এবং [ঈশ্বর] তাহাকে জীবন দিবেন- যাহারা মৃত্যুজনক পাপ করে না, তাহাদিগকেই দিবেন। মৃত্যুজনক পাপ আছে, সেই বিষয়ে আমি বলি না যে, তাহাকে বিনতি করিতে হইবে।সমস্ত অধার্মিকতাই পাপ; আর এমন পাপ আছে, যাহা মৃত্যুজনক নয়।
আমি তাহাকে মন ফিরাইবার জন্য সময় দিয়াছিলাম, কিন্তু সে নিজ ব্যভিচার হইতে মন ফিরাইতে চায় না।দেখ, আমি তাহাকে শয্যাগত করিব, এবং যাহারা তাহার সহিত ব্যভিচার করে, তাহারা যদি তাহার কার্য হইতে মন না ফিরায়, তবে তাহাদিগকে মহাক্লেশে ফেলিয়া দিব;আর আমি মহামারী দ্বারা তাহার সন্তানগণকে বধ করিব; তাহাতে সমস্ত মণ্ডলী জানিতে পারিবে, “আমি মর্মের ও হৃদয়ের অনুসন্ধানকারী, আর আমি তোমাদের প্রত্যেক জনকে আপন আপন কার্যানুযায়ী ফল দিব”।
এইরূপে তুমি ঈষদুষ্ণ, না তপ্ত না শীতল, এই জন্য আমি নিজ মুখ হইতে তোমাকে বমন করিতে উদ্যত হইয়াছি।
পরে তিনি নারীকে কহিলেন, আমি তোমার গর্ভবেদনা অতিশয় বৃদ্ধি করিব, তুমি বেদনাতে সন্তান প্রসব করিবে; এবং স্বামীর প্রতি তোমার বাসনা থাকিবে; ও সে তোমার উপরে কর্তৃত্ব করিবে।
আর শূকর তোমাদের পক্ষে অশুচি, কেননা সে সম্পূর্ণরূপে দ্বিখণ্ড খুরবিশিষ্ট বটে, কিন্তু জাবর কাটে না।তোমরা তাহাদের মাংস ভোজন করিও না, এবং তাহাদের শবও স্পর্শ করিও না; তাহারা তোমাদের পক্ষে অশুচি।
আর কোন ব্যক্তি আপনার সর্বস্ব হইতে, মনুষ্য কি পশু কি অধিকৃত ক্ষেত্র হইতে, যাহা কিছু সদাপ্রভুর উদ্দেশে বর্জিত করে, তাহা বিক্রীত কিম্বা মুক্ত হইবে না; প্রত্যেক বর্জিত বস্তু সদাপ্রভুর উদ্দেশে অতি পবিত্র।মনুষ্যদের মধ্যে যে কেহ বর্জিত হয়, তাহাকে মুক্ত করা যাইবে না; সে নিতান্ত বধ্য হইবে।
আর সদাপ্রভু মোশিকে কহিলেন,তুমি ইস্রায়েল-সন্তানগণকে কহ, তাহাদিগকে বল, কোন ব্যক্তির স্ত্রী যদি বিপথগামিনী হইয়া তাহার বিরুদ্ধে সত্য লঙ্ঘন করে,সে যদি স্বামীর দৃষ্টির অগোচরে কোন পুরুষের সহিত সংসর্গ করিয়া গোপনে অশুচি হয়, ও তাহার বিপক্ষে কোন সাক্ষী না থাকে ও সে ধরা না পড়ে;এবং স্ত্রী অশুচি হইলে স্বামী যদি অন্তর্জ্বালাজনক আত্মার আবেশে তাহার প্রতি অন্তর্জ্বালাবিশিষ্ট হয়; অথবা স্ত্রী অশুচি না হইলেও যদি সে অন্তর্জ্বালাজনক আত্মার আবেশে তাহার প্রতি অন্তর্জ্বালাবিশিষ্ট হয়;তবে সেই স্বামী আপন স্ত্রীকে যাজকের নিকটে আনিবে, এবং তাহার নিমিত্তে তাহার উপহার, অর্থাৎ এক ঐফার দশমাংশ যবের সুজি আনিবে, কিন্তু তাহার উপরে তৈল ঢালিবে না ও কুন্দুরু দিবে না; কেননা তাহা অন্তর্জ্বালার ভক্ষ্য-নৈবেদ্য, স্মরণার্থক ভক্ষ্য-নৈবেদ্য, যদ্দ্বারা অপরাধ স্মরণ হয়।পরে যাজক সেই স্ত্রীকে লইয়া সদাপ্রভুর সম্মুখে উপস্থিত করিবে।আর যাজক মাটির পাত্রে পবিত্র জল রাখিয়া আবাসের মেঝের কিঞ্চিৎ ধূলি লইয়া সেই জলে দিবে।পরে যাজক ঐ স্ত্রীকে সদাপ্রভুর সম্মুখে উপস্থিত করিবে, ও তাহার মস্তকের চুল খুলিয়া দিয়া ঐ স্মরণার্থক ভক্ষ্য-নৈবেদ্য, অর্থাৎ অন্তর্জ্বালার ভক্ষ্য-নৈবেদ্য, তাহার হস্তে দিবে; এবং যাজকের হস্তে শাপজনক তিক্ত জল থাকিবে।আর যাজক ঐ স্ত্রীকে শপথ করাইয়া বলিবে, কোন পুরুষ যদি তোমার সহিত শয়ন না করিয়া থাকে, এবং তুমি আপন স্বামীর অধীনা থাকিয়া থাক, ও বিপথগমন পূর্বক যদি অশুচি ক্রিয়া না করিয়া থাক, তবে এই শাপজনক তিক্ত জল তোমাতে নিষ্ফল হউক।তুমি ইস্রায়েল-সন্তানগণকে আজ্ঞা কর, যেন তাহারা প্রত্যেক কুষ্ঠীকে, প্রত্যেক প্রমেহীকে ও মৃতের দ্বারা অশুচি প্রত্যেক জনকে শিবির হইতে বাহির করিয়া দেয়।কিন্তু তুমি আপন স্বামীর অধীনা হইয়াও যদি বিপথগামিনী হইয়া থাক, যদি অশুচি ক্রিয়া করিয়া থাক, ও তোমার স্বামী ভিন্ন অন্য কোন পুরুষ যদি তোমার সহিত শয়ন করিয়া থাকেতবে যাজক শাপজনক দিব্যে সেই স্ত্রীকে শপথ করাইবে ও যাজক সেই স্ত্রীকে বলিবে- সদাপ্রভু তোমার ঊরু অবশ ও তোমার উদর স্ফীত করিয়া তোমার লোকদের মধ্যে তোমাকে শাপের ও দিব্যের আস্পদ করিবেন;আর এই শাপজনক জল তোমার উদরে প্রবেশ করিয়া তোমার উদর স্ফীত ও ঊরু অবশ করিবে। তখন সে স্ত্রী কহিবে, “আমেন, আমেন”।আর যাজক সেই শাপের কথা পুস্তকে লিখিয়া ঐ তিক্ত জলে মুছিয়া ফেলিবে।পরে সেই শাপজনক তিক্ত জল ঐ স্ত্রীকে পান করাইবে; তাহাতে সেই শাপজনক জল তিক্তরূপে তাহার মধ্যে প্রবিষ্ট হইবে।আর যাজক ঐ স্ত্রীর হস্ত হইতে সেই অন্তর্জ্বালার ভক্ষ্য-নৈবেদ্য লইবে, এবং সেই ভক্ষ্য-নৈবেদ্য সদাপ্রভুর সম্মুখে দোলাইয়া বেদির উপরে উপস্থিত করিবে।যাজক তৎস্মরণার্থে সেই ভক্ষ্য-নৈবেদ্যের এক মুষ্টি গ্রহণ করিয়া বেদির উপরে দগ্ধ করিবে, তৎপরে ঐ স্ত্রীকে সেই জল পান করাইবে।আর সেই স্ত্রীকে জল পান করাইলে সে যদি আপন স্বামীর বিরুদ্ধে সত্যলঙ্ঘন করিয়া অশুচি হইয়া থাকে, তবে সেই শাপজনক জল তাহার মধ্যে তিক্তরূপে প্রবিষ্ট হইবে, এবং তাহার উদর স্ফীত ও ঊরু অবশ হইয়া পড়িবে; এইরূপে সেই স্ত্রী আপন স্বজাতির মধ্যে শাপের আস্পদ হইবে।আর যদি সেই স্ত্রী অশুচি না হইয়া শুচি থাকে, তবে সে মুক্ত হইবে ও গর্ভধারণ করিবে।ইহা অন্তর্জ্বালা বিষয়ক ব্যবস্থা; স্ত্রীলোক স্বামীর অধীন হইয়াও বিপথগমনপূর্বক অশুচি হইলে,তোমরা পুরুষ ও স্ত্রীলোককে বাহির কর, তাহাদিগকে শিবির হইতে বাহির কর। উহাদের যে শিবিরের মধ্যে আমি বাস করি, তাহারা তাহা অশুচি না করুক।কিম্বা স্বামী অন্তর্জ্বালাজনক আত্মার আবেশে আপন স্ত্রীর প্রতি অন্তর্জ্বালাবিশিষ্ট হইলে সে সেই স্ত্রীকে সদাপ্রভুর সম্মুখে উপস্থিত করিবে, এবং যাজক তদ্বিষয়ে এই সমস্ত ব্যবস্থা পালন করিবে।তাহাতে স্বামী অপরাধ হইতে মুক্ত হইবে, এবং সেই স্ত্রী আপন অপরাধ বহন করিবে।
যদি ভ্রাতৃগণ একত্র হইয়া বাস করে, এবং তাহাদের মধ্যে একজন অপুত্রক হইয়া মরে, তবে সেই মৃত ব্যক্তির স্ত্রী বাহিরের অন্য গোষ্ঠীভুক্ত পুরুষকে বিবাহ করিবে না; তাহার দেবর তাহার কাছে যাইবে, তাহাকে বিবাহ করিবে, এবং তাহার প্রতি দেবরের কর্তব্য সাধন করিবে।পরে সেই স্ত্রী যে প্রথম পুত্র প্রসব করিবে, সে ঐ মৃত ভ্রাতার নামে উত্তরাধিকারী হইবে; তাহাতে ইস্রায়েল হইতে তাহার নাম লুপ্ত হইবে না।
তাহারা আপন আপন অন্তঃকরণ আপ্যায়িত করিতেছে, এমন সময়ে, দেখ, নগরের লোকেরা, কতকগুলি পাষণ্ড, সেই বাটীর চারিদিকে ঘেরিয়া কবাটে আঘাত করিতে লাগিল, এবং বাটীর কর্তাকে, ঐ বৃদ্ধকে, কহিল, তোমার বাটীতে যে পুরুষ আসিয়াছে, তাহাকে বাহির করিয়া আন; আমরা তাহার পরিচয় লইব।তাহাতে সেই ব্যক্তি, বাটীর কর্তা, বাহির হইয়া তাহাদের নিকটে গিয়া কহিলেন, হে আমার ভ্রাতৃগণ, না, না; বিনয় করি, এমন দুষ্কর্ম করিও না; ঐ পুরুষ আমার বাটীতে আসিয়াছে, অতএব এমন মূঢ়তার কর্ম করিও না।দেখ, আমার অনূঢ়া কন্যা এবং তাহার উপপত্নী; ইহাদিগকে বাহির করিয়া আনি; তোমরা তাহাদিগকে মানভ্রষ্ট কর, ও তাহাদের প্রতি তোমাদের যাহা ভাল বোধ হয়, তাহাই কর; কিন্তু সেই পুরুষের প্রতি এমন মূঢ়তার কর্ম করিও না।তথাপি তাহারা তাঁহার কথা শুনিতে অস্বীকার করিল; তখন ঐ পুরুষ আপন উপপত্নীকে ধরিয়া তাহাদের নিকটে বাহির করিয়া আনিল; আর তাহারা তাহার পরিচয় লইল, এবং প্রভাত পর্যন্ত সমস্ত রাত্রি তাহার প্রতি অত্যাচার করিল; পরে আলো হইয়া আসিলে তাহাকে ছাড়িয়া দিল।তখন রাত্রি পোহাইলে ঐ স্ত্রী তাহার পতির আতিথ্যকারী বৃদ্ধের বাটীর দ্বারে আসিয়া সূর্যোদয় পর্যন্ত পড়িয়া রহিল।প্রাতঃকাল হইলে তাহার পতি উঠিয়া পথে যাইবার জন্য গৃহের কবাট খুলিয়া বাহির হইল, আর দেখ, সেই স্ত্রীলোক, তাহার উপপত্নী, গৃহের দ্বারে গোবরাটের উপরে হস্ত রাখিয়া পড়িয়া রহিয়াছে;তাহাতে সে তাহাকে কহিল, গা তুল, চল, আমরা যাই; কিন্তু সে কিছুই উত্তর দিল না। পরে ঐ পুরুষ গর্দভের উপরে তাহাকে তুলিয়া লইল, এবং উঠিয়া স্বস্থানে প্রস্থান করিল।পরে সে আপন বাটীতে আসিয়া একখানি ছুরি লইয়া আপনার উপপত্নীকে ধরিয়া অস্থি অনুসারে দ্বাদশ খণ্ড করিয়া ইস্রায়েলের সমস্ত অঞ্চলে পাঠাইয়া দিল।পরে তাহার স্বামী উঠিয়া তাহাকে চিত্তপ্রবোধক কথা কহিতে ও ফিরাইয়া আনিতে তাহার কাছে গেল, তাহার সঙ্গে তাহার চাকর ও দুইটি গর্দভ ছিল। তাহার উপপত্নী তাহাকে পিতার বাটীর মধ্যে লইয়া গেলে সেই যুবতীর পিতা তাহাকে দেখিয়া আনন্দ সহকারে তাহার সহিত সাক্ষাৎ করিল;যাহারা তাহা দেখিল সকলে কহিল, ইস্রায়েল-সন্তানগণের মিসর দেশ হইতে বাহির হইয়া আসিবার দিন হইতে অদ্য পর্যন্ত এমন কর্ম কখনও হয় নাই, দেখাও যায় নাই; এই বিষয়ে বিবেচনা কর, মন্ত্রণা কর, কি কর্তব্য বল।
বাহিনীগণের সদাপ্রভু এই কথা কহেন, ইস্রায়েলের প্রতি অমালেক যাহা করিয়াছিল, মিসর হইতে উহার আসিবার সময়ে সে পথের মধ্যে উহার বিরুদ্ধে যেরূপ ঘাঁটি বসাইয়াছিল, আমি তাহা লক্ষ্য করিয়াছি।শৌল শমূয়েলকে কহিলেন, আমি ত সদাপ্রভুর রবে অবধান করিয়াছি, যে পথে সদাপ্রভু আমাকে পাঠাইয়াছেন, সেই পথে গিয়াছি, আর অমালেকের রাজা অগাগকে আনিয়াছি, ও অমালেকীয়দিগকে নিঃশেষে বিনষ্ট করিয়াছি।কিন্তু গিল্গলে আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলিদান করিবার জন্য লোকেরা বর্জিত দ্রব্যের অগ্রিমাংশ বলিয়া লুটের মধ্য হইতে কতকগুলি মেষ ও গরু আনিয়াছে।শমূয়েল কহিলেন, সদাপ্রভুর রবে অবধান করিলে যেমন, তেমন কি হোমে ও বলিদানে সদাপ্রভু প্রসন্ন হন? দেখ, বলিদান অপেক্ষা আজ্ঞা পালন উত্তম, এবং মেষের মেদ অপেক্ষা অবধান করা উত্তম।কারণ আজ্ঞা লঙ্ঘন করা মন্ত্র পাঠের ন্যায় পাপের তুল্য, এবং অবাধ্যতা, পৌত্তলিকতা ও ঠাকুর পূজার সমান। তুমি সদাপ্রভুর বাক্য অগ্রাহ্য করিয়াছ, এই জন্য তিনি তোমাকে অগ্রাহ্য করিয়া রাজ্যচ্যুত করিয়াছেন।তখন শৌল শমূয়েলকে কহিলেন, আমি পাপ করিয়াছি; ফলতঃ সদাপ্রভুর আজ্ঞা ও আপনার বাক্য লঙ্ঘন করিয়াছি; কারণ আমি লোকদিগকে ভয় করিয়া তাহাদের বাক্যে অবধান করিয়াছি।এখন বিনয় করি, আমার পাপ ক্ষমা করুন, ও আমার সঙ্গে ফিরিয়া আইসুন; আমি সদাপ্রভুকে প্রণিপাত করিব।শমূয়েল শৌলকে কহিলেন, আমি তোমার সঙ্গে ফিরিয়া যাইব না; কেননা তুমি সদাপ্রভুর বাক্য অগ্রাহ্য করিয়াছ, আর সদাপ্রভু তোমাকে অগ্রাহ্য করিয়া ইস্রায়েলের রাজ্যচ্যুত করিয়াছেন।এই বলিয়া শমূয়েল চলিয়া যাইবার জন্য ফিরিয়া দাঁড়াইলেন, তখন শৌল তাঁহার বস্ত্রের অঞ্চল ধরিলেন, তাহাতে তাহা ছিঁড়িয়া গেল।তখন শমূয়েল তাঁহাকে কহিলেন, সদাপ্রভু অদ্য তোমা হইতে ইস্রায়েলের রাজ্য টানিয়া ছিঁড়িলেন, এবং তোমা হইতে উত্তম তোমার এক প্রতিবাসীকে তাহা দিলেন।আবার ইস্রায়েলের বিশ্বাসভূমি মিথ্যা কথা কহেন না ও অনুশোচনা করেন না; কেননা তিনি মনুষ্য নহেন যে, অনুশোচনা করিবেন।এখন তুমি গিয়া অমালেককে আঘাত কর, ও তাহার যাহা কিছু আছে, নিঃশেষে বিনষ্ট কর, তাহার প্রতি দয়া করিও না; স্ত্রী ও পুরুষ, বালক-বালিকা ও স্তন্যপায়ী শিশু, গরু ও মেষ, উষ্ট্র ও গর্দভ সকলকেই বধ কর।
তাহাতে আহাব সমস্ত ইস্রায়েল-সন্তানের কাছে লোক পাঠাইলেন, এবং সেই ভাববাদিগণকে কর্মিল পর্বতে একত্র করিলেন।পরে এলিয় সমস্ত লোকের নিকটে উপস্থিত হইয়া কহিলেন, তোমরা কতকাল দুই নৌকায় পা দিয়া থাকিবে? সদাপ্রভু যদি ঈশ্বর হন, তবে তাঁহার অনুগামী হও; আর বাল যদি ঈশ্বর হয়, তবে তাহার অনুগামী হও। কিন্তু লোকেরা তাঁহাকে কোন উত্তর দিল না।তখন এলিয় লোকদিগকে কহিলেন, আমি, কেবল একা আমিই, সদাপ্রভুর ভাববাদী অবশিষ্ট আছি; কিন্তু বালের ভাববাদিগণ চারি শত পঞ্চাশ জন আছে।আমাদিগকে দুইটি বৃষ দত্ত হউক; উহারা আপনাদের জন্য একটি বৃষ মনোনীত করুক, ও খণ্ড খণ্ড করিয়া কাষ্ঠের উপরে রাখুক, কিন্তু তাহাতে আগুন না দিউক; পরে আমি অন্য বৃষটি প্রস্তুত করিয়া কাষ্ঠের উপরে রাখিব, কিন্তু তাহাতে আগুন দিব না।পরে তোমরা আপনাদের দেবতার নামে ডাকিও, এবং আমি সদাপ্রভুর নামে ডাকিব; আর যে ঈশ্বর আগুনের দ্বারা উত্তর দিবেন, তিনিই ঈশ্বর হউন।সকল লোক উত্তর করিল, এ বেশ কথা। পরে এলিয় বালের ভাববাদিগণকে কহিলেন, তোমরা ত অনেকে আছ, অগ্রে তোমরাই আপনাদের জন্য একটি বৃষ মনোনীত করিয়া প্রস্তুত কর, এবং আপনাদের দেবতার নামে ডাক, কিন্তু আগুন দিও না।পরে তাহাদিগকে যে বৃষ দত্ত হইল, তাহা লইয়া তাহারা প্রস্তুত করিল, এবং প্রাতঃকাল হইতে মধ্যাহ্নকাল পর্যন্ত এই বলিয়া বালের নামে ডাকিতে লাগিল, হে বাল, আমাদিগকে উত্তর দেও। কিন্তু কোন বাণী হইল না, এবং কেহই উত্তর দিল না। আর তাহারা নির্মিত যজ্ঞবেদির কাছে খোঁড়ার ন্যায় নাচিতে লাগিল।পরে মধ্যাহ্নকালে এলিয় তাহাদিগকে বিদ্রূপ করিয়া কহিলেন, উচ্চৈঃস্বরে ডাক; কেননা সে দেবতা; সে ধ্যান করিতেছে, বা কোথাও গিয়াছে, বা পথে চলিতেছে, কিম্বা হয়ত নিদ্রা গিয়াছে, তাহাকে জাগান চাই।তখন তাহারা উচ্চৈঃস্বরে ডাকিল, এবং আপনাদের ব্যবহারানুসারে গাত্রে রক্তের ধারা বহন পর্যন্ত ছুরিকা ও শলাকা দ্বারা আপনাদিগকে ক্ষতবিক্ষত করিল।আর মধ্যাহ্নকাল অতীত হইলে তাহারা [বৈকালের] বলিদানের সময় পর্যন্ত ভাবোক্তি প্রচার করিল, তথাপি কোন বাণীও হইল না, কেহ উত্তরও দিল না, কেহ মনোযোগও করিল না।আর আহাব রাজবাটীর অধ্যক্ষ ওবদিয়কে ডাকিলেন। ওবদিয় সদাপ্রভুকে অতিশয় ভয় করিতেন;পরে এলিয় সমস্ত লোককে কহিলেন, আমার নিকটে আইস; তাহাতে সমস্ত লোক তাঁহার নিকটে আসিল। আর তিনি সদাপ্রভুর ভগ্ন যজ্ঞবেদি সারাইলেন।কারণ ‘তোমার নাম ইস্রায়েল হইবে,’ ইহা বলিয়া সদাপ্রভুর বাক্য যে যাকোবের কাছে উপস্থিত হইয়াছিল, তাঁহার সন্তানদের বংশ-সংখ্যানুসারে এলিয় বারোখানা প্রস্তর গ্রহণ করিলেন।আর তিনি সেই প্রস্তরগুলি দিয়া সদাপ্রভুর নামে এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করিলেন, এবং বেদির চারিদিকে দুই কাঠা বীজ ধরিতে পারে, এমন এক প্রণালী খুদিলেন।পরে তিনি কাষ্ঠ সাজাইয়া বৃষটি খণ্ড খণ্ড করিয়া কাষ্ঠের উপরে রাখিলেন। আর কহিলেন, চারি জালা জল ভরিয়া এই হোমবলির উপরে ও কাষ্ঠের উপরে ঢালিয়া দেও।পরে তিনি কহিলেন, দ্বিতীয় বার উহা কর; তাহারা দ্বিতীয় বার তাহা করিল। পরে তিনি কহিলেন, তৃতীয় বার কর; তাহারা তৃতীয় বার তাহা করিল।তখন বেদির চারিদিকে জল গেল, এবং তিনি ঐ প্রণালীও জলে পরিপূর্ণ করিলেন।পরে [বৈকালের] বলিদানের সময়ে এলিয় ভাববাদী নিকটে আসিয়া কহিলেন, হে সদাপ্রভু, অব্রাহামের, ইস্হাকের ও ইস্রায়েলের ঈশ্বর, অদ্য জানাইয়া দেও যে, ইস্রায়েলের মধ্যে তুমিই ঈশ্বর, এবং আমি তোমার দাস, ও তোমার বাক্যানুসারেই এই সকল কর্ম করিলাম।হে সদাপ্রভু, আমাকে উত্তর দেও, আমাকে উত্তর দেও; যেন এই লোকেরা জানিতে পারে যে, হে সদাপ্রভু, তুমিই ঈশ্বর, এবং তুমিই ইহাদের হৃদয় ফিরাইয়া আনিয়াছ।তখন সদাপ্রভুর অগ্নি পতিত হইল, এবং হোমবলি, কাষ্ঠ, প্রস্তর ও ধূলি গ্রাস করিল, এবং প্রণালীস্থিত জলও চাটিয়া খাইল।তাহা দেখিয়া সমস্ত লোক উবুড় হইয়া পড়িয়া কহিল, সদাপ্রভুই ঈশ্বর, সদাপ্রভুই ঈশ্বর।আর যে সময়ে ঈষেবল সদাপ্রভুর ভাববাদিগণকে উচ্ছেদ করিতেছিল, সেই সময়ে ওবদিয় একশত ভাববাদীকে লইয়া পঞ্চাশ পঞ্চাশ জন করিয়া গহ্বরের মধ্যে লুকাইয়া রাখিয়াছিলেন, আর তিনি অন্নজল দিয়া তাহাদিগকে প্রতিপালন করিতেন।তখন এলিয় তাহাদিগকে কহিলেন, তোমরা বালের ভাববাদিগণকে ধর, তাহাদের একজনকেও পলাইয়া রক্ষা পাইতে দিও না। তখন তাহারা তাহাদিগকে ধরিল, আর এলিয় তাহাদিগকে লইয়া কীশোন স্রোতোমার্গে নামিয়া গেলেন, এবং সেখানে তাহাদিগকে বধ করিলেন।
পরে তিনি তথা হইতে বৈথেলে চলিলেন; আর তিনি পথ দিয়া উপরে যাইতেছেন, এমন সময়ে নগর হইতে কতকগুলি বালক আসিয়া তাঁহাকে বিদ্রূপ করিয়া কহিল, রে টাক্পড়া, উঠিয়া আয়; রে টাক্পড়া, উঠিয়া আয়।তখন তিনি পশ্চাৎ দিকে মুখ ফিরাইয়া তাহাদিগকে দেখিলেন, এবং সদাপ্রভুর নামে তাহাদিগকে শাপ দিলেন; আর বন হইতে দুইটি ভল্লুকী আসিয়া তাহাদের মধ্যে বিয়াল্লিশ জন বালককে ছিঁড়িয়া ফেলিল।
ছোট কি বড়, পুরুষ কি স্ত্রী, যে কেহ ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অন্বেষণ না করিবে, তাহার প্রাণদণ্ড হইবে।তাহারা উচ্চৈঃস্বরে জয়ধ্বনি পূর্বক তূরী ও শৃঙ্গ বাজাইয়া সদাপ্রভুর সাক্ষাতে শপথ করিল।এই শপথে সমস্ত যিহূদা আনন্দ করিল, কেননা তাহারা আপনাদের সমস্ত অন্তঃকরণের সহিত শপথ করিয়াছিল; এবং সম্পূর্ণ বাসনার সহিত সদাপ্রভুর অন্বেষণ করাতে তিনি তাহাদিগকে তাঁহার উদ্দেশ পাইতে দিলেন; আর তিনি চারিদিকে তাহাদিগকে বিশ্রাম দিলেন।
হে সদাপ্রভু, যাহারা তোমাকে দ্বেষ করে, আমি কি তাহাদিগকে দ্বেষ করি না? যাহারা তোমার বিরুদ্ধে উঠে, তাহাদের প্রতি কি বিরক্ত হই না?আমি যার পর নাই দ্বেষে তাহাদিগকে দ্বেষ করি; তাহাদিগকে আমারই শত্রু মনে করি।
এই ছয়টি বস্তু সদাপ্রভুর ঘৃণিত, এমন কি, সাতটি বস্তু তাঁহার প্রাণের ঘৃণাস্পদ;উদ্ধত দৃষ্টি, মিথ্যাবাদী জিহ্বা, নির্দোষের রক্তপাতকারী হস্ত,দুষ্ট সঙ্কল্পকারী হৃদয়, দুষ্কর্ম করিতে দ্রুতগামী চরণ,যে মিথ্যাসাক্ষী অসত্য কথা বলে, ও যে ভ্রাতৃগণের মধ্যে বিবাদের সূত্রপাত করে।
উৎকৃষ্ট তৈল অপেক্ষা সুখ্যাতি ভাল, এবং জন্মদিন অপেক্ষা মরণদিন ভাল।তুমি বলিও না, বর্তমান কাল অপেক্ষা পূর্বকাল কেন ভাল ছিল? কেননা এই বিষয়ে তোমার জিজ্ঞাসা করা প্রজ্ঞা হইতে উৎপন্ন হয় না।পৈতৃক ধনের ন্যায় প্রজ্ঞা ভাল; তাহা সূর্যদর্শী লোকদের পক্ষে আরও উৎকৃষ্ট।কেননা প্রজ্ঞা আশ্রয়, ধনও আশ্রয় বটে, কিন্তু জ্ঞানের উৎকৃষ্টতা এই যে, প্রজ্ঞা আপন অধিকারীর জীবন রক্ষা করে।ঈশ্বরের কার্য নিরীক্ষণ কর, কারণ তিনি যাহা বক্র করিয়াছেন, তাহা সরল করিতে কাহার সাধ্য?সুখের দিনে সুখী হও, এবং দুঃখের দিনে দেখ, ঈশ্বর ইহা ও উহা পাশাপাশি রাখিয়াছেন, অভিপ্রায় এই, তাহার পর কি ঘটিবে, তাহার কিছুই যেন মনুষ্য জানিতে না পারে।আমি আপন অসারতার কালে এই সমস্তই দেখিয়াছি; কোন ধার্মিক লোক নিজ ধার্মিকতায় বিনষ্ট হয়, এবং কোন দুষ্ট লোক নিজ দুষ্টতায় দীর্ঘ কাল যাপন করে।অতি ধার্মিক হইও না, ও আপনাকে অতিশয় জ্ঞানবান দেখাইও না;কেন আপনাকে নষ্ট করিবে? অতি দুষ্ট হইও না, অজ্ঞানও হইও না; তোমার সময় না হইতে কেন মরিবে?তুমি যদি ইহা ধরিয়া রাখ, এবং উহা হইতেও হস্ত নিবৃত্ত না কর, তবে ভাল; কেননা যে ঈশ্বরকে ভয় করে, সে ঐ সকল হইতে উত্তীর্ণ হইবে।জ্ঞানবানকে প্রজ্ঞা যত বলবান করে, নগরস্থ দশ জন পরাক্রমী তত করে না।ভোজের গৃহে যাওয়া অপেক্ষা বিলাপ-গৃহে যাওয়া ভাল, কেননা তাহা সকল মনুষ্যের শেষগতি, এবং জীবিত লোক তাহাতে মনোনিবেশ করিবে।এমন ধার্মিক লোক পৃথিবীতে নাই, যে সৎকর্ম করে, পাপ করে না।যত কথা বলা যায়, সকল কথায় মন দিও না; দিলে হয় ত শুনিবে, তোমার দাস তোমাকে শাপ দিতেছে।কেননা তুমিও অন্যকে পুনঃ পুনঃ শাপ দিয়াছ, তাহা তোমার মন জ্ঞাত আছে।আমি প্রজ্ঞা দ্বারা এই সকলের পরীক্ষা করিলাম; আমি বলিলাম, জ্ঞানবান হইব, কিন্তু জ্ঞান আমা হইতে দূরে ছিল।যাহা আছে, তাহা দূরে রহিয়াছে; তাহা গভীর, গভীর, কে তাহা পাইতে পারে?আমি ফিরিলাম, ও মনোনিবেশ করিলাম, যেন জানিতে ও অনুসন্ধান করিতে পারি, প্রজ্ঞা ও তত্ত্ব অন্বেষণ করিতে পারি, জানিতে পারি যে, দুষ্টতা হীনবুদ্ধিতা মাত্র, আর অজ্ঞানতা ক্ষিপ্ততা মাত্র।তাহাতে মৃত্যু অপেক্ষাও তীব্র পদার্থ পাইলাম, অর্থাৎ সেই স্ত্রীলোক, যাহার অন্তঃকরণ ফাঁদ ও জাল ও হস্ত শৃঙ্খলস্বরূপ; যে ব্যক্তি ঈশ্বরের প্রীতিজনক, সে তাহা হইতে রক্ষা পাইবে, কিন্তু পাপী তাহার দ্বারা ধৃত হইবে।উপদেশক কহিতেছেন, দেখ, তত্ত্ব পাইবার জন্য একটির পরে আর একটি বিবেচনা করিয়া আমি ইহা পাইয়াছি।আমার মন এখনও যাহার অন্বেষণ করিয়া আসিতেছে, তাহা আমি পাই নাই; সহস্রের মধ্যে একজন পুরুষকে পাইয়াছি; কিন্তু সেই সকলের মধ্যে একটি স্ত্রীলোককেও পাই নাই।দেখ, কেবল ইহাই জানিতে পাইয়াছি যে, ঈশ্বর মনুষ্যকে সরল করিয়া নির্মাণ করিয়াছিলেন, কিন্তু তাহারা অনেক কল্পনার অন্বেষণ করিয়া লইয়াছে।হাস্য হইতে মনস্তাপ ভাল, কারণ মুখের বিষণ্নতায় হৃদয় প্রসন্ন হয়।জ্ঞানবানদের হৃদয় বিলাপগৃহে থাকে, কিন্তু হীনবুদ্ধিদের হৃদয় আমোদ-গৃহে থাকে।
ধিক্ সেই ব্যবস্থাপকদিগকে, যাহারা অধর্মের ব্যবস্থা স্থাপন করে, ও সেই লেখকদিগকে, যাহারা উপদ্রব লিখে;সেই সকল প্রতিমার রাজ্য আমার হস্তগত হইয়াছে, সেইগুলির ক্ষোদিত মূর্তি যিরূশালেমের ও শমরিয়ার মূর্তি সকল অপেক্ষা উত্তম;আমি শমরিয়াকে ও তাহার প্রতিমা সকলকে যেরূপ করিয়াছি, যিরূশালেমকে ও তাহার পুত্তলী সকলকেও কি সেইরূপ করিব না?’অতএব এইরূপ ঘটিবে; সিয়োন পর্বতে ও যিরূশালেমে প্রভু আপনার সমস্ত কার্য সমাপ্ত করিলে পর আমি অশূর-রাজের চিত্তস্ফীতিরূপ ফলের ও তাহার উচ্চদৃষ্টিরূপ আড়ম্বরের প্রতিফল দিব।কেননা সে বলিয়াছে, ‘আমার হস্তের বল ও আমার বিজ্ঞতা দ্বারা আমি কার্য সিদ্ধ করিয়াছি, কেননা আমি বুদ্ধিমান; আমি জাতিগণের সীমা সকল দূর করিয়াছি, ও তাহাদের সঞ্চিত ধন লুট করিয়াছি; এবং বীরের ন্যায় আমি সুখাসীনদিগকে নিচে নামাইয়াছি।আর পক্ষীর বাসার ন্যায় জাতিগণের ধন আমার হস্তগত হইয়াছে; লোকে যেমন পরিত্যক্ত ডিম্ব কুড়ায়, তেমনি আমি সমস্ত পৃথিবীকে সংগ্রহ করিয়াছি; পক্ষ নাড়িতে, কি ঠোঁট খুলিতে, কি চিঁ চিঁ শব্দ করিতে কেহ ছিল না।’কুড়ালি কি ছেদকের বিপরীতে দর্প করিবে? করপত্র কি করপত্রী হইতে আপনাকে শ্রেষ্ঠ মানিবে? যাহারা দণ্ড তুলে, দণ্ড যেন তাহাদিগকে চালনা করিতেছে; যে কাষ্ঠ নয়, যষ্টি যেন তাহাকে উঠাইতেছে। অতএব প্রভু, বাহিনীগণের সদাপ্রভু, তাহার স্থূলকায় লোকদের মধ্যে কৃশতা প্রেরণ করিবেন, ও তাহার প্রতাপের নিচে অগ্নিদাহের ন্যায় দাহ হইবে।বাস্তবিক ইস্রায়েলের জ্যোতি অগ্নিস্বরূপ হইবেন, ও যিনি তাহার পবিত্রতম, তিনি শিখাসদৃশ হইবেন; তাহা এক দিনে উহার শ্যাকুল ও কণ্টক দগ্ধ করিয়া ভস্ম করিবে।আর তিনি তাহার বনের ও উদ্যানের গৌরবকে, প্রাণ ও শরীরকে, সংহার করিবেন; তাহাতে সে রোগীর ন্যায় ক্ষয় পাইবে।আর তাহার বনের অবশিষ্ট বৃক্ষ এমন অল্প হইবে যে, বালক তাহা গণনা করিয়া লিখিতে পারিবে।যেন দরিদ্রগণকে ন্যায়বিচার হইতে ফিরাইয়া দেয়, ও আমার দুঃখী প্রজাদের অধিকার হরণ করে, যেন বিধবারা তাহাদের লুটদ্রব্য হয়, আর তাহারা পিতৃহীনদিগকে তাহাদের লুন্ঠিত দ্রব্য করিতে পারে।
প্রভু আরও কহিলেন, এই লোকেরা আমার নিকটবর্তী হয়, এবং আপন আপন মুখে ও ওষ্ঠাধরে আমার সম্মান করে, কিন্তু আপন আপন অন্তঃকরণ আমা হইতে দূরে রাখিয়াছে, এবং আমা হইতে তাহাদের যে ভয়, তাহাও মনুষ্যের আদেশ, মুখস্থ করা মাত্র।
তথাপি তাঁহাকে চূর্ণ করিতে সদাপ্রভুরই মনোরথ ছিল; তিনি তাঁহাকে যাতনাগ্রস্ত করিলেন, তাঁহার প্রাণ যখন দোষার্থক বলি উৎসর্গ করিবে, তখন তিনি আপন বংশ দেখিবেন, দীর্ঘায়ু হইবেন, এবং তাঁহার হস্তে সদাপ্রভুর মনোরথ সিদ্ধ হইবে;
কূশীয় কি আপন ত্বক্, কিম্বা চিতাবাঘ কি আপন চিত্রবিচিত্র পরিবর্তন করিতে পারে? তাহা হইলে দুষ্কর্ম অভ্যাস করিয়াছ যে তোমরা, তোমরাও সৎকর্ম করিতে পারিবে।
দুষ্ট লোকের মরণে কি আমার কিছু সন্তোষ আছে? ইহা প্রভু সদাপ্রভু কহেন; বরং সে আপন কুপথ হইতে ফিরিয়া বাঁচে, ইহাতে কি আমার সন্তোষ হয় না?
আমি তোমাদের উৎসব সকল ঘৃণা করি, অগ্রাহ্য করি, আমি তোমাদের পর্বদিনের আঘ্রাণ লইব না।তোমরা আমার নিকটে হোম ও নৈবেদ্য উৎসর্গ করিলে আমি তাহা গ্রাহ্য করিব না, এবং তোমাদের পুষ্ট পশুর মঙ্গলার্থক বলিদানেও দৃক্পাত করিব না।আমার নিকট হইতে তোমার গানের শব্দ দূর কর, আমি তোমার নেবল-যন্ত্রের বাদ্য শুনিব না।
আর আমি বিচার করিতে তোমাদের নিকটে আসিব; এবং মায়াবী, পারদারিক, ও মিথ্যাশপথকারিগণের বিরুদ্ধে, ও যাহারা বেতনের বিষয়ে বেতনজীবীর প্রতি, এবং বিধবা ও পিতৃহীন লোকের প্রতি, অত্যাচার করে, বিদেশীর প্রতি অন্যায় করে, ও আমাকে ভয় করে না, তাহাদের বিরুদ্ধে আমি সত্বর সাক্ষী হইব, ইহা বাহিনীগণের সদাপ্রভু কহেন।
কিন্তু আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, যে কেহ কোন স্ত্রীলোকের প্রতি কামভাবে দৃষ্টিপাত করে, সে তখনই মনে মনে তাহার সহিত ব্যভিচার করিল।
তোমরা পৃথিবীতে আপনাদের জন্য ধন সঞ্চয় করিও না; এখানে ত কীটে ও মরিচায় ক্ষয় করে, এবং এখানে চোরে সিঁধ কাটিয়া চুরি করে।অতএব তুমি যখন দান কর, তখন তোমার সম্মুখে তূরী বাজাইও না, যেমন কপটীরা লোকের কাছে গৌরব পাইবার জন্য সমাজ-গৃহে ও পথে করিয়া থাকে; আমি তোমাদিগকে সত্য বলিতেছি, তাহারা আপনাদের পুরস্কার পাইয়াছে।কিন্তু স্বর্গে আপনাদের জন্য ধন সঞ্চয় কর; সেখানে কীটে ও মরিচায় ক্ষয় করে না, সেখানে চোরেও সিঁধ কাটিয়া চুরি করে না।কারণ যেখানে তোমার ধন, সেখানে তোমার মনও থাকিবে।
যাহারা আমাকে হে প্রভু, হে প্রভু বলে, তাহারা সকলেই যে স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করিতে পারিবে, এমন নয়, কিন্তু যে ব্যক্তি আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করে, সেই পারিবে।সেই দিন অনেকে আমাকে বলিবে, হে প্রভু, হে প্রভু, আপনার নামেই আমরা কি ভাববাণী বলি নাই? আপনার নামেই কি ভূত ছাড়াই নাই? আপনার নামেই কি অনেক পরাক্রম-কার্য করি নাই?তখন আমি তাহাদিগকে স্পষ্টই বলিব, আমি কখনও তোমাদিগকে জানি নাই; হে অধর্মাচারীরা, আমার নিকট হইতে দূর হও।
কিন্তু যে কেহ মনুষ্যদের সাক্ষাতে আমাকে অস্বীকার করে, আমিও আপন স্বর্গস্থ পিতার সাক্ষাতে তাহাকে অস্বীকার করিব।
তোমরা কি মনে করিতেছ, আমি পৃথিবীতে শান্তি দিতে আসিয়াছি? তোমাদিগকে বলিতেছি, তাহা নয়, বরং বিভেদ।কারণ এখন অবধি এক বাটীতে পাঁচ জন ভিন্ন হইবে, তিন জন দুই জনের বিপক্ষে,ও দুই জন তিন জনের বিপক্ষে; পিতা পুত্রের বিপক্ষে, এবং পুত্র পিতার বিপক্ষে; মাতা কন্যার বিপক্ষে, এবং কন্যা মাতার বিপক্ষে; শাশুড়ী বধূর বিপক্ষে, এবং বধূ শাশুড়ীর বিপক্ষে ভিন্ন হইবে।
তোমরা তোমাদের পিতা দিয়াবলের, এবং তোমাদের পিতার অভিলাষ সকল পালন করাই তোমাদের ইচ্ছা; সে আদি হইতেই নরঘাতক, সত্যে থাকে নাই, কারণ তাহার মধ্যে সত্য নাই। সে যখন মিথ্যা বলে, তখন আপনা হইতেই বলে, কেননা সে মিথ্যাবাদী ও তাহার পিতা।
আর অন্য কাহারও কাছে পরিত্রাণ নাই; কেননা আকাশের নিচে মনুষ্যদের মধ্যে দত্ত এমন আর কোন নাম নাই, যে নামে আমাদিগকে পরিত্রাণ পাইতে হইবে।
তবে কি বলিব? অনুগ্রহের বাহুল্য যেন হয় এই নিমিত্ত কি পাপে থাকিব? তাহা দূরে থাকুক।ফলতঃ তাঁহার যে মৃত্যু হইয়াছে, তদ্দ্বারা তিনি পাপের সম্বন্ধে একবারই মরিলেন; এবং তাঁহার যে জীবন আছে, তদ্দ্বারা তিনি ঈশ্বরের সম্বন্ধে জীবিত আছেন।তদ্রূপ তোমরাও আপনাদিগকে পাপের সম্বন্ধে মৃত, কিন্তু খ্রীষ্ট যীশুতে ঈশ্বরের সম্বন্ধে জীবিত বলিয়া গণনা কর।অতএব পাপ তোমাদের মর্ত্যদেহে রাজত্ব্ব না করুক- করিলে তোমরা তাহার অভিলাষ-সমূহের আজ্ঞাবহ হইয়া পড়িবে;আর আপন আপন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অধার্মিকতার অস্ত্ররূপে পাপের কাছে সমর্পণ করিও না, কিন্তু আপনাদিগকে মৃতদের মধ্য হইতে জীবিত জানিয়া ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ কর, এবং আপন আপন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ধার্মিকতার অস্ত্ররূপে ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ কর।কেননা পাপ তোমাদের উপরে আর কর্তৃত্ব করিবে না; কারণ তোমরা ব্যবস্থার অধীন নহ, কিন্তু অনুগ্রহের অধীন।তবে দাঁড়াইল কি? আমরা ব্যবস্থার অধীন নই, অনুগ্রহের অধীন, এই জন্য কি পাপ করিব? তাহা দূরে থাকুক।তোমরা কি জান না যে, আজ্ঞা পালনার্থে যাহার নিকটে দাসরূপে আপনাদিগকে সমর্পণ কর, যাহার আজ্ঞা মান, তোমরা তাহারই দাস; হয় মৃত্যুজনক পাপের দাস, নয় ধার্মিকতাজনক আজ্ঞা পালনের দাস?কিন্তু ঈশ্বরের ধন্যবাদ হউক যে, তোমরা পাপের দাস ছিলে বটে, পরন্তু শিক্ষার যে আদর্শে সমর্পিত হইয়াছ, অন্তঃকরণের সহিত সেই আদর্শের আজ্ঞাবহ হইয়াছ;এবং পাপ হইতে স্বাধীনীকৃত হইয়া তোমরা ধার্মিকতার দাস হইয়াছ।তোমাদের মাংসের দুর্বলতা প্রযুক্ত আমি মানুষের মত কহিতেছি। কারণ, তোমরা যেমন পূর্বে অধর্মের নিমিত্তে আপন আপন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অশুচিতার ও অধর্মের কাছে দাসরূপে সমর্পণ করিয়াছিলে, তেমনি এখন পবিত্রতার নিমিত্তে আপন আপন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ধার্মিকতার কাছে দাসরূপে সমর্পণ কর।আমরা ত পাপের সম্বন্ধে মরিয়াছি, আমরা কি প্রকারে আবার পাপে জীবন যাপন করিব?
কেননা আমি নিশ্চয় জানি, কি মৃত্যু, কি জীবন, কি দূতগণ, কি আধিপত্য সকল, কি উপস্থিত বিষয় সকল, কি ভাবী বিষয় সকল, কি পরাক্রম সকল,কি ঊর্ধ্ব স্থান, কি গভীর স্থান, কি অন্য কোন সৃষ্ট বস্তু, কিছুই আমাদের প্রভু খ্রীষ্ট যীশুতে অবস্থিত ঈশ্বরের প্রেম হইতে আমাদিগকে পৃথক করিতে পারিবে না।
কারণ সেই দিন তাহা ব্যক্ত করিবে, কেননা সেই দিনের প্রকাশ অগ্নিতেই হয়; আর প্রত্যেকের কর্ম যে কি প্রকার, সেই অগ্নিই তাহার পরীক্ষা করিবে;
অতএব যে মনে করে, আমি দাঁড়াইয়া আছি, সে সাবধান হউক, পাছে পড়িয়া যায়।মনুষ্য যাহা সহ্য করিতে পারে, তাহা ছাড়া অন্য পরীক্ষা তোমাদের প্রতি ঘটে নাই; আর ঈশ্বর বিশ্বাস্য; তিনি তোমাদের প্রতি তোমাদের শক্তির অতিরিক্ত পরীক্ষা ঘটিতে দিবেন না, বরং পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে রক্ষার পথও করিয়া দিবেন, যেন তোমরা সহ্য করিতে পার।
আবার মাংসের কার্য সকল প্রকাশ আছে; সেইগুলি এই- বেশ্যাগমন, অশুচিতা, স্বৈরিতা,দেখ, আমি পৌল তোমাদিগকে কহিতেছি, যদি তোমরা ত্বক্ছেদ পপ্রাপ্ত হও, তবে খ্রীষ্ট হইতে তোমাদের কিছুই লাভ হইবে না।প্রতিমাপূজা, কুহক, নানা প্রকার শত্রুতা, বিবাদ, ঈর্ষা, রাগ, প্রতিযোগিতা, বিচ্ছিন্নতা, দলভেদ,মাৎসর্য, মত্ততা, রঙ্গরস ও তৎসদৃশ অন্য অন্য দোষ। এই সকলের বিষয়ে আমি তোমাদিগকে অগ্রে বলিতেছি, যেমন পূর্বে বলিয়াছিলাম, যাহারা এই প্রকার আচরণ করে, তাহারা ঈশ্বরের রাজ্যে অধিকার পাইবে না।
কিন্তু বেশ্যাগমনের ও সর্বপ্রকার অশুদ্ধতার বা লোভের নামও যেন তোমাদের মধ্যে না হয়, যেমন পবিত্রগণের উপযুক্ত।কেননা আমরা তাঁহার দেহের অঙ্গ।“এই জন্য মনুষ্য আপন পিতা মাতাকে ত্যাগ করিয়া আপন স্ত্রীতে আসক্ত হইবে, এবং সেই দুই জন একাঙ্গ হইবে।”এই নিগূঢ়তত্ত্ব মহৎ, কিন্তু আমি খ্রীষ্টের উদ্দেশে ও মণ্ডলীর উদ্দেশে ইহা কহিলাম।তথাপি তোমরাও প্রত্যেকে আপন আপন স্ত্রীকে তদ্রূপ আপনার মত প্রেম কর; কিন্তু স্ত্রীর উচিত যেন সে স্বামীকে ভয় করে।আর কুৎসিত ব্যবহার এবং প্রলাপ কিম্বা শ্লেষোক্তি, এই সকল অনুচিত ব্যবহার যেন না হয়, বরং যেন ধন্যবাদ দেওয়া হয়।কেননা তোমরা নিশ্চয় জানিতেছ, বেশ্যাগামী কি অশুদ্ধাচারী কি লোভী- সে ত প্রতিমাপূজক- কেহই খ্রীষ্টের ও ঈশ্বরের রাজ্যে অধিকার পায় না।
কেননা অনেকে এমন চলিতেছে, যাহাদের বিষয়ে তোমাদিগকে বার বার বলিয়াছি, এবং এখনও রোদন করিতে করিতে বলিতেছি, তাহারা খ্রীষ্টের ক্রুশের শত্রু;তাহাদের পরিণাম বিনাশ; উদর তাহাদের ঈশ্বর, এবং নিজ লজ্জাতেই তাহাদের গৌরব; তাহারা পার্থিব বিষয় ভাবে।
তোমরা যখন জগতের অক্ষরমালা ছাড়িয়া খ্রীষ্টের সহিত মরিয়াছ, তখন কেন জগজ্জীবীদের ন্যায় এই সকল বিধির অধীন হইতেছ,যথা, ধরিও না, আস্বাদ লইও না, স্পর্শ করিও না?সেই সকল বস্তু ত ভোগ দ্বারা ক্ষয় পাইবার নিমিত্তই হইয়াছে। ঐ সকল বিধি মনুষ্যদের বিবিধ আদেশ ও ধর্মসূত্রের অনুরূপ।আত্মপূজা, নম্রতা ও কৃচ্ছ্রসাধন এই সকল জ্ঞান নামে কীর্তিত বটে, তথাপি মাংসের পোষকতার বিরুদ্ধে কিছুর মধ্যে গণ্য নহে।
লোকে যখন বলে, শান্তি ও অভয়, তখনই তাহাদের কাছে যেমন গর্ভবতীর প্রসববেদনা উপস্থিত হইয়া থাকে, তেমনি আকস্মিক বিনাশ উপস্থিত হয়; আর তাহারা কোন ক্রমে এড়াইতে পারিবে না।কিন্তু, ভ্রাতৃগণ, তোমরা অন্ধকারে নও যে, সেই দিন চোরের ন্যায় তোমাদের উপরে আসিয়া পড়িবে।তোমরা ত সকলে দীপ্তির সন্তান ও দিবসের সন্তান; আমরা রাত্রিরও নই, অন্ধকারেরও নই।
কিন্তু আত্মা স্পষ্টই বলিতেছেন, উত্তরকালে কতক লোক ভ্রান্তিজনক আত্মাদের মধ্যে ও ভূতগণের শিক্ষামালায় মন দিয়া বিশ্বাস হইতে সরিয়া পড়িবে।কারণ ইহারই নিমিত্ত আমরা পরিশ্রম ও প্রাণপণ করিতেছি; কেননা যিনি সমস্ত মনুষ্যের, বিশেষতঃ বিশ্বাসীবর্গের ত্রাণকর্তা, আমরা সেই জীবন্ত ঈশ্বরের প্রত্যশা করিয়া আসিতেছি।তুমি এই সকল বিষয় আজ্ঞা কর ও শিক্ষা দেও।তোমার যৌবন কাহাকেও তুচ্ছ করিতে দিও না; কিন্তু বাক্যে, আচার ব্যবহারে, প্রেমে, বিশ্বাসে ও শুদ্ধতায় বিশ্বাসিগণের আদর্শ হও।আমি যত দিন না আইসি, তুমি পাঠ করিতে এবং প্রবোধ ও শিক্ষা দিতে নিবিষ্ট থাক।তোমার অন্তরস্থ সেই অনুগ্রহ-দান অবহেলা করিও না, যাহা ভাববাণী দ্বারা প্রাচীনবর্গের হস্তার্পণ সহকারে তোমাকে দত্ত হইয়াছে।এই সকল বিষয়ে চিন্তা কর, এই সকলে একনিষ্ঠ হও, যেন তোমার উন্নতি সকলের প্রত্যক্ষ হয়।আপনার বিষয়ে ও তোমার শিক্ষার বিষয়ে সাবধান হও, এই সকলে স্থির থাক; কেননা তাহা করিলে তুমি আপনাকে ও যাহারা তোমার কথা শুনে, তাহাদিগকেও পরিত্রাণ করিবে।ইহা এমন মিথ্যাবাদীদের কপটতায় ঘটিবে, যাহাদের নিজ বিবেক তপ্ত লৌহের দাগের মত দাগযুক্ত হইয়াছে।
কিন্তু ইহা জানিও, শেষ কালে বিষম সময় উপস্থিত হইবে।কিন্তু তুমি আমার শিক্ষা, আচার-ব্যবহার, সঙ্কল্প, বিশ্বাস, দীর্ঘসহিষ্ণুতা, প্রেম, ধৈর্য, নানাবিধ তাড়না ও দুঃখভোগের অনুসরণ করিয়াছ;আন্তিয়খিয়াতে, ইকনিয়ে, লুস্ত্রায় আমার প্রতি কি কি ঘটিয়াছিল; কত তাড়না সহ্য করিয়াছি। আর সেই সমস্ত হইতে প্রভু আমাকে উদ্ধার করিয়াছেন।আর যত লোক ভক্তিভাবে খ্রীষ্ট যীশুতে জীবন ধারণ করিতে ইচ্ছা করে, সেই সকলের প্রতি তাড়না ঘটিবে।কিন্তু দুষ্ট লোকেরা ও বঞ্চকেরা, পরের ভ্রান্তি জন্মাইয়া ও আপনারা ভ্রান্ত হইয়া, উত্তর উত্তর কুপথে অগ্রসর হইবে।কিন্তু তুমি যাহা যাহা শিখিয়াছ ও যাহার যাহার প্রমাণ জ্ঞাত হইয়াছ, তাহাতেই স্থির থাক; তুমি ত জান যে, কাহাদের কাছে শিখিয়াছ।আরও জান, তুমি শিশুকাল অবধি পবিত্র শাস্ত্রকলাপ জ্ঞাত আছ, সেই সকল খ্রীষ্ট যীশু সম্বন্ধীয় বিশ্বাস দ্বারা তোমাকে পরিত্রাণের নিমিত্ত জ্ঞানবান করিতে পারে।ঈশ্বর-নিশ্বসিত প্রত্যেক শাস্ত্রলিপি আবার শিক্ষার, অনুযোগের, সংশোধনের, ধার্মিকতা সম্বন্ধীয় শাসনের নিমিত্ত উপকারী,যেন ঈশ্বরের লোক পরিপক্ব, সমস্ত সৎকর্মের জন্য সুসজ্জিভূত হয়।কেননা মনুষ্যেরা আত্মপ্রিয়, অর্থপ্রিয়, আত্মশ্লাঘী, অভিমানী, ধর্মনিন্দুক, পিতামাতার অবাধ্য, অকৃতজ্ঞ, অসাধু,স্নেহরহিত, ক্ষমাহীন, অপবাদক, অজিতেন্দ্রিয়, প্রচণ্ড, সদ্বিদ্বেষী,বিশ্বাসঘাতক, দুঃসাহসী, গর্বান্ধ, ঈশ্বরপ্রিয় নয়, বরং বিলাসপ্রিয় হইবে।লোকে ভক্তির অবয়বধারী, কিন্তু তাহার শক্তি অস্বীকারকারী হইবে; তুমি এইরূপ লোকদের হইতে সরিয়া যাও।
তাহারা স্বীকার করে যে, ঈশ্বরকে জানে, কিন্তু কার্যে তাঁহাকে অস্বীকার করে; তাহারা ঘৃণাস্পদ ও অবাধ্য এবং সমস্ত সৎক্রিয়ার পক্ষে অপ্রামাণিক।
পাছে কেহ ব্যভিচারী বা ধর্মবিরোধী হয়, যেমন এষৌ, সে ত এক বারের খাদ্যের নিমিত্ত আপন জ্যেষ্ঠাধিকার বিক্রয় করিয়াছিল।তোমরা ত জান, তৎপরে যখন সে আশীর্বাদের অধিকারী হইতে বাঞ্ছা করিল, তখন সজল নয়নে সযত্নে তাহার চেষ্টা করিলেও অগ্রাহ্য হইল, কারণ সে মনপরিবর্তনের স্থান পাইল না।
আর বাক্যের কার্যকারী হও, আপনাদিগকে ভুলাইয়া শ্রোতামাত্র হইও না।কেননা যে কেহ বাক্যের শ্রোতামাত্র, কার্যকারী নয়, সে এমন ব্যক্তির তুল্য, যে দর্পণে আপনার স্বাভাবিক মুখ দেখে;কারণ সে আপনাকে দেখিল, চলিয়া গেল আর সে কিরূপ লোক, তাহা তখনই ভুলিয়া গেল।কিন্তু যে কেহ হেঁট হইয়া স্বাধীনতার সিদ্ধ ব্যবস্থায় দৃষ্টিপাত করে, ও তাহাতে নিবিষ্ট থাকে, ভুলিয়া যাইবার শ্রোতা না হইয়া কার্যকারী হয়, সেই আপন কার্যে ধন্য হইবে।
হে আমার ভ্রাতৃগণ, অনেকে উপদেশক হইও না; তোমরা জান, অন্য অপেক্ষা আমাদের ভারী বিচার হইবে।একই মুখ হইতে ধন্যবাদ ও শাপ বাহির হয়। হে আমার ভ্রাতৃগণ, এই সকল এমন হওয়া অনুচিত।উনুই কি একই ছিদ্র দিয়া মিষ্ট ও তিক্ত দুই প্রকার জল বাহির করে?হে আমার ভ্রাতৃগণ, ডুমুরগাছে কি জলপাই ফল, অথবা দ্রাক্ষালতায় কি ডুমুর ফল ধরিতে পারে? লোনা জলও মিষ্ট জল দিতে পারে না।তোমাদের মধ্যে জ্ঞানবান ও বুদ্ধিমান কে? সে সদাচরণ দ্বারা জ্ঞানের মৃদুতায় নিজ ক্রিয়া দেখাইয়া দিউক।কিন্তু তোমাদের হৃদয়ে যদি তিক্ত ঈর্ষা ও প্রতিযোগিতা রাখ, তবে সত্যের বিরুদ্ধে শ্লাঘা করিও না ও মিথ্যা কহিও না।সেই জ্ঞান এমন নয়, যাহা উপর হইতে নামিয়া আইসে এবং তাহা পার্থিব, প্রাণিক, পৈশাচিক।কেননা যেখানে ঈর্ষা ও প্রতিযোগিতা, সেখানে অস্থিরতা ও সমুদয় দুষ্কর্ম থাকে।কিন্তু যে জ্ঞান উপর হইতে আইসে, তাহা প্রথমে শুচি, পরে শান্তিপ্রিয়, ক্ষান্ত, সহজে অনুনীত, দয়া ও উত্তম উত্তম ফলে পরিপূর্ণ, ভেদাভেদবিহীন ও নিষ্কপট।আর যাহারা শান্তি-আচরণ করে, তাহাদের জন্য শান্তিতে ধার্মিকতা-ফলের বীজ বপন করা যায়।কারণ আমরা সকলে অনেক প্রকারে উছোট খাই। যদি কেহ বাক্যে উছোট না খায়, তবে সে সিদ্ধপুরুষ, সমস্ত শরীরকেই বল্গা দ্বারা বশে রাখিতে সমর্থ।
এই বিষয়ে তোমরা উহাদের সঙ্গে একই নষ্টামির পঙ্কের দিকে ধাবমান হইতেছ না দেখিয়া তাহারা আশ্চর্য জ্ঞান করিয়া নিন্দা করে।
প্রিয়তমেরা, তোমরা সকল আত্মাকে বিশ্বাস করিও না, বরং আত্মা সকলের পরীক্ষা করিয়া দেখ, তাহারা ঈশ্বর হইতে কি না; কারণ অনেক ভাক্ত ভাববাদী জগতে বাহির হইয়াছে।
অতএব, হে ভ্রাতৃগণ, ঈশ্বরের নানা করুণার অনুরোধে আমি তোমাদিগকে বিনতি করিতেছি, তোমরা আপন আপন দেহকে জীবিত, পবিত্র, ঈশ্বরের প্রীতিজনক বলিরূপে উৎসর্গ কর, ইহাই তোমাদের চিত্ত-সঙ্গত আরাধনা।ভ্রাতৃপ্রেমে পরস্পর স্নেহশীল হও; সমাদরে একজন অন্যকে শ্রেষ্ঠ জ্ঞান কর।যত্নে শিথিল হইও না, আত্মায় উত্তপ্ত হও, প্রভুর দাসত্ব কর,প্রত্যাশায় আনন্দ কর, ক্লেশে ধৈর্যশীল হও, প্রার্থনায় নিবিষ্ট থাক,পবিত্রগণের অভাবের সহভাগী হও, অতিথি-সেবায় রত হও।যাহারা তাড়না করে, তাহাদিগকে আশীর্বাদ কর, আশীর্বাদ কর, শাপ দিও না।যাহারা আনন্দ করে, তাহাদের সহিত আনন্দ কর; যাহারা রোদন করে, তাহাদের সহিত রোদন কর।তোমরা পরস্পরের প্রতি একমনা হও, উচ্চ উচ্চ বিষয় ভাবিও না, কিন্তু অবনত বিষয় সকলের সহিত আকর্ষিত হও। আপনাদের জ্ঞানে বুদ্ধিমান হইও না।মন্দের পরিশোধে কাহারও মন্দ করিও না; সকল মনুষ্যের দৃষ্টিতে যাহা উত্তম, ভাবিয়া চিন্তিয়া তাহাই কর।যদি সাধ্য হয়, তোমাদের যত দূর হাত থাকে, মনুষ্যমাত্রের সহিত শান্তিতে থাক।হে প্রিয়েরা, তোমরা নিজেরা প্রতিশোধ লইও না, বরং ক্রোধের জন্য স্থান ছাড়িয়া দেও, কারণ লেখা আছে, “প্রতিশোধ লওয়া আমারই কর্ম, আমিই প্রতিফল দিব, ইহা প্রভু বলেন।”আর এই যুগের অনুরূপ হইও না, কিন্তু মনের নূতনীকরণ দ্বারা স্বরূপান্তরিত হও; যেন তোমরা পরীক্ষা করিয়া জানিতে পার, ঈশ্বরের ইচ্ছা কি; যাহা উত্তম ও প্রীতিজনক ও সিদ্ধ।
তোমরা ভ্রান্ত হইও না, ঈশ্বরকে পরিহাস করা যায় না; কেননা মনুষ্য যাহা কিছু বুনে তাহাই কাটিবে।ফলতঃ আপন মাংসের উদ্দেশে যে বুনে, সে মাংস হইতে ক্ষয়রূপ শস্য পাইবে; কিন্তু আত্মার উদ্দেশে যে বুনে, সে আত্মা হইতে অনন্ত-জীবনরূপ শস্য পাইবে।
অতএব আমি এই বলিতেছি, ও প্রভুতে দৃঢ়রূপে আদেশ করিতেছি, তোমরা আর পরজাতীয়দের ন্যায় চলিও না; তাহারা আপন আপন মনের অসার ভাবে চলে;তাহারা চিত্তে অন্ধীভূত, ঈশ্বরের জীবনের বহির্ভূত হইয়াছে, আন্তরিক অজ্ঞানতা প্রযুক্ত, হৃদয়ের কঠিনতা প্রযুক্ত হইয়াছে।তাহারা অসাড় হইয়া লোভ প্রযুক্ত সর্বপ্রকার অশুচি ক্রিয়া করিবার জন্য আপনাদিগকে স্বৈরিতায় সমর্পণ করিয়াছে।
কেবল, খ্রীষ্টের সুসমাচারের যোগ্যরূপে তাঁহার প্রজাদের মত আচরণ কর; আমি আসিয়া তোমাদিগকে দেখি, কি অনুপস্থিত থাকি, আমি যেন তোমাদের বিষয়ে শুনিতে পাই যে, তোমরা এক আত্মাতে স্থির আছ, এক প্রাণে সুসমাচারের বিশ্বাসের পক্ষে মল্লযুদ্ধ করিতেছ;
অতএব তোমরা যখন খ্রীষ্টের সহিত উত্থাপিত হইয়াছ, তখন সেই ঊর্ধ্বস্থানের বিষয় চেষ্টা কর, যেখানে খ্রীষ্ট আছেন, ঈশ্বরের দক্ষিণে বসিয়া আছেন।যে আপন সৃষ্টিকর্তার প্রতিমূর্তি অনুসারে তত্ত্বজ্ঞানের নিমিত্ত নূতনীকৃত হইতেছে।এই স্থানে গ্রীক কি যিহূদী, ছিন্নত্বক্ কি অচ্ছিন্নত্বক্, বর্বর, স্কুথীয়, দাস, স্বাধীন বলিয়া কিছু হইতে পারে না, কিন্তু খ্রীষ্টই সর্বেসর্বা।অতএব তোমরা, ঈশ্বরের মনোনীত লোকদের, পবিত্র ও প্রিয় লোকদের, উপযোগী মতে করুণার চিত্ত, মধুর ভাব, নম্রতা, মৃদুতা, সহিষ্ণুতা পরিধান কর।পরস্পর সহনশীল হও, এবং যদি কাহাকেও দোষ দিবার কারণ থাকে, তবে পরস্পর ক্ষমা কর; প্রভু যেমন তোমাদিগকে ক্ষমা করিয়াছেন, তোমরাও তেমনি কর।আর এই সকলের উপরে প্রেম পরিধান কর; তাহাই সিদ্ধির যোগবন্ধন।আর খ্রীষ্টের শান্তি তোমাদের হৃদয়ে কর্তৃত্ব করুক; তোমরা ত তাহারই নিমিত্ত এক দেহে আহূত হইয়াছ; আর কৃতজ্ঞ হও।খ্রীষ্টের বাক্য প্রচুররূপে তোমাদের অন্তরে বাস করুক; তোমরা সমস্ত বিজ্ঞতায় গীত, স্তোত্র ও আত্মিক সঙ্কীর্তন দ্বারা পরস্পর শিক্ষা ও চেতনা দান কর; অনুগ্রহে আপন আপন হৃদয়ে ঈশ্বরের উদ্দেশে গান কর।আর বাক্যে কি কার্যে যাহা কিছু কর, সকলই প্রভু যীশুর নামে কর, তাঁহার দ্বারা পিতা ঈশ্বরের ধন্যবাদ করিতে করিতে ইহা কর।নারীগণ, তোমরা আপন আপন স্বামীর বশীভূত হও, যেমন প্রভুতে উপযুক্ত।স্বামীরা, তোমরা আপন আপন স্ত্রীকে প্রেম কর, তাহাদের প্রতি কটু ব্যবহার করিও না।ঊর্ধ্বস্থ বিষয় ভাব, পৃথিবীস্থ বিষয় ভাবিও না।
শিশুগণ, শেষকাল উপস্থিত, আর তোমরা যেমন শুনিয়াছ যে, খ্রীষ্টারি আসিতেছে, তেমনি এখনই অনেক খ্রীষ্টারি হইয়াছে; ইহাতে আমরা জানি যে, শেষকাল উপস্থিত।তাহারা আমাদের হইতে বাহির হইয়াছে; কিন্তু আমাদের ছিল না; কেননা যদি আমাদের হইত, তবে আমাদের সঙ্গে থাকিত; কিন্তু তাহারা বাহির হইয়াছে, যেন প্রকাশ হইয়া পড়ে যে, সকলে আমাদের নয়।
কিন্তু আপনাদের বিষয়ে সাবধান থাকিও, পাছে ভোগপীড়ায় ও মত্ততায় এবং জীবিকার চিন্তায় তোমাদের হৃদয় ভারগ্রস্ত হয়, আর সেই দিন হঠাৎ ফাঁদের ন্যায় তোমাদের উপরে আসিয়া পড়ে;কেননা সেই দিন সমস্ত ভূতল-নিবাসী সকলের উপরে উপস্থিত হইবে।কিন্তু তোমরা সর্বসময়ে জাগিয়া থাকিও এবং প্রার্থনা করিও, যেন এই যে সকল ঘটনা হইবে, তাহা এড়াইতে, এবং মনুষ্যপুত্রের সম্মুখে দাঁড়াইতে, শক্তিমান হও।
আর সেই বিচার এই যে, জগতে জ্যোতি আসিয়াছে, এবং মনুষ্যেরা জ্যোতি হইতে অন্ধকার অধিক ভাল বাসিল, কেননা তাহাদের কর্ম সকল মন্দ ছিল।তিনি রাত্রিকালে যীশুর নিকটে আসিলেন, এবং তাঁহাকে কহিলেন, রব্বি, আমরা জানি, আপনি ঈশ্বরের নিকট হইতে আগত গুরু; কেননা আপনি এই যে সকল চিহ্ন-কার্য সাধন করিতেছেন, ঈশ্বর সহবর্তী না থাকিলে এই সকল কেহ করিতে পারে না।কারণ যে কেহ কদাচরণ করে, সে জ্যোতি ঘৃণা করে, এবং জ্যোতির নিকটে আইসে না, পাছে তাহার কর্ম সকলের দোষ ব্যক্ত হয়।কিন্তু যে সত্য সাধন করে, সে জ্যোতির নিকটে আইসে, যেন তাহার কর্ম সকল ঈশ্বরে সাধিত বলিয়া সপ্রকাশ হয়।
জগৎ যদি তোমাদিগকে দ্বেষ করে, তোমরা ত জান, সে তোমাদের অগ্রে আমাকে দ্বেষ করিয়াছে।তোমরা যদি জগতের হইতে, তবে জগৎ আপনার নিজস্ব বলিয়া ভাল বাসিত; কিন্তু তোমরা ত জগতের নহ, বরং আমি তোমাদিগকে জগতের মধ্য হইতে মনোনীত করিয়াছি, এই জন্য জগৎ তোমাদিগকে দ্বেষ করে।
কিন্তু যাহারা প্রতিযোগী, এবং সত্যের অবাধ্য ও অধার্মিকতার বাধ্য, তাহাদের প্রতি ক্রোধ ও রোষ, ক্লেশ ও সঙ্কট বর্তিবে;প্রথমে যিহূদীর, পরে গ্রীকেরও উপরে, কদাচারী মনুষ্যমাত্রের প্রাণের উপরে বর্তিবে।
তোমরা কি জান না যে, দৌড়ের স্থলে যাহারা দৌড়ায়, তাহারা সকলে দৌড়ায়, কিন্তু কেবল একজন পুরস্কার পায়? তোমরা এইরূপে দৌড়াও, যেন পুরস্কার পাও।আর যে কেহ মল্লযুদ্ধ করে, সে সর্ববিষয়ে ইন্দ্রিয়দমন করে। তাহার ক্ষয়ণীয় মুকুট পাইবার জন্য তাহা করে, কিন্তু আমরা অক্ষয় মুকুট পাইবার জন্য করি।অতএব আমি এইরূপে দৌড়াইতেছি যে বিনালক্ষ্যে নয়; এইরূপে মুষ্টিযুদ্ধ করিতেছি যে শূন্যে আঘাত করিতেছি না।বরং আমার নিজ দেহকে প্রহার করিয়া দাসত্বে রাখিতেছি, পাছে অন্য লোকদের কাছে প্রচার করিবার পর আমি নিজে কোন ক্রমে অগ্রাহ্য হইয়া পড়ি।
কিন্তু আশঙ্কা হইতেছে, পাছে সর্প যেমন আপন ধূর্ততায় হবাকে প্রতারণা করিয়াছিল, তেমনি তোমাদের মন খ্রীষ্টের প্রতি সরলতা ও শুদ্ধতা হইতে ভ্রষ্ট হয়।যদি শ্লাঘা করিতে হয়, তবে আমার নানা দুর্বলতার বিষয়ে শ্লাঘা করিব।প্রভু যীশুর ঈশ্বর ও পিতা, যিনি যুগে যুগে ধন্য, তিনি জানেন যে, আমি মিথ্যা কথা বলিতেছি না।দম্মেশকে আরিতা রাজার নিযুক্ত শাসনকর্তা আমাকে ধরিবার চেষ্টায় দম্মেশকীয়দের সেই নগরে পাহারা দেওয়াইতেছিলেন;আর একটি ঝুড়িতে করিয়া প্রাচীরস্থ বাতায়ন দিয়া আমাকে নামাইয়া দেওয়া হয়, তাই তাঁহার হাত এড়াইয়াছিলাম।কোন আগন্তুক যদি এমন আর এক যীশুকে প্রচার করে, যাহাকে আমরা প্রচার করি নাই, কিম্বা তোমরা যদি এমন অন্যবিধ আত্মা পাও, যাহা প্রাপ্ত হও নাই, বা এমন অন্যবিধ সুসমাচার পাও, যাহা গ্রহণ কর নাই, তবে বিলক্ষণ সহিষ্ণুতা করিতেছ!
আমার আশ্চর্য বোধ হইতেছে যে, খ্রীষ্টের অনুগ্রহে যিনি তোমাদিগকে আহ্বান করিয়াছেন, তোমরা এত শীঘ্র তাঁহা হইতে অন্যবিধ সুসমাচারের দিকে ফিরিয়া যাইতেছ।তাহা আর কোন সুসমাচার নয়; কেবল এমন কতকগুলি লোক আছে, যাহারা তোমাদিগকে অস্থির করে, এবং খ্রীষ্টের সুসমাচার বিকৃত করিতে চায়।কিন্তু আমরা তোমাদের নিকটে যে সুসমাচার প্রচার করিয়াছি, তাহা ছাড়া অন্য সুসমাচার যদি কেহ প্রচার করে- আমরাই করি, কিম্বা স্বর্গ হইতে আগত কোন দূতই করুক- তবে সে শাপগ্রস্ত হউক।আমরা পূর্বে যেরূপ বলিয়াছি, তদ্রূপ আমি এখন আবার বলিতেছি, তোমরা যাহা গ্রহণ করিয়াছ, তাহা ছাড়া আর কোন সুসমাচার যদি কেহ তোমাদের নিকটে প্রচার করে, তবে সে শাপগ্রস্ত হউক।
সেই কুকুরদের হইতে সাবধান, সেই দুষ্ট কার্যকারীদের হইতে সাবধান, সেই অঙ্গচ্ছেদনকারিগণ হইতে সাবধান।কারণ আমরা স্বর্গপুরীর প্রজা; আর তথা হইতে আমরা ত্রাণকর্তার, প্রভু যীশু খ্রীষ্টের, আগমন প্রতীক্ষা করিতেছি;তিনি আমাদের দীনতার দেহকে রূপান্তর করিয়া নিজ প্রতাপের দেহের সমরূপ করিবেন, যেন কার্যসাধক শক্তিতে তিনি সকলই আপনার বশীভূত করিতে পারেন, তাহারই গুণে করিবেন।আমরাই ত ছিন্নত্বক্ লোক, আমরা যাহারা ঈশ্বরের আত্মাতে আরাধনা করি, এবং খ্রীষ্ট যীশুতে শ্লাঘা করি, মাংসে প্রত্যয় করি না।
আর পূর্বে চিত্তে দুষ্ক্রিয়াতে বহিঃস্থ ও শত্রু ছিলে যে তোমরা,তোমাদিগকে তিনি এখন খ্রীষ্টের মাংসময় দেহে মৃত্যু দ্বারা সম্মিলিত করিলেন, যেন পবিত্র, নিষ্কলঙ্ক ও নির্দোষ করিয়া আপনার সাক্ষাতে উপস্থিত করেন,যদি তোমরা বিশ্বাসে বদ্ধমূল ও অটল হইয়া স্থির থাক, এবং সেই সুসমাচারের প্রত্যাশা হইতে বিচলিত না হও, যাহা শুনিয়াছ, যাহা আকাশমণ্ডলের অধঃস্থিত সমস্ত সৃষ্টির কাছে প্রচারিত হইয়াছে, আমি পৌল যাহার পরিচারক হইয়াছি।
ভ্রাতৃগণ, দেখিও, পাছে অবিশ্বাসের এমন মন্দ হৃদয় তোমাদের কাহারও মধ্যে থাকে যে, তোমরা জীবন্ত ঈশ্বর হইতে সরিয়া পড়।বরং তোমরা দিন দিন পরস্পর চেতনা দেও, যাবৎ ‘অদ্য’ নামে আখ্যাত সময় থাকে, যেন তোমাদের মধ্যে কেহ পাপের প্রতারণায় কঠিনীভূত না হয়।
ধন্য সেই ব্যক্তি, যে পরীক্ষা সহ্য করে; কারণ পরীক্ষাসিদ্ধ হইলে পর সে জীবনমুকুট প্রাপ্ত হইবে, তাহা প্রভু তাহাদিগকেই দিতে অঙ্গীকার করিয়াছেন, যাহারা তাঁহাকে প্রেম করে।
কিন্তু যদিও ধার্মিকতার নিমিত্ত দুঃখভোগ কর, তবু তোমরা ধন্য। আর তোমরা উহাদের ভয়ে ভীত হইও না, এবং উদ্বিগ্ন হইও না, বরং হৃদয়মধ্যে খ্রীষ্টকে প্রভু বলিয়া পবিত্র করিয়া মান।যে কেহ তোমাদের অন্তরস্থ প্রত্যাশার হেতু জিজ্ঞাসা করে, তাহাকে উত্তর দিতে সর্বদা প্রস্তুত থাক। কিন্তু মৃদুতা ও ভয় সহকারে উত্তর দিও, সৎবিবেক রক্ষা কর,
তোমরা প্রবুদ্ধ হও, জাগিয়া থাক; তোমাদের বিপক্ষ দিয়াবল, গর্জনকারী সিংহের ন্যায়, কাহাকে গ্রাস করিবে, তাহার অন্বেষণ করিয়া বেড়াইতেছে।তোমরা বিশ্বাসে অটল থাকিয়া তাহার প্রতিরোধ কর; তোমরা জান, জগতে অবস্থিত তোমাদের ভ্রাতৃবর্গেও সেই প্রকার নানা দুঃখভোগ সমপন্ন হইতেছে।
অতএব স্মরণ কর, কোথা হইতে পতিত হইয়াছ, এবং মন ফিরাও ও প্রথম কর্ম সকল কর; কিন্তু যদি মন না ফিরাও, আমি তোমার নিকটে আসিব ও তোমার দীপবৃক্ষ স্বস্থান হইতে দূর করিব।
আর সার্দিস্থ মণ্ডলীর দূতকে লিখ- যিনি ঈশ্বরের সপ্ত আত্মা এবং সপ্ত তারা ধারণ করেন, তিনি এই কথা কহেন; আমি জানি তোমার কার্য সকল; তোমার জীবন নামমাত্র; তুমি মৃত।তুমি আমার ধৈর্যের কথা রক্ষা করিয়াছ, এই কারণ আমিও তোমাকে সেই পরীক্ষাকাল হইতে রক্ষা করিব, যাহা পৃথিবী-নিবাসীদের পরীক্ষা করিবার জন্য সমস্ত জগতে উপস্থিত হইবে।আমি শীঘ্র আসিতেছি; তোমার যাহা আছে, তাহা দৃঢ়রূপে ধারণ কর, যেন কেহ তোমার মুকুট অপহরণ না করে।যে জয় করে, তাহাকে আমি আমার ঈশ্বরের মন্দিরে স্তম্ভস্বরূপ করিব, এবং সে আর কখনও তথা হইতে বাহিরে যাইবে না; এবং তাহার উপরে আমার ঈশ্বরের নাম লিখিব, এবং আমার ঈশ্বরের নগরী যে নূতন যিরূশালেম স্বর্গ হইতে, আমার ঈশ্বরের নিকট হইতে নামিবে, তাহার নাম এবং আমার নূতন নাম লিখিব।যাহার কর্ণ আছে, সে শুনুক, আত্মা মণ্ডলীগণকে কি কহিতেছেন।আর লায়দিকেয়াস্থ মণ্ডলীর দূতকে লিখ- যিনি আমেন, যিনি বিশ্বাস্য ও সত্যময় সাক্ষী, যিনি ঈশ্বরের সৃষ্টির আদি, তিনি এই কথা কহেন;আমি জানি তোমার কার্য সকল, তুমি না শীতল না তপ্ত; তুমি হয় শীতল হইলে, নয় তপ্ত হইলে ভাল হইত।এইরূপে তুমি ঈষদুষ্ণ, না তপ্ত না শীতল, এই জন্য আমি নিজ মুখ হইতে তোমাকে বমন করিতে উদ্যত হইয়াছি।তুমি কহিতেছ, আমি ধনবান, ধন সঞ্চয় করিয়াছি, আমার কিছুরই অভাব নাই; কিন্তু জান না যে, তুমিই দুর্ভাগ্য, কৃপাপাত্র, দরিদ্র, অন্ধ ও উলঙ্গ।আমি তোমাকে এক পরামর্শ দিই; তুমি আমার কাছে এই সকল দ্রব্য ক্রয় কর- অগ্নি দ্বারা পরিষ্কৃত স্বর্ণ, যেন ধনবান হও; শুক্ল বস্ত্র, যেন বস্ত্রপরিহিত হও, আর তোমার উলঙ্গতার লজ্জা প্রকাশিত না হয়; চক্ষুতে লেপনীয় অঞ্জন, যেন দেখিতে পাও।আমি যত লোককে ভালবাসি, সেই সকলকে অনুযোগ করি ও শাসন করি; অতএব উদ্যোগী হও, ও মন ফিরাও।জাগ্রত হও, এবং অবশিষ্ট যে সকল বিষয় মৃতকল্প হইল, তাহা সুস্থির কর; কেননা আমি তোমার কোন কার্য আমার ঈশ্বরের সাক্ষাতে সিদ্ধ দেখি নাই।দেখ, আমি দ্বারে দাঁড়াইয়া আছি, ও আঘাত করিতেছি; কেহ যদি আমার রব শুনে ও দ্বার খুলিয়া দেয়, তবে আমি তাহার কাছে প্রবেশ করিব, ও তাহার সহিত ভোজন করিব, এবং সেও আমার সহিত ভোজন করিবে।যে জয় করে, তাহাকে আমার সহিত আমার সিংহাসনে বসিতে দিব, যেমন আমি নিজে জয় করিয়াছি, এবং আমার পিতার সহিত তাঁহার সিংহাসনে বসিয়াছি।যাহার কর্ণ আছে, সে শুনুক, আত্মা মণ্ডলীগণকে কি কহিতেছেন।অতএব তুমি স্মরণ কর, কিরূপে প্রাপ্ত হইয়াছ ও শুনিয়াছ, আর তাহা পালন কর, এবং মন ফিরাও। যদি জাগ্রত না হও, তবে আমি চোরের ন্যায় আসিব; এবং কোন্ দণ্ডে তোমার নিকটে আসিব, তাহা তুমি জানিতে পারিবে না।
যাহারা এই গ্রন্থের ভাববাণীর বচন সকল শুনে, তাহাদের প্রত্যেক জনের কাছে আমি সাক্ষ্য দিয়া বলিতেছি, যদি কেহ ইহার সহিত আর কিছু যোগ করে, তবে ঈশ্বর সেই ব্যক্তিতে এই গ্রন্থে লিখিত আঘাত সকল যোগ করিবেন;আর যদি কেহ এই ভাববাণী-গ্রন্থের বচন হইতে কিছু হরণ করে, তবে ঈশ্বর এই গ্রন্থে লিখিত জীবন-বৃক্ষ হইতে ও পবিত্র নগর হইতে তাহার অংশ হরণ করিবেন।
আর সদাপ্রভু দেখিলেন, পৃথিবীতে মনুষ্যদের দুষ্টতা অত্যধিক, এবং তাহাদের অন্তঃকরণের চিন্তার সমস্ত কল্পনা নিরন্তর কেবল মন্দ।
যে কেহ মনুষ্যের রক্তপাত করিবে, মনুষ্য কর্তৃক তাহার রক্তপাত করা যাইবে; কেননা ঈশ্বর আপন প্রতিমূর্তিতে মনুষ্যকে নির্মাণ করিয়াছেন।
সহস্র সহস্র [পুরুষ] পর্যন্ত দয়ারক্ষক। অপরাধের, অধর্মের ও পাপের ক্ষমাকারী; তথাপি তিনি অবশ্য [পাপের] দণ্ড দেন; পুত্র পৌত্রদের উপরে, তৃতীয় ও চতুর্থ পুরুষ পর্যন্ত, তিনি পিতৃগণের অপরাধের প্রতিফল বর্তান।’
তোমরা শুনিয়াছ, উক্ত হইয়াছিল, “চক্ষুর পরিশোধে চক্ষু ও দন্তের পরিশোধে দন্ত”।কিন্তু আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, তোমরা দুষ্টের প্রতিরোধ করিও না; বরং যে কেহ তোমার দক্ষিণ গালে চড় মারে, অন্য গাল তাহার দিকে ফিরাইয়া দেও।ধন্য যাহারা শোক করে, কারণ তাহারা সান্ত্বনা পাইবে।আর যে তোমার সহিত বিচার-স্থানে বিবাদ করিয়া তোমার আঙ্রাখা লইতে চায়, তাহাকে চোগাও লইতে দেও।আর যে কেহ এক ক্রোশ যাইতে তোমাকে পীড়াপীড়ি করে, তাহার সঙ্গে দুই ক্রোশ যাও।যে তোমার কাছে যাচ্ঞা করে, তাহাকে দেও; এবং যে তোমার নিকটে ধার চায়, তাহা হইতে বিমুখ হইও না।
প্রত্যেক প্রাণী প্রাধান্যপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষদের বশীভূত হউক; কেননা ঈশ্বরের নিরূপণ ব্যতিরেকে কর্তৃত্ব হয় না; এবং যে সকল কর্তৃপক্ষ আছেন, তাঁহারা ঈশ্বর নিযুক্ত।প্রেম প্রতিবাসীর অনিষ্ট সাধন করে না, অতএব প্রেমই ব্যবস্থার পূর্ণসাধন।আর এইরূপ কর, কারণ তোমরা এই কাল জ্ঞাত আছ; ফলতঃ এখন তোমাদের নিদ্রা হইতে জাগিবার সময় উপস্থিত; কেননা যখন আমরা বিশ্বাস করিয়াছিলাম, তখন অপেক্ষা এখন পরিত্রাণ আমাদের আরও সন্নিকট।রাত্রি প্রায় গেল, দিবস আগত প্রায়; অতএব আইস, আমরা অন্ধকারের ক্রিয়া সকল ত্যাগ করি, এবং দীপ্তির রণসজ্জা পরিধান করি।আইস, রঙ্গরসে ও মত্ততায় নয়, লমপটতায় ও স্বেচ্ছাচারিতায় নয়, বিবাদে ও ঈর্ষায় নয়, কিন্তু দিবসের উপযুক্ত শিষ্ট ভাবে চলি।কিন্তু তোমরা প্রভু যীশু খ্রীষ্টকে পরিধান কর, অভিলাষ পূর্ণ করিবার জন্য নিজ মাংসের নিমিত্ত চিন্তা করিও না।অতএব যে কেহ কর্তৃত্বের প্রতিরোধী হয়, সে ঈশ্বরের নিয়োগের প্রতিরোধ করে; আর যাহারা প্রতিরোধ করে, তাহারা আপনাদের উপরে বিচারাজ্ঞা প্রাপ্ত হইবে।কেননা শাসনকর্তারা সৎকার্যের প্রতি নয়, কিন্তু মন্দ কার্যের প্রতি ভয়াবহ। আর তুমি কি কর্তৃপক্ষের কাছে নির্ভয় হইতে চাহ? সদাচরণ কর, করিলে তাহার নিকট হইতে প্রশংসা পাইবে।কেননা সদাচরণের নিমিত্ত তিনি তোমার পক্ষে ঈশ্বরেরই পরিচারক। কিন্তু যদি মন্দ আচরণ কর, তবে ভীত হও, কেননা তিনি বৃথা খড়্গ ধারণ করেন না; কারণ তিনি ঈশ্বরের পরিচারক, যে মন্দ আচরণ করে, ক্রোধ সাধনের জন্য তাহার প্রতিশোধদাতা।অতএব কেবল ক্রোধের ভয়ে নয়, কিন্তু বিবেকেরও নিমিত্ত বশীভূত হওয়া আবশ্যক।
যে বিশ্বাস করে ও বাপ্তাইজিত হয়, সে পরিত্রাণ পাইবে; কিন্তু যে অবিশ্বাস করে, তাহার দণ্ডাজ্ঞা করা যাইবে।
যদি কেহ আমার নিকটে আইসে, আর আপন পিতা,মাতা, স্ত্রী, সন্তানসন্ততি, ভ্রাতৃগণ, ও ভগিনীগণকে এমন কি নিজ প্রাণকেও অপ্রিয় জ্ঞান না করে, তবে সে আমার শিষ্য হইতে পারে না।
মনে করিও না যে, আমি পৃথিবীতে শান্তি দিতে আসিয়াছি; শান্তি দিতে আসি নাই, কিন্তু খড়্গ দিতে আসিয়াছি।কেননা আমি পিতার সহিত পুত্রের, মাতার সহিত কন্যার, এবং শাশুড়ীর সহিত বধূর বিচ্ছেদ জন্মাইতে আসিয়াছি;আর আপন আপন পরিজনই মনুষ্যের শত্রু হইবে।