তোমাকে বলছি, মহাক্লেশ আর ক্লেশের সময় এক নয়। মহাক্লেশের সময় দাজ্জাল, অর্থাৎ মসীহ-বিরোধী প্রকাশ পাবে এবং আল্লাহর ক্রোধ অনেক বেশি তীব্র হবে। প্রকাশিত বাক্য ৩:১০ এ বলা হয়েছে, “তুমি আমার ধৈর্যের বাক্য পালন করেছ, তাই আমিও তোমাকে রক্ষা করব সেই পরীক্ষার সময় থেকে, যা সমগ্র পৃথিবীর উপর আসতে চলেছে, যাতে পৃথিবীর বাসিন্দাদের পরীক্ষা করা যায়।” পুরাতন নিয়মে এই সময়ের কথা পঞ্চাশবার ও বেশি উল্লেখ করা হয়েছে, “মহা বিপদ”, “ক্রোধের দিন”, “প্রভুর ক্রোধের দিন”, “ইয়াকুবের জন্য দুঃখের সময়”, “আমাদের ঈশ্বরের প্রতিশোধের দিন”, “পরীক্ষার সময়” এবং “প্রভুর দিন” এরকম বিভিন্ন নামে।
যারা ঈসা মসীহে বিশ্বাস করে তার পথে অবিচল থেকেছে, তারা উত্তোলিত হবে। তারপর যারা আল্লাহর ক্ষমতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করেছে, সন্দেহ পোষণ করেছে, তাদের জন্য শুরু হবে মহাক্লেশ। মথি ২৪:১৩ এ বলা হয়েছে, “কিন্তু যে শেষ পর্যন্ত স্থির থাকবে, সেই উদ্ধার পাবে।”
কেননা তৎকালে এইরূপ “মহাক্লেশ উপস্থিত হইবে, যেরূপ জগতের আরম্ভ অবধি এই পর্যন্ত কখনও হয় নাই, কখনও হইবেও না”
কেহ কোন মতে যেন তোমাদিগকে না ভুলায়; কেননা প্রথমে সেই ধর্ম-ভ্রষ্টতা উপস্থিত হইবে, এবং সেই পাপ-পুরুষ, সেই বিনাশ-সন্তান, প্রকাশ পাইবে,যে প্রতিরোধী হইবে ও ‘ঈশ্বর’ নামে আখ্যাত বা পূজ্য সকলের হইতে আপনাকে বড় করিবে, এমন কি, ঈশ্বরের মন্দিরে বসিয়া আপনাকে ঈশ্বর বলিয়া দেখাইবে।
যখন তোমার সঙ্কট উপস্থিত হয়, এবং এই সমস্ত তোমার প্রতি ঘটে, তখন সেই ভাবী কালে তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি ফিরিবে, ও তাঁহার রবে অবধান করিবে।
আর আমি দেখিলাম, “সমুদ্রের মধ্য হইতে এক পশু উঠিতেছে; তাহার দশটি শৃঙ্গ” ও সপ্ত মস্তক; এবং তাহার শৃঙ্গগুলিতে দশটি কিরীট, এবং তাহার মস্তকগুলিতে ঈশ্বর-নিন্দার কতিপয় নাম।
হাহাকার কর, কেননা সদাপ্রভুর দিন নিকটবর্তী; সর্বশক্তিমানের নিকট হইতে বিনাশের ন্যায় উহা আসিতেছে।এই কারণ সকলের হস্ত দুর্বল হইবে,মর্ত্যমাত্রের হৃদয় দ্রব হইবে; লোকেরা বিহ্বল হইবে, নানা যন্ত্রণা ও ব্যথাগ্রস্ত হইবে, তাহারা প্রসবকারিণীর ন্যায় ব্যথা খাইবে; একজন অন্যের প্রতি একাগ্র দৃষ্টি করিবে, তাহাদের মুখ অগ্নিশিখার মুখ।দেখ, সদাপ্রভুর দিন আসিতেছে; পৃথিবীকে ধ্বংস-স্থান করিবার, তথাকার পাপীদিগকে তাহার মধ্য হইতে উচ্ছিন্ন করিবার নিমিত্ত সেই দিন নিষ্ঠুর এবং ক্রোধ ও প্রজ্বলিত কোপসমন্বিত।
তুমি যে পশুকে দেখিলে, সে ছিল, কিন্তু এখন নাই; সে অগাধলোক হইতে উঠিবে ও বিনাশে যাইবে। আর পৃথিবী-নিবাসী যত লোকের নাম জগতের পত্তনাবধি জীবন-পুস্তকে লিখিত হয় নাই, তাহারা যখন সেই পশুকে দেখিবে যে ছিল, এখন নাই, পরে হইবে, তখন আশ্চর্য জ্ঞান করিবে।
দেখ, সদাপ্রভু পৃথিবীকে শূন্য করিতেছেন, উৎসন্ন করিতেছেন, উল্টাইয়া ফেলিতেছেন ও তাহার নিবাসীদিগকে ছড়াইয়া ফেলিতেছেন।উৎসন্নতার নগর ভগ্ন হইয়া পড়িল, সমস্ত গৃহ রুদ্ধ হইল, ভিতরে যাওয়া যায় না।দ্রাক্ষারসের বিষয়ে সড়কে চিৎকার হয়, সমস্ত আমোদ অন্ধকার হইল, দেশের বিলাস নির্বাসিত হইল।নগরে ধ্বংস অবশিষ্ট রহিল, পুরদ্বার খণ্ড খণ্ড হইয়া ভাঙ্গিয়া পড়িতেছে।বস্তুতঃ পৃথিবীতে জাতিগণের মধ্যে এইরূপ ঘটনা হইবে; জলপাই বৃক্ষ ঝাড়িবার ন্যায়, ফল-সংগ্রহ সমাপ্তির পরে দ্রাক্ষাফল চয়নের ন্যায় ঘটিবে।ইহারা উচ্চরব করিবে, আনন্দগান করিবে, সদাপ্রভুর মহিমা প্রযুক্ত ইহারা সমুদ্র হইতে উচ্চধ্বনি শুনাইবে।অতএব তোমরা দীপ্তিদেশে সদাপ্রভুর গৌরব কর, সমুদ্রের উপকূল-সমূহে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নাম [কীর্তন] কর।আমরা পৃথিবীর প্রান্ত হইতে সঙ্গীত শুনিয়াছি, ‘ধার্মিকেরই নিমিত্ত শোভা’। কিন্তু আমি কহিলাম, আমি ক্ষীণ হইতেছি, আমি ক্ষীণ হইতেছি, আমাকে ধিক্। বিশ্বাসঘাতকেরা বিশ্বাসঘাতকতা করিয়াছে, হাঁ, বিশ্বাসঘাতকেরা অতিশয় বিশ্বাসঘাতকতা করিয়াছে।হে পৃথিবী-নিবাসী, ত্রাস, খাত ও ফাঁদ তোমার উপরে আসিয়াছে।যে কেহ ত্রাসের জনশ্রুতিতে পলাইয়া বাঁচিবে, সে খাতে পড়িবে, যে খাত হইতে উঠিয়া আসিবে, সে ফাঁদে ধরা পড়িবে; কারণ ঊর্ধ্বস্থ বাতায়ন সকল মুক্ত হইল, ও পৃথিবীর মূল সকল কম্পমান হইল।পৃথিবী বিদীর্ণ হইল, বিদীর্ণ হইল; পৃথিবী ফাটিয়া গেল, ফাটিয়া গেল; পৃথিবী বিচলিত হইল, বিচলিত হইল।এইরূপে প্রজা ও যাজক, দাস ও প্রভু, দাসী ও কর্ত্রী, ক্রেতা ও বিক্রেতা, ঋণগ্রহীতা ও ঋণদাতা, ঋণী ও মহাজন, সকলে সমান হইবে।পৃথিবী মত্ত লোকের ন্যায় টলটলায়মান হইবে, টোঙ্গের ন্যায় দুলিবে; আপন অধর্মভারে ভারগ্রস্ত হইবে, পতিত হইবে, আর উঠিতে পারিবে না।সেই দিন সদাপ্রভু ঊর্ধ্বলোকে ঊর্ধ্বলোকীয় সৈন্যসামন্তকে ও পৃথিবীতে পার্থিব রাজগণকে প্রতিফল দিবেন।তাহাতে তাহারা কূপে একত্রীকৃত বন্দিগণের ন্যায় একত্রীকৃত হইবে, ও কারাগারে বদ্ধ হইবে, পরে অনেক দিন গত হইলে তাহাদের তত্ত্ব লওয়া যাইবে।আর চন্দ্র মলিন ও সূর্য লজ্জিত হইবে, কেননা বাহিনীগণের সদাপ্রভু সিয়োন পর্বতে ও যিরূশালেমে রাজত্ব করিবেন; এবং তাঁহার প্রাচীনবর্গের সম্মুখে প্রতাপ থাকিবে।পৃথিবী শূন্যীকৃত, শূন্যীকৃত হইবে, ও লুন্ঠিত, লুন্ঠিত হইবে, কেননা সদাপ্রভু এই কথা বলিয়াছেন।
আর যে সময়ে নিত্য নৈবেদ্য নিবৃত্ত ও ধ্বংসকারী ঘৃণার্হ বস্তু স্থাপিত হইবে, তদবধি এক সহস্র দুই শত নব্বই দিন হইবে।
এইস্থলে জ্ঞান দেখা যায়। যে বুদ্ধিমান, সে ঐ পশুর সংখ্যা গণনা করুক; কেননা তাহা মনুষ্যের সংখ্যা, এবং সেই সংখ্যা ছয়শত ছেষট্টি।
হে আমার জাতি, চল, তোমার অন্তরাগারে প্রবেশ কর, তোমার দ্বার সকল রুদ্ধ কর; অল্পক্ষণ মাত্র লুক্কায়িত থাক, যে পর্যন্ত ক্রোধ অতীত না হয়।কেননা দেখ, সদাপ্রভু আপন স্থান হইতে নির্গমন করিতেছেন, পৃথিবী-নিবাসীদের অপরাধের প্রতিফল দিবার নিমিত্ত; পৃথিবী আপনার [উপরে পাতিত] রক্ত প্রকাশ করিবে, আপনার নিহতদিগকে আর আচ্ছাদিত রাখিবে না।
আর আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, শুভ্রবর্ণ একখানি মেঘ, “সেই মেঘের উপরে মনুষ্যপুত্রের ন্যায় এক ব্যক্তি” বসিয়া আছেন, তাঁহার মস্তকে সুবর্ণ মুকুট ও তাঁহার হস্তে একখানি তীক্ষ্ণ কাস্তে।
আর ভাববাদিগণের ও পবিত্রগণের রক্ত, এবং যত লোক পৃথিবীতে হত হইয়াছে, সেই সকলের রক্ত ইহার মধ্যে পাওয়া গেল।
এক সপ্তাহ পর্যন্ত তিনি অনেকের সহিত দৃঢ় নিয়ম করিলেন; সেই সপ্তাহের অর্ধকালে তিনি যজ্ঞ ও নৈবেদ্য নিবৃত্ত করিবেন; পরে ঘৃণার্হ বস্তু সকলের পক্ষের উপরে ধ্বংসক আসিবে; এবং উচ্ছিন্নতা, নিরূপিত উচ্ছিন্নতা পর্যন্ত ধ্বংসকের উপরে ক্রোধ বর্ষিত হইবে।
হে জাতিগণ, নিকটে আসিয়া শুন; হে লোকবৃন্দ, অবধান কর; শুনুক পৃথিবী ও তথাকার সকলে, জগৎ ও তদুৎপন্ন সকল পদার্থ।তাহা দিবারাত্র কদাচ নির্বাপিত হইবে না; চিরকাল তাহার ধূম উঠিবে; তাহা পুরুষানুক্রমে উৎসন্ন হইয়া থাকিবে, তাহার মধ্য দিয়া অনন্তকালেও কেহ যাইবে না।কিন্তু পানিভেলা ও শজারু তাহা অধিকার করিবে, এবং মহাপেচক ও দাঁড়কাক তাহার মধ্যে বাস করিবে; আর তাহার উপরে অবস্তুতারূপ মানরজ্জু ও শূন্যতারূপ ওলোনসূত্র ধরা যাইবে।তথাকার কুলীনেরা রাজত্ব ঘোষণা করিতে কেহই থাকিবে না; তথাকার অধ্যক্ষবর্গ সর্বতোভাবে লুপ্ত হইবে।তাহার অট্টালিকা সকল কণ্টকে, তাহার দুর্গ সকল বিছুটিতে ও শেয়ালকাঁটাতে ব্যাপ্ত হইবে, এবং সেই দেশ শৃগালের বাসস্থান, উষ্ট্রপক্ষীর মাঠ হইবে।আর বন্যপশুগণ বৃকগণের সহিত মিলিবে, এবং ছাগেরা আপন আপন মিত্রকে আহ্বান করিয়া আনিবে; আর সেখানে নিশাচর বাস করিয়া বিশ্রামের স্থান পাইবে।সেই স্থানে পেঁচক বাসা করিয়া ডিম্ব প্রসব করিবে, তাহা ফুটাইয়া শাবকদিগকে আপন ছায়াতে একত্র করিবে; এবং সেখানে চিলেরা প্রত্যেকে আপন আপন সঙ্গিনীর সহিত একত্র হইবে।তোমরা সদাপ্রভুর পুস্তকে অনুসন্ধান কর, তাহা পাঠ কর, ইহার একটিরও অভাব হইবে না, তাহারা কেহ সঙ্গিনীবিহীন থাকিবে না; কেননা আমার মুখ [দ্বারা] তিনিই ইহা আজ্ঞা করিয়াছেন, এবং তিনিই আপন আত্মা দ্বারা তাহাদিগকে সংগ্রহ করিয়াছেন।আর তিনি গুলিবাঁটপূর্বক তাহাদিগকে সেই অধিকার দিয়াছেন, তাঁহার হস্ত মানরজ্জু দ্বারা প্রত্যেকের অংশ নিরূপণ করিয়াছে; তাহারা চিরকাল তাহা অধিকার করিবে, তাহারা পুরুষানুক্রমে সেই স্থানে বাস করিবে।কেননা জাতিমাত্রের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর ক্রোধ, তাহাদের সৈন্য সামন্তের বিরুদ্ধে তাঁহার প্রচণ্ড কোপ প্রজ্বলিত হইল; তিনি তাহাদিগকে নিঃশেষে বিনষ্ট করিলেন, তাহাদিগকে বধে সমর্পণ করিলেন।আর তাহাদের নিহতগণ বাহিরে নিক্ষিপ্ত হইবে, তাহাদের শব হইতে দুর্গন্ধ উঠিবে, তাহাদের রক্তে পর্বতগণ গলিত হইবে।আর আকাশের সমস্ত বাহিনী ক্ষয় পাইবে, আকাশমণ্ডল লিপি-পত্রের ন্যায় জড়াইয়া যাইবে; এবং যেমন দ্রাক্ষালতার জীর্ণ পত্র ও ডুমুর বৃক্ষের জীর্ণ পল্লব, তদ্রূপ তাহার সমস্ত বাহিনী জীর্ণ হইয়া পড়িবে।
আর স্বর্গমধ্যে এক মহৎ চিহ্ন দেখা গেল। একজন স্ত্রীলোক ছিল, সূর্য তাহার পরিচ্ছদ, ও চন্দ্র তাহার পদতলে, এবং তাহার মস্তকের উপরে দ্বাদশ তারার এক মুকুট।
আর স্বর্গ-মধ্যে আর এক চিহ্ন দেখা গেল, দেখ, এক প্রকাণ্ড লোহিতবর্ণ নাগ, তাহার সপ্ত মস্তক ও দশ শৃঙ্গ এবং সপ্ত মস্তকে সপ্ত কিরীট,
আর ঐ পশুর ছাপ অর্থাৎ নাম কিম্বা নামের সংখ্যা যে কেহ ধারণ না করে, তাহার ক্রয় বিক্রয় করিবার অধিকার বদ্ধ করে।
আর সেই মহানাগ নিক্ষিপ্ত হইল; ইহা সেই পুরাতন সর্প, যাহাকে দিয়াবল [অপবাদক] এবং শয়তান [বিপক্ষ] বলা যায়, সে সমস্ত নরলোকের ভ্রান্তি জন্মায়; সে পৃথিবীতে নিক্ষিপ্ত হইল, এবং তাহার দূতগণও তাহার সঙ্গে নিক্ষিপ্ত হইল।
আর আমি দেখিলাম, সেই নারী পবিত্রগণের রক্তে ও যীশুর সাক্ষিগণের রক্তে মত্ত। তাহাকে দেখিয়া আমার অতিশয় আশ্চর্য বোধ হইল।
জাগ, জাগ, উঠিয়া দাঁড়াও, হে যিরূশালেম, তুমি সদাপ্রভুর হস্ত হইতে তাঁহার ক্রোধের পানপাত্রে পান করিয়াছ, মত্ততাজনক বৃহৎ পানপাত্রে পান করিয়াছ, তলানি চাটিয়া খাইয়াছে।[এই পুরী] যে সকল পুত্র প্রসব করিয়াছে, তাহাদের মধ্যে তাহাকে লইয়া যাইবার কেহই নাই; যে সকল পুত্র প্রতিপালন করিয়াছে, তাহাদের মধ্যে ইহার হস্ত ধরিবার কেহ নাই।এই দুই তোমার প্রতি ঘটিয়াছে; কে তোমার নিমিত্ত বিলাপ করিবে? ধনাপহার ও বিনাশ, দুর্ভিক্ষ ও খড়্গ; আমি কিরূপে তোমাকে সান্ত্বনা করিব?তোমাদের পিতা অব্রাহাম ও তোমাদের প্রসবকারিণী সারার প্রতি দৃষ্টিপাত কর; ফলতঃ যখন সে একাকী ছিল, তখন আমি তাহাকে ডাকিয়া আশীর্বাদযুক্ত ও বহুবংশ করিলাম।জালে বদ্ধ হরিণের ন্যায় তোমার পুত্রগণ মূর্চ্ছিত হইয়াছে, প্রতি সড়কের মাথায় পড়িয়া আছে; তাহারা সদাপ্রভুর ক্রোধে তোমার ঈশ্বরের ধমকে পরিপূর্ণ।অতএব তুমি এই কথা শুন, হে দুঃখিনি, তুমি মত্তা, কিন্তু দ্রাক্ষারসে নয়;তোমার প্রভু সদাপ্রভু, তোমার ঈশ্বর, যিনি আপন প্রজাদের পক্ষবাদী, তিনি এই কথা কহেন, দেখ, আমি মত্ততাজনক পান পাত্র, আমার ক্রোধরূপ বৃহৎ পানপাত্র, তোমার হস্ত হইতে লইলাম; সেই পানপাত্রে তুমি আর পান করিবে না।আর আমি তোমার সেই ক্লেশদাতাদের হস্তে তাহা সমর্পণ করিব, যাহারা তোমার প্রাণকে বলিয়াছে, ‘হেঁট হও, আমরা তোমার উপর দিয়া গমন করি,’ আর তুমি ভূমির ন্যায় ও সড়কের ন্যায় পথিকদের কাছে আপন পৃষ্ঠ পাতিয়া দিয়াছ।
হায়! সেই দিন মহৎ, তাহার তুল্য দিন আর নাই; এ যাকোবের সঙ্কটকাল, কিন্তু ইহা হইতে সে নিস্তার পাইবে।
প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, অমঙ্গল, একা অমঙ্গল, দেখ, তাহা আসিতেছে।পরিণাম আসিতেছে; সেই পরিণাম আসিতেছে; তাহা তোমার বিরুদ্ধে জাগিয়া উঠিতেছে; দেখ, তাহা আসিতেছে।হে দেশনিবাসী লোক, তোমার পালা আসিতেছে, কাল আসিতেছে, দিবস সন্নিকট হইতেছে; তাহা কোলাহলের দিন, পর্বতগণের উপরে আনন্দধ্বনির দিন নয়।
কারণ সেই দিন নিকটবর্তী, হাঁ, সদাপ্রভুর দিন, সেই মেঘাড়ম্বরের দিন নিকটবর্তী; তাহা জাতিগণের কাল হইবে।
সে পরাৎপরের বিপরীতে কথা কহিবে, পরাৎপরের পবিত্রগণকে শীর্ণ করিবে, এবং নিরূপিত সময়ের ও ব্যবস্থার পরিবর্তন করিতে মনস্থ করিবে, এবং এক কাল, [দুই] কাল ও অর্ধ কাল পর্যন্ত তাহারা তাহার হস্তে সমর্পিত হইবে।
সে বলে পরাক্রান্ত হইবে, কিন্তু নিজ বলে নহে, এবং সে আশ্চর্যরূপে বিনাশ করিবে; আর কৃতকার্য হইবে, কর্ম সফল করিবে, এবং শক্তিমানদিগকে ও পবিত্র প্রজাদিগকে বিনাশ করিবে।তাহার কৌশল প্রযুক্ত সে আপন হস্তে চাতুরি সফল করিবে; সে মনে মনে আত্মগরিমা করিবে, ও নিশ্চিন্ত অবস্থাপন্ন অনেককে বিনষ্ট করিবে, এবং অধিপতিগণের অধিপতির বিরুদ্ধে দাঁড়াইবে, কিন্তু সে বিনা হস্তে ভগ্ন হইবে।
তৎকালে যে মহান অধ্যক্ষ তোমার জাতির সন্তানদের পক্ষে দাঁড়াইয়া থাকেন, সেই মীখায়েল উঠিয়া দাঁড়াইবেন, আর এমন সঙ্কটের কাল উপস্থিত হইবে, যাহা মনুষ্যজাতির স্থিতিকাল অবধি সেই সময় পর্যন্ত কখনও হয় নাই; কিন্তু তৎকালে তোমার স্বজাতীয় যে কাহারও নাম পুস্তকে লিখিত পাওয়া যাইবে, সে উদ্ধার পাইবে।
তোমরা সিয়োনে তূরী বাজাও, আমার পবিত্র পর্বতে সিংহনাদ কর, দেশনিবাসী সকলেই কমিপত হউক; কেননা সদাপ্রভুর দিন আসিতেছে, হাঁ, সেই দিন সন্নিকট।তাহাদের সম্মুখে পৃথিবী কাঁপে, আকাশমণ্ডল কমপমান হয়, চন্দ্র ও সূর্য অন্ধকারময় হয়, নক্ষত্রগণ আপন আপন তেজ গুটাইয়া লয়।সদাপ্রভু নিজ সৈন্যসামন্তের অগ্রে আপন রব শুনাইতেছেন; কেননা তাঁহার শিবির অতি বৃহৎ; কেননা তাহা বাক্যসাধক বলবান, কেননা সদাপ্রভুর দিন মহৎ ও অতি ভয়ানক; আর কে তাহা সহ্য করিতে পারে?কিন্তু, সদাপ্রভু বলেন, এখনও তোমরা সমস্ত অন্তঃকরণের সহিত এবং উপবাস, রোদন ও বিলাপ সহকারে আমার কাছে ফিরিয়া আইস।আর আপন আপন বস্ত্র না ছিঁড়িয়া অন্তঃকরণ চির, এবং আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে ফিরিয়া আইস, কেননা তিনি কৃপাময় ও স্নেহশীল ক্রোধে ধীর ও দয়াতে মহান, এবং অমঙ্গলের বিষয়ে অনুশোচনা করেন।কে জানে যে, তিনি ফিরিয়া অনুশোচনা করিবেন না, এবং তাঁহার পশ্চাতে আশীর্বাদ, অর্থাৎ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে ভক্ষ্য-নৈবেদ্য ও পেয়-নৈবেদ্য, রাখিয়া যাইবেন না ?তোমরা সিয়োনে তূরী বাজাও, পবিত্র উপবাস নিরূপণ কর, পর্বদিন ঘোষণা কর;প্রজালোকদিগকে একত্র কর, পবিত্র সমাজ নিরূপণ কর, প্রাচীনগণকে আহ্বান কর, বালক-বালিকাদিগকে ও দুগ্ধপোষ্য শিশুদিগকে একত্র কর; বর আপন বাসগৃহ হইতে, কন্যা আপন অন্তঃপুর হইতে নির্গত হউক।বারান্দার ও বেদির মধ্যস্থানে সদাপ্রভুর পরিচারক যাজকগণ রোদন করুক, তাহারা বলুক, হে সদাপ্রভু, আপন প্রজাগণের প্রতি মমতা কর, আপন অধিকারকে টিট্কারির বিষয় করিও না; তাহাদের বিষয়ে জাতিগণকে গল্প করিতে দিও না, লোকবৃন্দের মধ্যে কেন বলা হইবে যে, ‘উহাদের ঈশ্বর কোথায়?’তখন সদাপ্রভু আপন দেশের জন্য উদ্যোগী হইলেন, ও আপন প্রজাদের প্রতি দয়া করিলেন।আর সদাপ্রভু উত্তর দিলেন, আপন প্রজাদিগকে কহিলেন, দেখ, আমি তোমাদের নিকটে শস্য, দ্রাক্ষারস ও তৈল প্রেরণ করিতেছি, তোমরা তাহাতে তৃপ্ত হইবে; এবং আমি জাতিগণের মধ্যে তোমাদিগকে আর টিট্কারির পাত্র করিব না।সে তিমির ও অন্ধকারের দিন, মেঘের ও ঘোর অন্ধকারের দিন, পর্বতগণের উপরে অরুণের ন্যায় তাহা ব্যাপ্ত হইতেছে। বলবতী এক মহাজাতি; তাহার তুল্য জাতি যুগের আরম্ভ হইতে হয় নাই, এবং তাহার পরে পুরুষানুক্রমে বৎসর-পর্যায়েও হইবে না।
আর আমি আকাশে ও পৃথিবীতে অদ্ভুত লক্ষণ দেখাইব; রক্ত, অগ্নি ও ধূমস্তম্ভ দেখাইব।সদাপ্রভুর ঐ মহৎ ও ভয়ঙ্কর দিনের আগমনের পূর্বে সূর্য অন্ধকার ও চন্দ্র রক্ত হইয়া যাইবে।
তোমরা, যাহারা সদাপ্রভুর দিনের আকাঙ্ক্ষা কর; ধিক্ তোমাদিগকে! সদাপ্রভুর দিন তোমাদের কি করিবে? তাহা অন্ধকার; আলোক নহে।কোন ব্যক্তি যেন সিংহ হইতে পলায়ন করিল, আর ভল্লুকীর সম্মুখে পড়িল; অথবা গৃহে গিয়া দেওয়ালে হস্ত রাখিলে সর্প তাহাকে দংশন করিল।ইস্রায়েল-কুমারী পতিত হইয়াছে, সে আর উঠিবে না; সে আপন ভূমিতে আছাড় খাইয়াছে; তাহাকে উঠাইবার কেহ নাই।সদাপ্রভুর দিন কি আলোক, অন্ধকার কি নয়? তাহা কি ঘোর অন্ধকার নয়, তাহাতে কি দীপ্তি থাকিবে?
সদাপ্রভুর মহাদিন নিকটবর্তী, তাহা নিকটবর্তী, অতি শীঘ্র আসিতেছে; ঐ সদাপ্রভুর দিনের শব্দ; সেখানে বীর তীব্র আর্তরব করিতেছে।সেই দিন ক্রোধের দিন, সঙ্কটের ও সঙ্কোচের দিন, নাশের ও সর্বনাশের দিন, অন্ধকারের ও তিমিরের দিন, মেঘের ও গাঢ় তমাসার দিন,
আমি চারিদিকের সর্বজাতির পক্ষে যিরূশালেমকে টলনের পানপাত্রস্বরূপ করিব, এবং যিরূশালেমের অবরোধ কালে ইহা যিহূদাতেও সফল হইবে।সেই দিন আমি যিরূশালেমকে সর্বজাতিরই বোঝাস্বরূপ প্রস্তর করিব; যত লোক সেই বোঝা লইবে, তাহারা ক্ষতবিক্ষত হইবে; আর তাহার বিরুদ্ধে পৃথিবীর সকল জাতি একত্রীকৃত হইবে।
সদাপ্রভু কহেন, সমস্ত দেশে দুই অংশ লোক উচ্ছিন্ন হইয়া প্রাণত্যাগ করিবে; কিন্তু তৃতীয় অংশ তাহার মধ্যে অবশিষ্ট থাকিবে।সেই তৃতীয় অংশকে আমি অগ্নিমধ্যে প্রবেশ করাইব, যেমন রৌপ্য খাঁটি করা যায়, তেমনি খাঁটি করিব, ও যেমন সুবর্ণ পরীক্ষিত হয়, তেমনি তাহাদের পরীক্ষা করিব; তাহারা আমার নামে ডাকিবে, এবং আমি তাহাদিগকে উত্তর দিব; আমি বলিব, এ আমার প্রজা; আর তাহারা বলিবে, সদাপ্রভু আমার ঈশ্বর।
দেখ, সদাপ্রভুর এক দিন আসিতেছে; সেই দিন তোমার মধ্যে তোমার সমপত্তি লুট হইয়া বিভক্ত হইবে।গেবা অবধি যিরূশালেমের দক্ষিণস্থ রিম্মোণ পর্যন্ত সমস্ত দেশ রূপান্তর প্রাপ্ত হইয়া অরাবা তলভূমির ন্যায় হইবে, এবং নগরটি উন্নত হইয়া আপন স্থানে বসতিবিশিষ্ট হইবে; বিন্যামীনের দ্বার অবধি প্রথম দ্বারের স্থান পর্যন্ত, কোণের দ্বার পর্যন্ত, এবং হননেলের দুর্গ অবধি রাজার দ্রাক্ষাযন্ত্র পর্যন্ত সেইরূপ হইবে।আর লোকেরা তাহার মধ্যে বাস করিবে; আর কখনও অভিশাপ হইবে না, কিন্তু যিরূশালেম নির্ভয়ে বসতি করিবে।আর যে সকল জাতি যিরূশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করিবে সদাপ্রভু এইরূপ আঘাতে তাহাদিগকে আহত করিবেন; চরণে ভর দিয়া দাঁড়াইবার সময়ে তাহাদের মাংস ক্ষয় পাইবে, কোটরে চক্ষু দুইটি ক্ষয় পাইবে, ও মুখে জিহ্বা ক্ষয় পাইবে।আর সেই দিন তাহাদের মধ্যে সদাপ্রভু হইতে মহাকোলাহল হইবে; তাহারা প্রত্যেক জন আপন আপন প্রতিবাসীর হস্ত ধরিবে, এবং প্রত্যেকের হস্ত আপন আপন প্রতিবাসীর বিরুদ্ধে উত্তোলিত হইবে।যিহূদাও যিরূশালেমে যুদ্ধ করিবে, এবং চারিদিকের সমস্ত জাতির ধন, স্বর্ণ, রৌপ্য ও বস্ত্র অতিশয় প্রচুররূপে সঞ্চয় করা যাইবে।আর সেই সকল শিবিরে উপস্থিত অশ্ব, অশ্বতর, উষ্ট্র, গর্দভ প্রভৃতি সকল পশুর প্রতি আঘাত ঐ আঘাতের ন্যায় হইবে।আর যিরূশালেমের বিরুদ্ধে আগত সমস্ত জাতির মধ্যে যাহারা অবশিষ্ট থাকিবে, তাহারা বৎসর বৎসর বাহিনীগণের সদাপ্রভু রাজার নিকটে প্রণিপাত করিতে ও কুটীরোৎসব পালন করিতে আসিবে।আর পৃথিবীর গোষ্ঠী সকলের মধ্যে যাহারা বাহিনীগণের সদাপ্রভু রাজার কাছে প্রণিপাত করিতে যিরূশালেমে না আইসে, তাহাদের উপরে বৃষ্টি হইবে না।মিসরের গোষ্ঠী যদি না আইসে, উপস্থিত না হয়, তবে তাহাদের উপরে [বৃষ্টি হইবে] না; যে সকল জাতি কুটীরোৎসব পালন করিতে না আসিবে, তাহাদিগকে সদাপ্রভু যে আঘাতে আহত করিবেন, সেই আঘাত [উহাদের প্রতিও] ঘটিবে।ইহা মিসরের দণ্ড হইবে, এবং যে সকল জাতি কুটীরোৎসব পালন করিতে না আসিবে, তাহাদের সকলের সেই দণ্ড হইবে।কারণ আমি সমুদয় জাতিকে যুদ্ধার্থে যিরূশালেমের বিরুদ্ধে সংগ্রহ করিব; তাহাতে নগর শত্রুহস্তগত, সকল গৃহের দ্রব্য লুণ্ঠিত, ও স্ত্রীলোকেরা বলাৎকৃত হইবে, এবং নগরের অর্ধেক লোক নির্বাসনে যাইবে, আর অবশিষ্ট প্রজারা নগর হইতে উচ্ছিন্ন হইবে না।
যীশু উত্তর করিয়া তাঁহাদিগকে কহিলেন, দেখিও, কেহ যেন তোমাদিগকে না ভুলায়।তখন দুই জন ক্ষেত্রে থাকিবে, একজনকে লওয়া যাইবে, এবং অন্য জনকে ছাড়িয়া যাওয়া হইবে।দুই জন স্ত্রীলোক যাঁতা পিষিবে, একজনকে লওয়া যাইবে, এবং অন্য জনকে ছাড়িয়া যাওয়া হইবে।অতএব জাগিয়া থাক, কেননা তোমাদের প্রভু কোন্ দিন আসিবেন, তাহা তোমরা জান না।কিন্তু ইহা জানিও, চোর কোন্ প্রহরে আসিবে, তাহা যদি গৃহকর্তা জানিত, তবে জাগিয়া থাকিত, নিজ গৃহে সিঁধ কাটিতে দিত না।এই জন্য তোমরাও প্রস্তুত থাক, কেননা যে দণ্ড তোমরা মনে করিবে না, সেই দণ্ডে মনুষ্যপুত্র আসিবেন।এখন, সেই বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস কে, যাহাকে তাহার প্রভু নিজ পরিজনের উপরে নিযুক্ত করিয়াছেন, যেন সে তাহাদিগকে উপযুক্ত সময়ে খাদ্য দেয়?ধন্য সেই দাস, যাহাকে তাহার প্রভু আসিয়া সেইরূপ করিতে দেখিবেন।আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, তিনি তাহাকে আপন সর্বস্বের অধ্যক্ষ করিবেন।কিন্তু সেই দুষ্ট দাস যদি মনে মনে বলে, ‘আমার প্রভুর আসিবার বিলম্ব আছে,’আর যদি আপন সহদাসদিগকে মারিতে, এবং মত্ত লোকদের সঙ্গে ভোজন ও পান করিতে আরম্ভ করে,কেননা অনেকে আমার নাম ধরিয়া আসিবে, বলিবে, আমিই সেই খ্রীষ্ট, আর অনেক লোককে ভুলাইবে।
আর তোমরা যুদ্ধের কথা ও যুদ্ধের জনরব শুনিবে; দেখিও, ব্যাকুল হইও না; কেননা এই সকল অবশ্যই ঘটিবে, কিন্তু তখনও শেষ নয়।কারণ জাতির বিপক্ষে জাতি ও রাজ্যের বিপক্ষে রাজ্য উঠিবে, এবং স্থানে স্থানে দুর্ভিক্ষ ও ভূমিকম্প হইবে।কিন্তু এই সকলই যাতনার আরম্ভ মাত্র।
অতএব যখন দেখিবে, ধ্বংসের যে ঘৃণার্হ বস্তু দানিয়েল ভাববাদী দ্বারা উক্ত হইয়াছে, তাহা পবিত্র স্থানে দাঁড়াইয়া আছে, যে জন পাঠ করে, সে বুঝুক,তখন যাহারা যিহূদিয়াতে থাকে, তাহারা পাহাড় অঞ্চলে পলায়ন করুক;যে কেহ ছাদের উপরে থাকে, সে গৃহ হইতে জিনিসপত্র লইবার জন্য নিচে না নামুক;আর যে কেহ ক্ষেত্রে থাকে, সে আপন বস্ত্র লইবার নিমিত্ত পশ্চাতে ফিরিয়া না আইসুক।হায়, সেই সময়ে গর্ভবতী এবং স্তন্যদাত্রীদের সন্তাপ হইবে!কিন্তু তিনি উত্তর করিয়া তাঁহাদিগকে কহিলেন, তোমরা কি এই সকল দেখিতেছ না? আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, এই স্থানের একখানি পাথর অন্য পাথরের উপরে থাকিবে না, সমস্তই ভূমিসাৎ হইবে।আর প্রার্থনা কর, যেন তোমাদের পলায়ন শীতকালে কিম্বা বিশ্রামবারে না ঘটে।কেননা তৎকালে এইরূপ “মহাক্লেশ উপস্থিত হইবে, যেরূপ জগতের আরম্ভ অবধি এই পর্যন্ত কখনও হয় নাই, কখনও হইবেও না”আর সেই দিনের সংখ্যা যদি কমাইয়া দেওয়া না যাইত, তবে কোন প্রাণীই রক্ষা পাইত না; কিন্তু মনোনীতদের জন্য সেই দিনের সংখ্যা কমাইয়া দেওয়া যাইবে।
আর সেই সময়ের ক্লেশের পরেই “সূর্য অন্ধকার হইবে, চন্দ্র জ্যোৎস্না দিবে না, আকাশ হইতে তারাগণের পতন হইবে ও আকাশমণ্ডলের পরাক্রম সকল বিচলিত হইবে”।পরে তিনি জৈতুন পর্বতের উপরে বসিলে শিষ্যেরা বিরলে তাঁহার নিকটে আসিয়া বলিলেন, আমাদিগকে বলুন দেখি, এই সকল ঘটনা কখন্ হইবে? আর আপনার আগমনের এবং যুগান্তের চিহ্ন কি?আর তখন মনুষ্যপুত্রের চিহ্ন আকাশে দেখা যাইবে, আর তখন পৃথিবীর সমুদয় গোষ্ঠী বিলাপ করিবে, এবং “মনুষ্যপুত্রকে আকাশীয় মেঘরথে পরাক্রম ও মহা প্রতাপে আসিতে” দেখিবে।
কিন্তু তোমরা যখন যুদ্ধের কথা ও যুদ্ধের জনরব শুনিবে, তখন ব্যাকুল হইও না; এই সকল অবশ্যই ঘটিবে, কিন্তু তখনও শেষ নয়।কারণ জাতির বিপক্ষে জাতি, ও রাজ্যের বিপক্ষে রাজ্য উঠিবে। স্থানে স্থানে ভূমিকম্প হইবে; দুর্ভিক্ষ হইবে; এই সকল যাতনার আরম্ভ মাত্র।
পরন্তু যখন তোমরা দেখিবে, ধ্বংসের সেই ঘৃণার্হ বস্তু যেখানে দাঁড়াইবার নয়, সেখানে দাঁড়াইয়া আছে- যে পাঠ করে, সে বুঝুক, তখন যাহারা যিহূদিয়াতে থাকে, তাহারা পাহাড় অঞ্চলে পলায়ন করুক; এবং যে কেহ ছাদের উপরে থাকে,সে গৃহ হইতে জিনিসপত্র লইবার জন্য নিচে না নামুক ও তাহার মধ্যে প্রবেশ না করুক;এবং যে কেহ ক্ষেত্রে থাকে, সে আপন বস্ত্র লইবার নিমিত্ত পশ্চাতে ফিরিয়া না যাউক।হায়, সেই সময় গর্ভবতী এবং স্তন্যদাত্রী নারীদের সন্তাপ!আর প্রার্থনা করিও, যেন ইহা শীতকালে না হয়।কেননা তৎকালে এইরূপ ক্লেশ উপস্থিত হইবে, যেরূপ ক্লেশ ঈশ্বরের কৃত সৃষ্টির আদি অবধি এই পর্যন্ত কখনও হয় নাই, কখন হইবেও না।যীশু তাঁহাকে কহিলেন, তুমি কি এই সকল বড় বড় গাঁথনি দেখিতেছ? ইহার এক খানি পাথর আর এক খানি পাথরের উপরে থাকিবে না, সকলই ভূমিসাৎ হইবে।আর প্রভু যদি সেই দিনের সংখ্যা কমাইয়া না দিতেন, তবে কোন প্রাণীই রক্ষা পাইত না; কিন্তু তিনি যাহাদিগকে মনোনীত করিয়াছেন, সেই মনোনীতদের জন্য সেই দিনের সংখ্যা কমাইয়া দিলেন।
আর সেই সময়ে, সেই ক্লেশের পরে, সূর্য অন্ধকার হইবে, চন্দ্র জ্যোৎস্না দিবে না,আকাশ হইতে তারাগণের পতন হইবে, ও আকাশমণ্ডলের পরাক্রম সকল বিচলিত হইবে।
আর নোহের সময়ে যে রূপ হইয়াছিল, মনুষ্যপুত্রের সময়েও তদ্রূপ হইবে।লোকে ভোজন পান করিত, বিবাহ করিত, বিবাহিতা হইত, যে পর্যন্ত না নোহ জাহাজে প্রবেশ করিলেন, আর জলপ্লাবন আসিয়া সকলকে বিনষ্ট করিল।সেইরূপ লোটের সময়ে যেমন হইয়াছিল- লোকে ভোজন পান, ক্রয় বিক্রয়, বৃক্ষ রোপণ ও গৃহ নির্মাণ করিত;কিন্তু যে দিন লোট সদোম হইতে বাহির হইলেন, সেই দিন আকাশ হইতে অগ্নি ও গন্ধক বর্ষিয়া সকলকে বিনষ্ট করিল-তোমার ভ্রাতা যদি পাপ করে, তাহাকে অনুযোগ করিও; আর সে যদি অনুতাপ করে, তাহাকে ক্ষমা করিও।মনুষ্যপুত্র যে দিন প্রকাশিত হইবেন, সেই দিনেও সেইরূপ হইবে।
আর যখন তোমরা যিরূশালেমকে সেনাসামন্ত দ্বারা বেষ্টিত দেখিবে, তখন জানিবে যে, তাহার ধ্বংস সন্নিকট।তখন যাহারা যিহূদিয়ায় থাকে, তাহারা পাহাড় অঞ্চলে পলায়ন করুক, এবং যাহারা নগরের মধ্যে থাকে, তাহারা বাহিরে যাউক; আর যাহারা পল্লীগ্রামে থাকে, তাহারা নগরে প্রবেশ না করুক।কেননা তখন প্রতিশোধের সময়, যে সমস্ত কথা লিখিত আছে, সেই সমস্ত পূর্ণ হইবার সময়।
আর সূর্যে, চন্দ্রে ও নক্ষত্রগণে নানা চিহ্ন প্রকাশ পাইবে, এবং পৃথিবীতে জাতিগণের ক্লেশ হইবে, তাহারা সমুদ্রের ও তরঙ্গের গর্জনে উদ্বিগ্ন হইবে।ভয়ে এবং ভূমণ্ডলে যাহা যাহা ঘটিবে তাহার আশঙ্কায়, মানুষের প্রাণ উড়িয়া যাইবে; কেননা আকাশমণ্ডলের পরাক্রম সকল বিচলিত হইবে।
এই সমস্ত তোমাদিগকে বলিলাম, যেন তোমরা আমাতে শান্তি প্রাপ্ত হও। জগতে তোমরা ক্লেশ পাইতেছ; কিন্তু সাহস কর, আমিই জগৎকে জয় করিয়াছি।
আমি উপরে আকাশে নানা অদ্ভুত লক্ষণ এবং নিচে পৃথিবীতে নানা চিহ্ন রক্ত, অগ্নি ও ধূম-বাষপ দেখাইব।আর হঠাৎ আকাশ হইতে প্রচণ্ড বায়ুর বেগের শব্দবৎ একটা শব্দ আসিল, এবং যে গৃহে তাঁহারা বসিয়াছিলেন, সেই গৃহের সর্বত্র ব্যাপ্ত হইল।প্রভুর সেই মহৎ ও প্রসিদ্ধ দিনের আগমনের পূর্বে সূর্য অন্ধকার হইয়া যাইবে, চন্দ্র রক্ত হইয়া যাইবে;
কিন্তু তোমার কঠিন ভাব এবং অপরিবর্তনশীল চিত্ত অনুসারে তুমি নিজের জন্য এমন ক্রোধ সঞ্চয় করিতেছ, যাহা ক্রোধের ও ঈশ্বরের ন্যায়বিচার-প্রকাশের দিনে আসিবে;
কারণ আমার মীমাংসা এই, আমাদের প্রতি যে প্রতাপ প্রকাশিত হইবে, তাহার সঙ্গে এই বর্তমান কালের দুঃখভোগ তুলনার যোগ্য নয়।কেননা সৃষ্টির ঐকান্তিক প্রতীক্ষা ঈশ্বরের পুত্রগণের প্রকাশ প্রাপ্তির অপেক্ষা করিতেছে।
এক মুহূর্তের মধ্যে, চক্ষুর পলকে, শেষ তূরীধ্বনিতে হইব; কেননা তূরী বাজিবে, তাহাতে মৃতেরা অক্ষয় হইয়া উত্থাপিত হইবে, এবং আমরা রূপান্তরীকৃত হইব।
বস্তুতঃ আপাততঃ আমাদের যে লঘুতর ক্লেশ হইয়া থাকে, তাহা উত্তর উত্তর অনুপমরূপে আমাদের জন্য অনন্তকাল স্থায়ী গুরুতর প্রতাপ সাধন করিতেছে;আমরা ত দৃশ্য বস্তু লক্ষ্য না করিয়া অদৃশ্য বস্তু লক্ষ্য করিতেছি; কারণ যাহা যাহা দৃশ্য, তাহা ক্ষণকালস্থায়ী, কিন্তু যাহা যাহা অদৃশ্য, তাহা অনন্তকালস্থায়ী।
কিন্তু আত্মা স্পষ্টই বলিতেছেন, উত্তরকালে কতক লোক ভ্রান্তিজনক আত্মাদের মধ্যে ও ভূতগণের শিক্ষামালায় মন দিয়া বিশ্বাস হইতে সরিয়া পড়িবে।
কিন্তু ইহা জানিও, শেষ কালে বিষম সময় উপস্থিত হইবে।কিন্তু তুমি আমার শিক্ষা, আচার-ব্যবহার, সঙ্কল্প, বিশ্বাস, দীর্ঘসহিষ্ণুতা, প্রেম, ধৈর্য, নানাবিধ তাড়না ও দুঃখভোগের অনুসরণ করিয়াছ;আন্তিয়খিয়াতে, ইকনিয়ে, লুস্ত্রায় আমার প্রতি কি কি ঘটিয়াছিল; কত তাড়না সহ্য করিয়াছি। আর সেই সমস্ত হইতে প্রভু আমাকে উদ্ধার করিয়াছেন।আর যত লোক ভক্তিভাবে খ্রীষ্ট যীশুতে জীবন ধারণ করিতে ইচ্ছা করে, সেই সকলের প্রতি তাড়না ঘটিবে।কিন্তু দুষ্ট লোকেরা ও বঞ্চকেরা, পরের ভ্রান্তি জন্মাইয়া ও আপনারা ভ্রান্ত হইয়া, উত্তর উত্তর কুপথে অগ্রসর হইবে।কিন্তু তুমি যাহা যাহা শিখিয়াছ ও যাহার যাহার প্রমাণ জ্ঞাত হইয়াছ, তাহাতেই স্থির থাক; তুমি ত জান যে, কাহাদের কাছে শিখিয়াছ।আরও জান, তুমি শিশুকাল অবধি পবিত্র শাস্ত্রকলাপ জ্ঞাত আছ, সেই সকল খ্রীষ্ট যীশু সম্বন্ধীয় বিশ্বাস দ্বারা তোমাকে পরিত্রাণের নিমিত্ত জ্ঞানবান করিতে পারে।ঈশ্বর-নিশ্বসিত প্রত্যেক শাস্ত্রলিপি আবার শিক্ষার, অনুযোগের, সংশোধনের, ধার্মিকতা সম্বন্ধীয় শাসনের নিমিত্ত উপকারী,যেন ঈশ্বরের লোক পরিপক্ব, সমস্ত সৎকর্মের জন্য সুসজ্জিভূত হয়।কেননা মনুষ্যেরা আত্মপ্রিয়, অর্থপ্রিয়, আত্মশ্লাঘী, অভিমানী, ধর্মনিন্দুক, পিতামাতার অবাধ্য, অকৃতজ্ঞ, অসাধু,স্নেহরহিত, ক্ষমাহীন, অপবাদক, অজিতেন্দ্রিয়, প্রচণ্ড, সদ্বিদ্বেষী,বিশ্বাসঘাতক, দুঃসাহসী, গর্বান্ধ, ঈশ্বরপ্রিয় নয়, বরং বিলাসপ্রিয় হইবে।লোকে ভক্তির অবয়বধারী, কিন্তু তাহার শক্তি অস্বীকারকারী হইবে; তুমি এইরূপ লোকদের হইতে সরিয়া যাও।
তৎকালে তাঁহার রব পৃথিবীকে কমপান্বিত করিয়াছিল; কিন্তু এখন তিনি এই প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, “আমি আর একবার কেবল পৃথিবীকে নয়, আকাশমণ্ডলকেও কমপান্বিত করিব।”এখানে “আর একবার,” এই শব্দে নির্দিষ্ট হইতেছে, সেই কমপমান সকল বিষয় নির্মিত বলিয়া দূরীকৃত হইবে, যেন অকমপমান বিষয় সকল স্থায়ী হয়।
এখন দেখ, হে ধনবানেরা, তোমাদের উপরে যে সকল দুর্দশা আসিতেছে, সেই সকলের জন্য রোদন ও হাহাকার কর।হে ভ্রাতৃগণ, যে ভাববাদীরা প্রভুর নামে কথা বলিয়াছিলেন, তাহাদিগকে দুঃখভোগের ও দীর্ঘসহিষ্ণুতার দৃষ্টান্ত বলিয়া মান।দেখ, যাহারা স্থির রহিয়াছে, তাহাদিগকে আমরা ধন্য বলি। তোমরা ইয়োবের ধৈর্যের কথা শুনিয়াছ; প্রভুর পরিণামও দেখিয়াছ, ফলতঃ প্রভু স্নেহপূর্ণ ও দয়াময়।আবার, হে আমার ভ্রাতৃগণ, আমার সর্বপ্রধান কথা এই, তোমরা দিব্য করিও না; স্বর্গের কি পৃথিবীর কি অন্য কিছুরই দিব্য করিও না। বরং তোমাদের হাঁ হাঁ এবং না না হউক, পাছে বিচারে পতিত হও। তোমাদের মধ্যে কেহ কি দুঃখভোগ করিতেছে? সে প্রার্থনা করুক। কেহ কি প্রফুল্ল আছে? সে গান করুক।তোমাদের মধ্যে কেহ কি রোগগ্রস্ত? সে মণ্ডলীর প্রাচীনবর্গকে আহ্বান করুক; এবং তাঁহারা প্রভুর নামে তাহাকে তৈলাভিষিক্ত করিয়া তাহার উপরে প্রার্থনা করুন।তাহাতে বিশ্বাসের প্রার্থনা সেই পীড়িত ব্যক্তিকে সুস্থ করিবে, এবং প্রভু তাহাকে উঠাইবেন; আর সে যদি পাপ করিয়া থাকে, তবে তাহার মোচন হইবে।অতএব তোমরা একজন অন্য জনের কাছে আপন আপন পাপ স্বীকার কর, ও একজন অন্য জনের নিমিত্ত প্রার্থনা কর, যেন সুস্থ হইতে পার। ধার্মিকের বিনতি কার্যসাধনে মহাশক্তিযুক্ত।এলিয় আমাদের ন্যায় সুখদুঃখভোগী মনুষ্য ছিলেন; আর তিনি দৃঢ়তার সহিত প্রার্থনা করিলেন, যেন বৃষ্টি না হয়, এবং তিন বৎসর ছয় মাস ভূমিতে বৃষ্টি হইল না।পরে তিনি আবার প্রার্থনা করিলেন; আর আকাশ জল প্রদান করিল, এবং ভূমি নিজ ফল উৎপন্ন করিল। হে আমার ভ্রাতৃগণ, তোমাদের মধ্যে যদি কেহ সত্য হইতে ভ্রান্ত হয়, এবং কেহ তাহাকে ফিরাইয়া আনে,তোমাদের ধন পচিয়া গিয়াছে, ও তোমাদের বস্ত্র সকল কীট-ভক্ষিত হইয়াছে; তোমাদের স্বর্ণ ও রৌপ্য কলঙ্কিত হইয়াছে;তবে জানিও, যে ব্যক্তি কোন পাপীকে তাহার পথ-ভ্রান্তি হইতে ফিরাইয়া আনে, সে তাহার প্রাণকে মৃত্যু হইতে রক্ষা করিবে, এবং পাপরাশি আচ্ছাদন করিবে।আর তাহার কলঙ্ক তোমাদের বিপক্ষে সাক্ষ্য দিবে, এবং অগ্নির ন্যায় তোমাদের মাংস খাইবে। তোমরা শেষকালে ধন-সঞ্চয় করিয়াছ।
প্রিয়েরা, তোমাদের পরীক্ষার্থে যে আগুন তোমাদের মধ্যে জ্বলিতেছে, ইহা বিজাতীয় ঘটনা বলিয়া আশ্চর্য জ্ঞান করিও না;বরং যে পরিমাণে খ্রীষ্টের দুঃখভোগের সহভাগী হইতেছ, সেই পরিমাণে আনন্দ কর, যেন তাঁহার প্রতাপের প্রকাশকালে উল্লাস সহকারে আনন্দ করিতে পার।
ইহাতে জানি, প্রভু ভক্তদিগকে পরীক্ষা হইতে উদ্ধার করিতে, এবং অধার্মিকদিগকে দণ্ডাধীনে বিচারদিনের জন্য রাখিতে জানেন।
প্রথমে ইহা জ্ঞাত হও যে, শেষকালে উপহাসের সহিত উপহাসকেরা উপস্থিত হইবে; তাহারা আপন আপন অভিলাষ অনুসারে চলিবে,এবং বলিবে, তাঁহার আগমনের প্রতিজ্ঞা কোথায়? কেননা যে অবধি পিতৃলোকেরা নিদ্রাগত হইয়াছেন, সেই অবধি সমস্তই সৃষ্টির আরম্ভ অবধি যেমন, তেমনই রহিয়াছে।
কিন্তু প্রভুর দিন চোরের ন্যায় আসিবে; তখন আকাশমণ্ডল হূহূ শব্দ করিয়া উড়িয়া যাইবে, এবং মূলবস্তু সকল পুড়িয়া গিয়া বিলীন হইবে, এবং পৃথিবী ও তাহার মধ্যবর্তী কার্য সকল পুড়িয়া যাইবে।
শিশুগণ, শেষকাল উপস্থিত, আর তোমরা যেমন শুনিয়াছ যে, খ্রীষ্টারি আসিতেছে, তেমনি এখনই অনেক খ্রীষ্টারি হইয়াছে; ইহাতে আমরা জানি যে, শেষকাল উপস্থিত।
তাঁহারা ত তোমাদিগকে বলিতেন, শেষকালে, উপহাসকেরা উপস্থিত হইবে, তাহারা আপন আপন ভক্তিবিরুদ্ধ অভিলাষ অনুসারে চলিবে।
তুমি আমার ধৈর্যের কথা রক্ষা করিয়াছ, এই কারণ আমিও তোমাকে সেই পরীক্ষাকাল হইতে রক্ষা করিব, যাহা পৃথিবী-নিবাসীদের পরীক্ষা করিবার জন্য সমস্ত জগতে উপস্থিত হইবে।
পরে আমি দেখিলাম, যখন সেই মেষশাবক সেই সপ্ত মুদ্রার মধ্যে প্রথম মুদ্রা খুলিলেন, তখন আমি সেই চারি প্রাণীর মধ্যে এক প্রাণীর মেঘগর্জনের তুল্য এই বাণী শুনিলাম, আইস।তাঁহারা উচ্চ রবে ডাকিয়া কহিলেন, হে পবিত্র সত্যময় অধিপতি, বিচার করিতে এবং পৃথিবী-নিবাসীদিগকে আমাদের রক্তপাতের প্রতিফল দিতে কত কাল বিলম্ব করিবে?তখন তাঁহাদের প্রত্যেককে শুক্ল বস্ত্র দত্ত হইল, এবং তাঁহাদিগকে বলা হইল যে, তাঁহাদের যে সহদাস ও ভ্রাতৃগণকে তাঁহাদের ন্যায় নিহত হইতে হইবে, যে পর্যন্ত তাঁহাদের সংখ্যা পূর্ণ না হয়; আর কিঞ্চিৎ কাল বিরাম করিতে হইবে।পরে আমি দেখিলাম, তিনি যখন ষষ্ঠ মুদ্রা খুলিলেন, তখন মহা ভূমিকম্প হইল; এবং সূর্য লোমজাত কম্বলের ন্যায় কৃষ্ণবর্ণ ও পূর্ণচন্দ্র রক্তের ন্যায় হইল;আর ডুমুরগাছ প্রবল বায়ুতে দোলায়িত হইয়া যেমন আপনার অপক্ব ফল ফেলিয়া দেয়, তেমনি আকাশমণ্ডলস্থ তারা সকল পৃথিবীতে পতিত হইল;আর আকাশমণ্ডল সঙ্কুচিত পুস্তকের ন্যায় অপসারিত হইল, এবং সমস্ত পর্বত ও দ্বীপ স্ব স্ব স্থান হইতে চালিত হইল।আর পৃথিবীর রাজারা ও মহতেরা ও সহস্রপতিগণ ও ধনবানেরা ও বিক্রমীবর্গ এবং সমস্ত দাস ও স্বাধীন লোক গুহাতে ও পর্বতীয় শৈলে লুকাইল,আর পর্বত ও শৈল সকলকে কহিতে লাগিল, আমাদের উপরে পতিত হও, যিনি সিংহাসনে বসিয়া আছেন, তাঁহার সম্মুখ হইতে এবং মেষশাবকের ক্রোধ হইতে আমাদিগকে লুকাইয়া রাখ;কেননা তাঁহাদের ক্রোধের মহাদিন আসিয়া পড়িল, আর কে দাঁড়াইতে পারে?আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, এক শুক্লবর্ণ অশ্ব, এবং তাহার উপরে যিনি বসিয়া আছেন, তিনি ধনুর্ধারী, ও তাঁহাকে এক মুকুট দত্ত হইল; এবং তিনি জয় করিতে করিতে ও জয় করিবার জন্য বাহির হইলেন।
আর তিনি যখন দ্বিতীয় মুদ্রা খুলিলেন, তখন আমি দ্বিতীয় প্রাণীর এই বাণী শুনিলাম, আইস।পরে আর একটি অশ্ব বাহির হইল, সেটি লোহিতবর্ণ, এবং যে তাহার উপরে বসিয়া আছে, তাহাকে ক্ষমতা দত্ত হইল, যেন সে পৃথিবী হইতে শান্তি অপহরণ করে, আর যেন মনুষ্যেরা পরস্পরকে বধ করে; এবং একখানি বৃহৎ খড়্গ তাহাকে দত্ত হইল।
পরে তিনি যখন তৃতীয় মুদ্রা খুলিলেন, তখন আমি তৃতীয় প্রাণীর এই বাণী শুনিলাম, আইস। পরে আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, এক কৃষ্ণবর্ণ অশ্ব, এবং যে তাহার উপরে বসিয়া আছে, তাহার হস্তে এক তুলাদণ্ড।পরে আমি চারি প্রাণীর মধ্য হইতে নির্গত এইরূপ বাণী শুনিলাম, এক সের গমের মূল্য এক সিকি, আর তিন সের যবের মূল্য এক সিকি, এবং তুমি তৈলের ও দ্রাক্ষারসের ক্ষতি করিও না।
পরে তিনি যখন চতুর্থ মুদ্রা খুলিলেন, তখন আমি চতুর্থ প্রাণীর এই বাণী শুনিলাম, আইস।পরে আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, এক পাণ্ডুবর্ণ অশ্ব, এবং যে তাহার উপরে বসিয়া আছে, তাহার নাম মৃত্যু, এবং পাতাল তাহার অনুগমন করিতেছে; আর তাহাদিগকে পৃথিবীর চতুর্থ অংশের উপরে কর্তৃত্ব দত্ত হইল, যেন তাহারা তরবারি, দুর্ভিক্ষ, মহামারী ও বনপশু দ্বারা বধ করে।
পরে আমি দেখিলাম, তিনি যখন ষষ্ঠ মুদ্রা খুলিলেন, তখন মহা ভূমিকম্প হইল; এবং সূর্য লোমজাত কম্বলের ন্যায় কৃষ্ণবর্ণ ও পূর্ণচন্দ্র রক্তের ন্যায় হইল;আর ডুমুরগাছ প্রবল বায়ুতে দোলায়িত হইয়া যেমন আপনার অপক্ব ফল ফেলিয়া দেয়, তেমনি আকাশমণ্ডলস্থ তারা সকল পৃথিবীতে পতিত হইল;আর আকাশমণ্ডল সঙ্কুচিত পুস্তকের ন্যায় অপসারিত হইল, এবং সমস্ত পর্বত ও দ্বীপ স্ব স্ব স্থান হইতে চালিত হইল।আর পৃথিবীর রাজারা ও মহতেরা ও সহস্রপতিগণ ও ধনবানেরা ও বিক্রমীবর্গ এবং সমস্ত দাস ও স্বাধীন লোক গুহাতে ও পর্বতীয় শৈলে লুকাইল,আর পর্বত ও শৈল সকলকে কহিতে লাগিল, আমাদের উপরে পতিত হও, যিনি সিংহাসনে বসিয়া আছেন, তাঁহার সম্মুখ হইতে এবং মেষশাবকের ক্রোধ হইতে আমাদিগকে লুকাইয়া রাখ;কেননা তাঁহাদের ক্রোধের মহাদিন আসিয়া পড়িল, আর কে দাঁড়াইতে পারে?
পরে প্রাচীনবর্গের মধ্যে একজন আমাকে কহিলেন, শুক্লবস্ত্র পরিহিত এই লোকেরা কে, ও কোথা হইতে আসিল?আমি তাঁহাকে বলিলাম, হে আমার প্রভু, তাহা আপনিই জানেন। তিনি আমাকে কহিলেন, ইহারা সেই লোক, যাহারা সেই মহাক্লেশের মধ্য হইতে আসিয়াছে, এবং মেষশাবকের রক্তে আপন আপন বস্ত্র ধৌত করিয়াছে, ও শুক্লবর্ণ করিয়াছে।
আর তিনি যখন সপ্তম মুদ্রা খুলিলেন, তখন স্বর্গে অর্ধ ঘটিকা পর্যন্ত নিঃশব্দতা হইল।পরে তৃতীয় দূত তূরী বাজাইলেন, আর প্রদীপের ন্যায় প্রজ্বলিত এক বৃহৎ তারা আকাশ হইতে পড়িয়া গেল, নদ-নদীর এক তৃতীয়াংশের ও জলের উনুই সকলের উপরে পড়িল।সেই তারার নাম নাগদানা, তাহাতে এক তৃতীয়াংশ জল নাগদানা হইয়া উঠিল, এবং জল তিক্ত হওয়া প্রযুক্ত অনেক লোক মরিয়া গেল। পরে চতুর্থ দূত তূরী বাজাইলেন, আর সূর্যের এক তৃতীয়াংশ ও চন্দ্রের এক তৃতীয়াংশ ও তারাগণের এক তৃতীয়াংশ আহত হইল, তাহাতে প্রত্যেকের এক তৃতীয়াংশ অন্ধকারময় হয়, এবং দিবসের এক তৃতীয়াংশ আলোকরহিত হয়, আর রাত্রিও তদ্রূপ হয়।পরে আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর আকাশের মধ্যপথে উড়িয়া যাইতেছে, এমন এক ঈগল পক্ষীর বাণী শুনিলাম, সে উচ্চ রবে বলিল, অবশিষ্ট যে তিন দূত তূরী বাজাইবেন, তাঁহাদের তূরীধ্বনি হেতু, পৃথিবী-নিবাসীদের সন্তাপ, সন্তাপ, সন্তাপ হইবে।পরে আমি সেই সপ্ত দূতকে দেখিলাম, যাঁহারা ঈশ্বরের সম্মুখে দাঁড়াইয়া থাকেন; তাঁহাদিগকে সপ্ত তূরী দত্ত হইল।
প্রথম দূত তূরী বাজাইলেন, আর রক্তমিশ্রিত শিলা ও অগ্নি উপস্থিত হইয়া পৃথিবীতে নিক্ষিপ্ত হইল, তাহাতে পৃথিবীর এক তৃতীয়াংশ পুড়িয়া গেল, ও বৃক্ষসমূহের এক তৃতীয়াংশ পুড়িয়া গেল, এবং সমুদয় হরিদ্বর্ণ তৃণ পুড়িয়া গেল।
পরে দ্বিতীয় দূত তূরী বাজাইলেন, আর যেন অগ্নিতে প্রজ্বলিত এক মহাপর্বত সমুদ্রের মধ্যে নিক্ষিপ্ত হইল;তাহাতে সমুদ্রের এক তৃতীয়াংশ রক্ত হইয়া গেল ও সমুদ্র-মধ্যস্থ এক তৃতীয়াংশের জীবনবিশিষ্ট সৃষ্ট জন্তু মরিয়া গেল, এবং জাহাজ সমুদয়ের এক তৃতীয়াংশ নষ্ট হইল।
পরে তৃতীয় দূত তূরী বাজাইলেন, আর প্রদীপের ন্যায় প্রজ্বলিত এক বৃহৎ তারা আকাশ হইতে পড়িয়া গেল, নদ-নদীর এক তৃতীয়াংশের ও জলের উনুই সকলের উপরে পড়িল।সেই তারার নাম নাগদানা, তাহাতে এক তৃতীয়াংশ জল নাগদানা হইয়া উঠিল, এবং জল তিক্ত হওয়া প্রযুক্ত অনেক লোক মরিয়া গেল।
পরে চতুর্থ দূত তূরী বাজাইলেন, আর সূর্যের এক তৃতীয়াংশ ও চন্দ্রের এক তৃতীয়াংশ ও তারাগণের এক তৃতীয়াংশ আহত হইল, তাহাতে প্রত্যেকের এক তৃতীয়াংশ অন্ধকারময় হয়, এবং দিবসের এক তৃতীয়াংশ আলোকরহিত হয়, আর রাত্রিও তদ্রূপ হয়।
পরে পঞ্চম দূত তূরী বাজাইলেন, আর আমি স্বর্গ হইতে পৃথিবীতে পতিত একটি তারা দেখিলাম; তাহাকে অগাধলোকের কূপের চাবি দত্ত হইল।আর বৃশ্চিকের ন্যায় তাহাদের লেজ ও হুল আছে; এবং পাঁচ মাস মনুষ্যদের হানি করিতে তাহাদের ক্ষমতা ঐ লেজে রহিয়াছে।ঐ পঙ্গপালের রাজা অগাধলোকের দূত, তাহার নাম ইব্রীয় ভাষায় আবদ্দোন, ও গ্রীক ভাষায় তাহার নাম আপল্লুয়োন [বিনাশক]।প্রথম সন্তাপ গত হইল; দেখ, ইহার পরে আরও দুই সন্তাপ আসিতেছে।পরে ষষ্ঠ দূত তূরী বাজাইলেন, আর আমি ঈশ্বরের সম্মুখস্থ স্বর্ণবেদির চারি শৃঙ্গ হইতে এক বাণী শুনিতে পাইলাম;উহা সেই ষষ্ঠ তূরীধারী দূতকে কহিল, ইউফ্রেটিস মহানদীর সমীপে যে চারি দূত বদ্ধ আছে, তাহাদিগকে মুক্ত কর।তখন মনুষ্যজাতির এক তৃতীয়াংশকে বধ করিবার জন্য যে চারি দূতকে সেই দণ্ড ও দিন ও মাস ও বৎসরের জন্য প্রস্তুত করা হইয়াছিল, তাহারা মুক্ত হইল।ঐ অশ্বারোহী সৈন্যের সংখ্যা দুই সহস্র লক্ষ; আমি তাহাদের সেই সংখ্যা শুনিলাম।আর দর্শনে আমি সেই অশ্বগণ ও তদারোহী ব্যক্তিদিগকে এইরূপ দেখিতে পাইলাম, তাহাদের বুকপাটা অগ্নিময় ও নীলবর্ণ ও গন্ধকময়, এবং অশ্বগণের মস্তক সিংহ-মস্তকের ন্যায়, ও তাহাদের মুখ হইতে অগ্নি, ধূম ও গন্ধক বাহির হইতেছে।ঐ তিন আঘাত দ্বারা, তাহাদের মুখ হইতে নির্গত অগ্নি, ধূম ও গন্ধক দ্বারা, এক তৃতীয়াংশ মনুষ্য হত হইল।কেননা সেই অশ্বদের শক্তি তাহাদের মুখে ও তাহাদের লেজে; কারণ তাহাদের লেজ সর্পের তুল্য এবং মস্তকবিশিষ্ট; তদ্দ্বারাই তাহারা হানি করে।তাহাতে সে অগাধলোকের কূপ খুলিল, আর ঐ কূপ হইতে বৃহৎ ভাটির ধূমের ন্যায় ধূম উঠিল; কূপ হইতে উত্থিত সেই ধূমে সূর্য ও আকাশ অন্ধকারাবৃত হইল।
পরে ঐ ধূম হইতে পঙ্গপাল বাহির হইয়া পৃথিবীতে আসিল, আর তাহাদিগকে পৃথিবীস্থ বৃশ্চিকের ক্ষমতার ন্যায় ক্ষমতা দত্ত হইল।আর তাহাদিগকে বলা হইল, পৃথিবীস্থ তৃণের কি হরিদ্বর্ণ শাকের কি কোন বৃক্ষের হানি করিও না, কেবল সেই মনুষ্যদেরই হানি কর, যাহাদের ললাটে ঈশ্বরের মুদ্রাঙ্ক নাই।উহাদিগকে বধ করিবার অনুমতি নয়, কেবল পাঁচ মাস পর্যন্ত যাতনা দিবার অনুমতি তাহাদিগকে দত্ত হইল; তাহাদের আঘাতে বৃশ্চিকাহত মনুষ্যের যাতনাতুল্য যাতনা হয়।তৎকালে মনুষ্যেরা মৃত্যুর অন্বেষণ করিবে, কিন্তু কোন মতে তাহার উদ্দেশ পাইবে না; তাহারা মরিবার আকাঙ্ক্ষা করিবে, কিন্তু মৃত্যু তাহাদের হইতে পলায়ন করিবে।
পরে ষষ্ঠ দূত তূরী বাজাইলেন, আর আমি ঈশ্বরের সম্মুখস্থ স্বর্ণবেদির চারি শৃঙ্গ হইতে এক বাণী শুনিতে পাইলাম;উহা সেই ষষ্ঠ তূরীধারী দূতকে কহিল, ইউফ্রেটিস মহানদীর সমীপে যে চারি দূত বদ্ধ আছে, তাহাদিগকে মুক্ত কর।তখন মনুষ্যজাতির এক তৃতীয়াংশকে বধ করিবার জন্য যে চারি দূতকে সেই দণ্ড ও দিন ও মাস ও বৎসরের জন্য প্রস্তুত করা হইয়াছিল, তাহারা মুক্ত হইল।
ঐ তিন আঘাত দ্বারা, তাহাদের মুখ হইতে নির্গত অগ্নি, ধূম ও গন্ধক দ্বারা, এক তৃতীয়াংশ মনুষ্য হত হইল।
আর আমি আপনার দুই সাক্ষীকে কার্য দিব, তাঁহারা চটপরিহিত হইয়া এক সহস্র দুই শত ষাট দিন পর্যন্ত ভাববাণী বলিবেন।
আর জাতিগণ ক্রুদ্ধ হইয়াছিল, কিন্তু তোমার ক্রোধ উপস্থিত হইল, আর মৃত লোকদের বিচার করিবার সময় এবং তোমার দাস ভাববাদিগণকে ও পবিত্রগণকে ও যাহারা তোমার নাম ভয় করে, তাহাদের ক্ষুদ্র ও মহান সকলকে পুরস্কার দিবার, এবং পৃথিবী-নাশকদিগকে নাশ করিবার সময় উপস্থিত হইল।’
অতএব, হে স্বর্গ ও তন্নিবাসিগণ, আনন্দ কর; পৃথিবী ও সমুদ্রের সন্তাপ হইবে; কেননা দিয়াবল তোমাদের নিকটে নামিয়া গিয়াছে; সে অতিশয় রাগান্বিত, সে জানে, তাহার কাল সংক্ষিপ্ত।’
আর সেই স্ত্রীলোকটির প্রতি নাগ ক্রোধান্বিত হইল, আর তাহার বংশের সেই অবশিষ্ট লোকদের সহিত, যাহারা ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন ও যীশুর সাক্ষ্য ধারণ করে, তাহাদের সহিত যুদ্ধ করিতে গেল।
আর এমন এক মুখ তাহাকে দত্ত হইল, যাহা দর্প ও ঈশ্বরনিন্দা করে, এবং তাহাকে বিয়াল্লিশ মাস পর্যন্ত কার্য করিবার ক্ষমতা দেওয়া গেল।তাহাতে সে ঈশ্বরের নিন্দা করিতে মুখ খুলিল, তাঁহার নামের ও তাঁহার তাম্বুর, এবং স্বর্গবাসী সকলের নিন্দা করিতে লাগিল।আর পবিত্রগণের সহিত যুদ্ধ করিবার ও তাহাদিগকে জয় করিবার ক্ষমতা তাহাকে দত্ত হইল; এবং তাহাকে সমস্ত বংশের ও লোকবৃন্দের ও ভাষার ও জাতির উপরে কর্তৃত্ব দত্ত হইল।তাহাতে পৃথিবী-নিবাসীদের সমস্ত লোক তাহার ভজনা করিবে, যাহাদের নাম জগৎপত্তনের সময়াবধি হত মেষশাবকের জীবন পুস্তকে লিখিত নাই।
পরে আমি আর এক পশুকে দেখিলাম, সে স্থল হইতে উঠিল, এবং মেষশাবকের ন্যায় তাহার দুই শৃঙ্গ ছিল, আর সে নাগের ন্যায় কথা কহিত।সে ঐ প্রথম পশুর সমস্ত কর্তৃত্ব তাহার সাক্ষাতে পরিচালনা করে; এবং যে প্রথম পশুর মৃত্যুজনক আঘাতের প্রতীকার করা হইয়াছিল, পৃথিবীকে ও তন্নিবাসীদিগকে তাহার ভজনা করায়।আর সে মহৎ মহৎ চিহ্ন-কার্য করে; এমন কি মনুষ্যদের সাক্ষাতে স্বর্গ হইতে পৃথিবীতে অগ্নি নামায়।এইরূপে সেই পশুর সাক্ষাতে যে সকল চিহ্ন-কার্য করিবার ক্ষমতা তাহাকে দত্ত হইয়াছে, তদ্দ্বারা সে পৃথিবী-নিবাসীদের ভ্রান্তি জন্মায়; সে পৃথিবী-নিবাসীদিগকে বলে, ‘যে পশু খড়্গ দ্বারা আহত হইয়াও বাঁচিয়াছিল, তাহার এক প্রতিমা নির্মাণ কর।’আর তাহাকে এই ক্ষমতা দত্ত হইল যে, সে ঐ পশুর প্রতিমার মধ্যে নিশ্বাস প্রদান করে, যেন ঐ পশুর প্রতিমা কথা কহিতে পারে, ও এমন করিতে পারে যে, যত লোক সেই পশুর প্রতিমার ভজনা না করিবে, তাহাদিগকে বধ করা হয়।আর সে ক্ষুদ্র ও মহান, ধনী ও দরিদ্র, স্বাধীন ও দাস, সকলকেই দক্ষিণ হস্তে কিম্বা ললাটে ছাপ ধারণ করায়;আর ঐ পশুর ছাপ অর্থাৎ নাম কিম্বা নামের সংখ্যা যে কেহ ধারণ না করে, তাহার ক্রয় বিক্রয় করিবার অধিকার বদ্ধ করে।
আর আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, শুভ্রবর্ণ একখানি মেঘ, “সেই মেঘের উপরে মনুষ্যপুত্রের ন্যায় এক ব্যক্তি” বসিয়া আছেন, তাঁহার মস্তকে সুবর্ণ মুকুট ও তাঁহার হস্তে একখানি তীক্ষ্ণ কাস্তে।পরে মন্দির হইতে আর এক দূত বাহির হইয়া, যিনি মেঘের উপরে বসিয়া আছেন, তাঁহাকে উচ্চ রবে চিৎকার করিয়া কহিলেন, “আপনার কাস্তে লাগান, শস্য ছেদন করুন; কারণ শস্যচ্ছেদনের সময় আসিয়াছে;” কেননা পৃথিবীর শস্য শুকাইয়া গেল।তাহাতে, যিনি মেঘের উপরে বসিয়া আছেন, তিনি আপন কাস্তে পৃথিবীতে লাগাইলেন, ও পৃথিবীর শস্যচ্ছেদন করা হইল।পরে স্বর্গস্থ মন্দির হইতে আর এক দূত বাহির হইলেন; তাঁহারও হস্তে একখানি তীক্ষ্ণ কাস্তে ছিল।আর যজ্ঞবেদি হইতে অন্য এক দূত বাহির হইলেন, তিনি অগ্নির উপরে কর্তৃত্ববিশিষ্ট, তিনি ঐ তীক্ষ্ণ কাস্তেধারী ব্যক্তিকে উচ্চ রবে এই কথা কহিলেন, তোমার তীক্ষ্ণ কাস্তে লাগাও, পৃথিবীর দ্রাক্ষালতার গুচ্ছ সকল ছেদন কর, কেননা তাহার ফল পাকিয়াছে।তাহাতে ঐ দূত পৃথিবীতে আপন কাস্তে লাগাইয়া পৃথিবীর দ্রাক্ষা-গুচ্ছ ছেদন করিলেন, আর ঈশ্বরের রোষের মহাকুণ্ডে নিক্ষেপ করিলেন।পরে স্বর্গ হইতে বহুজলের কল্লোল ও মহামেঘধ্বনির ন্যায় রব শুনিলাম; যে রব শুনিলাম, তাহাতে বোধ হইল, যেন বীণাবাদক দল আপন আপন বীণা বাজাইতেছে;পরে নগরের বাহিরে ঐ কুণ্ডে তাহা দলন করা গেল, তাহাতে কুণ্ড হইতে রক্ত বাহির হইল, এবং অশ্বগণের বল্গা পর্যন্ত উঠিয়া এক সহস্র ছয়শত তীর ব্যাপ্ত হইল।
পরে আমি স্বর্গে আর এক চিহ্ন দেখিলাম, তাহা মহৎ ও অদ্ভুত; সপ্ত দূতকে সপ্ত আঘাত লইয়া আসিতে দেখিলাম; সেই সকল শেষ আঘাত, কেননা সেই সকলে ঈশ্বরের রোষ সমাপ্ত হইল।
পরে আমি মন্দির হইতে এক উচ্চ বাণী শুনিলাম, তাহা ঐ সপ্ত দূতকে কহিল, তোমরা যাও, ঈশ্বরের রোষের ঐ সপ্ত বাটি পৃথিবীতে ঢালিয়া দেও।পরে পঞ্চম দূত সেই পশুর সিংহাসনের উপরে আপন বাটি ঢালিলেন; তাহাতে তাহার রাজ্য অন্ধকারময় হইল, এবং লোকেরা বেদনা প্রযুক্ত আপন আপন জিহ্বা চর্বণ করিতে লাগিল;এবং আপনাদের বেদনা ও ক্ষত প্রযুক্ত স্বর্গের ঈশ্বরের নিন্দা করিল; আপন আপন ক্রিয়া হইতে মন ফিরাইল না।পরে ষষ্ঠ দূত ইউফ্রেটিস মহানদীতে আপন বাটি ঢালিলেন; তাহাতে নদীর জল শুষ্ক হইয়া গেল, যেন সূর্যোদয় স্থান হইতে আগমনকারী রাজাদের জন্য পথ প্রস্তুত করা যাইতে পারে।পরে আমি দেখিলাম, সেই নাগের মুখ ও পশুর মুখ ও ভাক্ত ভাববাদীর মুখ হইতে ভেকের ন্যায় তিনটি অশুচি আত্মা বাহির হইল।তাহারা ভূতদের আত্মা, নানা চিহ্ন-কার্য করে; তাহারা জগৎ সমুদয়ের রাজাদের নিকটে গিয়া সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সেই মহাদিনের যুদ্ধার্থে তাহাদিগকে একত্র করে।দেখ, আমি চোরের ন্যায় আসিতেছি; ধন্য সেই ব্যক্তি, যে জাগিয়া থাকে, এবং আপন বস্ত্র রক্ষা করে, যেন সে উলঙ্গ হইয়া না বেড়ায়, এবং লোকে তাহার অপমান না দেখে।পরে উহারা, ইব্রীয় ভাষায় যাহাকে হর্মাগিদোন বলে, সেই স্থানে তাহাদিগকে একত্র করিল।পরে সপ্তম দূত আকাশের উপরে আপন বাটি ঢালিলেন, তাহাতে মন্দিরের মধ্য হইতে, সিংহাসন হইতে, এই মহাবাণী বাহির হইল, ‘হইয়াছে’।আর বিদ্যুৎ ও শব্দ ও মেঘধ্বনি হইল, এবং এক মহাভূমিকম্প হইল, পৃথিবীতে মনুষ্যের উৎপত্তিকাল অবধি যেমন কখনও হয় নাই, এমন প্রচণ্ড মহাভূমিকম্প হইল।তাহাতে মহানগরী তিন ভাগে বিভক্ত হইল, এবং জাতিগণের নগর সকল পতিত হইল; এবং মহতী বাবিলকে ঈশ্বরের সাক্ষাতে স্মরণ করা গেল, যেন ঈশ্বরের ক্রোধের রোষ-মদিরাতে পূর্ণ পানপাত্র তাহাকে দেওয়া যায়।পরে প্রথম দূত গিয়া পৃথিবীর উপরে আপন বাটি ঢালিলেন, তাহাতে সেই পশুর ছাপবিশিষ্ট ও তাহার প্রতিমার ভজনাকারী মনুষ্যদের গাত্রে ব্যথাজনক দুষ্ট ক্ষত জন্মিল।
পরে দ্বিতীয় দূত সমুদ্রের উপরে আপন বাটি ঢালিলেন, তাহাতে তাহা মৃত লোকের রক্তের তুল্য হইল, এবং সমস্ত জীবিত প্রাণী, সমুদ্রের সমস্ত প্রাণী, মরিল।পরে তৃতীয় দূত নদ-নদী ও জলের উনুই সকলের উপরে আপন বাটি ঢালিলেন, তাহাতে সেই সকল রক্ত হইয়া গেল।
পরে চতুর্থ দূত সূর্যের উপরে আপন বাটি ঢালিলেন; তাহাতে অগ্নি দ্বারা মনুষ্যদিগকে দগ্ধ করিবার ক্ষমতা তাহাকে দত্ত হইল।তখন মনুষ্যেরা মহা উত্তাপে দগ্ধ হইল, এবং যিনি এই সকল আঘাতের উপরে কর্তৃত্ব করেন, সেই ঈশ্বরের নামের নিন্দা করিল; তাঁহাকে গৌরব প্রদান করিবার জন্য মন ফিরাইল না।
পরে পঞ্চম দূত সেই পশুর সিংহাসনের উপরে আপন বাটি ঢালিলেন; তাহাতে তাহার রাজ্য অন্ধকারময় হইল, এবং লোকেরা বেদনা প্রযুক্ত আপন আপন জিহ্বা চর্বণ করিতে লাগিল;এবং আপনাদের বেদনা ও ক্ষত প্রযুক্ত স্বর্গের ঈশ্বরের নিন্দা করিল; আপন আপন ক্রিয়া হইতে মন ফিরাইল না।
পরে ষষ্ঠ দূত ইউফ্রেটিস মহানদীতে আপন বাটি ঢালিলেন; তাহাতে নদীর জল শুষ্ক হইয়া গেল, যেন সূর্যোদয় স্থান হইতে আগমনকারী রাজাদের জন্য পথ প্রস্তুত করা যাইতে পারে।পরে আমি দেখিলাম, সেই নাগের মুখ ও পশুর মুখ ও ভাক্ত ভাববাদীর মুখ হইতে ভেকের ন্যায় তিনটি অশুচি আত্মা বাহির হইল।তাহারা ভূতদের আত্মা, নানা চিহ্ন-কার্য করে; তাহারা জগৎ সমুদয়ের রাজাদের নিকটে গিয়া সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সেই মহাদিনের যুদ্ধার্থে তাহাদিগকে একত্র করে।দেখ, আমি চোরের ন্যায় আসিতেছি; ধন্য সেই ব্যক্তি, যে জাগিয়া থাকে, এবং আপন বস্ত্র রক্ষা করে, যেন সে উলঙ্গ হইয়া না বেড়ায়, এবং লোকে তাহার অপমান না দেখে।পরে উহারা, ইব্রীয় ভাষায় যাহাকে হর্মাগিদোন বলে, সেই স্থানে তাহাদিগকে একত্র করিল।
পরে সপ্তম দূত আকাশের উপরে আপন বাটি ঢালিলেন, তাহাতে মন্দিরের মধ্য হইতে, সিংহাসন হইতে, এই মহাবাণী বাহির হইল, ‘হইয়াছে’।আর বিদ্যুৎ ও শব্দ ও মেঘধ্বনি হইল, এবং এক মহাভূমিকম্প হইল, পৃথিবীতে মনুষ্যের উৎপত্তিকাল অবধি যেমন কখনও হয় নাই, এমন প্রচণ্ড মহাভূমিকম্প হইল।তাহাতে মহানগরী তিন ভাগে বিভক্ত হইল, এবং জাতিগণের নগর সকল পতিত হইল; এবং মহতী বাবিলকে ঈশ্বরের সাক্ষাতে স্মরণ করা গেল, যেন ঈশ্বরের ক্রোধের রোষ-মদিরাতে পূর্ণ পানপাত্র তাহাকে দেওয়া যায়।পরে প্রথম দূত গিয়া পৃথিবীর উপরে আপন বাটি ঢালিলেন, তাহাতে সেই পশুর ছাপবিশিষ্ট ও তাহার প্রতিমার ভজনাকারী মনুষ্যদের গাত্রে ব্যথাজনক দুষ্ট ক্ষত জন্মিল।আর প্রত্যেক দ্বীপ পলায়ন করিল, ও পর্বতগণকে আর পাওয়া গেল না।আর আকাশ হইতে মনুষ্যদের উপরে বৃহৎ বৃহৎ শিলাবর্ষণ হইল, তাহার এক একটি এক এক তালন্ত পরিমিত; এই শিলা-বৃষ্টিরূপ আঘাত প্রযুক্ত মনুষ্যেরা ঈশ্বরের নিন্দা করিল; কারণ সেই আঘাত অতিশয় ভারী।
পরে ঐ সপ্ত বাটি যাঁহাদের হস্তে ছিল, সেই সপ্ত দূতের মধ্যে একজন আসিয়া আমার সঙ্গে আলাপ করিয়া কহিলেন, আইস, “বহুজলের উপরে বসিয়া আছে” যে ঐ মহাবেশ্যা, আমি তোমাকে তাহার বিচারসিদ্ধ দণ্ড দেখাই,তাহাদের পাঁচ জন পতিত হইয়াছে, একজন আছে, আর একজন এই পর্যন্ত আইসে নাই; আসিলে তাহাকে অল্পকাল থাকিতে হইবে।আর যে পশু ছিল, এখন নাই, সে আপনি অষ্টম; সে সেই সাতটির একটি, এবং সে বিনাশে যায়।আর তুমি যে দশটি শৃঙ্গ দেখিলে, সে দশ জন রাজা; তাহারা এই পর্যন্ত রাজ্য প্রাপ্ত হয় নাই, কিন্তু এক ঘণ্টার নিমিত্তে সেই পশুর সহিত রাজাদের ন্যায় কর্তৃত্ব পাইবে।তাহারা একমনা, এবং আপনাদের পরাক্রম ও কর্তৃত্ব সেই পশুকে দেয়।তাহারা মেষশাবকের সহিত যুদ্ধ করিবে, আর মেষশাবক তাহাদিগকে জয় করিবেন, কারণ “তিনি প্রভুদের প্রভু ও রাজাদের রাজা;” এবং যাহারা তাঁহার সহবর্তী, আহূত ও মনোনীত ও বিশ্বস্ত, তাঁহারাও জয় করিবেন।আর তিনি আমাকে কহিলেন, তুমি যে জল দেখিলে, ঐ বেশ্যা যাহাতে বসিয়া আছে, সেই জল হইল প্রজাবৃন্দ ও লোকারণ্য ও জাতিবৃন্দ ও ভাষাসমূহ।আর তুমি যে ঐ দশটি শৃঙ্গ এবং পশুটি দেখিলে তাহারা সেই বেশ্যাকে ঘৃণা করিবে, এবং তাহাকে অনাথ ও নগ্ন করিবে, তাহার মাংস ভক্ষণ করিবে, এবং তাহাকে আগুনে পোড়াইয়া দিবে।কেননা ঈশ্বর তাহাদের হৃদয়ে এই প্রবৃত্তি দিয়াছিলেন, যেন তাহারা তাঁহারই মানস পূর্ণ করে, এবং একমনা হয়; আর যে পর্যন্ত ঈশ্বরের বাক্য সকল সিদ্ধ না হয়, সেই পর্যন্ত আপন আপন রাজ্য সেই পশুকে দেয়।আর তুমি যে নারীকে দেখিলে, সে ঐ মহানগরী, যাহা পৃথিবীর রাজগণের উপরে রাজত্ব করিতেছে।“যাহার সহিত পৃথিবীর রাজগণ ব্যভিচার করিয়াছে, এবং পৃথিবী-নিবাসীরা যাহার বেশ্যাক্রিয়ার মদিরাতে মত্ত হইয়াছে”।
আর তুমি যে দশটি শৃঙ্গ দেখিলে, সে দশ জন রাজা; তাহারা এই পর্যন্ত রাজ্য প্রাপ্ত হয় নাই, কিন্তু এক ঘণ্টার নিমিত্তে সেই পশুর সহিত রাজাদের ন্যায় কর্তৃত্ব পাইবে।তাহারা একমনা, এবং আপনাদের পরাক্রম ও কর্তৃত্ব সেই পশুকে দেয়।তাহারা মেষশাবকের সহিত যুদ্ধ করিবে, আর মেষশাবক তাহাদিগকে জয় করিবেন, কারণ “তিনি প্রভুদের প্রভু ও রাজাদের রাজা;” এবং যাহারা তাঁহার সহবর্তী, আহূত ও মনোনীত ও বিশ্বস্ত, তাঁহারাও জয় করিবেন।
তিনি প্রবল রবে ডাকিয়া কহিলেন, ‘পড়িল, পড়িল মহতী বাবিল; সে ভূতগণের আবাস, সমস্ত অশুচি আত্মার কারাগার, ও সমস্ত অশুচি ও ঘৃণার্হ পক্ষীর কারাগার হইয়া পড়িয়াছে।
এই জন্য একই দিনে তাহার আঘাত সকল- মৃত্যু, শোক ও দুর্ভিক্ষ উপস্থিত হইবে; এবং তাহাকে আগুনে পোড়াইয়া দেওয়া যাইবে; কারণ তাহার বিচারকর্তা প্রভু ঈশ্বর শক্তিমান।
পরে এক শক্তিমান দূত বৃহৎ এক পাটি জাঁতার তুল্য একখানি প্রস্তর লইয়া সমুদ্রে নিক্ষেপ করিয়া কহিলেন, ইহার ন্যায় মহানগরী বাবিল মহাবলে নিপাতিত হইবে, আর কখনও তাহার উদ্দেশ পাওয়া যাইবে না।বীণাবাদকদের, গায়কদের, বংশীবাদকদের ও তূরীবাদকদের ধ্বনি তোমার মধ্যে আর কখনও শুনা যাইবে না; এবং আর কখনও কোন প্রকার শিল্পকারকে তোমার মধ্যে পাওয়া যাইবে না; এবং জাঁতার শব্দ আর কখনও তোমার মধ্যে শুনা যাইবে না;এবং প্রদীপের শিখা আর কখনও তোমার মধ্যে জ্বলিবে না; এবং বর কন্যার রব আর কখনও তোমার মধ্যে শুনা যাইবে না; কারণ তোমার বণিকেরা পৃথিবীর সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি ছিল, কারণ তোমার মায়াতে সমস্ত জাতি ভ্রান্ত হইত।আর ভাববাদিগণের ও পবিত্রগণের রক্ত, এবং যত লোক পৃথিবীতে হত হইয়াছে, সেই সকলের রক্ত ইহার মধ্যে পাওয়া গেল।
পরে আমি দেখিলাম, স্বর্গ খুলিয়া গেল, আর দেখ, শ্বেতবর্ণ একটি অশ্ব; যিনি তাহার উপরে বসিয়া আছেন, তিনি বিশ্বাস্য ও সত্যময় নামে আখ্যাত, এবং তিনি ধর্মশীলতায় বিচার ও যুদ্ধ করেন।তাঁহার চক্ষু অগ্নিশিখা, এবং তাঁহার মস্তকে অনেক কিরীট; এবং তাঁহার একটি লিখিত নাম আছে, যাহা তিনি ব্যতীত অন্য কেহ জানে না।আর তিনি রক্তে ডুবান বস্ত্র পরিহিত; এবং “ঈশ্বরের বাক্য” এই নামে আখ্যাত।আর স্বর্গস্থ সৈন্যগণ তাঁহার অনুগমন করে, তাহারা শুক্লবর্ণ অশ্বে আরোহী, এবং শ্বেত শুচি মসীনা-বস্ত্র পরিহিত।আর তাঁহার মুখ হইতে এক তীক্ষ্ণ তরবারি নির্গত হয়, যেন তদ্দ্বারা তিনি জাতিগণকে আঘাত করেন; আর তিনি লৌহদণ্ড দ্বারা তাহাদিগকে শাসন করিবেন; এবং তিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রচণ্ড ক্রোধরূপ মদিরাকুণ্ড দলন করেন।আর তাঁহার ও ঊরুদেশে এই নাম লেখা আছে- “রাজাদের রাজা ও প্রভুদের প্রভু।”
পরে আমি দেখিলাম, ঐ অশ্বারোহী ব্যক্তির ও তাঁহার সৈন্যের সহিত যুদ্ধ করিবার জন্য সেই পশু ও পৃথিবীর রাজগণ ও তাহাদের সৈন্যগণ একত্র হইল।কেননা তাঁহার বিচারাজ্ঞা সকল সত্য ও ন্যায্য; কারণ যে মহাবেশ্যা আপন বেশ্যাক্রিয়া দ্বারা পৃথিবীকে ভ্রষ্ট করিত, তিনি তাহার বিচার করিয়াছেন, তাহার হস্ত হইতে আপন দাসগণের রক্তপাতের পরিশোধ লইয়াছেন।তাহাতে সেই পশু ধরা পড়িল, এবং যে ভাক্ত ভাববাদী তাহার সাক্ষাতে চিহ্ন-কার্য করিয়া পশুর ছাপধারী ও তাহার প্রতিমার ভজনাকারীদের ভ্রান্তি জন্মাইত, সেও তাহার সংগে ধরা পড়িল; তাহারা উভয়ে জীবন্তই প্রজ্বলিত গন্ধকময় অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল।আর অবশিষ্ট সকলে সেই অশ্বারোহী ব্যক্তির মুখ হইতে নির্গত তরবারি দ্বারা হত হইল; এবং সমস্ত পক্ষী তাহাদের মাংসে তৃপ্ত হইল।
পরে আমি স্বর্গ হইতে এক দূতকে নামিয়া আসিতে দেখিলাম, তাঁহার হস্তে অগাধলোকের চাবি এবং বড় এক শৃঙ্খল ছিল।আর তাহাদের ভ্রান্তিজনক দিয়াবল “অগ্নি ও গন্ধকের” হ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল, যেখানে ঐ পশু ও ভাক্ত ভাববাদীও আছে; আর তাহারা যুগপর্যায়ের যুগে যুগে দিবারাত্র যন্ত্রণা ভোগ করিবে।পরে আমি “এক বৃহৎ শ্বেতবর্ণ সিংহাসন ও যিনি তাহার উপরে বসিয়া আছেন,” তাঁহাকে দেখিতে পাইলাম; তাঁহার সম্মুখ হইতে পৃথিবী ও আকাশ পলায়ন করিল; “তাহাদের নিমিত্ত আর স্থান পাওয়া গেল না।”আর আমি দেখিলাম, ক্ষুদ্র ও মহান সমস্ত মৃত লোক সেই সিংহাসনের সম্মুখে দাঁড়াইয়া আছে; পরে “কয়েকখানি পুস্তক খোলা হইল” এবং আর একখানি পুস্তক, অর্থাৎ জীবন-পুস্তক খোলা হইল, এবং মৃতেরা পুস্তকসমূহে লিখিত প্রমাণে “আপন আপন কার্যানুসারে” বিচারিত হইল।আর সমুদ্র তাহার মধ্যবর্তী মৃতগণকে ফিরাইয়া দিল এবং মৃত্যু ও পাতাল আপনাদের মধ্যবর্তী মৃতগণকে সমর্পন করিল, এবং তাহারা প্রত্যেকে আপন আপন কার্যানুসারে বিচারিত হইল।পরে মৃত্যু ও পাতাল অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল; তাহাই, অর্থাৎ সেই অগ্নিহ্রদ, দ্বিতীয় মৃত্যু।আর জীবন-পুস্তকে যে কাহারও নাম লিখিত পাওয়া গেল না, সে অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল।তিনি সেই নাগকে ধরিলেন; এ সেই পুরাতন সর্প, এ দিয়াবল [অপবাদক] এবং শয়তান [বিপক্ষ]; তিনি তাহাকে সহস্র বৎসর বদ্ধ রাখিলেন,আর তাহাকে অগাধলোকের মধ্যে ফেলিয়া দিয়া সেই স্থানের মুখ বদ্ধ করিয়া মুদ্রাঙ্কিত করিলেন; যেন ঐ সহস্র বৎসর সম্পূর্ণ না হইলে সে জাতিবৃন্দকে আর ভ্রান্ত করিতে না পারে; তৎপরে অল্প কালের নিমিত্ত তাহাকে মুক্ত হইতে হইবে।
পরে আমি “এক বৃহৎ শ্বেতবর্ণ সিংহাসন ও যিনি তাহার উপরে বসিয়া আছেন,” তাঁহাকে দেখিতে পাইলাম; তাঁহার সম্মুখ হইতে পৃথিবী ও আকাশ পলায়ন করিল; “তাহাদের নিমিত্ত আর স্থান পাওয়া গেল না।”আর আমি দেখিলাম, ক্ষুদ্র ও মহান সমস্ত মৃত লোক সেই সিংহাসনের সম্মুখে দাঁড়াইয়া আছে; পরে “কয়েকখানি পুস্তক খোলা হইল” এবং আর একখানি পুস্তক, অর্থাৎ জীবন-পুস্তক খোলা হইল, এবং মৃতেরা পুস্তকসমূহে লিখিত প্রমাণে “আপন আপন কার্যানুসারে” বিচারিত হইল।আর সমুদ্র তাহার মধ্যবর্তী মৃতগণকে ফিরাইয়া দিল এবং মৃত্যু ও পাতাল আপনাদের মধ্যবর্তী মৃতগণকে সমর্পন করিল, এবং তাহারা প্রত্যেকে আপন আপন কার্যানুসারে বিচারিত হইল।পরে মৃত্যু ও পাতাল অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল; তাহাই, অর্থাৎ সেই অগ্নিহ্রদ, দ্বিতীয় মৃত্যু।আর জীবন-পুস্তকে যে কাহারও নাম লিখিত পাওয়া গেল না, সে অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল।
“দেখ, আমি শীঘ্র আসিতেছি; এবং আমার দাতব্য পুরস্কার আমার সহবর্তী, যাহার যেমন কার্য, তাহাকে তেমন ফল দিব।