আল্লাহর বাণীতে আমরা ভবিষ্যতের কথা জানতে পারি। নবী হলেন আল্লাহর পক্ষ থেকে তার বান্দাদের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিযুক্ত ব্যক্তি। কিন্তু বাইবেলে অনেক ভবিষ্যৎবাণী ইতিমধ্যেই লিপিবদ্ধ আছে। পবিত্র বাইবেলে আমরা এই সুন্দর বাক্যটি পাই: “কারণ কোনও ভবিষ্যদ্বাণী কখনও মানুষের ইচ্ছায় আসেনি, বরং পবিত্র আত্মার দ্বারা পরিচালিত হয়ে আল্লাহর পবিত্র লোকেরা বলেছেন” (২ পিতর ১:২১)। ভবিষ্যদ্বাণী হলো আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী স্বর্গের দরজা খোলা এবং বন্ধ করার চাবি। যে সকল ভবিষ্যদ্বাণী ইতিমধ্যেই সময়ের ব্যবধানে পূর্ণ হয়েছে তা তুলনা করে আমাদের ভবিষ্যতের ঘটনাগুলো সুস্পষ্ট এবং ক্রমানুসারে বুঝতে হবে। এভাবে আমরা সঠিক বার্তা প্রচার করতে পারবো এবং যারা ভুল পথে আছে তাদের সতর্ক করতে পারবো, তাদেরকে চিরন্তন জীবনের পথে ফিরিয়ে আনতে পারবো। যারা খ্রীষ্টকে গ্রহণ করার জন্য এবং স্বর্গারোহণের জন্য প্রস্তুত, তারা শেষ পর্যন্ত ধৈর্য ধরে রাখুন যাতে পরিত্রাণ পেতে পারেন।
হাহাকার কর, কেননা সদাপ্রভুর দিন নিকটবর্তী; সর্বশক্তিমানের নিকট হইতে বিনাশের ন্যায় উহা আসিতেছে।
আর তিনি কহিলেন, দেখ, ক্রোধের উত্তরকালে যাহা ঘটিবে, তাহা আমি তোমাকে জানাই, কেননা এ নিরূপিত শেষকালের কথা।
কিন্তু তাঁহার প্রতিজ্ঞা অনুসারে আমরা এমন নূতন আকাশমণ্ডলের ও নূতন পৃথিবীর অপেক্ষায় আছি, যাহার মধ্যে ধার্মিকতা বসতি করে।
আর সর্ব জাতির নিকটে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত রাজ্যের এই সুসমাচার সমুদয় জগতে প্রচার করা যাইবে; আর তখন শেষ উপস্থিত হইবে।
কিন্তু প্রভুর দিন চোরের ন্যায় আসিবে; তখন আকাশমণ্ডল হূহূ শব্দ করিয়া উড়িয়া যাইবে, এবং মূলবস্তু সকল পুড়িয়া গিয়া বিলীন হইবে, এবং পৃথিবী ও তাহার মধ্যবর্তী কার্য সকল পুড়িয়া যাইবে।
এইরূপ যুগান্তে হইবে; দূতগণ আসিয়া ধার্মিকদের মধ্য হইতে দুষ্টদিগকে পৃথক করিবেন, এবং তাহাদিগকে অগ্নিকুণ্ডে ফেলিয়া দিবেন;
দেখ, সদাপ্রভু পৃথিবীকে শূন্য করিতেছেন, উৎসন্ন করিতেছেন, উল্টাইয়া ফেলিতেছেন ও তাহার নিবাসীদিগকে ছড়াইয়া ফেলিতেছেন।উৎসন্নতার নগর ভগ্ন হইয়া পড়িল, সমস্ত গৃহ রুদ্ধ হইল, ভিতরে যাওয়া যায় না।দ্রাক্ষারসের বিষয়ে সড়কে চিৎকার হয়, সমস্ত আমোদ অন্ধকার হইল, দেশের বিলাস নির্বাসিত হইল।নগরে ধ্বংস অবশিষ্ট রহিল, পুরদ্বার খণ্ড খণ্ড হইয়া ভাঙ্গিয়া পড়িতেছে।বস্তুতঃ পৃথিবীতে জাতিগণের মধ্যে এইরূপ ঘটনা হইবে; জলপাই বৃক্ষ ঝাড়িবার ন্যায়, ফল-সংগ্রহ সমাপ্তির পরে দ্রাক্ষাফল চয়নের ন্যায় ঘটিবে।ইহারা উচ্চরব করিবে, আনন্দগান করিবে, সদাপ্রভুর মহিমা প্রযুক্ত ইহারা সমুদ্র হইতে উচ্চধ্বনি শুনাইবে।অতএব তোমরা দীপ্তিদেশে সদাপ্রভুর গৌরব কর, সমুদ্রের উপকূল-সমূহে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নাম [কীর্তন] কর।আমরা পৃথিবীর প্রান্ত হইতে সঙ্গীত শুনিয়াছি, ‘ধার্মিকেরই নিমিত্ত শোভা’। কিন্তু আমি কহিলাম, আমি ক্ষীণ হইতেছি, আমি ক্ষীণ হইতেছি, আমাকে ধিক্। বিশ্বাসঘাতকেরা বিশ্বাসঘাতকতা করিয়াছে, হাঁ, বিশ্বাসঘাতকেরা অতিশয় বিশ্বাসঘাতকতা করিয়াছে।হে পৃথিবী-নিবাসী, ত্রাস, খাত ও ফাঁদ তোমার উপরে আসিয়াছে।যে কেহ ত্রাসের জনশ্রুতিতে পলাইয়া বাঁচিবে, সে খাতে পড়িবে, যে খাত হইতে উঠিয়া আসিবে, সে ফাঁদে ধরা পড়িবে; কারণ ঊর্ধ্বস্থ বাতায়ন সকল মুক্ত হইল, ও পৃথিবীর মূল সকল কম্পমান হইল।পৃথিবী বিদীর্ণ হইল, বিদীর্ণ হইল; পৃথিবী ফাটিয়া গেল, ফাটিয়া গেল; পৃথিবী বিচলিত হইল, বিচলিত হইল।এইরূপে প্রজা ও যাজক, দাস ও প্রভু, দাসী ও কর্ত্রী, ক্রেতা ও বিক্রেতা, ঋণগ্রহীতা ও ঋণদাতা, ঋণী ও মহাজন, সকলে সমান হইবে।পৃথিবী মত্ত লোকের ন্যায় টলটলায়মান হইবে, টোঙ্গের ন্যায় দুলিবে; আপন অধর্মভারে ভারগ্রস্ত হইবে, পতিত হইবে, আর উঠিতে পারিবে না।সেই দিন সদাপ্রভু ঊর্ধ্বলোকে ঊর্ধ্বলোকীয় সৈন্যসামন্তকে ও পৃথিবীতে পার্থিব রাজগণকে প্রতিফল দিবেন।তাহাতে তাহারা কূপে একত্রীকৃত বন্দিগণের ন্যায় একত্রীকৃত হইবে, ও কারাগারে বদ্ধ হইবে, পরে অনেক দিন গত হইলে তাহাদের তত্ত্ব লওয়া যাইবে।আর চন্দ্র মলিন ও সূর্য লজ্জিত হইবে, কেননা বাহিনীগণের সদাপ্রভু সিয়োন পর্বতে ও যিরূশালেমে রাজত্ব করিবেন; এবং তাঁহার প্রাচীনবর্গের সম্মুখে প্রতাপ থাকিবে।পৃথিবী শূন্যীকৃত, শূন্যীকৃত হইবে, ও লুন্ঠিত, লুন্ঠিত হইবে, কেননা সদাপ্রভু এই কথা বলিয়াছেন।
আর আকাশের সমস্ত বাহিনী ক্ষয় পাইবে, আকাশমণ্ডল লিপি-পত্রের ন্যায় জড়াইয়া যাইবে; এবং যেমন দ্রাক্ষালতার জীর্ণ পত্র ও ডুমুর বৃক্ষের জীর্ণ পল্লব, তদ্রূপ তাহার সমস্ত বাহিনী জীর্ণ হইয়া পড়িবে।
পরে তিনি জৈতুন পর্বতের উপরে বসিলে শিষ্যেরা বিরলে তাঁহার নিকটে আসিয়া বলিলেন, আমাদিগকে বলুন দেখি, এই সকল ঘটনা কখন্ হইবে? আর আপনার আগমনের এবং যুগান্তের চিহ্ন কি?
ধন্য সে, যে এই ভাববাণীর বাক্য সকল উচ্চৈঃস্বরে পাঠ করে, ও ধন্য তাহারা, যাহারা শ্রবণ করে, এবং ইহাতে লিখিত কথা সকল পালন করে; কেননা কাল সন্নিকট।
তৎপরে পরিণাম হইবে; তখন তিনি সমস্ত আধিপত্য এবং সমস্ত কর্তৃত্ব ও পরাক্রম লোপ করিলে পর পিতা ঈশ্বরের হস্তে রাজ্য সমর্পণ করিবেন।
আর প্রভু যদি সেই দিনের সংখ্যা কমাইয়া না দিতেন, তবে কোন প্রাণীই রক্ষা পাইত না; কিন্তু তিনি যাহাদিগকে মনোনীত করিয়াছেন, সেই মনোনীতদের জন্য সেই দিনের সংখ্যা কমাইয়া দিলেন।
আর তোমরা যুদ্ধের কথা ও যুদ্ধের জনরব শুনিবে; দেখিও, ব্যাকুল হইও না; কেননা এই সকল অবশ্যই ঘটিবে, কিন্তু তখনও শেষ নয়।
তোমরা আকাশমণ্ডলের প্রতি চক্ষু তুলিয়া দৃষ্টিপাত কর, অধঃস্থিত ভূমণ্ডলও নিরীক্ষণ কর; কেননা আকাশমণ্ডল ধূমের ন্যায় অন্তর্হিত হইবে, ভূমণ্ডল বস্ত্রের ন্যায় জীর্ণ হইবে, এবং তন্নিবাসিগণ সেইরূপে মারা পড়িবে; কিন্তু আমার পরিত্রাণ অনন্তকাল থাকিবে, আমার ধর্মশীলতা বিনষ্ট হইবে না।
কারণ দেখ, আমি নূতন আকাশমণ্ডলের ও নূতন পৃথিবীর সৃষ্টি করি; এবং পূর্বে যাহা ছিল, তাহা স্মরণে থাকিবে না, আর মনে পড়িবে না।
কারণ আমি যে নূতন আকাশমণ্ডল ও নূতন পৃথিবী গঠন করিব, তাহা যেমন আমার সম্মুখে থাকিবে, তেমনি তোমাদের বংশ ও তোমাদের নাম থাকিবে, ইহা সদাপ্রভু কহেন।আর প্রতি অমাবস্যায় ও প্রতি বিশ্রামবারে সমস্ত মর্ত্য আমার সম্মুখে প্রণিপাত করিতে আসিবে, ইহা সদাপ্রভু কহেন।আর তাহারা বাহিরে গিয়া, যে লোকেরা আমার বিরুদ্ধে অধর্ম করিয়াছে, তাহাদের শব দেখিবে; কারণ তাহাদের কীট মরিবে না, ও তাহাদের অগ্নি নির্বাপিত হইবে না, এবং তাহারা সমস্ত মর্ত্যের ঘৃণাস্পদ হইবে।
‘আমি পৃথিবীতে দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ তাহা ঘোর ও শূন্য ছিল; আমি আকাশমণ্ডলে [দৃষ্টিপাত করিলাম] তাহার দীপ্তি ছিল না।আমি পর্বতগণের প্রতি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, সেই সকল কাঁপিতেছে, ও উপপর্বত সকল টলটলায়মান হইতেছে।আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, মনুষ্যমাত্র নাই, এবং আকাশের সমস্ত পক্ষী পলাইয়া গিয়াছে।আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, সদাপ্রভুর সম্মুখে ও তাঁহার জ্বলন্ত ক্রোধের সম্মুখে উদ্যান মরুভূমি হইয়া পড়িয়াছে, ও তাহার সমস্ত নগর ভগ্ন হইয়াছে।’কারণ সদাপ্রভু এই কথা কহেন, সমস্ত দেশ ধ্বংসের স্থান হইবে তথাপি আমি নিঃশেষে সংহার করিব না।এই জন্য পৃথিবী শোক করিবে, উপরিস্থ আকাশমণ্ডল কৃষ্ণবর্ণ হইবে; কারণ আমি ইহা বলিয়াছি, ইহা মনে স্থির করিয়াছি, এই বিষয়ে অনুশোচনা করি নাই, ইহা হইতে ফিরিব না।
প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, অমঙ্গল, একা অমঙ্গল, দেখ, তাহা আসিতেছে।পরিণাম আসিতেছে; সেই পরিণাম আসিতেছে; তাহা তোমার বিরুদ্ধে জাগিয়া উঠিতেছে; দেখ, তাহা আসিতেছে।হে দেশনিবাসী লোক, তোমার পালা আসিতেছে, কাল আসিতেছে, দিবস সন্নিকট হইতেছে; তাহা কোলাহলের দিন, পর্বতগণের উপরে আনন্দধ্বনির দিন নয়।
কারণ সেই দিন নিকটবর্তী, হাঁ, সদাপ্রভুর দিন, সেই মেঘাড়ম্বরের দিন নিকটবর্তী; তাহা জাতিগণের কাল হইবে।
আর সেই রাজগণের সময়ে স্বর্গের ঈশ্বর এক রাজ্য স্থাপন করিবেন, তাহা কখনও বিনষ্ট হইবে না, এবং সেই রাজত্ব অন্য জাতির হস্তে সমর্পিত হইবে না; তাহা ঐ সকল রাজ্য চূর্ণ ও বিনষ্ট করিয়া আপনি চিরস্থায়ী হইবে।
আমি রাত্রিকালীন দর্শনে দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, আকাশের মেঘ সহকারে মনুষ্য-পুত্রের ন্যায় এক পুরুষ আসিলেন, তিনি সেই অনেক দিনের বৃদ্ধের নিকটে উপস্থিত হইলেন, তাঁহার সম্মুখে আনীত হইলেন।আর তাঁহাকে কর্তৃত্ব, মহিমা ও রাজত্ব দত্ত হইল; লোকবৃন্দ, জাতি ও ভাষাবাদীকে তাঁহার সেবা করিতে হইবে; তাঁহার কর্তৃত্ব অনন্তকালীন কর্তৃত্ব, তাহা লোপ পাইবে না, এবং তাঁহার রাজ্য বিনষ্ট হইবে না।
পরে বিচার বসিবে, তাহার কর্তৃত্ব তাহা হইতে নীত হইবে, শেষ পর্যন্ত তাহার ক্ষয় ও বিনাশ করা যাইবে।আর রাজত্ব, কর্তৃত্ব ও সমস্ত আকাশমণ্ডলের অধঃস্থিত রাজ্যের মহিমা পরাৎপরের পবিত্র প্রজাদিগকে দত্ত হইবে; তাঁহার রাজ্য অনন্তকালস্থায়ী রাজ্য, এবং সমস্ত কর্তৃত্ব তাঁহার সেবা করিবে ও তাঁহার আজ্ঞাবহ হইবে।
তৎকালে যে মহান অধ্যক্ষ তোমার জাতির সন্তানদের পক্ষে দাঁড়াইয়া থাকেন, সেই মীখায়েল উঠিয়া দাঁড়াইবেন, আর এমন সঙ্কটের কাল উপস্থিত হইবে, যাহা মনুষ্যজাতির স্থিতিকাল অবধি সেই সময় পর্যন্ত কখনও হয় নাই; কিন্তু তৎকালে তোমার স্বজাতীয় যে কাহারও নাম পুস্তকে লিখিত পাওয়া যাইবে, সে উদ্ধার পাইবে।অনেকে আপনাদের পরিষ্কৃত ও শুক্ল করিবে, এবং পরীক্ষাসিদ্ধ হইবে, কিন্তু দুষ্টেরা দুষ্টাচরণ করিবে, আর দুষ্টদের মধ্যে কেহ বুঝিবে না; কেবল বুদ্ধিমানেরাই বুঝিবে।আর যে সময়ে নিত্য নৈবেদ্য নিবৃত্ত ও ধ্বংসকারী ঘৃণার্হ বস্তু স্থাপিত হইবে, তদবধি এক সহস্র দুই শত নব্বই দিন হইবে।ধন্য সেই, যে ধৈর্য ধরিয়া সেই এক সহস্র তিনশত পঁয়ত্রিশ দিন পর্যন্ত থাকিবে।কিন্তু তুমি শেষের অপেক্ষাতে গমন কর, তাহাতে বিশ্রাম পাইবে, এবং দিন-সমূহের শেষে আপন অধিকারে দণ্ডায়মান হইবে।আর মৃত্তিকার ধূলিতে নিদ্রিত লোকদের মধ্যে অনেকে জাগরিত হইবে- কেহ কেহ অনন্ত জীবনের উদ্দেশে, এবং কেহ কেহ লজ্জার ও অনন্ত ঘৃণার উদ্দেশে।আর যাহারা বুদ্ধিমান, তাহারা বিতানের দীপ্তির ন্যায়, এবং যাহারা অনেককে ধার্মিকতার প্রতি ফিরায়, তাহারা তারকাগণের ন্যায় অনন্তকাল দেদীপ্যমান হইবে।
তোমরা সিয়োনে তূরী বাজাও, আমার পবিত্র পর্বতে সিংহনাদ কর, দেশনিবাসী সকলেই কমিপত হউক; কেননা সদাপ্রভুর দিন আসিতেছে, হাঁ, সেই দিন সন্নিকট।তাহাদের সম্মুখে পৃথিবী কাঁপে, আকাশমণ্ডল কমপমান হয়, চন্দ্র ও সূর্য অন্ধকারময় হয়, নক্ষত্রগণ আপন আপন তেজ গুটাইয়া লয়।সদাপ্রভু নিজ সৈন্যসামন্তের অগ্রে আপন রব শুনাইতেছেন; কেননা তাঁহার শিবির অতি বৃহৎ; কেননা তাহা বাক্যসাধক বলবান, কেননা সদাপ্রভুর দিন মহৎ ও অতি ভয়ানক; আর কে তাহা সহ্য করিতে পারে?কিন্তু, সদাপ্রভু বলেন, এখনও তোমরা সমস্ত অন্তঃকরণের সহিত এবং উপবাস, রোদন ও বিলাপ সহকারে আমার কাছে ফিরিয়া আইস।আর আপন আপন বস্ত্র না ছিঁড়িয়া অন্তঃকরণ চির, এবং আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে ফিরিয়া আইস, কেননা তিনি কৃপাময় ও স্নেহশীল ক্রোধে ধীর ও দয়াতে মহান, এবং অমঙ্গলের বিষয়ে অনুশোচনা করেন।কে জানে যে, তিনি ফিরিয়া অনুশোচনা করিবেন না, এবং তাঁহার পশ্চাতে আশীর্বাদ, অর্থাৎ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে ভক্ষ্য-নৈবেদ্য ও পেয়-নৈবেদ্য, রাখিয়া যাইবেন না ?তোমরা সিয়োনে তূরী বাজাও, পবিত্র উপবাস নিরূপণ কর, পর্বদিন ঘোষণা কর;প্রজালোকদিগকে একত্র কর, পবিত্র সমাজ নিরূপণ কর, প্রাচীনগণকে আহ্বান কর, বালক-বালিকাদিগকে ও দুগ্ধপোষ্য শিশুদিগকে একত্র কর; বর আপন বাসগৃহ হইতে, কন্যা আপন অন্তঃপুর হইতে নির্গত হউক।বারান্দার ও বেদির মধ্যস্থানে সদাপ্রভুর পরিচারক যাজকগণ রোদন করুক, তাহারা বলুক, হে সদাপ্রভু, আপন প্রজাগণের প্রতি মমতা কর, আপন অধিকারকে টিট্কারির বিষয় করিও না; তাহাদের বিষয়ে জাতিগণকে গল্প করিতে দিও না, লোকবৃন্দের মধ্যে কেন বলা হইবে যে, ‘উহাদের ঈশ্বর কোথায়?’তখন সদাপ্রভু আপন দেশের জন্য উদ্যোগী হইলেন, ও আপন প্রজাদের প্রতি দয়া করিলেন।আর সদাপ্রভু উত্তর দিলেন, আপন প্রজাদিগকে কহিলেন, দেখ, আমি তোমাদের নিকটে শস্য, দ্রাক্ষারস ও তৈল প্রেরণ করিতেছি, তোমরা তাহাতে তৃপ্ত হইবে; এবং আমি জাতিগণের মধ্যে তোমাদিগকে আর টিট্কারির পাত্র করিব না।সে তিমির ও অন্ধকারের দিন, মেঘের ও ঘোর অন্ধকারের দিন, পর্বতগণের উপরে অরুণের ন্যায় তাহা ব্যাপ্ত হইতেছে। বলবতী এক মহাজাতি; তাহার তুল্য জাতি যুগের আরম্ভ হইতে হয় নাই, এবং তাহার পরে পুরুষানুক্রমে বৎসর-পর্যায়েও হইবে না।
তাহাদের সম্মুখে পৃথিবী কাঁপে, আকাশমণ্ডল কমপমান হয়, চন্দ্র ও সূর্য অন্ধকারময় হয়, নক্ষত্রগণ আপন আপন তেজ গুটাইয়া লয়।সদাপ্রভু নিজ সৈন্যসামন্তের অগ্রে আপন রব শুনাইতেছেন; কেননা তাঁহার শিবির অতি বৃহৎ; কেননা তাহা বাক্যসাধক বলবান, কেননা সদাপ্রভুর দিন মহৎ ও অতি ভয়ানক; আর কে তাহা সহ্য করিতে পারে?
আর আমি আকাশে ও পৃথিবীতে অদ্ভুত লক্ষণ দেখাইব; রক্ত, অগ্নি ও ধূমস্তম্ভ দেখাইব।সদাপ্রভুর ঐ মহৎ ও ভয়ঙ্কর দিনের আগমনের পূর্বে সূর্য অন্ধকার ও চন্দ্র রক্ত হইয়া যাইবে।
তোমরা, যাহারা সদাপ্রভুর দিনের আকাঙ্ক্ষা কর; ধিক্ তোমাদিগকে! সদাপ্রভুর দিন তোমাদের কি করিবে? তাহা অন্ধকার; আলোক নহে।কোন ব্যক্তি যেন সিংহ হইতে পলায়ন করিল, আর ভল্লুকীর সম্মুখে পড়িল; অথবা গৃহে গিয়া দেওয়ালে হস্ত রাখিলে সর্প তাহাকে দংশন করিল।ইস্রায়েল-কুমারী পতিত হইয়াছে, সে আর উঠিবে না; সে আপন ভূমিতে আছাড় খাইয়াছে; তাহাকে উঠাইবার কেহ নাই।সদাপ্রভুর দিন কি আলোক, অন্ধকার কি নয়? তাহা কি ঘোর অন্ধকার নয়, তাহাতে কি দীপ্তি থাকিবে?
সদাপ্রভুর মহাদিন নিকটবর্তী, তাহা নিকটবর্তী, অতি শীঘ্র আসিতেছে; ঐ সদাপ্রভুর দিনের শব্দ; সেখানে বীর তীব্র আর্তরব করিতেছে।সেই দিন ক্রোধের দিন, সঙ্কটের ও সঙ্কোচের দিন, নাশের ও সর্বনাশের দিন, অন্ধকারের ও তিমিরের দিন, মেঘের ও গাঢ় তমাসার দিন,তূরীধ্বনির ও রণনাদের দিন; তাহা প্রাচীরবেষ্টিত নগর ও উচ্চ দুর্গ সকলের বিপক্ষ।আমি মনুষ্যদিগকে দুঃখ দিব; তাহারা অন্ধের ন্যায় ভ্রমণ করিবে, কারণ তাহারা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করিয়াছে; তাহাদের রক্ত ধুলার ন্যায় ও তাহাদের মাংস মলের ন্যায় ঢালা যাইবে।সদাপ্রভুর ক্রোধের দিনে তাহাদের রৌপ্য কি তাহাদের সুবর্ণ তাহাদিগকে উদ্ধার করিতে পারিবে না; কিন্তু তাঁহার অন্তর্জ্বালার তাপে সমস্ত দেশ অগ্নিভক্ষিত হইবে, কেননা তিনি দেশনিবাসী সকলের বিনাশ, হাঁ, ভয়ানক সংহার করিবেন।
এই জন্য সদাপ্রভু কহেন, তোমরা সেই দিন পর্যন্ত আমার অপেক্ষায় থাক, যে দিন আমি হরণ করিতে উঠিব; কেননা আমার বিচার এই; আমি জাতিগণকে সংগ্রহ করিয়া ও রাজ্য সকল একত্র করিয়া তাহাদের উপরে আমার ক্রোধ, আমার সমস্ত কোপাগ্নি ঢালিয়া দিব; বস্তুতঃ আমার অন্তর্জ্বালার তাপে সমস্ত পৃথিবী অগ্নিভক্ষিত হইবে।
দেখ, সদাপ্রভুর এক দিন আসিতেছে; সেই দিন তোমার মধ্যে তোমার সমপত্তি লুট হইয়া বিভক্ত হইবে।গেবা অবধি যিরূশালেমের দক্ষিণস্থ রিম্মোণ পর্যন্ত সমস্ত দেশ রূপান্তর প্রাপ্ত হইয়া অরাবা তলভূমির ন্যায় হইবে, এবং নগরটি উন্নত হইয়া আপন স্থানে বসতিবিশিষ্ট হইবে; বিন্যামীনের দ্বার অবধি প্রথম দ্বারের স্থান পর্যন্ত, কোণের দ্বার পর্যন্ত, এবং হননেলের দুর্গ অবধি রাজার দ্রাক্ষাযন্ত্র পর্যন্ত সেইরূপ হইবে।আর লোকেরা তাহার মধ্যে বাস করিবে; আর কখনও অভিশাপ হইবে না, কিন্তু যিরূশালেম নির্ভয়ে বসতি করিবে।আর যে সকল জাতি যিরূশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করিবে সদাপ্রভু এইরূপ আঘাতে তাহাদিগকে আহত করিবেন; চরণে ভর দিয়া দাঁড়াইবার সময়ে তাহাদের মাংস ক্ষয় পাইবে, কোটরে চক্ষু দুইটি ক্ষয় পাইবে, ও মুখে জিহ্বা ক্ষয় পাইবে।আর সেই দিন তাহাদের মধ্যে সদাপ্রভু হইতে মহাকোলাহল হইবে; তাহারা প্রত্যেক জন আপন আপন প্রতিবাসীর হস্ত ধরিবে, এবং প্রত্যেকের হস্ত আপন আপন প্রতিবাসীর বিরুদ্ধে উত্তোলিত হইবে।যিহূদাও যিরূশালেমে যুদ্ধ করিবে, এবং চারিদিকের সমস্ত জাতির ধন, স্বর্ণ, রৌপ্য ও বস্ত্র অতিশয় প্রচুররূপে সঞ্চয় করা যাইবে।আর সেই সকল শিবিরে উপস্থিত অশ্ব, অশ্বতর, উষ্ট্র, গর্দভ প্রভৃতি সকল পশুর প্রতি আঘাত ঐ আঘাতের ন্যায় হইবে।আর যিরূশালেমের বিরুদ্ধে আগত সমস্ত জাতির মধ্যে যাহারা অবশিষ্ট থাকিবে, তাহারা বৎসর বৎসর বাহিনীগণের সদাপ্রভু রাজার নিকটে প্রণিপাত করিতে ও কুটীরোৎসব পালন করিতে আসিবে।আর পৃথিবীর গোষ্ঠী সকলের মধ্যে যাহারা বাহিনীগণের সদাপ্রভু রাজার কাছে প্রণিপাত করিতে যিরূশালেমে না আইসে, তাহাদের উপরে বৃষ্টি হইবে না।মিসরের গোষ্ঠী যদি না আইসে, উপস্থিত না হয়, তবে তাহাদের উপরে [বৃষ্টি হইবে] না; যে সকল জাতি কুটীরোৎসব পালন করিতে না আসিবে, তাহাদিগকে সদাপ্রভু যে আঘাতে আহত করিবেন, সেই আঘাত [উহাদের প্রতিও] ঘটিবে।ইহা মিসরের দণ্ড হইবে, এবং যে সকল জাতি কুটীরোৎসব পালন করিতে না আসিবে, তাহাদের সকলের সেই দণ্ড হইবে।কারণ আমি সমুদয় জাতিকে যুদ্ধার্থে যিরূশালেমের বিরুদ্ধে সংগ্রহ করিব; তাহাতে নগর শত্রুহস্তগত, সকল গৃহের দ্রব্য লুণ্ঠিত, ও স্ত্রীলোকেরা বলাৎকৃত হইবে, এবং নগরের অর্ধেক লোক নির্বাসনে যাইবে, আর অবশিষ্ট প্রজারা নগর হইতে উচ্ছিন্ন হইবে না।
কারণ দেখ, সেই দিন আসিতেছে, তাহা হাপরের ন্যায় জ্বলিবে, এবং দর্পী ও দুষ্টাচারীরা সকলে খড়ের ন্যায় হইবে; আর সেই যে দিন আসিতেছে, তাহা তাহাদিগকে পোড়াইয়া দিবে, ইহা বাহিনীগণের সদাপ্রভু কহেন; সে দিন তাহাদের মূল কি শাখা কিছুই অবশিষ্ট রাখিবে না।
দেখ, সদাপ্রভুর সেই মহৎ ও ভয়ঙ্কর দিন আসিবার পূর্বে আমি তোমাদের নিকটে এলিয় ভাববাদীকে প্রেরণ করিব।সে সন্তানদের প্রতি পিতৃগণের হৃদয়, ও পিতৃগণের প্রতি সন্তানদের হৃদয় ফিরাইবে; পাছে আমি আসিয়া পৃথিবীকে অভিশাপে আঘাত করি।
অতএব যেমন শ্যামাঘাস সংগ্রহ করিয়া আগুনে পোড়াইয়া দেওয়া যায়, তেমনি যুগান্তে হইবে।মনুষ্যপুত্র আপন দূতগণকে প্রেরণ করিবেন; তাঁহারা তাঁহার রাজ্য হইতে সমস্ত বিঘ্নজনক বিষয় ও অধর্মাচারীদিগকে সংগ্রহ করিবেন, এবং তাহাদিগকে অগ্নিকুণ্ডে ফেলিয়া দিবেন;সেই স্থানে রোদন ও দন্তঘর্ষণ হইবে।তখন ধার্মিকেরা আপনাদের পিতার রাজ্যে সূর্যের ন্যায় দেদীপ্যমান হইবে। যাহার কান থাকে, সে শুনুক।
এইরূপ যুগান্তে হইবে; দূতগণ আসিয়া ধার্মিকদের মধ্য হইতে দুষ্টদিগকে পৃথক করিবেন, এবং তাহাদিগকে অগ্নিকুণ্ডে ফেলিয়া দিবেন;আর কতক বীজ পাষাণময় ভূমিতে পড়িল, যেখানে অধিক মৃত্তিকা ছিল না, তাহাতে অধিক মৃত্তিকা না পাওয়াতে তাহা শীঘ্র অঙ্কুরিত হইয়া উঠিল,সেই স্থানে রোদন ও দন্তঘর্ষণ হইবে।
আর তোমরা যুদ্ধের কথা ও যুদ্ধের জনরব শুনিবে; দেখিও, ব্যাকুল হইও না; কেননা এই সকল অবশ্যই ঘটিবে, কিন্তু তখনও শেষ নয়।কারণ জাতির বিপক্ষে জাতি ও রাজ্যের বিপক্ষে রাজ্য উঠিবে, এবং স্থানে স্থানে দুর্ভিক্ষ ও ভূমিকম্প হইবে।কিন্তু এই সকলই যাতনার আরম্ভ মাত্র।
কেননা তৎকালে এইরূপ “মহাক্লেশ উপস্থিত হইবে, যেরূপ জগতের আরম্ভ অবধি এই পর্যন্ত কখনও হয় নাই, কখনও হইবেও না”আর সেই দিনের সংখ্যা যদি কমাইয়া দেওয়া না যাইত, তবে কোন প্রাণীই রক্ষা পাইত না; কিন্তু মনোনীতদের জন্য সেই দিনের সংখ্যা কমাইয়া দেওয়া যাইবে।
আর সেই সময়ের ক্লেশের পরেই “সূর্য অন্ধকার হইবে, চন্দ্র জ্যোৎস্না দিবে না, আকাশ হইতে তারাগণের পতন হইবে ও আকাশমণ্ডলের পরাক্রম সকল বিচলিত হইবে”।পরে তিনি জৈতুন পর্বতের উপরে বসিলে শিষ্যেরা বিরলে তাঁহার নিকটে আসিয়া বলিলেন, আমাদিগকে বলুন দেখি, এই সকল ঘটনা কখন্ হইবে? আর আপনার আগমনের এবং যুগান্তের চিহ্ন কি?আর তখন মনুষ্যপুত্রের চিহ্ন আকাশে দেখা যাইবে, আর তখন পৃথিবীর সমুদয় গোষ্ঠী বিলাপ করিবে, এবং “মনুষ্যপুত্রকে আকাশীয় মেঘরথে পরাক্রম ও মহা প্রতাপে আসিতে” দেখিবে।আর তিনি মহা তূরীধ্বনি সহকারে আপন দূতগণকে প্রেরণ করিবেন; তাঁহারা আকাশের এক সীমা অবধি অন্য সীমা পর্যন্ত চারি বায়ু হইতে তাঁহার মনোনীতদিগকে একত্র করিবেন।
আকাশের ও পৃথিবীর লোপ হইবে, কিন্তু আমার বাক্যের লোপ কখনও হইবে না।কিন্তু সেই দিনের ও সেই দণ্ডের তত্ত্ব কেহই জানে না, স্বর্গের দূতগণও জানেন না, পুত্রও জানেন না, কেবল পিতা জানেন।
এই জন্য তোমরাও প্রস্তুত থাক, কেননা যে দণ্ড তোমরা মনে করিবে না, সেই দণ্ডে মনুষ্যপুত্র আসিবেন।
আর যখন মনুষ্যপুত্র সমুদয় দূত সঙ্গে করিয়া আপন প্রতাপে আসিবেন, তখন তিনি নিজ প্রতাপের সিংহাসনে বসিবেন।আর সমুদয় জাতি তাঁহার সম্মুখে একত্রীকৃত হইবে; পরে তিনি তাহাদের একজন হইতে অন্য জনকে পৃথক করিবেন, যেমন পালরক্ষক ছাগ হইতে মেষ পৃথক করে;
আমি তোমাদিগকে যাহা যাহা আজ্ঞা করিয়াছি, সেই সমস্ত পালন করিতে তাহাদিগকে শিক্ষা দেও। আর দেখ, আমিই যুগান্ত পর্যন্ত প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি।
কিন্তু তোমরা যখন যুদ্ধের কথা ও যুদ্ধের জনরব শুনিবে, তখন ব্যাকুল হইও না; এই সকল অবশ্যই ঘটিবে, কিন্তু তখনও শেষ নয়।কারণ জাতির বিপক্ষে জাতি, ও রাজ্যের বিপক্ষে রাজ্য উঠিবে। স্থানে স্থানে ভূমিকম্প হইবে; দুর্ভিক্ষ হইবে; এই সকল যাতনার আরম্ভ মাত্র।
আর সেই সময়ে, সেই ক্লেশের পরে, সূর্য অন্ধকার হইবে, চন্দ্র জ্যোৎস্না দিবে না,আকাশ হইতে তারাগণের পতন হইবে, ও আকাশমণ্ডলের পরাক্রম সকল বিচলিত হইবে।আর তখন লোকেরা দেখিবে, মনুষ্যপুত্র মহাপরাক্রম ও প্রতাপের সহিত মেঘযোগে আসিতেছেন।তখন তিনি দূতগণকে প্রেরণ করিয়া পৃথিবীর সীমা অবধি আকাশের সীমা পর্যন্ত চারি বায়ু হইতে তাঁহার মনোনীতদিগকে একত্র করিবেন।
কিন্তু সেই দিনের বা সেই দণ্ডের তত্ত্ব কেহই জানে না; স্বর্গস্থ দূতগণও জানেন না, পুত্রও জানেন না, কেবল পিতা জানেন।সাবধান, তোমরা জাগিয়া থাকিও ও প্রার্থনা করিও; কেননা সেই সময় কবে হইবে, তাহা জান না।
আর নোহের সময়ে যে রূপ হইয়াছিল, মনুষ্যপুত্রের সময়েও তদ্রূপ হইবে।লোকে ভোজন পান করিত, বিবাহ করিত, বিবাহিতা হইত, যে পর্যন্ত না নোহ জাহাজে প্রবেশ করিলেন, আর জলপ্লাবন আসিয়া সকলকে বিনষ্ট করিল।সেইরূপ লোটের সময়ে যেমন হইয়াছিল- লোকে ভোজন পান, ক্রয় বিক্রয়, বৃক্ষ রোপণ ও গৃহ নির্মাণ করিত;কিন্তু যে দিন লোট সদোম হইতে বাহির হইলেন, সেই দিন আকাশ হইতে অগ্নি ও গন্ধক বর্ষিয়া সকলকে বিনষ্ট করিল-তোমার ভ্রাতা যদি পাপ করে, তাহাকে অনুযোগ করিও; আর সে যদি অনুতাপ করে, তাহাকে ক্ষমা করিও।মনুষ্যপুত্র যে দিন প্রকাশিত হইবেন, সেই দিনেও সেইরূপ হইবে।
আর সূর্যে, চন্দ্রে ও নক্ষত্রগণে নানা চিহ্ন প্রকাশ পাইবে, এবং পৃথিবীতে জাতিগণের ক্লেশ হইবে, তাহারা সমুদ্রের ও তরঙ্গের গর্জনে উদ্বিগ্ন হইবে।ভয়ে এবং ভূমণ্ডলে যাহা যাহা ঘটিবে তাহার আশঙ্কায়, মানুষের প্রাণ উড়িয়া যাইবে; কেননা আকাশমণ্ডলের পরাক্রম সকল বিচলিত হইবে।আর তৎকালে তাহারা মনুষ্যপুত্রকে পরাক্রম ও মহাপ্রতাপ সহকারে মেঘযোগে আসিতে দেখিবে।
আকাশের ও পৃথিবীর লোপ হইবে, কিন্তু আমার বাক্যের লোপ কখনও হইবে না।কিন্তু আপনাদের বিষয়ে সাবধান থাকিও, পাছে ভোগপীড়ায় ও মত্ততায় এবং জীবিকার চিন্তায় তোমাদের হৃদয় ভারগ্রস্ত হয়, আর সেই দিন হঠাৎ ফাঁদের ন্যায় তোমাদের উপরে আসিয়া পড়ে;কেননা সেই দিন সমস্ত ভূতল-নিবাসী সকলের উপরে উপস্থিত হইবে।কিন্তু তোমরা সর্বসময়ে জাগিয়া থাকিও এবং প্রার্থনা করিও, যেন এই যে সকল ঘটনা হইবে, তাহা এড়াইতে, এবং মনুষ্যপুত্রের সম্মুখে দাঁড়াইতে, শক্তিমান হও।
ইহাতে আশ্চর্য মনে করিও না; কেননা এমন সময় আসিতেছে, যখন কবরস্থ সকলে তাঁহার রব শুনিবে,এবং যাহারা সৎকার্য করিয়াছে, তাহারা জীবনের পুনরুত্থানের জন্য, ও যাহারা অসৎকার্য করিয়াছে, তাহারা বিচারের পুনরুত্থানের জন্য বাহির হইয়া আসিবে।
আর যিনি আমাকে পাঠাইয়াছেন, তাঁহার ইচ্ছা এই, তিনি আমাকে যে সমস্ত দিয়াছেন, তাহার কিছুই যেন না হারাই, কিন্তু শেষ দিনে যেন তাহা উঠাই।তখন নিস্তারপর্ব, যিহূদীদের পর্ব, সন্নিকট ছিল।কারণ আমার পিতার ইচ্ছা এই, যে কেহ পুত্রকে দর্শন করে ও তাঁহাতে বিশ্বাস করে, সে যেন অনন্ত জীবন পায়; আর আমিই তাঁহাকে শেষ দিনে উঠাইব।
যে আমাকে অগ্রাহ্য করে, এবং আমার কথা গ্রহণ না করে, তাহার বিচারকর্তা আছে; আমি যে বাক্য বলিয়াছি, তাহাই শেষ দিনে তাহার বিচার করিবে।
আর তাঁহারা কহিলেন, হে গালীলীয় লোকেরা, তোমরা আকাশের দিকে দৃষ্টি করিয়া দাঁড়াইয়া রহিয়াছ কেন? এই যে যীশু তোমাদের নিকট হইতে স্বর্গে ঊর্ধ্বে নীত হইলেন, উহাঁকে যেরূপে স্বর্গে গমন করিতে দেখিলে, সেইরূপে উনি আগমন করিবেন।
আমি উপরে আকাশে নানা অদ্ভুত লক্ষণ এবং নিচে পৃথিবীতে নানা চিহ্ন রক্ত, অগ্নি ও ধূম-বাষপ দেখাইব।আর হঠাৎ আকাশ হইতে প্রচণ্ড বায়ুর বেগের শব্দবৎ একটা শব্দ আসিল, এবং যে গৃহে তাঁহারা বসিয়াছিলেন, সেই গৃহের সর্বত্র ব্যাপ্ত হইল।প্রভুর সেই মহৎ ও প্রসিদ্ধ দিনের আগমনের পূর্বে সূর্য অন্ধকার হইয়া যাইবে, চন্দ্র রক্ত হইয়া যাইবে;
অতএব তোমরা মন ফিরাও, ও ফির, যেন তোমাদের পাপ মুছিয়া ফেলা হয়,এমন সময়ে লোকেরা এক ব্যক্তিকে বহন করিয়া আনিতেছিল, সে মাতার গর্ভ হইতে খঞ্জ; তাহাকে প্রতিদিন ধর্মধামের সুন্দর নামক দ্বারে রাখিয়া দেওয়া হইত, যেন, ধর্মধামে যাহারা প্রবেশ করে, তাহাদের কাছে ভিক্ষা চাহিতে পারে।যেন এইরূপে প্রভুর সম্মুখ হইতে তাপশান্তির সময় উপস্থিত হয়, এবং তোমাদের নিমিত্ত পূর্বনিরূপিত খ্রীষ্টকে, যীশুকে, তিনি যেন প্রেরণ করেন।যাঁহাকে স্বর্গ নিশ্চয়ই গ্রহণ করিয়া রাখিবে, যে পর্যন্ত না সমস্ত বিষয়ের পুনঃস্থাপনের কাল উপস্থিত হয়, যে কালের বিষয় ঈশ্বর নিজ পবিত্র ভাববাদিগণের মুখ দ্বারা বলিয়াছেন, যাঁহারা পূরাকাল হইতে হইয়া গিয়াছেন।
ঈশ্বর সেই অজ্ঞানতার কাল উপেক্ষা করিয়াছিলেন, কিন্তু এখন সর্বস্থানের সকল মনুষ্যকে মনপরিবর্তন করিতে আজ্ঞা দিতেছেন;কেননা তিনি একটি দিন স্থির করিয়াছেন, যে দিনে আপনার নিরূপিত ব্যক্তি দ্বারা ন্যায়ে জগৎ সংসারের বিচার করিবেন; এই বিষয়ে সকলের বিশ্বাস যোগ্য প্রমাণ দিয়াছেন, ফলতঃ মৃতগণের মধ্য হইতে তাঁহাকে উঠাইয়াছেন।
কিন্তু তোমার কঠিন ভাব এবং অপরিবর্তনশীল চিত্ত অনুসারে তুমি নিজের জন্য এমন ক্রোধ সঞ্চয় করিতেছ, যাহা ক্রোধের ও ঈশ্বরের ন্যায়বিচার-প্রকাশের দিনে আসিবে;
কারণ আমার মীমাংসা এই, আমাদের প্রতি যে প্রতাপ প্রকাশিত হইবে, তাহার সঙ্গে এই বর্তমান কালের দুঃখভোগ তুলনার যোগ্য নয়।কেননা সৃষ্টির ঐকান্তিক প্রতীক্ষা ঈশ্বরের পুত্রগণের প্রকাশ প্রাপ্তির অপেক্ষা করিতেছে।
এই প্রত্যাশায় হইল যে, সৃষ্টি নিজেও ক্ষয়ের দাসত্ব হইতে মুক্ত হইয়া ঈশ্বরের সন্তানগণের প্রতাপের স্বাধীনতা পাইবে।কারণ আমরা জানি, সমস্ত সৃষ্টি এখন পর্যন্ত একসঙ্গে আর্তস্বর করিতেছে, ও একসঙ্গে ব্যথা খাইতেছে।কেবল তাহা নয়; কিন্তু আত্মারূপ অগ্রিমাংশ পাইয়াছি যে আমরা, আমরা নিজেরাও দত্তকপুত্রতার- আপন আপন দেহের মুক্তির- অপেক্ষা করিতে করিতে অন্তরে আর্তস্বর করিতেছি।
কিন্তু আমি এই কথা বলিতেছি, ভ্রাতৃগণ, সময় সংকুচিত, এখন হইতে যাহাদের স্ত্রী আছে, তাহারা এমন চলুক, যেন তাহাদের স্ত্রী নাই;স্বামী স্ত্রীকে তাহার প্রাপ্য দিউক; আর তদ্রূপ স্ত্রীও স্বামীকে দিউক।এবং যাহারা রোদন করিতেছে, তাহারা যেন রোদন করিতেছে না; যাহারা আনন্দ করিতেছে, তাহারা যেন আনন্দ করিতেছে না; যাহারা ক্রয় করিতেছে, তাহারা যেন কিছুই রাখে নাই;আর যাহারা সংসার ভোগ করিতেছে, যেন পূর্ণমাত্রায় করিতেছে না, যেহেতু এই সংসারের অভিনয় অতীত হইতেছে।
কারণ আদমে যেমন সকলে মরে, তেমনি আবার খ্রীষ্টেই সকলে জীবনপ্রাপ্ত হইবে।কিন্তু প্রত্যেক জন আপন আপন শ্রেণীতে; খ্রীষ্ট অগ্রিমাংশ, পরে খ্রীষ্টের লোক সকল তাঁহার আগমনকালে।তৎপরে পরিণাম হইবে; তখন তিনি সমস্ত আধিপত্য এবং সমস্ত কর্তৃত্ব ও পরাক্রম লোপ করিলে পর পিতা ঈশ্বরের হস্তে রাজ্য সমর্পণ করিবেন।
দেখ, আমি তোমাদিগকে এক নিগূঢ়তত্ত্ব বলি; আমরা সকলে নিদ্রাগত হইব না, কিন্তু সকলে রূপান্তরীকৃত হইব;এক মুহূর্তের মধ্যে, চক্ষুর পলকে, শেষ তূরীধ্বনিতে হইব; কেননা তূরী বাজিবে, তাহাতে মৃতেরা অক্ষয় হইয়া উত্থাপিত হইবে, এবং আমরা রূপান্তরীকৃত হইব।
কোন ব্যক্তি যদি প্রভুকে ভাল না বাসে, তবে সে শাপগ্রস্ত হউক; মারাণ আথা [প্রভু আসিতেছেন]।
কারণ আমাদের সকলকেই খ্রীষ্টের বিচারাসনের সম্মুখে প্রত্যক্ষ হইতে হইবে, যেন সৎকার্য হউক, কি অসৎকার্য হউক, প্রত্যেক জন আপনার কৃত কার্য অনুসারে দেহ দ্বারা উপার্জিত ফল পায়।
ইহাতেই আমার দৃঢ় প্রত্যয় এই যে, তোমাদের অন্তরে যিনি উত্তম কার্য আরম্ভ করিয়াছেন, তিনি যীশু খ্রীষ্টের দিন পর্যন্ত তাহা সিদ্ধ করিবেন।
কারণ আমরা স্বর্গপুরীর প্রজা; আর তথা হইতে আমরা ত্রাণকর্তার, প্রভু যীশু খ্রীষ্টের, আগমন প্রতীক্ষা করিতেছি;তিনি আমাদের দীনতার দেহকে রূপান্তর করিয়া নিজ প্রতাপের দেহের সমরূপ করিবেন, যেন কার্যসাধক শক্তিতে তিনি সকলই আপনার বশীভূত করিতে পারেন, তাহারই গুণে করিবেন।
আমাদের জীবনস্বরূপ খ্রীষ্ট যখন প্রকাশিত হইবেন, তখন তোমরাও তাঁহার সহিত সপ্রতাপে প্রকাশিত হইবে।
কেননা আমরা প্রভুর বাক্য দ্বারা তোমাদিগকে ইহা বলিতেছি যে, আমরা যাহারা জীবিত আছি, যাহারা প্রভুর আগমন পর্যন্ত অবশিষ্ট থাকিব, আমরা কোন ক্রমে সেই নিদ্রাগত লোকদের অগ্রগামী হইব না।কারণ প্রভু স্বয়ং আনন্দধ্বনি সহ, প্রধান দূতের রব সহ, এবং ঈশ্বরের তূরীবাদ্য সহ স্বর্গ হইতে নামিয়া আসিবেন, আর যাহারা খ্রীষ্টে মরিয়াছে, তাহারা প্রথমে উঠিবে।পরে আমরা যাহারা জীবিত আছি, যাহারা অবশিষ্ট থাকিব, আমরা আকাশে প্রভুর সহিত সাক্ষাৎ করিবার নিমিত্ত একসঙ্গে তাহাদের সহিত মেঘযোগে নীত হইব; আর এইরূপে সতত প্রভুর সঙ্গে থাকিব।
কিন্তু, হে ভ্রাতৃগণ, বিশেষ বিশেষ কালের ও সময়ের বিষয়ে তোমাদিগকে কিছু লেখা অনাবশ্যক।তিনি আমাদের নিমিত্ত মরিলেন, যেন আমরা জাগিয়া থাকি বা নিদ্রা যাই, তাঁহার সঙ্গেই জীবিত থাকি।অতএব যেমন তোমরা করিয়াও থাক, তেমনি তোমরা পরস্পরকে আশ্বাস দেও, এবং একজন অন্যকে গাঁথিয়া তুল।কিন্তু, হে ভ্রাতৃগণ, আমরা তোমাদিগকে নিবেদন করিতেছি; যাঁহারা তোমাদের মধ্যে পরিশ্রম করেন ও প্রভুতে তোমাদের উপরে নিযুক্ত আছেন, এবং তোমাদিগকে চেতনা দেন, তাঁহাদিগকে চিনিয়া লও,আর তাঁহাদের কর্ম প্রযুক্ত তাঁহাদিগকে প্রেমে অতিশয় সমাদর কর।আপনাদের মধ্যে ঐক্য রাখ। আর, হে ভ্রাতৃগণ, আমরা তোমাদিগকে বিনয় করিতেছি, যাহারা অনিয়মিতরূপে চলে, তাহাদিগকে চেতনা দেও, ক্ষীণসাহসদিগকে সান্ত্বনা কর, দুর্বলদের সাহায্য কর, সকলের প্রতি দীর্ঘসহিষ্ণু হও।দেখিও, যেন অপকারের পরিশোধে কেহ কাহারও অপকার না কর, কিন্তু পরস্পরের এবং সকলের প্রতি সর্বদা সদাচরণের অনুধাবন কর।সতত আনন্দ কর;অবিরত প্রার্থনা কর;সর্ববিষয়ে ধন্যবাদ কর; কারণ খ্রীষ্ট যীশুতে ইহাই তোমাদের উদ্দেশে ঈশ্বরের ইচ্ছা।আত্মাকে নির্বাপিত করিও না।কারণ তোমরা নিজেরা বিলক্ষণ জান, রাত্রিকালে যেমন চোর আইসে, তেমনি প্রভুর দিন আসিতেছে।ভাববাণী তুচ্ছ করিও না।সর্ববিষয়ের পরীক্ষা কর; যাহা ভাল, তাহা ধরিয়া রাখ।সর্বপ্রকার মন্দ বিষয় হইতে দূরে থাক।আর শান্তির ঈশ্বর আপনি তোমাদিগকে সর্বতোভাবে পবিত্র করুন; এবং তোমাদের অবিকল আত্মা, প্রাণ ও দেহ আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের আগমন কালে অনিন্দনীয়রূপে রক্ষিত হউক।যিনি তোমাদিগকে আহ্বান করেন, তিনি বিশ্বস্ত, তিনিই তাহা করিবেন।ভ্রাতৃগণ, আমাদের নিমিত্ত প্রার্থনা কর।সকল ভ্রাতাকে পবিত্র চুম্বনে মঙ্গলবাদ কর।আমি তোমাদিগকে প্রভুর দিব্য দিয়া বলিতেছি, সমুদয় ভ্রাতার কাছে যেন এই পত্র পাঠ করা হয়।আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের অনুগ্রহ তোমাদের সহবর্তী হউক।লোকে যখন বলে, শান্তি ও অভয়, তখনই তাহাদের কাছে যেমন গর্ভবতীর প্রসববেদনা উপস্থিত হইয়া থাকে, তেমনি আকস্মিক বিনাশ উপস্থিত হয়; আর তাহারা কোন ক্রমে এড়াইতে পারিবে না।
কেননা ঈশ্বর আমাদিগকে ক্রোধের জন্য নিযুক্ত করেন নাই, কিন্তু আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা পরিত্রাণ লাভের জন্য;
আবার, হে ভ্রাতৃগণ, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের আগমন ও তাঁহার নিকটে আমাদের সংগৃহীত হইবার বিষয়ে তোমাদিগকে এই বিনতি করিতেছি;এবং যাহারা বিনাশ পাইতেছে, তাহাদের সম্বন্ধে অধার্মিকতার সমস্ত প্রতারণা সহকারে হইবে; কারণ তাহারা পরিত্রাণ পাইবার নিমিত্ত সত্যের প্রেম গ্রহণ করে নাই।আর সেই জন্য ঈশ্বর তাহাদের কাছে ভ্রান্তির কার্যসাধন পাঠান, যাহাতে তাহারা সেই মিথ্যায় বিশ্বাস করিবে;যেন সেই সকলের বিচার হয়, যাহারা সত্যে বিশ্বাস করিত না, কিন্তু অধার্মিকতায় প্রীত হইত।কিন্তু, হে ভ্রাতৃগণ, প্রভুর প্রিয়তমেরা, আমরা তোমাদের নিমিত্ত সর্বদা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিতে বাধ্য; কেননা ঈশ্বর আদি হইতে তোমাদিগকে আত্মার পবিত্রতা প্রদানে ও সত্যের বিশ্বাসে পরিত্রাণের জন্য মনোনীত করিয়াছেন;এবং সেই অভিপ্রায়ে আমাদের সুসমাচার দ্বারা তোমাদিগকে আহ্বানও করিয়াছেন, যেন তোমরা আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের প্রতাপ লাভ করিতে পার।অতএব, হে ভ্রাতৃগণ, স্থির থাক, এবং আমাদের বাক্য অথবা পত্র দ্বারা যে সকল শিক্ষা পাইয়াছ, তাহা ধরিয়া রাখ।আর আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্ট আপনি, ও আমাদের পিতা ঈশ্বর, যিনি আমাদিগকে প্রেম করিয়াছেন, এবং অনুগ্রহ দ্বারা অনন্তকালস্থায়ী সান্ত্বনা ও উত্তম প্রত্যাশা দিয়াছেন,তিনি তোমাদের হৃদয়কে সান্ত্বনা দিউন, এবং সমস্ত উত্তম কার্যে ও বাক্যে সুস্থির করুন।তোমরা কোন আত্মা দ্বারা, বা কোন বাক্য দ্বারা, অথবা, আমরা লিখিয়াছি মনে করিয়া কোন পত্র দ্বারা, মনের স্থিরতা হইতে বিচলিত বা উদ্বিগ্ন হইও না, ভাবিও না যে প্রভুর দিন উপস্থিত হইল;কেহ কোন মতে যেন তোমাদিগকে না ভুলায়; কেননা প্রথমে সেই ধর্ম-ভ্রষ্টতা উপস্থিত হইবে, এবং সেই পাপ-পুরুষ, সেই বিনাশ-সন্তান, প্রকাশ পাইবে,যে প্রতিরোধী হইবে ও ‘ঈশ্বর’ নামে আখ্যাত বা পূজ্য সকলের হইতে আপনাকে বড় করিবে, এমন কি, ঈশ্বরের মন্দিরে বসিয়া আপনাকে ঈশ্বর বলিয়া দেখাইবে।
আর তখন সেই অধর্মী প্রকাশ পাইবে, যাহাকে প্রভু যীশু আপন মুখের নিঃশ্বাস দ্বারা সংহার করিবেন, ও আপন আগমনের প্রকাশ দ্বারা লোপ করিবেন।
তুমি ধর্মবিধি নিষ্কলঙ্ক ও অনিন্দনীয় রাখ; প্রভু যীশু খ্রীষ্টের সেই প্রকাশ-প্রাপ্তি পর্যন্ত,যাহা সেই পরমধন্য ও একমাত্র সম্রাট, রাজত্বকারীদের রাজা ও প্রভুত্বকারীদের প্রভু, উপযুক্ত সময়-সমূহে প্রদর্শন করিবেন;
আমি ঈশ্বরের সাক্ষাতে, এবং যিনি জীবিত ও মৃতগণের বিচার করিবেন, সেই খ্রীষ্ট যীশুর সাক্ষাতে, তাঁহার প্রকাশপ্রাপ্তি ও তাঁহার রাজ্যের দোহাই দিয়া, তোমাকে এই দৃঢ় আজ্ঞা দিতেছি;
এবং পরমধন্য আশাসিদ্ধির জন্য, এবং মহান ঈশ্বর ও আমাদের ত্রাণকর্তা যীশু খ্রীষ্টের প্রতাপের প্রকাশ প্রাপ্তির জন্য অপেক্ষা করি।
আর, “হে প্রভু, তুমিই আদিতে পৃথিবীর ভিত্তিমূল স্থাপন করিয়াছ, আকাশমণ্ডলও তোমার হস্তের রচনা।সেই সকল বিনষ্ট হইবে, কিন্তু তুমিই নিত্যস্থায়ী; সেই সমস্ত বস্ত্রের ন্যায় জীর্ণ হইয়া পড়িবে,তুমি পরিচ্ছদের ন্যায় সেই সকল জড়াইবে, বস্ত্রের ন্যায় জড়াইবে, আর সেই সমস্তের পরিবর্তন হইবে; কিন্তু তুমি যে, সেই আছ, এবং তোমার বৎসর সকল কখনও শেষ হইবে না।”
কেননা তাহা হইলে জগতের পত্তনাবধি অনেক বার তাহাকে মৃত্যু ভোগ করিতে হইত। কিন্তু বাস্তবিক তিনি একবার, যুগপর্যায়ের পরিণামে, আত্মযজ্ঞ দ্বারা পাপ নাশ করিবার নিমিত্ত, প্রকাশিত হইয়াছেন।আর যেমন মনুষ্যের নিমিত্ত একবার মৃত্যু, তৎপরে বিচার নিরূপিত আছে,তেমনি খ্রীষ্টও ‘অনেকের পাপভার তুলিয়া লইবার’ নিমিত্ত একবার উৎসৃষ্ট হইয়াছেন; তিনি দ্বিতীয় বার, বিনা পাপে, তাহাদিগকে দর্শন দিবেন, যাহারা পরিত্রাণের নিমিত্ত তাঁহার অপেক্ষা করে।
তৎকালে তাঁহার রব পৃথিবীকে কমপান্বিত করিয়াছিল; কিন্তু এখন তিনি এই প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, “আমি আর একবার কেবল পৃথিবীকে নয়, আকাশমণ্ডলকেও কমপান্বিত করিব।”এখানে “আর একবার,” এই শব্দে নির্দিষ্ট হইতেছে, সেই কমপমান সকল বিষয় নির্মিত বলিয়া দূরীকৃত হইবে, যেন অকমপমান বিষয় সকল স্থায়ী হয়।
অতএব হে ভ্রাতৃগণ, তোমরা প্রভুর আগমন পর্যন্ত দীর্ঘসহিষ্ণু থাক। দেখ, কৃষক ভূমির বহুমূল্য ফলের অপেক্ষা করে এবং যত দিন তাহা প্রথম ও শেষ বর্ষা না পায়, ততদিন তাহার বিষয়ে দীর্ঘসহিষ্ণু থাকে।তোমরাও দীর্ঘসহিষ্ণু থাক, আপন আপন হৃদয় সুস্থির কর, কেননা প্রভুর আগমন সন্নিকট।
হে ভ্রাতৃগণ, তোমরা একজন অন্য জনের বিরুদ্ধে আর্তস্বর করিও না, যেন বিচারিত না হও; দেখ, বিচারকর্তা দ্বারের সম্মুখে দাঁড়াইয়া আছেন।
এবং ঈশ্বরের শক্তিতে তোমরাও পরিত্রাণের নিমিত্ত বিশ্বাস দ্বারা রক্ষিত হইতেছ, যে পরিত্রাণ শেষকালে প্রকাশিত হইবার জন্য প্রস্তুত আছে।
কেননা ঈশ্বরের গৃহে বিচার আরম্ভ হইবার সময় হইল; আর যদি তাহা প্রথমে আমাদের মধ্য হইতেই আরম্ভ হয়, তবে যাহারা ঈশ্বরের সুসমাচারের অবাধ্য, তাহাদের পরিণাম কি হইবে?
প্রথমে ইহা জ্ঞাত হও যে, শেষকালে উপহাসের সহিত উপহাসকেরা উপস্থিত হইবে; তাহারা আপন আপন অভিলাষ অনুসারে চলিবে,এবং বলিবে, তাঁহার আগমনের প্রতিজ্ঞা কোথায়? কেননা যে অবধি পিতৃলোকেরা নিদ্রাগত হইয়াছেন, সেই অবধি সমস্তই সৃষ্টির আরম্ভ অবধি যেমন, তেমনই রহিয়াছে।
আবার সেই বাক্যের গুণে এই বর্তমান কালের আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী অগ্নির নিমিত্ত সঞ্চিত রহিয়াছে, ভক্তিহীন মনুষ্যদের বিচার ও বিনাশের দিন পর্যন্ত রক্ষিত হইতেছে।
ঈশ্বরের সেই দিনের আগমনের অপেক্ষা ও আকাঙ্ক্ষা করিতে করিতে সেইরূপ হওয়া চাই, যে দিনের হেতু আকাশমণ্ডল জ্বলিয়া বিলীন হইবে, এবং মূলবস্তু সকল পুড়িয়া গিয়া গলিয়া যাইবে।কিন্তু তাঁহার প্রতিজ্ঞা অনুসারে আমরা এমন নূতন আকাশমণ্ডলের ও নূতন পৃথিবীর অপেক্ষায় আছি, যাহার মধ্যে ধার্মিকতা বসতি করে।
আর জগৎ ও তাহার অভিলাষ বহিয়া যাইতেছে; কিন্তু যে ব্যক্তি ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে, সে অনন্তকালস্থায়ী।
আর এখন, হে বৎসেরা, তাঁহাতে থাক, যেন তিনি যখন প্রকাশিত হন, তখন আমরা সাহসযুক্ত হই, তাঁহার আগমনে তাঁহা হইতে লজ্জিত না হই।
আর আদম অবধি সপ্তম পুরুষ যে হনোক, তিনিও এই লোকদের উদ্দেশে এই ভাববাণী বলিয়াছেন, “দেখ, প্রভু আপন অযুত অযুত পবিত্র লোকের সহিত আসিলেন, যেন সকলের বিচার করেন;আর ভক্তিহীন সকলে আপনাদের যে সকল ভক্তিবিরুদ্ধ কার্য দ্বারা ভক্তিহীনতা দেখাইয়াছে, এবং ভক্তিহীন পাপিগণ তাঁহার বিরুদ্ধে যে সকল কঠোর বাক্য কহিয়াছে, তৎপ্রযুক্ত তাহাদিগকে যেন ভর্ৎসনা করেন।”
দেখ, তিনি “মেঘ সহকারে আসিতেছেন,” আর প্রত্যেক চক্ষু তাঁহাকে দেখিবে, এবং “যাহারা তাঁহাকে বিদ্ধ করিয়াছিল, তাহারাও দেখিবে;” আর পৃথিবীর “সমস্ত বংশ তাঁহার জন্য বিলাপ” করিবে। হাঁ, আমেন।
তুমি আমার ধৈর্যের কথা রক্ষা করিয়াছ, এই কারণ আমিও তোমাকে সেই পরীক্ষাকাল হইতে রক্ষা করিব, যাহা পৃথিবী-নিবাসীদের পরীক্ষা করিবার জন্য সমস্ত জগতে উপস্থিত হইবে।
পরে আমি দেখিলাম, তিনি যখন ষষ্ঠ মুদ্রা খুলিলেন, তখন মহা ভূমিকম্প হইল; এবং সূর্য লোমজাত কম্বলের ন্যায় কৃষ্ণবর্ণ ও পূর্ণচন্দ্র রক্তের ন্যায় হইল;আর ডুমুরগাছ প্রবল বায়ুতে দোলায়িত হইয়া যেমন আপনার অপক্ব ফল ফেলিয়া দেয়, তেমনি আকাশমণ্ডলস্থ তারা সকল পৃথিবীতে পতিত হইল;আর আকাশমণ্ডল সঙ্কুচিত পুস্তকের ন্যায় অপসারিত হইল, এবং সমস্ত পর্বত ও দ্বীপ স্ব স্ব স্থান হইতে চালিত হইল।
পরে সপ্তম দূত তূরী বাজাইলেন, তখন স্বর্গে উচ্চ রবে এইরূপ বাণী হইল, ‘জগতের রাজ্য আমাদের প্রভুর ও তাঁহার খ্রীষ্টের হইল, এবং তিনি যুগপর্যায়ের যুগে যুগে রাজত্ব করিবেন।’
আর আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, শুভ্রবর্ণ একখানি মেঘ, “সেই মেঘের উপরে মনুষ্যপুত্রের ন্যায় এক ব্যক্তি” বসিয়া আছেন, তাঁহার মস্তকে সুবর্ণ মুকুট ও তাঁহার হস্তে একখানি তীক্ষ্ণ কাস্তে।পরে মন্দির হইতে আর এক দূত বাহির হইয়া, যিনি মেঘের উপরে বসিয়া আছেন, তাঁহাকে উচ্চ রবে চিৎকার করিয়া কহিলেন, “আপনার কাস্তে লাগান, শস্য ছেদন করুন; কারণ শস্যচ্ছেদনের সময় আসিয়াছে;” কেননা পৃথিবীর শস্য শুকাইয়া গেল।তাহাতে, যিনি মেঘের উপরে বসিয়া আছেন, তিনি আপন কাস্তে পৃথিবীতে লাগাইলেন, ও পৃথিবীর শস্যচ্ছেদন করা হইল।
দেখ, আমি চোরের ন্যায় আসিতেছি; ধন্য সেই ব্যক্তি, যে জাগিয়া থাকে, এবং আপন বস্ত্র রক্ষা করে, যেন সে উলঙ্গ হইয়া না বেড়ায়, এবং লোকে তাহার অপমান না দেখে।
পরে আমি দেখিলাম, স্বর্গ খুলিয়া গেল, আর দেখ, শ্বেতবর্ণ একটি অশ্ব; যিনি তাহার উপরে বসিয়া আছেন, তিনি বিশ্বাস্য ও সত্যময় নামে আখ্যাত, এবং তিনি ধর্মশীলতায় বিচার ও যুদ্ধ করেন।তাঁহার চক্ষু অগ্নিশিখা, এবং তাঁহার মস্তকে অনেক কিরীট; এবং তাঁহার একটি লিখিত নাম আছে, যাহা তিনি ব্যতীত অন্য কেহ জানে না।আর তিনি রক্তে ডুবান বস্ত্র পরিহিত; এবং “ঈশ্বরের বাক্য” এই নামে আখ্যাত।আর স্বর্গস্থ সৈন্যগণ তাঁহার অনুগমন করে, তাহারা শুক্লবর্ণ অশ্বে আরোহী, এবং শ্বেত শুচি মসীনা-বস্ত্র পরিহিত।আর তাঁহার মুখ হইতে এক তীক্ষ্ণ তরবারি নির্গত হয়, যেন তদ্দ্বারা তিনি জাতিগণকে আঘাত করেন; আর তিনি লৌহদণ্ড দ্বারা তাহাদিগকে শাসন করিবেন; এবং তিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের প্রচণ্ড ক্রোধরূপ মদিরাকুণ্ড দলন করেন।আর তাঁহার ও ঊরুদেশে এই নাম লেখা আছে- “রাজাদের রাজা ও প্রভুদের প্রভু।”
পরে আমি দেখিলাম, ঐ অশ্বারোহী ব্যক্তির ও তাঁহার সৈন্যের সহিত যুদ্ধ করিবার জন্য সেই পশু ও পৃথিবীর রাজগণ ও তাহাদের সৈন্যগণ একত্র হইল।কেননা তাঁহার বিচারাজ্ঞা সকল সত্য ও ন্যায্য; কারণ যে মহাবেশ্যা আপন বেশ্যাক্রিয়া দ্বারা পৃথিবীকে ভ্রষ্ট করিত, তিনি তাহার বিচার করিয়াছেন, তাহার হস্ত হইতে আপন দাসগণের রক্তপাতের পরিশোধ লইয়াছেন।তাহাতে সেই পশু ধরা পড়িল, এবং যে ভাক্ত ভাববাদী তাহার সাক্ষাতে চিহ্ন-কার্য করিয়া পশুর ছাপধারী ও তাহার প্রতিমার ভজনাকারীদের ভ্রান্তি জন্মাইত, সেও তাহার সংগে ধরা পড়িল; তাহারা উভয়ে জীবন্তই প্রজ্বলিত গন্ধকময় অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল।আর অবশিষ্ট সকলে সেই অশ্বারোহী ব্যক্তির মুখ হইতে নির্গত তরবারি দ্বারা হত হইল; এবং সমস্ত পক্ষী তাহাদের মাংসে তৃপ্ত হইল।
পরে আমি “এক বৃহৎ শ্বেতবর্ণ সিংহাসন ও যিনি তাহার উপরে বসিয়া আছেন,” তাঁহাকে দেখিতে পাইলাম; তাঁহার সম্মুখ হইতে পৃথিবী ও আকাশ পলায়ন করিল; “তাহাদের নিমিত্ত আর স্থান পাওয়া গেল না।”আর আমি দেখিলাম, ক্ষুদ্র ও মহান সমস্ত মৃত লোক সেই সিংহাসনের সম্মুখে দাঁড়াইয়া আছে; পরে “কয়েকখানি পুস্তক খোলা হইল” এবং আর একখানি পুস্তক, অর্থাৎ জীবন-পুস্তক খোলা হইল, এবং মৃতেরা পুস্তকসমূহে লিখিত প্রমাণে “আপন আপন কার্যানুসারে” বিচারিত হইল।আর সমুদ্র তাহার মধ্যবর্তী মৃতগণকে ফিরাইয়া দিল এবং মৃত্যু ও পাতাল আপনাদের মধ্যবর্তী মৃতগণকে সমর্পন করিল, এবং তাহারা প্রত্যেকে আপন আপন কার্যানুসারে বিচারিত হইল।পরে মৃত্যু ও পাতাল অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল; তাহাই, অর্থাৎ সেই অগ্নিহ্রদ, দ্বিতীয় মৃত্যু।আর জীবন-পুস্তকে যে কাহারও নাম লিখিত পাওয়া গেল না, সে অগ্নিহ্রদে নিক্ষিপ্ত হইল।
পরে আমি “এক নূতন আকাশ ও এক নূতন পৃথিবী” দেখিলাম; কেননা প্রথম আকাশ ও প্রথম পৃথিবী লুপ্ত হইয়াছে; এবং সমুদ্র আর নাই।
আর তিনি তাহাদের সমস্ত নেত্রজল মুছাইয়া দিবেন; এবং মৃত্যু আর হইবে না; শোক বা আর্তনাদ বা ব্যথাও আর হইবে না; কারণ প্রথম বিষয় সকল লুপ্ত হইল।
“দেখ, আমি শীঘ্র আসিতেছি; এবং আমার দাতব্য পুরস্কার আমার সহবর্তী, যাহার যেমন কার্য, তাহাকে তেমন ফল দিব।আমি আল্ফা এবং ওমিগা, প্রথম ও শেষ,” আদি এবং অন্ত।