ভূমিকা
ইস্রায়েল জাতি উপলব্ধি করতে পেরেছিল যে, সৃষ্টিকর্তা তাঁর সৃষ্ট জগতকে একটি নিয়মশৃঙ্খলার উপরে স্থাপন করেছেন, যাকে জানা বা আবিষ্কার করা সম্ভব। এইসব শিক্ষাকে হিতোপদেশ পুস্তক অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত অথচ গভীর অর্থবহ এবং সহজে মুখস্থ করে রাখার মতো উক্তি সহকারে বিবৃত করেছে, যা তাদের প্রবীণ বিজ্ঞজনদের মারফৎ যুগ যুগ ধরে প্রবাহিত হয়ে চলেছে। এর অনেকগুলিই রাজা শলোমনের লেখা, যিনি তাঁর প্রজ্ঞার জন্য খ্যাতিমান ছিলেন। (দ্রষ্টব্য, 1 রাজাবলি 4:29-34) এইসব হিতোপদেশ বিশেষভাবে রচিত হয়েছিল অল্পবয়স্কদের সাহায্য করার জন্য, যাতে তারা জীবনের কয়েকটি অতি পরিচিত বিপদকে এড়াতে পারে এবং সমৃদ্ধি, সুস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার পথকে খুঁজে পায়।
শিক্ষাদানের সংক্ষিপ্ত একটি অংশের পর, প্রজ্ঞা স্বয়ং নারীর প্রতীকরূপে সাধারণ মানুষদের আহ্বান করেছে এবং তাদের জ্ঞান অর্জনের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। এই অংশটি শেষ হয় দুটি ভোজের বিবরণ দিয়ে, একটির আহ্বায়ক প্রজ্ঞা আর অন্যটির আহ্বায়ক মূর্খতা, যা প্রকাশ করে জীবনে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের দৃষ্টান্ত। এরপর রয়েছে শলোমনের 375-টি হিতোপদেশ, যা হিব্রু ভাষায় তাঁর নামের সংখ্যার পরিচায়ক। (হিব্রু বর্ণগুলি সংখ্যা হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে থাকে, ফলে প্রতিটি শব্দের বর্ণগুলির মোট যোগফল এক-একটি অর্থবোধক) এরপর “জ্ঞানী ব্যক্তিদের নীতিবাক্য” রয়েছে কয়েকটি, যার পরে রয়েছে যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের সময়ের লোকদের দ্বারা সংকলিত শলোমনের একগুচ্ছ হিতোপদেশ। এগুলির সংখ্যা 130, যা হিষ্কিয়ের নামের মূল্যের সমান। পুস্তকটির শেষ অংশে রয়েছে আগূর ও লমূয়েল রাজার উপদেশমালা, যার সমাপ্তি 22-টি অংশে বিভক্ত একটি কবিতা দিয়ে যা হিব্রু বর্ণমালার পরপর আদ্যক্ষর দিয়ে রচিত। সমগ্র পুস্তকে চারিত্রিক গুণাবলির যে প্রশংসা করা হয়েছে তা আদর্শ স্ত্রীর বর্ণনার মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত ও জোরালো অর্থসমৃদ্ধ এই মূল্যবান পুস্তকটি একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ বিষয়বস্তুকে তুলে ধরে: সদাপ্রভুর ভয় জ্ঞানের আরম্ভ।