ভূমিকা
লূক ছিলেন একজন চিকিৎসক ও এক ঐতিহাসিক ব্যক্তি। জাতিতে তিনি ছিলেন গ্রিক। (কলসীয় 4:10,11,14) পৌলের কোনো কোনো প্রচার অভিযানে লূক তাঁর সঙ্গী হয়েছিলেন আমরা, আমাদের, এসব সর্বনামের ব্যবহার লক্ষণীয়। (প্রেরিত 16:10; 20:5; 21:1; 27:1) তিনি লূকের সুসমাচার এবং প্রেরিতশিষ্যদের কার্যবিবরণী লিখেছিলেন। (লূক 1:1-4; প্রেরিত 1:13) খ্রীষ্টের জেরুশালেম যাত্রা ও পৌলের রোম যাত্রা, উভয় পুস্তকেই তিনি যাত্রার বর্ণনা দিয়েছেন।
গ্রিকদের কথা স্মরণে রেখে লূক তাঁর রচনা লিপিবদ্ধ করেছেন। তিনি প্রভু যীশুকে নিষ্পাপ ও নিখুঁত মানবপুত্ররূপে এবং সহানুভূতিশীল পরিত্রাতারূপে (লূক 19:10) উপস্থাপিত করেছেন। তিনি নারী ও শিশু এবং দরিদ্রদের কথা প্রায়ই উল্লেখ করেছেন। তাঁর সুসমাচারে বহুবার আনন্দ ও উল্লসিত হওয়ার বিষয় উল্লিখিত আছে। আবার প্রার্থনা ও সমগ্র বিশ্বের প্রতি ঈশ্বরের প্রেমের বিষয়েও পুস্তকটিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। লূক তাঁর উভয় পুস্তকই জনৈক থিয়ফিলকে সম্বোধন করে লিখেছেন। থিয়ফিল নামটির অর্থ, ঈশ্বরপ্রেমিক। তিনি ছিলেন একজন রোমীয় বিশ্বাসী, সম্ভবত কোনও পদস্থ আধিকারিক, যিনি বিশ্বাসে মজবুত হওয়ার জন্য রসদ পাওয়ার আকাঙ্ক্ষী ছিলেন।
লূকের রচনাশৈলী অত্যন্ত সাধারণ গোত্রের। তিনি প্রভু যীশুর জন্ম ও শৈশবের বিষয় (1–2), তাঁর বাপ্তিষ্ম ও প্রলোভনের সম্মুখীন হওয়ার কথা (3:1–4:13), গালীল প্রদেশে তাঁর পরিচর্যা (4:14–9:17), জেরুশালেমের যাত্রাপথে তাঁর পরিচর্যার কাহিনি (9:18–19:17) এবং জেরুশালেমে তাঁর জীবনকালের শেষতম সপ্তাহের পরিচর্যার বিষয় (19:28–24:53) উল্লেখ করেছেন।
লূকের সুসমাচার পাঠ করলে পাঠক করুণাময় মানবপুত্রের প্রতি আসক্ত হয়। তারা নিঃস্ব-অভাবী ব্যক্তিদের প্রতি হয় করুণাবিষ্ট এবং সচেষ্ট হয় সমগ্র বিশ্বে তাঁর পরিত্রাণের বার্তা পৌঁছে দিতে।
রচয়িতা: লূক (নামটির অর্থ, জ্যোতির)
রচনার স্থান: অজ্ঞাত। কোনো কোনো পণ্ডিতের মতানুসারে, গ্রীস
রচনাকাল: আনুমানিক 70 খ্রীষ্টাব্দ (রচনার সঠিক কাল ও অবস্থান নির্ণয় করা কার্যত অসম্ভব)
মূল বিষয়: মনুষ্যপুত্র খ্রীষ্ট, জগতের পরিত্রাতা