ভূমিকা
খ্রীষ্ট পূর্বাব্দ অষ্টম শতাব্দীতে দ্বিতীয় যারবিয়ামের শাসনকালে, যোনা নামের এক ভাববাদীর কাছে কীভাবে সদাপ্রভুর বাক্য প্রকাশিত হল, সেই কথাই এই পুস্তকে বিবৃত করা হয়েছে। ভাববাণীমূলক পুস্তকগুলির মধ্যে এটি একেবারে অনন্য, কারণ ভাববাণী সংকলন করার বদলে এই পুস্তকটি এক ভাববাদীর কাহিনিতেই বেশি জোর দিয়েছে। এই পুস্তকে ভাববাণী বলতে রয়েছে সাকুল্যে একটিমাত্র বাক্য।
এই কাহিনির প্রতিপাদ্য হল, নীনবী নগরের আসন্ন ধ্বংসের কথা সেখানকার বাসিন্দাদের জানানো ও তাদের সতর্ক করার জন্য যোনার প্রতি ঈশ্বরের আহ্বান। পুস্তকটির কাঠামো দুটি মূল ভাগে বিভক্ত, যার প্রতিটিতে রয়েছে দুটি করে দৃশ্য। প্রতিটি ভাগের শুরুর চিহ্ন হল, ঈশ্বরের আদেশ, নীনবী মহানগরে যাও। প্রথম দৃশ্যটি একটি জাহাজের, যাতে চেপে যোনা তাঁর দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করছেন। দ্বিতীয়টি, যে বিশাল মাছটি যোনাকে গিলে ফেলেছিল তার পেটের ভিতরের দৃশ্য। এরপর দ্বিতীয় ভাগের দুটি দৃশ্যই সরাসরি নীনবীর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, প্রথমটি নীনবী নগরের ভিতরে, যেখানে যোনা প্রচার করছেন ও নীনবীর লোকেরা অনুতাপ করছে, আর দ্বিতীয়টি নগরের বাইরে বসে যোনা কীভাবে প্রাণপণে ঈশ্বরের দয়া পাওয়ার চেষ্টা করছেন।
অন্যান্য জাতিগুলির প্রতি যে ধরনের বিতৃষ্ণার মনোভাব ইস্রায়েল জাতির অনেকের মধ্যে কাজ করে, এই পুস্তকে যোনা যেন তার প্রতীক। সত্য ঈশ্বরকে জানতে পারার কাজে এইসব জাতিকে সাহায্য করার যে আহ্বান ইস্রায়েল জাতিকে জানানো হয়েছে, তাকে গ্রহণ করার পরিবর্তে এইসব জাতিকে তারা শত্রু বলে মনে করে এবং চায় যে ঈশ্বর এদের ধ্বংস করে দিক। তাই এই পুস্তকের শিক্ষণীয় বিষয় হল, ঈশ্বরের প্রেম ইস্রায়েল জাতি ছাড়াও অন্যান্য জাতির প্রতি সমানভাবে, বাস্তবিকই, তাঁর সমগ্র সৃষ্টির প্রতি প্রসারিত। তাই যোনার প্রতি ঈশ্বরের অন্তিম প্রশ্নটি এই পুস্তকের প্রতিটি পাঠকের প্রতি প্রযোজ্য।