ভূমিকা
মৃত্যুর ঠিক আগে মোশির দেওয়া বিখ্যাত বক্তৃতার কথা দ্বিতীয় বিবরণে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। ইস্রায়েল জাতির যে প্রজন্ম মরুপ্রান্তরে জন্মেছিল ও বড়ো হয়েছিল, তারা যখন কনান দেশে প্রবেশ করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল ঠিক তার আগে, তাদের উদ্দেশে এই বক্তৃতাটি মোশি দিয়েছিলেন। ঈশ্বরের আশীর্বাদধন্য জীবন কীভাবে নবায়িত হয়ে ওঠে তা এই প্রতিশ্রুত দেশের মাধ্যমে ঈশ্বর তাদের বোঝাতে চাইছিলেন। সে যুগের শাসকেরা তাদের প্রজাদের সঙ্গে সচরাচর যে প্রকারের চুক্তি সম্পাদন করত, ঠিক তেমনই ঈশ্বরের সঙ্গে স্থাপিত ইস্রায়েল জাতির চুক্তিকে এই পুস্তকটিতে তুলে ধরা হয়েছে। এইসব চুক্তিগুলির মধ্যে সাধারণত পাঁচটি বিষয় অন্তর্গত থাকত:
সেই মহান শাসক তাঁর নাম ও উপাধির মাধ্যমে চিহ্নিত হতেন।
সেই মহান শাসকের ইতিহাস ও প্রতাপান্বিত কাজগুলির কথা বর্ণনা করা হত।
সেই শাসকের দাসদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত আনুগত্য ও নির্দিষ্ট কর্তব্য উল্লেখ করা হত।
চুক্তি রক্ষা করলে প্রাপ্য আশীর্বাদ এবং লঙ্ঘন করলে উপযুক্ত অভিশাপের তালিকাও অন্তর্ভুক্ত রইত।
আগামী প্রজন্ম কীভাবে এই চুক্তিকে ধরে রাখবে তার সংস্থানও করা থাকত।
দ্বিতীয় বিবরণে এসব বিষয়গুলি পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে বর্ণনা করা হয়েছে। মহান রাজাধিরাজ—অর্থাৎ ইস্রায়েল জাতির ঈশ্বরের প্রতিনিধি রূপে মোশিকে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং প্রজাবৃন্দের প্রতি মহান ঈশ্বরের প্রতাপশালী কাজ স্মরণ করা হয়েছে। ইস্রায়েল জাতির রাজার প্রতি তাদের আনুগত্য এবং কর্তব্যের কথা মোশি মনে করিয়ে দিয়েছেন। এরপর সেই চুক্তির প্রতি তাদের সমর্থন জ্ঞাপনের জন্য এক পবিত্র শপথ গ্রহণের কাজে তিনি তাদের আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর উত্তরসূরির নাম ঘোষণা করার পর এবং প্রতিশ্রুত দেশটি দেখার উদ্দেশে একটি পর্বতে ওঠার পর মোশি মৃত্যুবরণ করেন। ইস্রায়েল জাতি তাদের উত্তরাধিকারের অর্থাৎ এক নতুন সৃষ্টির প্রতিশ্রুতির কিনারায় দাঁড়িয়ে।