ভূমিকা
রোম সাম্রাজ্যের অধীনে এশিয়া মাইনরের (অধুনা, তুরস্ক) অন্তর্গত ছিল গালাতিয়া প্রদেশ। পৌল এই গালাতিয়া প্রদেশে কতগুলি মণ্ডলী স্থাপন করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে সেখানে কিছু সংখ্যক ভ্রান্ত শিক্ষকের অনুপ্রবেশ ঘটেছিল। জেরুশালেম কাউন্সিলে (মন্ত্রণা-পরিষদে) পৌল এই ধরনের কিছু ব্যক্তির প্রতিরোধ করেছিলেন (প্রেরিত 15)। তারা শিক্ষা দিত যে, খ্রীষ্টিয়ানদেরও মোশির বিধান পালন করা আবশ্যক। পৌল তারই প্রতিরোধ করে এই পত্রে ব্যক্ত করেছেন যে, বিধান পালন ও নিজের কর্মপ্রচেষ্টা দ্বারা পরিত্রাণ লাভ সম্ভব নয়। তিনি পরিত্রাণ লাভে ঐশ-অনুগ্রহের মাহাত্ম্য এবং তার পরিণামে বিধিবিধান থেকে বন্ধন-মুক্তির কথা বর্ণনা করেছেন (5:1)।
পত্রের সূচনায় তিনি ব্যক্তিগতভাবে স্বীকার করে বলেছেন (1–2) যে, প্রভু যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে ঈশ্বর তাঁকে পাপের বাঁধন থেকে মুক্ত করেছেন। এরপর তিনি ধর্মীয় শিক্ষামূলক একটি বিবৃতি দিয়ে বিধান ও অনুগ্রহের সম্পর্কের বিষয় তুলে ধরেছেন (3–4), শেষে দৈনন্দিন জীবনে ঐশ-অনুগ্রহ ও স্বাধীনতা উপভোগের জন্য তিনি কিছু ব্যবহারিক প্রয়োগসূত্রের উল্লেখ করে পত্রটি সমাপ্ত করেছেন (5–6)।
খ্রীষ্টীয় স্বাধীনতা নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী যে কোনো কাজ করার ছাড়পত্র নয়, কিন্তু খ্রীষ্ট যীশুতে কোনও কিছু হয়ে ওঠার স্বাধীনতাবিশেষ। সর্বাপেক্ষা মর্মন্তুদ পরাধীনতা হল, আত্মতৃপ্তির জন্য জীবনধারণ করা এবং পুরোনো প্রকৃতির অধীনে আত্মসমর্পণ করা। খ্রীষ্ট আমাদের ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য মুক্ত করেননি। তাঁর দত্ত স্বাধীনতার উদ্দেশ্য হল, আমরা যেন কেবলমাত্র তাঁরই হই ও তাঁর সন্তুষ্টি বিধানের জন্য প্রাণ নিবেদন করি।
রচয়িতা: পৌল
রচনারা স্থান: করিন্থ
রচনাকাল: আনুমানিক 57 খ্রীষ্টাব্দ
মূল বিষয়বস্তু: বিশ্বাসে ধার্মিক গণ্য হওয়া