ভূমিকা
খ্রীষ্ট পূর্বাব্দ অষ্টম শতকের প্রথমার্ধে (2 রাজাবলি 14:23-25), শক্তিশালী রাজা দ্বিতীয় যারবিয়ামের একচল্লিশ বছরের শাসনকালে ইস্রায়েলের উত্তরের রাজ্য শক্তি ও সমৃদ্ধির সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছেছিল। তাদের জাতির প্রতিটি বিজয়লাভের ঘটনায়, উপাসনায় এবং আপন ঐতিহ্যে আত্মবিশ্বাসী হয়ে তারা যে আদর্শ গ্রহণ করেছিল তা হল, “ঈশ্বর আমাদের সহবর্তী!” তাদের প্রত্যাশা ছিল সদাপ্রভুর দিনের জন্য, যখন ঈশ্বর তাদের প্রতিটি শত্রুকে আঘাত করবেন এবং ওই অঞ্চলের অবিতর্কিত শাসক হিসেবে ইস্রায়েলকে প্রতিষ্ঠিত করবেন।
মাত্রাতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস থেকে উদ্ভূত জাতীয়তাবাদের এই বাতাবরণে যিহূদার দক্ষিণের রাজ্য থেকে আমোষ নামের এক মেষপালকের আগমন হয়। তিনি বেথেলের বিশাল রাজকীয় মন্দিরে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন, ইস্রায়েলকে দখল করার জন্য ঈশ্বর একটি জাতিকে প্রণোদিত করছেন। তিনি জোর দিয়ে বললেন, সদাপ্রভুর দিন হবে অন্ধকারের, আলোর নয়। কারণ ঈশ্বর ইস্রায়েল জাতির ধনসম্পদ, সামরিক শক্তি বা আত্মসুখপরায়ণতা নিয়ে মোটেই প্রভাবিত নন। তিনি ন্যায়বিচার অন্বেষণ করেন, অথচ ধনী ও ক্ষমতাবান লোকেরা গরিব মানুষদের শোষণ করছে। তাই ঈশ্বর ইস্রায়েল জাতির প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন, তাদের ধ্বংস এড়ানোর একমাত্র পথ, অনুতাপ করা।
এই ভাববাণীর ফলে তীব্র গণ্ডগোল ও বিরোধিতা শুরু হয় গেল। বেথেলের প্রধান যাজক আমোষের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনলেন। আমোষ রাজ্য থেকে নির্বাসিত হলেন কিন্তু তাঁর ভাববাণীগুলি লিপিবদ্ধ করা হল, যা ইহুদি ভাববাদীর অন্যতম প্রাচীন এক সংকলন হয়ে উঠল। এই পুস্তকে মোটামুটিভাবে ছত্রিশটি পৃথক ভাববাণী রয়েছে, সেই সঙ্গে রয়েছে তাঁর বিতাড়নের কাহিনিও। পুস্তকটির অধিকাংশ অংশই এলোমেলোভাবে সাজানো, কিন্তু সব মিলিয়ে এর মধ্যে রয়েছে একটি দৃঢ় ও সামঞ্জস্যপূর্ণ বার্তা: ন্যায়বিচার নদীর মতো প্রবাহিত হোক, ধার্মিকতা কখনও শুকিয়ে না যাওয়া স্রোতের মতো হোক!