ভূমিকা
ভাববাদী যিহিষ্কেল বাবিলে নির্বাসিত হইয়াছিলেন। যিরূশালেমের পতনের পূর্বেই তাঁহার নির্বাসন হয় এবং খ্রীষ্টপূর্ব ৫৮৬ অব্দে যিরূশালেমের পতনের পরবর্তীকালেও সেখানে তাঁহাকে নির্বাসিত জীবন অতিবাহিত করিতে হয়। বাবিলে নির্বাসিত জনগণ ও যিরূশালেম-নিবাসীর উদ্দেশ্যে তাঁহার এই সমাচার উচ্চারিত হইয়াছিল।
যিহিষ্কেলের পুস্তকের ছয়টি ভাগ: (১) ঈশ্বরের মুখপাত্র বা ভাববাদী হইবার জন্য যিহিষ্কেলের কাছে ঈশ্বরের আহ্বান, (২) ঈশ্বরের আসন্ন শাসনদণ্ড সম্বন্ধে মানুষকে সতর্ক করিয়া চেতনা দান, যিরূশালেমের পতন ও বিনাশ সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী, (৩) যে সমস্ত জাতি সদাপ্রভুর প্রজাদের বিপথে পরিচালনা করিয়াছে এবং তাহাদের নিপীড়ন করিয়াছে, তাহাদের উপর তাঁহার আসন্ন বিচারের অমোঘ দণ্ড সম্বন্ধে সদাপ্রভুর নিকট হইতে আগত সংবাদ, (৪) যিরূশালেমের পতনের পর ইস্রায়েল জাতিকে স্বাচ্ছন্দ দান এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি, (৫) গোগের বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্বাণী এবং (৬) পুনরুদ্ধারপ্রাপ্ত মন্দির ও জাতি সম্বন্ধে যিহিষ্কেলের দর্শন।
যিহিষ্কেল ছিলেন অত্যন্ত কল্পনাপ্রবণ ও ঈশ্বরে গভীর বিশ্বাসী। অন্তর্দৃষ্টির আলোকে অনেক দর্শন তাঁহার সামনে আসিয়া দাঁড়াইয়াছে। তাঁহার অনেক বক্তব্য প্রতীকধর্মী কার্যকলাপের মধ্য দিয়া ফুটিয়া উঠিয়াছে। যিহিষ্কেল মন ও আত্মার অভ্যন্তরীণ নূতনীকরণের প্রয়োজনীয়তা এবং প্রত্যেকের নিজের পাপের জন্য ব্যক্তিগত দায়-দায়িত্বের উপর বেশী জোর দিতেন।
জাতির জীবনের মোড় একদিন ফিরিবেই, পরিবর্তন আসিবেই, এই সম্বন্ধে তিনি আশা পোষণ করিতেন। যাজক তথা ভাববাদী হিসাবে মন্দির এবং মন্দিরের পবিত্রতা রক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে তাঁহার বিশেষ মনোযোগ বা আগ্রহ ছিল।
বিষয়বস্তুর রূপরেখা:
যিহিষ্কেলের আহ্বান - ১:১—৩:২৭
যিরূশালেমের পতনের ভবিষ্যদ্বাণী - ৪:১—২৪:২৭
জাতিবৃন্দের উপর ঈশ্বরের শাসনদণ্ড - ২৫:১—৩২:৩২
আপন প্রজাদের নিকটে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি - ৩৩:১—৩৭:২৮
গোগ-এর বিরুদ্ধে ভবিষ্যদ্বাণী - ৩৮:১—৩৯:২৯
মন্দির ও দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে দর্শন - ৪০:১—৪৮:৩৫