ভূমিকা
মোশির নেতৃত্বে ইস্রায়েলীয়রা দীর্ঘপথ পরিক্রমা শেষ করিয়া কনান দেশের সীমান্তে মোয়াব দেশে আসিয়া থামিয়াছে। এই স্থান হইতে শুরু হইবে তাহাদের কনান দেশ অধিকারের নূতন অধ্যায়। এই শেষ ও শুরুর মধ্যবর্তী বিরতির সময় মোয়াব দেশে থাকিবার কালে মোশি ইস্রায়েলীয়দের কাছে ধারাবাহিকভাবে বিশেষ ভাষণ দিয়াছিলেন। এই ধারাবাহিক ভাষণটির সঙ্কলনই দ্বিতীয় বিবরণ নামে আখ্যাত হইয়াছে।
এই পুস্তকটিতে কতকগুলি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় লিপিবদ্ধ হইয়াছে। সেইগুলি নিম্নরূপঃ (১) বিগত চল্লিশ বৎসরে সংঘটিত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলীর প্রেক্ষাপটে মোশির স্মৃতিচারণ। ঈশ্বর কিভাবে প্রান্তরে ইস্রায়েলীয়দের পরিচালনা করিয়া আনিয়াছেন, সেই কথা স্মরণ করিয়া ঈশ্বরের বাধ্য ও অনুগত হইয়া চলিবার জন্য মোশির অনুরোধ। (২) দশ আজ্ঞার পুনরাবৃত্তি করিয়া প্রথম আজ্ঞাটির তাৎপর্য বিশেষভাবে ব্যাখ্যা করিয়া একমাত্র সদাপ্রভুর উপাসনা করিবার জন্য মোশির উপদেশ। তারপর ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাত দেশে ইস্রায়েল জাতির জনজীবন নির্বাহের নির্দেশিকারূপে বিভিন্ন বিধি-ব্যবস্থা ও নিয়ম-কানুনের ব্যাখ্যা। (৩) মোশি ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বরের সহিত তাহাদের নিয়মের প্রকৃত অর্থ স্মরণ করাইয়া দেন এবং তাহাদের এই নিয়মের শর্ত পালন করিবার জন্য নূতন শপথের আহ্বান জানান। (৪) ঈশ্বরের প্রজাদের পরিচালকরূপে পরবর্তী নেতা যিহোশূয়ের হাতে দায়িত্বভার অর্পণ। ঈশ্বরের স্তবগান করিয়া মোশি ইস্রায়েল জাতির সমস্ত গোষ্ঠীকে আশীর্বাদ করিয়া যর্দন নদীর পূর্বদিকে মোয়াব দেশে প্রাণত্যাগ করেন।
এই পুস্তকের মূল কথা হইল, ঈশ্বর তাঁহার মনোনীত প্রিয় প্রজাদের রক্ষা ও আশীর্বাদ করিয়াছেন। তাই তাঁহার প্রজাবৃন্দের এই কথা স্মরণ করা উচিত যে, তাঁহাকে প্রেম ও ভক্তি করিতে এবং তাঁহার বাধ্য ও অনুগত হইয়া চলিতে হইবে। ইহার মধ্য দিয়া জীবন লাভ করা যায় এবং আশীর্বাদের অবিরাম ধারায় সঞ্জীবিত থাকা যায়।
এই পুস্তকের মূল কথাগুলি ৬:৪-৬ পদে এবং যীশুর মহোত্তম আজ্ঞায় পাওয়া যায়, যেখানে লেখা আছে, “তোমার সমস্ত হৃদয়, সমস্ত প্রাণ, ও তোমার সমস্ত শক্তি দিয়া আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুকে প্রেম করিবে।”
বিষয়বস্তুর রূপরেখা:
মোশির প্রথম ভাষণ - ১:১—৪:৪৯
মোশির দ্বিতীয় ভাষণ - ৫:১—২৬:১৯
ক. দশ আজ্ঞা - ৫:১—১০:২২
খ. বিধি-ব্যবস্থা, নিয়ম-কানুন এবং সতর্কবাণী - ১১:১—২৬:১৯
কনান দেশে প্রবেশের বিধি নির্দেশ - ২৭:১—২৮:৬৮
ঈশ্বরীয় নিয়মের নূতনীকরণ - ২৯:১—৩০:২০
মোশির শেষ কথা - ৩১:১—৩৩:২৯
মোশির মৃত্যু - ৩৪:১-১২