ভূমিকা
যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচার প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অইহুদীরা সাগ্রহে সুসমাচারকে স্বাগত জানায় ও অকুণ্ঠভাবে যীশুকে গ্রহণ করে, কিন্তু তারই সঙ্গে একটি প্রশ্নের উদ্ভব হয়। প্রশ্নটি হল, প্রকৃত খ্রীষ্টান হতে হলে মোশির বিধান পালন করা উচিত কি উচিত নয়? পৌল যুক্তি দিয়ে বলেন যে, এর বিশেষ প্রয়োজন নেই। প্রকৃতপক্ষে, যীশু খ্রীষ্টের ওপর বিশ্বাসই জীবনের সুদৃঢ় ভিত্তি, যার দ্বারা মানুষ ঈশ্বরের প্রীতিভাজন হতে পারে। এশিয়া মাইনরের রোম সাম্রাজ্যের অধীন প্রদেশ গালাতীয়ার খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীর একদল লোক পৌলের বিরোধীতা করে এবং দাবী করে যে, ঈশ্বরের প্রীতিভাজন হতে হলে প্রত্যেককে মোশির বিধানও অবশ্যই পালন করতে হবে।
গালাতীয় মণ্ডলীর খ্রীষ্টভক্তদের জীবনে বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা ও তাদের জীবনাচরণে এই বিশ্বাসকে ফুটিয়ে তোলার জন্য প্রেরিত শিষ্য পৌল তাদের কাছে এই পত্রটি লিখেছিলেন। কারণ এখানকার খ্রীষ্টভক্তরা ভ্রান্ত শিক্ষা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিপথে পরিচালিত হচ্ছিল। যীশু খ্রীষ্টের প্রেরিত শিষ্যরূপে আখ্যাত হওয়ার অধিকার তাঁর আছে, আত্মপক্ষ সমর্থনে এই কথা বলে বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে পৌল তাঁর পত্র আরম্ভ করেছেন। তিনি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বলেন যে, ঈশ্বরের কাছ থেকে তাঁর প্রেরিত শিষ্যত্বের আহ্বান এসেছিল, কোনও মানুষের কাছ থেকে আসেনি এবং তাঁর এই সুসমাচার প্রচার ব্রত ছিল বিশেষতঃ অইহুদীদের কাছে। তারপর পৌল সুনিপুণ যুক্তি বিন্যাস করে দেখিয়েছেন যে একমাত্র বিশ্বাস দ্বারাই মানুষ ঈশ্বরের সঙ্গে পুনর্মিলিত হতে পারে এবং তাঁর প্রীতিভাজন হতে পারে। উপসংহারের অধ্যায়গুলিতে পৌল দেখিয়েছেন যে খ্রীষ্টে বিশ্বাসের ফলে যে প্রেম জন্মলাভ করে, সেই প্রেমের উৎস থেকে খ্রীষ্টীয় আচরণ অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে মানব জীবনে বিকশিত হয়ে ওঠে।
বিষয়বস্তুর রূপরেখা
ভূমিকা 1:1-10
পৌলের প্রেরিত শিষ্যত্বের অধিকার 1:11—2:21
ঈশ্বরের অনুগ্রহের সুসমাচার 3:1—4:31
খ্রীষ্টীয় স্বাধীনতা ও দায়িত্ব 5:1—6:10
উপসংহার 6:11-18