লূক 20 - কিতাবুল মোকাদ্দসজেরুশালেমে দেওয়া ঈসার উপদেশ 1 এক দিন তিনি বায়তুল-মোকাদ্দসে লোকদেরকে উপদেশ দিচ্ছেন ও সুসমাচার তবলিগ করছেন, ইতোমধ্যে প্রধান ইমামেরা ও আলেমেরা প্রাচীনদের সঙ্গে এসে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো, 2 আমাদেরকে বল, তুমি কি ক্ষমতায় এসব করছো? তোমাকে যে এই ক্ষমতা দিয়েছেন, সেই বা কে? 3 জবাবে তিনি তাদেরকে বললেন, আমিও তোমাদেরকে একটি কথা জিজ্ঞাসা করবো, আমাকে বল; 4 ইয়াহিয়ার বাপ্তিস্ম বেহেশত থেকে হয়েছিল না মানুষ থেকে? 5 তখন তারা পরস্পর তর্ক করলো, বললো, যদি বলি, বেহেশত থেকে, তা হলে সে বলবে, তোমরা তাঁকে বিশ্বাস কর নি কেন? 6 আর যদি বলি, মানুষ থেকে, তবে লোকেরা আমাদেরকে পাথর মারবে; কারণ তাদের এই ধারণা হয়েছে যে, ইয়াহিয়া নবী ছিলেন। 7 তারা জবাবে বললো, আমরা জানি না, কোথা থেকে। 8 ঈসা তাদেরকে বললেন, তবে আমিও কি ক্ষমতায় এসব করছি তা তোমাদেরকে বলবো না। দুষ্ট কৃষকদের দৃষ্টান্ত 9 পরে তিনি লোকদেরকে এই দৃষ্টান্তটি বলতে লাগলেন; কোন ব্যক্তি আঙ্গুরের বাগান করেছিলেন, পরে তা কৃষকদেরকে জমা দিয়ে দীর্ঘকালের জন্য অন্য দেশে চলে গেলেন। 10 পরে যথা সময়ে কৃষকদের কাছে এক গোলামকে পাঠিয়ে দিলেন, যেন তারা আঙ্গুর-ক্ষেতের ফলের অংশ তাঁকে দেয়; কিন্তু কৃষকেরা তাঁকে প্রহার করে খালি হাতে বিদায় করে দিল। 11 পরে তিনি আর এক জন গোলামকে পাঠালেন, তারা তাকেও প্রহার করে অপমানপূর্বক খালি হাতে বিদায় করে দিল। 12 পরে তিনি তৃতীয় এক জনকে পাঠালেন, তারা তাকেও ক্ষতবিক্ষত করে বাইরে ফেলে দিল। 13 তখন আঙ্গুর-ক্ষেতের মালিক বললেন, আমি কি করবো? আমার প্রিয় পুত্রকে পাঠাব; হয়তো তারা তাঁকে সম্মান করবে; 14 কিন্তু কৃষকেরা তাঁকে দেখে পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, এই ব্যক্তিই উত্তরাধিকারী; এসো, আমরা একে হত্যা করি, যেন অধিকার আমাদেরই হয়। 15 পরে তারা তাঁকে আঙ্গুর-ক্ষেতের বাইরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করলো। এখন আঙ্গুর-ক্ষেতের মালিক তাদেরকে নিয়ে কি করবেন? 16 তিনি এসে এই কৃষকদেরকে বিনষ্ট করবেন এবং ক্ষেত অন্য লোকদেরকে দেবেন। এই কথা শুনে তারা বললো, এমন না হোক। 17 কিন্তু তিনি তাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করে বললেন, তবে এই যে কথা লেখা রয়েছে তার অর্থ কি, “যে পাথর রাজমিস্ত্রিরা অগ্রাহ্য করেছে, তা-ই কোণের প্রধান পাথর হয়ে উঠলো”? 18 সেই পাথরের উপরে যে পড়বে, সে ভেঙ্গে যাবে; কিন্তু সেই পাথর যার উপরে পড়বে, তাকে চুরমার করে ফেলবে। 19 সেই সময়ে আলেমেরা ও প্রধান ইমামেরা তাঁর উপরে হস্তক্ষেপ করতে চেষ্টা করলো, কিন্তু তারা লোকদেরকে ভয় করলো; কেননা তারা বুঝেছিল যে, তিনি তাদেরই বিষয়ে সেই দৃষ্টান্ত বলেছিলেন। কর দেবার বিষয়ে প্রশ্ন 20 তখন তারা তাঁর উপরে দৃষ্টি রাখল এবং এমন কয়েক জন গোয়েন্দা পাঠিয়ে দিল যারা ছদ্মবেশী ধার্মিক সাজবে, যেন তাঁর কথা ধরে তাঁকে শাসনকর্তার ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের হাতে তুলে দিতে পারে। 21 তারা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো, হুজুর, আমরা জানি, আপনি যথার্থ কথা বলেন ও যথার্থ শিক্ষা দেন, কারো প্রতি পক্ষপাতিত্ব করেন না, কিন্তু সত্যরূপে আল্লাহ্র পথের বিষয়ে শিক্ষা দিচ্ছেন। 22 সীজারকে কর দেওয়া শরীয়ত অনুসারে আমাদের উচিত কি না? 23 কিন্তু তিনি তাদের ধূর্ততা বুঝতে পেরে বললেন, আমাকে একটি দীনার দেখাও; এতে কার মূর্তি ও নাম আছে? 24 তারা বললো, রোম-সম্রাটের। 25 তখন তিনি তাদেরকে বললেন, তবে যা যা রোম-সম্রাটের তা সম্রাটকে দাও, আর যা যা আল্লাহ্র তা আল্লাহ্কে দাও। 26 এতে তারা লোকদের সাক্ষাতে তাঁর কথার কোন ছিদ্র ধরতে পারল না, বরং তার উত্তরে আশ্চর্য জ্ঞান করে চুপ করে রইলো। পুনরুত্থানের বিষয়ে শিক্ষা 27 আর সদ্দূকীরা, যারা প্রতিবাদ করে বলে, পুনরুত্থান নেই, তাদের কয়েক জন কাছে এসে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো, 28 হুজুর, মূসা আমাদের জন্য লিখেছেন, কারো ভাই যদি স্ত্রী রেখে মারা যায়, আর তার সন্তান না থাকে, তবে তার ভাই সেই স্ত্রীকে গ্রহণ করবে ও আপন ভাইয়ের জন্য বংশ উৎপন্ন করবে। 29 ভাল, সাতটি ভাই ছিল; প্রথম জন এক জন স্ত্রীকে বিয়ে করলো, আর সে সন্তান না রেখে মারা গেল। 30 পরে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাই সেই স্ত্রীকে বিয়ে করলো; 31 এভাবে সাত জনই সন্তান না রেখে মারা গেল। 32 শেষে সেই স্ত্রীও মারা গেল। 33 অতএব পুনরুত্থানে সে তাদের মধ্যে কার স্ত্রী হবে? তারা সাত জনই তো তাকে বিয়ে করেছিল। 34 ঈসা তাদেরকে বললেন, এই দুনিয়ার সন্তানেরা বিয়ে করে এবং বিবাহিতা হয়। 35 কিন্তু যারা সেই দুনিয়ার এবং মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থানের অধিকারী হবার যোগ্য গণিত হয়েছে, তারা বিয়ে করে না এবং বিবাহিতাও হয় না। 36 তারা আর মরতেও পারে না, কেননা তারা ফেরেশতাদের সমতুল্য এবং পুনরুত্থানের সন্তান হওয়াতে আল্লাহ্র সন্তান। 37 আবার মৃতরা যে উত্থাপিত হয়, এই বিষয়ে মূসাও ঝোপের বৃত্তান্তে দেখিয়েছেন; কেননা তিনি প্রভুকে “ইব্রাহিমের আল্লাহ্, ইস্হাকের আল্লাহ্ ও ইয়াকুবের আল্লাহ্” বলেছেন। 38 আল্লাহ্ তো মৃতদের আল্লাহ্ নন, কিন্তু জীবিতদের; কেননা তাঁর সাক্ষাতে সকলেই জীবিত। 39 তখন কয়েক জন আলেম বললো, হুজুর, আপনি বেশ বলেছেন। 40 বাস্তবিক, সেই সময় থেকে তাঁকে আর কোন কথা জিজ্ঞাসা করতে তাদের আর সাহস হল না। হযরত দাউদের পুত্রের বিষয়ে প্রশ্ন 41 আর তিনি তাদেরকে বললেন, লোকে কেমন করে মসীহ্কে দাউদের সন্তান বলে? 42 দাউদ তো নিজে জবুর শরীফে বলেন, “প্রভু আমার প্রভুকে বললেন, প্রভু তুমি আমার ডানদিকে বস, 43 যতদিন না আমি তোমার দুশমনদেরকে তোমার পায়ের তলায় রাখি।” 44 অতএব দাউদ তাঁকে প্রভু বলেছেন; তবে তিনি কিভাবে তাঁর সন্তান? আলেমদের থেকে সাবধান 45 পরে তিনি সব লোকের কর্ণগোচরে তাঁর সাহাবীদের বললেন, 46 আলেমদের থেকে সাবধান, তারা লম্বা লম্বা কাপড় পরে বেড়াতে চায় ও হাট বাজারে লোকদের মঙ্গলবাদ, মজলিস-খানায় প্রধান প্রধান আসন এবং ভোজে প্রধান প্রধান স্থান ভালবাসে। 47 তারা বিধবাদের বাড়ি গ্রাস করে এবং লোককে দেখাবার জন্য লম্বা লম্বা মুনাজাত করে; তারা বিচারে আরও বেশি দণ্ড পাবে। |
Kitabul Muqaddas (BACIB) Copyright © Biblical Aids to Churches in Bangladesh, 2013
Biblical Aids for Churches & Institutions in Bangladesh